
“আমি একজন গবেষক হবো” কি এক অদ্ভুত কারনে এ বিষয়টি এদেশে সবসময়েই অবহেলিত। আমাদের দেশের ছেলেমেয়েদের মেধা কি অন্যান্য দেশের ছেলেমেয়ের চেয়ে কম? গবেষক হবার নেতিবাচক মনোভাব দেখলে মনে হয় এটি হলেও হতে পারে। যদি তাই হয় তাহলে এর পিছনে একটা ব্যাখ্যা অবশ্যই আছে।
চীনের সাথে টেক্কা দিয়ে অনেক দেশই গবেষণা করে করোনার ভ্যাকসিন আবিষ্কার করে ফেললো যদিও সব ট্রায়ালের মধ্যে আছে। সর্বশেষ গতকাল ভারত দাবী করছে তারাও করোনা ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছে এবং তা জুলাই থেকে ট্রায়ালে যাবে। তাহলে আমরা পারছিনা কেন? আসলে সমস্যা কোথায়?
সমস্যা হচ্ছে আমাদের মননে। অল্প খাটুনিতে বিস্তর লাভে বিশ্বাসী আমরা। আমরা নীলক্ষেত থেকে থিসিস পেপার সংগ্রহ করে সাবমিট করি। চাঁদে সাইদীকে কিভাবে দেখা যায় এটাকে গবেষণা দিয়ে প্রমাণ করি, লঞ্চের ভিতরে এয়ার পকেট গবেষণায় আমরা পিএইচডি হোল্ডার। আমরা উপাত্ত বিশ্লেষণ না করে অজায়গায় মেধা খাটিয়ে শুধুমাত্র তত্ত্বকেই মননে লালন করি। এর জন্যই আমাদের মেধা বেশি থাকা সত্ত্বেও দেখে কম মনে হয়।
ফেসবুক গবেষণা থেকেই জানলাম লঞ্চ দূর্ঘটনা কত কতভাবে ঘটতে পারে! বিস্তর গবেষণা জ্ঞান আহরণের জন্য মানুষজন করোনাতঙ্ক পরেও লঞ্চঘাটে ভীড় করছে। না পড়েই গবেষণায় সাফল্য লাভ করার সৌভাগ্য পাওয়া কি চাট্টিখানি কথা! এসব গবেষণার শেষতক ফলাফলের উপসংহার পেলাম – ময়ূরী ২ নামটিই আল্লাহর গজব, পাপের ফল, কেউ বলছে উদ্ধার নাটক, রাখে আল্লাহ মারে কে, ইউনুস নবীর কথা, পানিতে ডুবে থাকা চামড়ার বর্ণনা এবং একে অন্যকে দোষারোপ।
মেধাবী গবেষকদের এই মেধার ফসল হচ্ছে- ক্রেনবাহী উদ্ধারকারী লঞ্চটি দূর্ঘটনাস্থলে আসার সময় কোটি টাকার ব্রীজ ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ব্রীজটি বানানোর সময় ইঞ্জিনিয়ার ভাবেনি নদীতে কোন দূর্ঘটনা হলে কিভাবে এর নীচ দিয়ে অন্য একটি লঞ্চ যাবে! সেই ক্রেন ইঞ্জিনিয়ারের কি এতটুকু জ্ঞান নেই উদ্ধার তৎপরতা চালানোর আগে সবকিছু বিশ্লেষণ করা?
ফেসবুক থেকে আরো জানলাম অচিরেই বিআইডাব্লিউটিএ-তে নাকি তারা লঞ্চ দূর্ঘটনা প্রতিরোধ বিষারদ নিয়োগ দিতে যাচ্ছে! আমার সুযোগ হলে গতকাল থেকে আজ পর্যন্ত ফেসবুক থেকে যত গবেষণালব্ধ জ্ঞান পেলাম সব ইন্টার্ভিউ বোর্ডে কপচিয়ে আসতাম। ফেসবুকে গবেষণা জ্ঞান এটি যা তা বিষয় নয় কিন্তু!
