বনের গাইড রতন কৈরালার কাছে বাঘের সঠিক হিসাবটা জানার পর মনে হলো বণ্যপ্রানী চোরাকারবারী বা পাচারকারী শুধু বাংলাদেশে নয়। পৃথিবীর সব দেশের বনেই আছে। সেই মহুর্তে দীর্ঘদিনের চেপে থাকা ক্ষোভটা একটু প্রশমিত হলো। কারন ধারনা ছিলো শুধু আমাদের দেশেই বনরক্ষীদের সহযোগিতায় চোরাকারবাীরা বনের কাঠ ও বণ্যপ্রানী পাচার করে।মনে শান্তি পেলাম রতনের কাছে থেকে জানার পর।
কথার ফাঁকে ফাঁকে আমাদের জিপসী গাড়ি ধীর গতিতে বনের রাস্তা ধরে সামনের দিকে যাচ্ছে। হঠাৎ গাড়ি থামিয়ে রতনকে গাড়ির চালক ইশারা দিলো। রতন বুঝে গেল। পরে আমাদেরকে বললো শব্দ করবেন না। রতনের নির্দেশে ভাবলাম হয়তো মামার দেখা পেয়েছে। সবাই চুপ হয়ে রইলাম। উত্তেজনা বেড়ে গেল। সাথে ভয়ও। হাতের লোম কাটা দিয়ে দাঁড়িয়ে গেল। একদিকে জীবনের প্রথম খোলা গহীন বনে বাঘ দেখার আনন্দ আরেক দিকে ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফীতে এই প্রথম বাঘের ছবি তোলা। যা আমাদের দেশে হাতে গোনা কয়েকজন ফটোগ্রাফার বাঘের ছবি সুন্দরবন বা দেশের বাহির থেকে তুলতে পেরেছেন। বেশ কিছুক্ষন আমরা পিনঃপতন চুপ হয়ে গাড়িতে বসে আছি। কিছুক্ষন পর রতন গাড়ির চালককে বললো হাত দুয়েক সামনে যেয়ে গাড়ির স্টার্ট বন্ধ করতে। পরে আমাদেরকে আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করে নিম্নস্বরে বললো সাহাব’জি উধার Blue Buffalo মানে নীলগাই।
নীলগাই (পুরুষ)
জীবনের প্রথম খুব কাছ থেকে নীলগাই দেখা। তাও আবার পুরুষ নীলগাই। আমার ভ্রমনে বন্যপ্রাণীর মধ্যে নীলগাই ছিলো তালিকার দুই নাম্বারে। এটা পেয়ে বেশ ভালো লাগলো আর আনন্দে মনটা ফুরফুরা হয়ে গেল। যে যার মতন ছবি তোলা শুরু করলাম। কোন শব্দ নেই। শুধু মেশিনগানের গুলির মতন ক্যামেরার শাটারের শব্দ। যে শব্দ পাঠক নিজ কানে না শুনলে বুঝতে পারবেন না। বিরতিহীন ৬টি ক্যামেরার শাটারের শব্দে নাকি রতনের কাছে মনে হয়েছে কোন এক যুদ্ধক্ষেত্রে গুলির আওয়াজ হচ্ছে। রতনের কথা শুনার পর সবাই হা হা করে হেসে উঠলাম।
পুরুষ নীলগাইয়ের ছবি তোলার পর কয়েকশত ফুট সামনে যাবার পর আবারও দেখা পেলাম নীলগাই এর। তবে এটা মেয়ে নীলগাই। একই ভ্রমনে পুরুষ ও মেয়ে এক সাথে পাওয়াটা অনেকটাই ভাগ্যের। ফটোগ্রাফীতে নাকি আমার ভাগ্য ভাল। সঙ্গে থাকা বন্ধুরা তাই বলে। সবাই মেয়ে নীলগাই এর ছবিও তুললাম।
বহু বছর আগে আমাদের দেশে নীলগাইয়ের অস্তিত্ব ছিলো। আজ বিলুপ্ত। মাঝে মাঝে ভারত থেকে দুই একটা চাপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর সীমান্ত দিয়ে দুই একটা নদী পার হয়ে খাবার জন্য চলে আসে। গতবছর এমন একটা মেয়ে নীলগাই রাজশাহীতে পাওয়া যায়। পরে সেটাকে সেবা শুশ্রষা করে ডুলহাজারী সাফারী পার্কে ছেড়ে দেয়া হয়। দুই সপ্তাহ পর সেই মেয়ে নীলগাইটি মারা যায়।
