
মধু মাস, জানেন কি কেন এই মাসকে মধু মাস বলা হয়?
আমিই বলে দিচ্ছি, এই মাসেই আম, জাম, লিচু, কাঁঠাল সহ সকল দেশিয় ফল গুলো পাঁকে এবং এই সময়েই আমাদের রসনা তৃপ্তির জন্য এইসব ফল গুলো সারা দেশের প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরেই পোঁছে যায়, এই সময়ই আমরা কব্জি ডুবিয়ে দেশিয় ফলফলাদি ভক্ষণ করে থাকি।
এই সময়েই আমের বিভিন্ন জাত বের হয়, যার মধ্যে লেংড়া, হাঁড়িভাঙ্গা, হিমসাগর, খিরসাপাতি সহ বেশ অনেক জাতের আম পাওয়া যায়, কাঁঠালেরও রকম ফের আছে, লিচুরও আজকাল বিভিন্ন রকম জাত পাওয়া যাচ্ছে, এ সময়ের প্রায় সব ফলই খুবই মিষ্টি হয় বলেই একে বাঙ্গালীরা মধু মাস বলে।
আমার পরিবারেও এই সময় ফল খাওয়ার ধুম পড়ে যায়, ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি আব্বা বৈশাখ, জৈষ্ট মাস এলেই বাজারে নতুন আসছে এমন ফল গুলো নিয়ে আসতেন, আমরা দুপুর রাতের খাবারের পরই ফল খাওয়া শুরু করতাম, আম্মা সবাইকে বাটি ভর্তি করে কিউব করা আম দিতেন খাওয়ার জন্য, ছোট আম হলে আম্মা ঝুড়ি ভর্তি করে ডাইনিং টেবিলে দিতেন, আমরা নিজেরাই ছিলে ছিলে খেতাম।
আবার ভীষণ মিষ্টি জাতের আম গুলো দিয়ে খেতাম আম দুধ ভাত,,আহা এখনো মুখে লেগে রয়েছে।
কাঁঠালের কিছু জাত আছে বলেছিলামনা, দেশের বিভিন্ন জায়গার কাঁঠালের কোয়া ছোট আকারের হয় আবার কিছুটা বড় আকারেরও হয়, চট্টগ্রামে কিছু কাঁঠাল আছে যার কোয়া আমি দেশের আর কোথাও এতো বড় হতে দেখিনি, আহা সে কি স্বাদ এর, একটু শক্ত কিন্তু ভীষণ মিষ্টি, যারা ডুরিয়ান দেখেছেন বা খেয়েছেন তাদেরকে বলছি, এই কাঁঠাল কোয়া গুলো ডুরিয়ানের কোয়ার সাইজের হয়, একে বলে খাজা কাঁঠাল।
এই কাঁঠালের গাছ ছিলো আমার সেঝ খালার শ্বশুর বাড়িতে, সেইখান থেকে প্রায় আসতো আমাদের জন্য, আমরাও খেতাম সেই রকম করে, আহা এখনো মিস করি সেই কাঁঠাল।
আমি, কাঁঠাল, লিচু তো চলতোই সবসময় আর কালো জাম খেতাম ভর্তা করে, রসুন, শুকনো মরিচ, সর্ষে তেল সহযোগে ভর্তা, আহা কি সেই স্বাদ।
আমার আব্বার মতোই আমিও হয়েছি ফল পাগল, প্রতি সিজনেই আমি এখনো সিজনাল ফল গুলো আনি, এখনো আম দুধ খাই, ঢাকাতে কাঁঠাল কিনতে গেলে বুঝে শুনে কিনি, কেমন করে কিনি তা বলি, কাঁঠাল কেনার সময় দেখি কাঁঠালের উপরের কাঁটা সদৃশ পিঠটা কেমন, তা কি ঘন কাঁটা কাঁটা নাকি হাল্কা হাল্কা?