অথচ ফেসবুকে গবেষণা না করে একজনও যদি আমাদের এই ক্ষুরধার মস্তিষ্ক জায়গামত গবেষণায় ব্যবহার করতাম নিশ্চিত করোনা ভ্যাকসিন আমাদের আগে কেউই ট্রায়ালে নিতে পারতোনা। অবশ্য গবেষকের আসনটিতে বসার পরে কিছু নিয়ে গবেষণা করি আর না করি মাস শেষে বেতন পাবই মনোভাবকে কতজন সামাল দিতে পারতো সে বিষয়ে সন্দেহ থেকেই যায়।
গবেষণা করতে গিয়ে ছাত্রজীবন থেকেই কত কি সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় সে কথায় আর গেলাম না। আমি উদ্যোক্তা হবো, দশজনকে চাকরি দেব সবাই বলি। কিন্তু আমি একজন গবেষক হবো, নিজের জ্ঞান দশজনকে বিলিয়ে তাদেরকেও অর্থ উপার্জনে সহায়তা করবো এ কথা কেউই বলিনা। এখানেই অন্যদেশের ছেলেমেয়েদের সাথে আমাদের মননের পার্থক্য।
তাহলে আমরা কি মননশীল নই? হ্যা, আমরাও তাই তবে তা নেতীবাচক দিকে ধাবমান। আঠারো বছর হলে নিজের হাত খরচ নিজেকেই যোগাড় করতে হয় বলেই উন্নতদেশের ছেলেমেয়েরা অর্থ উপার্জনে নিজের মেধাকে ব্যয় করে। আর আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে কবে চাকরি হবে তা ভেবে নিজের মেধাকে পা দুলিয়ে ফেসবুক গবেষনায় কাজে থাকি ব্যস্ত। এই নেতিবাচক মননশীলতা থেকে সবার বেড়িয়ে আসতে হবে।
দিবাস্বপ্নে দিন যাপনকারী অলস মস্তিষ্ক নিয়ে বসে থেকেও আমাদের চোখে ভাসে অবাস্তব কোটি টাকার স্বপ্ন। চুরাশি হাজার কোটিপতির এই দেশে “স্বল্প মেধায়, অল্প খাটুনি, বেশী লাভ” এই তত্ত্ব যে অনেকেরই মননে শেকড় গেড়েছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখেনা। আর এ কারনেই গবেষকদের গবেষণা এখন থিসিস বইয়ের পাতায় নয় গনহারে ফেসবুকের পাতায় দেখা যায়।
৪৭টি মন্তব্য
ফয়জুল মহী
ড. বিজন শীলের কীট এখনো অনুমোদন পায়নি। আর উনাকে নিয়ে ফেসবুকে অনেক গবেষণাগা চলে।
তৌহিদ
গবেষকদের গবেষিত বিষয়ের পরিবর্তন আনতে হবে মহী ভাই।
ধন্যবাদ, ভালো থাকুন।
খাদিজাতুল কুবরা
বর্তমান প্রেক্ষাপটে ও বাঙালির ভাতঘুমের বর্ণনা খুব সুন্দর লিখেছেন।
সময়োপযোগী লেখার জন্য ধন্যবাদ।
লেখকরা প্রানখুলে লিখবে পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখাবে এটাই প্রত্যাশা
তৌহিদ
আপু, আমরা স্বপ্ন দেখা জাতি। কিন্তু মনে রাখতে হবে স্বপ্ন যেন অলীক না হয়। কল্পনার সাথে বাস্তবতার মিল থাকতে হবে তবেই সফলতা আসবে।
আসলে সে অর্থে আমি লেখক নই। শখের বসে লিখি। আপনারা উৎসাহ দেন এটাই পরম প্রাপ্তি।
ভালো থাকুন সবসময়।
ছাইরাছ হেলাল
তবে কি আপনাকেও আমরা গবেষকের মর্যাদা দিব!!
শর্ট-কাট সাফল্যের রাস্তা বলে দিলে ভাল হতো, আঙ্গুল থেকে বেল গাছ বেরিয়ে যেত !!