নীলগাই মেয়ে
গাড়ি এবার কিছুটা গতিতে ছুটে চলছে। গাড়ির গতি বাড়ানোর কারন জানতে পারলাম সামনে বাঘের আরো বেশ কয়েকটি স্পট আছে। এক জায়গায় অনেকক্ষন সময় নষ্ট হলে পরে সূর্যের আলো না থাকার সম্ভবনা বেশী। যেখানে নীলগাইয়ের ছবি তুলেছি সেটাও নাকি বাঘের একটা স্পট। মাঝে মাঝে মামাকে এখানে দেখা যায়। গাইড ও গাড়ির চালক কোন অবস্থাতে আমরা যেন নিরাশ না হই সেদিকে তাদের মনোনিবেশ ছিলো চোখে পড়ার মতন। রতনের কাছে সূর্যের আলোর স্বল্পতার কথা শুনার পর আমার মনে পড়ে গেল, আমি সবসময় বলি –
”চিত্রশিল্পী ছবি আঁকে রংও তুলি দিয়ে
আলোকচিত্রী ছবি তুলে আলো দিয়ে”।
এখন যে স্পটটাতে যাচ্ছি সেটার নাম চিতল টাইগার জোন। বেশ কিছুদিন আগে এখানে বাঘিনীর সাথে দুটি বাঘের শাবক দেখা গেছে। শুনেই আবারো উত্তেজনা বেড়ে গেলা। রতনকে আমরা সবাই বললাম যদি তুমি আমাদের আজ বাঘ দেখাতে পারো তবে আমরা সবাই তোমাকে খুশী করে দিবো। জবারে রতন বললো সাহাব’জী এ্যা ম্যারা ফরজ। আপলগোকো ঘুমানা। কই জায়গা ছোড়ঙ্গাী নেহি। হার জায়গামে পাত্তা পাত্তা ছান মারুঙ্গী। বখশিষকা কই জরুরত নেহি। রতনের মুখে কথাগুলি শুনার পর ওর উপর বিশ্বাস ও ভালবাসার জন্ম নিলো।
চিতলে পৌছার বেশ আগে আমাদের মাঝে প্রফেসর আমিনুর রহমান ভাই চিৎকার দিয়ে উঠলেন। আমাকে বললেন শামীম ভাই গাড়ি থামান। আমি রতনকে গাড়ি থামানোর জন্য বললাম। ভাবলাম মামার দেখা পেল নাকি? পরে আমিন ভাই দেখালেন Indian hare বা ভারতীয় খরগোশ। ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফীতে এটাও আমার সংগ্রহে ছিলো না। আমরা গাড়িতে দাঁড়িয়ে সবাই খরগোশের ছবি তুললাম। বনের ভিতর কোন পর্যটককে গাড়ি থেকে জমিনে বা মাটিতে নামার কোন অনুমতি নেই। সম্পূর্ন নিষিদ্ধ। গাইডকে শতকোটি টাকা দিলেও সে কোন পর্যটককে এ সুযোগ করে দিবে না। কারন জানতে চাইলে জবাব পেলাম যদি বাঘ বা অন্য কোন বণ্যপ্রানীর আক্রমনে কোন দেশী বা বিদেশী পর্যটকের প্রানহানী হয় তবে তার সমস্ত দায়দায়িত্ব বন বিভাগের। যার জন্য এই একটা ক্ষেত্রে ওরা কোন আপোষ করতে রাজী নয়। তাছাড়া বেশ কয়েকটি হিংস্র প্রাণী এই বনে আছে। যারা মানুষ হত্যার করার যোগ্যতার আছে। তাদের মধ্যে বেঙ্গল টাইগার, হায়ানা ও কালো চিতাবাঘ অন্যতম।
Indian hare বা ভারতীয় খরগোশ।
মামাকে দেখতে যাওয়া পর্ব-৩ এ আমি সারিস্কা টাইগার ফরেষ্টে বেশ কিছু বণ্যপ্রানী ও পাখির নাম বলেছিলাম। যা আমাদের গাইড রতন কৈরালা থেকে জেনেছিলাম।
সেখানে আমাদের সবার প্রিয়, ব্লগের প্রাণপুরুষ ও আমার স্নেহের শ্রদ্ধাভাজন ব্যাক্তি ইঞ্জা ভাই আমার সেই পর্বে মন্তব্যে জানতে চেয়েছিলেন ভারতীয় সোনালী কাঁঠাল ও অসম্পূর্ন মাঙ্গুজ সম্পর্কে। সেটাকে আমাদের দেশে বলে Cerb eating Mangoose. আর সোনালী কাঁঠাল হচ্ছে আমাদের দেশের Golden jackal বা সোনালী শিয়াল।