হাল্কা হলে দেখি পাকাটা কেমন, এরপর কিনি, যেমন কিনি তরমুজ।
তরমুজ আমি কালোটাই কিনি, হাল্কা চপেটাঘাত করে দেখে কত ফাঁকা মনে হচ্ছে, এরপর গোড়াটা দেখি, গোড়াতে সামান্যতম লতা থাকলে চুক্তি করি কেটে দেখাতে হবে লাল কিনা, লাল নাহলে নেবোনা।
আনারস আমি কিনি ছোটো জাতেরটা, এটাই বেস্ট, বড় গুলো পানসা হয়।
কালো জাম কিনি উজ্জ্বল কিনা দেখে, সাথে যদি হয় বড় তবেই কিনি।
আমেরও বিষয় আছে, আমি হিমসাগর আর লেংড়া বেশি কিনি, ফজলি সহ অন্যগুলোও খাই কিন্তু তা অনুপাতে কম।
একসময় বৈচি ফল বেশ পাওয়া যেতো যা প্রচুর খেতাম, সাথে খেতাম বেত ফল যাকে চিট্টগ্রামে বেতগুলা বলা হয়, আমাদের নিজেরই শরিফা, পেয়ারা, সফেদা গাছ ছিলো বলে বাজার থেকে কেনা কম হতো, তখন গাব ফলও বেশ পাওয়া যেতো যা আজকাল দেখায় যায়না, দেশের অনেক ফল এখন বিলুপ্ত প্রায়, যা আমাদের সন্তানেরা দেখেইনি যা আমরা দেখেছি ও খেয়েছি।
জাম্বুরা আমার বেশ প্রিয় ফল গুলোর একটি।
সমাপ্ত।
ছবিঃ গুগল।
জনস্বার্থেঃ
২৪টি মন্তব্য
প্রদীপ চক্রবর্তী
মধুময় মধুমাসের ফলগুলোর
দারুণ বিবরণ দিলেন দাদা।
লেংড়া, ফজলি আম ছাড়া, বারিপৌষ, বারি -4/5 আছে। দেশি আম তো আছেই।
বাড়িতে প্রচুর ফলের গাছ আছে দাদা।
আমাদের কিনতে হয় না।
কিন্তু কাঁঠাল খেতে পারি না অসহ্য গরম লেগে যায়।
এছাড়া এইবার মাল্টা বাগান করেছি ২৫ শতক জায়গায়।
মধুময় মধুমাসের ফলেল শুভেচ্ছা দাদা।
সিলেট আসার আমন্ত্রণ রইলো।
ভালো থাকুন অনেক।
ইঞ্জা
বাহ দারুণ তো, আপনি সৌভাগ্যবান দাদা, নিজেদেরই ফলের বাগান আছে, আপনি তো হলেন বাদশা মানুষ, নিশ্চয় আসবো দাদা। 😊
সুরাইয়া পারভীন
আরে ধুর!!
জিহ্বায় পানি এসে গেছে
মধ্যরাতে এতো এতো ফল খাওয়ার গল্প শুনে।
ফলগুলো চেনার উপায় বলে দেবার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানবেন ভাইয়া। জাম আমার ভীষণ প্রিয়
একদিন একশ পঞ্চাশটার অধিক জাম খেয়েছিলাম। আম লিচু জাম কা
ইঞ্জা
আপু আমার জিহবা কি আর থেমে ছিলো? 😂
একশো পঞ্চাশটা 🤪 ওরব বাবা। 😄, আপু লাখখে ফেলুন না আপনার অভিজ্ঞতা।
সুরাইয়া পারভীন
আম লিচু জাম কাঁঠাল আমাদের বাড়িতেই হয়।
আমাদের কাছের কাঁঠালের কোয়া ছোট বড় দুটোই আছে। যে কাঁঠাল আমার বেশি পছন্দ ছোট খাজাতি আর দুর্দান্ত মিষ্টি। একদিন একটা কাঁঠাল গোটা খেয়েছি
ইঞ্জা
আহা আপনিও দেখছি সৌভাগ্যবান, আপনাদের সবই আছে, আমরা শহরে যারা থাকি আমাদের কথানেই খেতে হয়। 🙄
কাঁঠালের পাড় ভক্ত আমি। 😁