সুপর্ণা ফাল্গুনী
আঙুল থেকে বেল গাছ!! 😇😇
তৌহিদ
কলা গাছ থেকে বেল গাছ! দেখেছেন ভাইজানে কত্ত বড় স্বপ্ন দেখাতে জানে! ☺
তৌহিদ
গবেষকদের গবেষিত বিষয় জানতে হলে নিজেকেও কিঞ্চিত গবেষণা করতে হয় মহারাজ।
শর্টকাট বলতে কুনু কিচ্ছুনাই। রাতে মজার মজার স্বপ্ন দেখেন, সকালে ফুলে কুমড়ো হয়ে যান ☺
ধন্যবাদ ভাইয়া।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
পুরোপুরি সহমত পোষণ করছি আপনার সাথে। খুব ভালো লাগে আপনার সমসাময়িক বিষয় নির্বাচন, তাকে এতো সুন্দর করে বিশ্লেষণ করে আমাদের জন্য তুলে ধরা। অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। শুভ সকাল
তৌহিদ
ধন্যবাদ দিদিভাই, আসলে কাউকে না কাউকে বলতেই হয়। একজনও যদি বোঝে সেটাই স্বার্থকতা।
ভালো থাকুন সবসময়।
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
বস্তুনিষ্ঠ সময়োপযোগী একটি সুন্দর লেখা। আমাদের মন মানসিকতা সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন। আমরা মেধাকে কাজে লাগাতে চাই না । বরং আপনার মতে “সমস্যা হচ্ছে আমাদের মননে। অল্প খাটুনিতে বিস্তর লাভে বিশ্বাসী আমরা”। আমরা অদ্ভুদ একটা জাতি। গবেষণা না করে , মেধা মননের বিকাশ প্রকাশ না ঘটিয়ে শর্ট কাটে ধনী হতে চাই। দেশকে কিছু দিতে চাই না। সুন্দর লেখার জন্য অভিনন্দন আর শুভেচ্ছা।
তৌহিদ
ধন্যবাদ ভাই, আমার প্রতিটি লেখায় আপনার মন্তব্য অনুপ্রেরণা দেয়। আসলে অকাজের কাজি হবার থেকে কাজের কাজি হওয়াই উত্তম। নিজের ও দশের চিন্তা করতে হবে সবার।
ভালো থাকুন ভাই।
সুরাইয়া পারভীন
আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে কবে চাকরি হবে তা ভেবে নিজের মেধাকে পা দুলিয়ে ফেসবুক গবেষনায় কাজে থাকি ব্যস্ত।…. দারুণ দারুণ বলেছেন।
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং চমৎকার সমসাময়িক পোস্টের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে। তখন বিশ্ববিদ্যালয় অব্দি হাত খরচ পড়াশোনা খরচ পরিবার বহন করে তখন কী দরকার বলুন এতো খাটাখাটুনি আর চাপ নেবার। শর্টকাটে বড়লোক হওয়ার টেনডেন্সি কাজ করে আমাদের আর আমরা হবো গবেষক….বালাই সাট। এতো সময় কই ভেবে চিন্তে আবিষ্কারে মনোনিবেশ করতে!!
তৌহিদ
হ্যা আপু, অকাজে সময় এবং মেধা ব্যয় না করে কাজে ব্যয় করা উচিত। নিজেদের সাবলম্বী হওয়ার তাড়না নেই বলেই এ অবস্থা।
ভালো থাকুন আপু।
ইঞ্জা
ভাই লেখাটি যথার্থ সময়েই দিলেন, দুঃখজনক ভাবে এই দেশে তেমন গবেষণা হয়না, হবেও বা কোথা থেকে?
উগান্ডার মতো দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী যদি চিকিৎসা বিদ্যায় পারদর্শী হোন আর আমাদের দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী এমএ পাস হোন, তাহলেই বুঝতে পারছেন আমরা কই আছি।
আমাদের দেশের মন্ত্রী জানেন না ফার্মাকোলজি কি, এর মানে এই দেশে ফার্মাকোলজি করা ফার্মাসিস্টদের কোনো মূল্য নেই, নেই গবেষকদের মূল্য, তাহলে কিভাবে এইদেশ আগাবে বলুন?