আমি ইঞ্জা ভাইয়ের মন্তব্যের জবাবে বলেছিলাম পরবর্তী পর্বে ছবি সহ দিবো। যাতে সব পাঠক/পাঠিকারাও প্রানী দুটি সম্পর্কে জানতে পারে। ইঞ্জা ভাইয়ের জানার আগ্রহকে সম্মান দিয়ে প্রানী দুটির ছবি দিলাম।
Cerb eating Mangoose. বা অসম্পূর্ন ম্যাঙ্গুজ।
Golden jackal বা সোনালী কাঁঠাল।
ভারতীয় খরগোশের ছবি তোলার পর আমার ছেলে দেখতে পেলো গাছ থেকে একটি সাপ নামছে। আমাকে বলে বাবা সাপ দেখলাম। আমি বললাম কোথায়? সে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলো। ততক্ষনে সাপটি এমন জায়গায় চলে গেছে তা ক্যামেরায় ছবি তোলা সম্ভব না। পরে রতন বললো এখানেই ওর বাসা আছে ও বাচ্চা আছে। আমি জানতে চাইলাম তুমি কি করে বুঝলে? জবারে জানালো সাহাব’জী বিশ সাল এ্য বনমে হ্যায়। কাহা কাহা বনমে কোন জীব ঘুমতা ফিরতা সব আমলে হ্যায়। পরে সে সাপের বাচ্চা সহ বাসাটা দেখিয়ে দিলো। আমরা সবাই ছবি সাপের ছবি তুললাম।
খুব সুন্দর হয়েছে। যেমন বর্ণনা তেমন ছবি। তবে সাপ আমি খুব ভয় পাই। বুঝছি মামারে দেখতে আবার অপেক্ষা করালেন যেন আমাদের তৃষ্ণা বেড়ে যায় । ভালো থাকবেন সবসময়। শুভ সকাল
দিদিভাই,সাপ নিরীহ প্রানী। আমাদের দেশে ৪২ প্রজাতির সার দেখা যায়। এদের মাঝে ৮০% নির্বিষ। তারা ফলস বাইট দেয়। ভয় দেখানোর জন্য। বাকি যে ২০% তার মধ্যে কিং কোবরা, ভাইন পিট ভাইপার, রেড নেকড স্ন্যাক ও দারাজ সাপ ভয়ংকর। এরা কামড় দিলে ১০ হাত অগ্রসর হওয়া অসম্ভব। আর এদের কোন এভিএস (এন্টি ভেলম স্ন্যাক) নেই।
সুতারাং সাপ যদি কেউ চিনতে পারে তবে সাপকে ভয় পাবার কোনই কারন নেই। শুধু সাবধানতা অবলম্বন করে চললেই হয়। যে বিষহীন সাপের কামড়ে মানুষ মারা যায় তাদের ইতিহাসে জানতে পারি তারা হার্টের রোগী বা দূর্বলচিত্তের লোক। সাপ কামড়িয়েছে এই ভয়েই হার্ট এ্যাটাকে মারা গেছে।
দিদি, এখন পর্যন্ত আমি নিজেই মামার দর্শন পাইনি। যদি দেখা পাই সাথে সাথে আপনাকে জানাবো। ভালো থাকবেন।
খুব সুন্দর প্রশ্ন করেছেন ভাইজান, আপনি একজন ফটোগ্রাফার বলেই আপনার চোখে ছবির মান ও শার্পনেস ধরা পড়েছে। আপনার ক্যামেরা সম্পর্কে জ্ঞানও অনেক। তাই আমরা যারা ছবি তুলি তাদের মূল বিষয়বস্তু হলো ফোকাস। আইএসও, শাটার ও এ্যাপারচারের মাত্রা আলোর সাথে তাল দিয়ে সঠিক মাত্রায় রেখে ফোকাস করতে পারলেই ছবির মান ভালো ও পরিস্কার বা চকচকা ছবি হয়। আর এর গরমিল হলেই ছবির মানেও গরমিল হয়। তাই গাড়িতে বা নৌকায় চড়ে ছবি তুললে সেগুলিতে শাটার চাপার সময় কম্পন হয়। যার জন্য ছবি কিছুটা ব্লার হয়। আর সাবজেক্টও বেশ দূরে থাকে। এটাও একটা মূল বিষয়। আর গাড়ি ব্য নৌকায় ট্রাইপডও ব্যাবহার করা যায় না। নৌকার দুলনী ও গাড়ির কম্পনে ছবি ৩০% ব্লার হবেই। বিশ্বে এমন কোন ফটোগ্রাফার নেই যে চকচকা ছবি বের করে নিয়ে আসতে পারবে। আবার যদি সাবজেক্ট খুব কাছে হয় সেক্ষেত্রে ৯০% ছবি চকচকা হয়। আশা করি আপনার প্রশ্নের উত্তর পেয়েছেন। আপনার এই প্রশ্লের উত্তরে অনেকেই জানতে পারবেন ও শিখতে পারবেন।
