
কালাম দরজা খোল।
না, আপা। নিজের জীবন তো নিজেই শেষ করছি। তারপরেও চাইনা, আপনার রিপোর্টের কারণে আমার বাচ্চা দুটার জীবন নষ্ট হোক।
কথা দিচ্ছি, আমি তোমার ছবি ছাপাবো না।
না, আপা! আপনি নামও দিতে পারবেন না।
ঠিক আছে।
আপা, কীভাবে এই পেশায় আসলাম সেটার থেকে বড় কথা হলো, কখনো ছেলেমেয়েকে বাস স্ট্যান্ড, রেলস্টেশন, চায়ের দোকান এই জায়গা গুলোতে পাঠাবেন না। সব বাচ্চার মানসিকতা এক না! দূর্ঘটনা বলে কয়ে আসে না।
যখন আমি নাইনে পড়ি, আব্বা গৃহশিক্ষক খুঁজে না পেয়ে এক বন্ধুর বাড়িতে প্রাইভেট ঠিক করেছিলো। একটু দূর দেখে সাইকেলও কিনে দিলো। আমরা চার পাঁচ জন পড়ি। ফেরার পথে একটু আড্ডা দেই রেললাইনে। আমার এক বন্ধু ছিলো পাকা। সিগারেট ও খেতো। আজ অনুরোধ, কাল অনুরোধ। না- না- না- বলতে বলতে একটু টান দেই। সে কি ঝাঁজ। মাথা জ্বলে। নাক ছন ছন করে। আসার সময় পান মুখে দিয়ে আসি। আমার বড় বোনের আবার নাক সার্ফ। এটা ওটা বলে ওর থেকে দূরে থাকি। আস্তে আস্তে দেখি সিগারেট না খেলে চলেনা।
একদিন সিগারেটের মাঝে কি যে পাতার মতো গুড়া গুড়া দিলো। ঐটা টান দিয়ে দেখি চোখ মেলে না। কতক্ষণ যে ছিলাম ওখানে! পরে আমার বন্ধুরা বাসায় দিয়ে আসে। আব্বা আমার মাথা ন্যাড়া করে দেয়। কিন্তু ঐ সুখটানের নেশা আমায় ছাড়ে না। নিজে নিজে মাল ম্যাটেরিয়াল জোগাড় করে বানানো শিখি। কেমনে কেমনে বিশাল নেটওয়ার্ক হয়। মাঝি মাছ দেয়, আমি গাঁজা দেই। আস্তে আস্তে ব্যবসা শুরু করি। কতোদিন যে পুলিশের দৌড়ানি খাইছি!
পুলিশ হইছে আর এক। মনে করেন আমার কাছে কিছু নাই, তাও থানায় নিয়া গিয়া রিপোর্ট লিখবে এক কেজি হিরোইন সহ বাস স্ট্যান্ড থেকে গ্রেফতার। আপনার আত্মীয় স্বজন বড়লোক বা পরিচিত থাকলে রাতেই টাকা দিয়া খালাস পাবেন। আবার টাকা একটু কম হইলে সোজা থানা। সবারি লোভ ঐ টাকার দিকে।
আপা, বিশ্বাস করেন। এখন নিজে খাইলেও, আর ইচ্ছা করেনা : কারও সন্তান এটাতে জড়াক। আমার নিজেরও তো সন্তান আছে।
কালাম অঝরে কান্না শুরু করলো। সে কি কান্না!
বিবেক নিজে থেকে জাগ্রত না হলে, অন্য কেউ পারবেনা আপনাকে বদলে দিতে।
আসুন নিজে বদলাই। দেশকে বদলে দেই।
ক্রাইম রিপোর্টার শান্তা: পর্ব- ১
১৮টি মন্তব্য
সাবিনা ইয়াসমিন
“ বিবেক নিজে থেকে জাগ্রত না হলে, অন্য কেউ পারবেনা আপনাকে বদলে দিতে ”
একদম ঠিক বলেছেন।
এতো তাড়াতাড়ি শেষ করে দিলেন! আরও এগিয়ে নেয়া যেতো।
আরও লিখুন,
শুভ কামনা অবিরত 🌹🌹
আরজু মুক্তা
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
প্রথম ধারাবাহিক লিখলাম। মাঝে ঈদ হওয়াতে খেই হারিয়েছি।
সামনে নিশ্চয় ভালো লিখবো
ফয়জুল মহী
অনন্য,লেখা পড়ে বিমোহিত হলাম।
আরজু মুক্তা
ধন্যবাদ ভাই
ছাইরাছ হেলাল
খুব সাদামাটা ভাবে শেষ করে দিলেন!
নুতন কিছু শুরু হবে নিশ্চয়।
আরজু মুক্তা
ঈদের কারণে খেই হারিয়েছি।
এরপর মুভি রিভিউ থাকছে।
ধন্যবাদ আপনাকে।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
আপু এতো অল্প সময়ে শেষ করে দিলেন! বিষয়টি নিয়ে তো বিশাল পর্ব হতে পারবো । মানবিকতা, বিবেক এগুলো ভিতর থেকে জাগ্রত না হলে, অনুভব না করলে কখনোই সে নিজেকে শোধরাতে পারেনা। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন
আরজু মুক্তা
প্রথম ধারাবাহিক। চেষ্টা করলাম।
সামনে আবারও লিখবো।
ধন্যবাদ, ভালো থাকবেন।
সুপায়ন বড়ুয়া
পর্ব তিনি লিখেছিলেন
এক দুই তিন।
শুরুতেই করেন শেষ
করলেন বাজিমাৎ।
শুভ কামনা।
আরজু মুক্তা
মজা পেলাম কমেন্ট পড়ে।
ধন্যবাদ দাদা
তৌহিদ
নেশা আসলে মানুষকে বিবেকবুদ্ধিহীন করে তোলে। কালামও এর বাইরে নয়। ভালো থাকুন আপু।
আরজু মুক্তা
ধন্যবাদ ভাই
জিসান শা ইকরাম
কালাম যে খারাপ কাজ করে নিজে অনুতপ্ত এটিই এই গল্পের শিক্ষা।
তিন পর্বের গল্পটা হঠাৎ এভাবে শেষ হবে ধারনা করিনি।
নতুন লেখা চাই।
শুভ কামনা।
আরজু মুক্তা
জি, এটাই শিক্ষা।
এরপর মুভি রিভিউ থাকছে।
পার্থ সারথি পোদ্দার
আপু,বেশ ভালো লাগল আপনার ধারালো লেখনী।আশা করছি আগামীতে আরো পাব।শুভ কামনা রইল।
আরজু মুক্তা
জি, ভাই।
ধন্যবাদ
মাহবুবুল আলম
আগের পর্ব দুইটা পড়া হয়নি।
এ পর্বের মাধ্যমে সমাজ বাস্তবতা ফুটে ওঠেছে।
শুভেচ্ছারইল।
আরজু মুক্তা
ধন্যবাদ, আপনাকে।