তৌহিদ
ভাই কি আর বলবো! নিজেরা মুর্খ বাকী সবাইকেই ভাবে সেরকম। আর ফেসবুকে এত এত গবেষক! দিবালোকে এদেশকে সিংগাপুর মালয়েশিয়া ভাবা অসম্ভব কিছু নয়।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাই। শুভকামনা জানবেন।
ইঞ্জা
সত্যই বলেছেন ভাই।
শুভেচ্ছা অবিরত।
রেজওয়ান
যথাযথ লিখনি ভাই। আসলে আমাদের দেশে কিভাবে গবেষণা হবে বলুন? যে দেশের এক মহলের খাই খাই সভাব তো আরেক মহল বলে “গোল্লায় যাক আমার তাতে কি?” সেদেশে কিভাবে সম্ভব সব সহজে পাওয়া😭
তৌহিদ
এটাও ঠিক! আমরা একে অন্যের প্রতি সহানুভূতিশীল নই। হিংসের ডিপো আর কি! কেউ ভালো কিছু করতে গেলে আরেকজন এসে বাগড়া বাধায়।
ভালো থাকুন ভাইন
সুপায়ন বড়ুয়া
“আমরা নীলক্ষেত থেকে থিসিস পেপার সংগ্রহ করে সাবমিট করি। চাঁদে সাইদীকে কিভাবে দেখা যায় এটাকে গবেষণা দিয়ে প্রমাণ করি,”
সুন্দর বিষয়ে যতার্থ বিশ্লেষন করেছেন। সমস্যা হচ্ছে সবকিছুকে রাজনীতিকরন করে ফেলি। আর সর্টকাটে অর্জন করার মানষিকতা।
এন্টিবডি টেষ্ট কীট কে করোনা টেষ্ট কীট বলে সস্তা সেন্টিমেন্ট কাজে লাগিয়ে ফায়দা লুটার চেষ্টা।
এই মননশীলতা থেকে বের হতে না পারলে কোন কাজেই আসবে না।
শুভ কামনা।
তৌহিদ
নষ্ট রাজনীতি আমাদের রন্ধ্রে মিশে গিয়েছে। দেশের মানুষের মেধাকে সুকৌশলে নষ্ট করার একটা পায়তারা লক্ষণীয় দাদা।
আর ফেসবুকের অপব্যবহার করে সস্তা সেন্টিমেন্ট গ্রো করানো এটা এদেশেই সম্ভব। হুজুগে মাততে আমরা পছন্দ করি যে! এটা তারা ভালো করেই বুঝে গিয়েছে।
ভালো থাকুন দাদা। মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
সাবিনা ইয়াসমিন
দিবা স্বপ্ন গুলোই সব সময় নিয়ে নেয়, নির্দিষ্ট কোনো কিছু নিয়ে মেধা শ্রম খরচ করে গবেষণা করার সময় কই? অন্যান্য দেশে যাবতীয় সভা-সেমিনার, সম্মেলন, গবেষণা, শিক্ষা-চিকিৎসা, বিচারকাজ সব হয় নির্ধারিত স্থানে। আমাদের দেশের এগুলো আটকে আছে চায়ের দোকান আর ফেসবুকে।
দিনদিন আপনার লেখার ভক্ত হয়ে যাচ্ছি তৌহিদ ভাই।
আরও লিখুন,
শুভ কামনা 🌹🌹
তৌহিদ
হা হা হা একদম ঠিক বলেছেন। আমরা সভা সেমিনার চায়ের স্টল আর ফেসবুকেই করে স্বাছন্দ্যবোধ করি আপু। এর কারন হচ্ছে সবাই সহমত ভাই বলবে। আমি যা বলবো তাই ঠিক, অন্যরা কি বললো তা শোনার সময় কই। এই মিথ্যে প্রবঞ্চনা আমাদের মেধাকে বিলীন করে দিচ্ছে।
পাঠক লেখার ভক্ত এ কথা জেনে লেখকের মন খুশিতে ভরে উঠেছে জেনে রাখুন।
শুভকামনা সবসময়।
নিতাই বাবু