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ভাইয়া আমিও ফল পাগল তবে মিষ্টি ফল বেশী প্রিয়। এই গরম অসহ্য লাগলেও দেশী ফলের সমাহার এর জন্য সারাবছর অপেক্ষা করি এই সময়টার জন্য। লিচু , আম, তরমুজ, জাম, কাঁঠাল, জামরুল, বৈচি আমার খুব প্রিয়। ধন্যবাদ আপনাকে ফলের বিষয়টি নিয়ে আসার জন্য।
ইঞ্জা
হাত মিলান আপু, করোনাকাল চলে গেলে দুই ভাই বোন মিলে ফলের আসর বসাবো, সাথে মজা করে করে খাবো। 🤗
সুপর্ণা ফাল্গুনী
আচ্ছা
ইঞ্জা
😁
ছাইরাছ হেলাল
ভাই এমন করে লোভাতুর করা ঠিক না,
আমাদের এদিকে অন্যন্য বারের তুলনায় প্রায় কিছুই পাওয়া যাচ্ছে না।
শুধু হাহাকার পাওয়া যাচ্ছে।
আল্লাহর মাল কখন কোথায় লইয়া যায় কে জানে, অপেক্ষা করি, দেখি না কি হয়।
ইঞ্জা
কি বলেন ভাইজান, ঢাকার বাজার তো ছেয়েই গেছে, আপনাদের ওখানে নেই শুনে আফসোস হলো, আহারে। 🤔
আরজু মুক্তা
সব বুঝলাম। একদিন সব ব্লগারদের ফলের দাওয়াত দেন।
মিলনমেলাও হলো, খাওয়াও হলো।
আহ্ মধুমাস
ইঞ্জা
আপু করোনাকাল চলে যাক, তারপর নিশ্চয় হবে ফলের মিলনমেলা। 😋
সুরাইয়া নার্গিস
দারুন লাগলো, আমার ফল বেশি পছন্দ না তবে ভাইজান আপনার লেখা পড়ে নতুন করে ফলের প্রতি লোভ হচ্ছে।
আমরা শহরে থাকে সবগুলো ফল চিনি না তবে ইনশাল্লাহ্ আস্তে আস্তে চিনে ফেলব।
ইঞ্জা
আপু আমিও শহরের ছেলে, কিনতে কিনতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছি, ফল খাওয়ার ফলও আছে, শরীরের জন্য খুবই ভালো।
তৌহিদ
মধুমাসে ফলের সমাহার নিয়ে পসরা বসিয়েছেন দেখছি। এবারে কোন ফলই খাওয়া হয়নি তেমন একটা! করোনার জন্য অবশ্যই।
ভালো থাকুন দাদা। চমৎকার পোষ্ট পড়লাম।
ইঞ্জা
আমারও একি অবস্থা ভাই, দুই বার আম খেলাম ছেলের বন্ধুর কল্যানে, আজ খেলাম তালের শাষ, জানিনা আল্লাহ কবে এই করোনা নিয়ে যাবে। 😭
শামীম চৌধুরী
জৈষ্ঠ্য মাস
মধুর মাস
ফল না খেয়ে
কেউ থাকে না উপাস।
হরেক রকমের ফলের পসরা দেখে ইচ্ছে করছে অনলাইনে আপনাকে অর্ডার করি। যেন পেতে পারি। সময়োপযোগী লেখা।
ইঞ্জা
ভাই বুদ্ধি তো ভালোই দিলেন, ভাবিছি ফল নিয়ে অনলাইন ব্যবসা করবো কিনা? 😁
মোহাম্মদ মনজুরুল আলম চৌধুরী
মধুমাসের রসালো ফল নিয়ে রসালো এবং সুন্দর লেখা।
ইঞ্জা
আন্তরিক ধন্যবাদ ভাই, এই সময় ফল নিয়ে পোস্ট না দিলে কেমনে হয় বলুন? 😁
হালিম নজরুল
করোনার আঘাতে মধুমাস ভুলে গেছি ভাই।
ইঞ্জা
স্বাভাবিক ভাই, এ সময় আগের মতো করে ফল খাওয়া হচ্ছেনা, যদিও এই সময় বিশেষ করে করোনাকালে ফল খাওয়াটা জরুরী।
ধন্যবাদ ভাই।