আমাদের দেশে মাঠে-ময়দানে গলা ফাটিয়ে জাতির পিতার মতো তর্জনী উঁচিয়ে বজ্রকণ্ঠে ভাষণ দিতে পারলেই উনি নেতা হয়ে গেলেন। কারচুপির মাধ্যমে জনগনের ন্যায্য অধিকার ভোটে নির্বাচিত হয়ে তিনিই মাননীয় মন্ত্রিত্ব পেয়ে গেলেন। নাই-বা-থাকুক উনার কোনও ডিগ্রিধারী একাডেমিক সার্টিফিকেট। আর নাই-বা-থাকুক উনার জনপ্রতিনিধিত্বশীল অভিজ্ঞতা। তাতে কোনও সমস্যা আমাদের এই সোনার বাংলায় নেই। তাই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মতো আমাদের দেশে তেমন কোনও কিছু নিয়ে গবেষণা হয় না এবং চেষ্টাও করে না। যদিও করে থাকে তারপরও ওইসব গবেষণায় সাকসেসফুল হবে না। কারণ যিনি গবেষণা করে একটা নতুন জিনিস আবিস্কার করেছে, তিনি দেশের কোন দল করেন; সেটা নিয়েই আগে সরকার মহলে গবেষণা হবে। আপনার লেখাটি পুরো পড়েছি। লেখার বিস্তারিত নিয়ে আর কোনও আলোচনায় আমি যাচ্ছি না। তবে বুড়িগঙ্গায় এলএম মর্নিং বার্ড নিমজ্জিত হবার ১৩ ঘণ্টা পর লঞ্চের ভেতর থেকে একজনকে জীবিত উদ্ধার করা নিয়ে বলতে চাই, এটি হলো পৃথিবীর সবচেয়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী মুভির একটা দৃশ্য। এই মর্মান্তিক দৃশ্য ঘটে যাওয়া সাভারের বিধ্বস্ত রানা প্লাজার নিচ থেকে ১৮দিন পর রেশমা নামের নায়িকাটিকে জীবিত উদ্ধারের ঘটনাকেও হার মানায়। এই দৃশ্যধারন করা শুধু আমাদের দেশেই সম্ভব। আর পৃথিবীর অন্যকোনো দেশে এই মারাত্মক দৃশ্য ধারণ করা সম্ভব নয় বলেই আমি জানি।
সবার জন্য শুভকামনা থাকলো শ্রদ্ধেয় দাদ।
তৌহিদ
আমরা বাজে কাজে সময় অপব্যয় করতে পছন্দ করি। আর রাজনীতিকরনের নোংরামি আমাদের রন্ধ্রে মিশে গিয়েছে দাদা।
জীবিত মৃত সে বিতর্কে যাবোনা। কথা হচ্ছে জীবিত পেয়েছে একজনকে তাতে সমস্যা কোথায়? আদতে যে লোকটিকে পেয়েছে সে জনসমক্ষে আসলো, দশজন তাকে চিনলো। দেখা যাবে সে সমাজে একটা পরিচিতি পেলো এতে আমার আপনার কারোরেই সমস্যা হবার কথা নয়।
কেন যে ফেসবুকে এসব নিয়ে মাতামাতি করে অনেকেই সেটাই বোধগম্য নয়। সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ দাদা।
শুভকামনা জানবেন।
কামাল উদ্দিন
এদের নাম দিয়েছি আমি ফেজবুক বিজ্ঞানী। ওনাদের জ্ঞানী বিশ্লেষণ পড়লে মনে হয় একেকজন এই বিষয়ে পিএইচডি করা পাবলিক। হেন কোন বিষয় নাই যে ওনাদের পিএইচডি জ্ঞান নাই। এসব পড়লে নিজেকে খুবই গোবেচারা মনে হয়। রানা প্লাজায় উদ্ধারের সময়ও ওনাদের এমন জ্ঞান গর্ব আলোচনা জাতিকে ধন্য করেছিল। ওনারা কিন্তু স্পটে গিয়ে কখনো উদ্ধার অভিযানে অংশগ্রহণ বা রক্ত দেওয়া কর্মসূচিতে স্বশরীরে অংশ গ্রহণ করেন না। কারণ পিএইচডি নিয়া যেখানে সেখানে নেমে পড়ে তো এর অবমাননা করা যায় না………ভালো থাকবেন ভাই।
তৌহিদ
ভাই একদম ঠিক। এদের অত্যাচারে ফেসবুক আর ভালো লাগছেন। অথচ এই বিশ্লেষনী ক্ষমতা ভালো কাজে ব্যয় করলে সকলেই উপকৃত হতো। হুজুগে মাততে আমরা ওস্তাদ!
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া। শুভকামনা রইলো।
নাতনী কেমন আছে?
কামাল উদ্দিন
নাতনী খুব ভালো আছে তৌহিদ ভাই
তৌহিদ
আলহামদুলিল্লাহ।
প্রদীপ চক্রবর্তী
দাদা
এ লেখা দু দুবার পড়েছি।
আমরা না খেলে দাবার গুটির রাজা পেয়ে জয়লাভ করতে চাই। সেটা আমাদের ঐতিহ্যগত এক খায়েস বলা যায়।
তাই এই দেশে অনেকে রাজার মুকুট পরতে চায় অভিষেক না গা ভাসিয়ে।
সমসাময়িক লেখনী দাদা।
প্রদীপ চক্রবর্তী
#ফেইসবুকবোদ্ধারা
…
আমরা কী বুকে হাত দিয়ে বলতে পারিনা আমরা করোনা ভ্যাকসিন তৈরি করতে যাচ্ছি?
পাশের দেশসহ অনেক দেশ ভ্যাকসিন তৈরি করতে যাচ্ছে।
কিন্তু বাংলাদেশ এসবে পিছিয়ে কেন?
.
ফেইসবুকবোদ্ধার
শুধু স্যাটাসে বিবর্তন আর পরিবর্তনের সহমত না জানিয়ে মাথা কাটালে এদেশ পিছিয়ে পড়তো না ভ্যাকসিন তৈরিতে।
১৩ ঘণ্টা জলের নিচে লোকটি কিভাবে বেঁচে থাকলো আর সেটা নিয়ে হাস্যরসাত্মকের কিছু নেই।
মাথা কাটালে রহস্য বের করা সহজ।
যেমন : কান টানলে মাথা আসে। বরং তাই করুন।
চীন ভারত যুদ্ধ লাগবে সেটা তাঁদের ব্যাপার।
তার আগে আমরা একেক দেশের পক্ষ নিয়ে বসে থাকি। যে রাষ্ট্র যত শক্তিশালী তার পক্ষে।
যেমন: শক্তের ভক্ত আমরা।
মাথা কাটান ফলাফল যুদ্ধ কারো জন্য মঙ্গল নয়।
চীন করোনার কর্তা।
তাই তাকে গালি দিলেন।
চীন বাংলাদেশকে ৯৭% পন্যে ডিউটি ফ্রী, করোনা ভ্যাক্সিন, ইত্যাদি দিতে যাচ্ছে।
তাই আপনি তার গুণগান গাইবেন সেটা স্বাভাবিক।
সেটা কেন দিচ্ছে ভেবেছিলেন?
তার মানে কি যার নুন খাইবেন তার গুণ গাইবেন।
গাঁজারতলি পাহাড় বাইয়া যায়’ তাকেও সাদরে গ্রহণ করলেন। আপাতত আপনি চীন ভক্ত!
সরকার প্রার্থনালয় খুলে দিচ্ছে না সরকারকে গালি দিলেন। এখন কী করছেন ফেইসবুকবোদ্ধার?
বাংলাদেশে করোনা আসবেনা!
তাই ফেইসবুকবোদ্ধারা উত্তর,দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিমে বন্দনা করেছেন। ফলাফল অগ্রযাত্রা।
করোনা কিট অনুমোদন পাচ্ছেনা এদেশ!
৩৮ তম বিসিএস ক্যাডারে প্রথম ছয়জন ডাক্তার।
যেইদিন করোনা ভ্যাকসিন পরিপূর্ণভাবে মানুষের কাজে লাগতে যাবে সেইদিন থেকে ভ্যাকসিনকে নিয়ে রাজনৈতিকতা শুরু হবে।
তাও আবার ফেইসবুকবোদ্ধাদের মাধ্যমে।
আপনি চীন,পাকিস্তান, ভারত কোন রাষ্ট্রকে ছাড়তে পারবেনা!
ফেইসবুকবোদ্ধারা দাবার গুটিতে রাজা হতে চায় সবসময়।
.
এদেশের লোককে পরিপূর্ণ শিক্ষায় শিক্ষিত করা সম্ভব নয় কেননা আমরা হাইব্রিডে বিশ্বাসী।
গাছের লাউ বড় হওয়া চাই একথায় বাম্পার ফলন চাই। সেটা পরিশ্রম না করে।
আমরা অল্প মাথা কাটিয়ে অল্প জ্ঞান অর্জন করে বিশ্বের সবকিছু অনুসন্ধান করতে চলি। যা আমাদের ঐতিহ্যগত দোষ।
আমাদের অভ্যন্তর নোংরামিতে ভরা তাই অন্যান্য দেশ তা দেখে হাসে।
আমরা চাই জনসংখ্যা কমাতে ছেলে হোক বা মেয়ে হোক দুটি সন্তান যথেষ্ট। এখন একটা হলে ভালো।
যা শুনে ফেইসবুকবোদ্ধারা হাসে।
ভাই অন্যদেশকে নিয়ে সমালোচনা করার পূর্বে ঐ দেশের সমকক্ষ শিক্ষা আপনাকে গ্রহণ করতে হবে।
তা না হলে জলের মাছ আপনার বিছানায় দেখবেন।
আপনি যুক্তি কাটিয়ে বলতে পারেন কিছু মাছ আসে যা বজ্রপাত হলে এমনি হয়।
আমরা যুক্তি না কাটিয়ে জ্ঞান আহরণ না করে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজমুকুটের কোহিনূর হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করতে চাই।
আর এ স্বপ্ন গ্রামের চায়েরকাপের চুমু থেকে বিশেষ করে ফেইসবুকবোদ্ধারা দেখে।
কিন্তু ফলাফল চকলেট বা লজেন্স চুষে দিনশেষে।
সেটার মেইড পাকিস্তান বা চীনের হতে পারে।
যাই বলুন একটা কথা মনে রাখবেন দেশের সকলকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। সাথে অভ্যন্তরের ছ্যাঁছড়ামি নোংরামি পরিহার করতে হবে। আপনার ছেলে দেশের সুনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় পাস করে যে শিক্ষা লাভ করেছে তার চেয়ে অধিক শিক্ষায় শিক্ষিত করুন। যে শিক্ষা কাজে লাগাতে পারে দেশ ও জাতির স্বার্থে।
তারপর ভাবতে দিন আপনার ছেলেকে বৈশ্বিকভাবনায়।
গেইম খেলুন ইচ্ছেমত গেইমে আপনার জয়লাভ নিশ্চয়। তখন দাবার গুটি রাজা আপনি পেয়ে যাবেন।
তৌহিদ
এটা স্ট্যাটাসেও দিয়েছ দেখলাম! চমৎকার লিখেছ কিন্তু!
ভালো থাকো দাদাভাই।
তৌহিদ
ঠিক বলেছ দাদা,ঢাল নেই তলোয়ার নেই, নিধিরাম সর্দার! নিজেদের ভাবে রাজা। অথচ দিবাস্বপ্নে মাতোয়ারা সবাই এটা বুঝতেই চায় না।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ দাদা।
প্রদীপ চক্রবর্তী
আপনার লেখা পড়ে এই লেখাটা লেখলাম দাদা।
আর এসব লেখা লিখতে একটু হিমসিম খেতে হয়।
সাধুবাদ আপনাকে।
আরজু মুক্তা
এজন্য আমরা দোষী। আমরাই পারিনা ছেলেমেয়েদেরকে বিজ্ঞান মনষ্ক করে তুলতে। এক বিসিএস
ঐটাই শেষ। বাহিরের দেশগুলো তা করেনা। ওখানকার ছেলেমেয়েদের গবেসণার কাজে দেয়া হয়।
তৌহিদ
ঠিক ববলেছেন আপু। ছোটবেলা থেকেই আমাদের শুনতে হয়, পড় চাকরি করো এসব। গোটা সিস্টেমটাই নড়বড়ে করে ফেলেছি আমরাই। গবেষণার দিকে কেউ ঝুঁকতে চায় না।
ধন্যবাদ আপু।
জিসান শা ইকরাম
বাংলাদেশের ফেইসবুকাররা প্রায় সবাইই গবেষক। আমেরিকার নাশায়ও এই মান সম্পন্ন বিজ্ঞানী নাই। এরা সর্ব বিষয়ে অভিজ্ঞ গবেষক।
গপিস্ট জাতি গপ্প করার মত একটা বিশাল প্লাটফর্ম পেয়েছে। কাজে লাগাচ্ছে তা।
অত্যন্ত ভালো পোস্ট,
শুভ কামনা।
সঞ্জয় মালাকার
একদম সত্যি বলেছেন ভাইজান,
গবেষক না হলর ডাল ভাত খাবো কি করে।
মন্তব্যে সহমত পোষণ করছি
ভালো থাকবেন সবসময় শুভ কামনা।
তৌহিদ
ধন্যবাদ সঞ্জয় দাদা, ভালো থাকুন।
তৌহিদ
একদম ঠিক ভাইজান। ফেসবুককে আমরা গালগপ্পের প্লাটফরম বানিয়েছি। অথচ কত ভালো কাজেও ব্যবহার করা যায় এটি। এখানে অনেক্বি গবেষক!
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাই।
সঞ্জয় মালাকার
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা,
শুভ কামনা অফুরন্ত।
আতকিয়া ফাইরুজ রিসা
ফেসবুকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গবেষণার মতো মজাদার আর কিছু নাই। গবেষণা আমাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। শুধু কি নিয়ে গবেষণা করা হচ্ছে, সেটা জিজ্ঞেস করে নিজের মান সম্মানে আঘাত হানবেন না। আমরা গবেষক জাতি! আর কেউ না জানুক, ফেসবুক জানে!
অনেক চমৎকার একটি লেখা ছিলো। চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়ার মতোই।
তৌহিদ
ফেসবুক হচ্ছে শয়তানির আখড়া। ভালো কাজে অনেকেই ব্যবহার করিনা একে। এর নেশা থেকে বেরোতে না পারলে সামনে অন্ধকার, সুন্দর বলেছেন।
শুভকামনা সবসময়। মন্তব্যে অনেক ভালোলাগা রইলো।
আলমগীর সরকার লিটন
তৌহিদ দা অনেক ভাল লেখেছেন
স্যালুট জানাই————–
তৌহিদ
ধন্যবাদ লিটন ভাই, ভালো থাকুন সবসময়।
হালিম নজরুল
অল্পতে অনেক বেশি পাওয়ার নেশা আমাদের অনেক পুরণো অভ্যাস। কিন্তু শর্টকাট কোনকিছুই ভাল না। আপনার লেখাটি অনেক গবেষণালব্ধ ফল। ধন্যবাদ ভাই।
তৌহিদ
একদম ঠিক বলেছেন ভাই। শর্টকাট রাস্তার চেয়ে পাওয়া কষ্টকর রাস্তায় হাটার সাফল্যের হার বেশি। কিন্তু কতজনেই তা বোঝে! গবেষণা জায়গামত করাই উচিত।
ভালো থাকুন ভাই।