ভালো থাকবেন ভাইজান।
আমি তেমন কিছুই জানি না,
ছবির প্রতি আমার অনেক আবেগ, একটু শেয়ার করি।
দৃকে ভর্তি হবো, বেসিক কোর্স না, ডিপ্লোমা, গুণিদের সাথে আলাপ হলো। শুধু জানতে চাইলো ফাইনালি,
ছবি কেন তোলেন, প্রফেশন হিসেবে নিতে চান, আরে নাহ, শুধুই ভাললাগা, ওরা বলে দিল, এই কোর্স আপনার দরকার
নেই। আপনার ছবি দেখেছি, ওতেই আপনার হবে। কত শত স্মৃতি।
আপনার ছবি দেখে শুধুই মনে হয়েছে, ভুল হতে পারে, আপনি বলার আগে, অনেক দূর থেকে ছবি নিয়েছেন বলেই
প্রধানতঃ এমন হয়েছে। অন্যান্য ফ্যাক্টরগুলো অবশ্যই আছে। সরি, আপনার ছবির বিষয়ে কথা বলে ফেলেছি।
সাথে আছি সব সময়।
ভাইজান আপনার অধিকার আছে আমার প্রতিটি কাজের আলোচনা ও সমালাচোনার। আমি কৃতার্থ। আর সরি বলা মানেই দূরে ঠেলে দেয়া। প্লীজ সরি বলে দুর সরিয়ে দিবেন না। ভাল থাকুন।
নীলগাই এর ছবি এই প্রথম দেখলাম, নীলগাই যে আছে তাই জানতাম না।
বিস্তারিত লিখে পোষ্ট দিচ্ছেন, মনে হচ্ছে আমিও আপনার সাথে গিয়েছি।
ভালো লাগছে পোষ্ট।
শুভ কামনা ভাই।
কম্পিউটার বা ল্যাপটপে পোষ্ট দিয়ে থাকলে, ছবি আপলোড করে পোষ্ট দেয়ার পরে এডিটে গিয়ে ছোট ছবিগুলোতে ক্লিক করে টেনে বড় করা যায়। এই পোস্টের কয়েকটা ছবিকে টেনে বড় করে দিয়েছে ব্লগের মডারেটর। চেষ্টা করে দেখবেন ভাই।
২৬টি মন্তব্য
সুপর্ণা ফাল্গুনী
খুব সুন্দর হয়েছে। যেমন বর্ণনা তেমন ছবি। তবে সাপ আমি খুব ভয় পাই। বুঝছি মামারে দেখতে আবার অপেক্ষা করালেন যেন আমাদের তৃষ্ণা বেড়ে যায় । ভালো থাকবেন সবসময়। শুভ সকাল
শামীম চৌধুরী
দিদিভাই,সাপ নিরীহ প্রানী। আমাদের দেশে ৪২ প্রজাতির সার দেখা যায়। এদের মাঝে ৮০% নির্বিষ। তারা ফলস বাইট দেয়। ভয় দেখানোর জন্য। বাকি যে ২০% তার মধ্যে কিং কোবরা, ভাইন পিট ভাইপার, রেড নেকড স্ন্যাক ও দারাজ সাপ ভয়ংকর। এরা কামড় দিলে ১০ হাত অগ্রসর হওয়া অসম্ভব। আর এদের কোন এভিএস (এন্টি ভেলম স্ন্যাক) নেই।
সুতারাং সাপ যদি কেউ চিনতে পারে তবে সাপকে ভয় পাবার কোনই কারন নেই। শুধু সাবধানতা অবলম্বন করে চললেই হয়। যে বিষহীন সাপের কামড়ে মানুষ মারা যায় তাদের ইতিহাসে জানতে পারি তারা হার্টের রোগী বা দূর্বলচিত্তের লোক। সাপ কামড়িয়েছে এই ভয়েই হার্ট এ্যাটাকে মারা গেছে।
দিদি, এখন পর্যন্ত আমি নিজেই মামার দর্শন পাইনি। যদি দেখা পাই সাথে সাথে আপনাকে জানাবো। ভালো থাকবেন।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
দেখলেই ভয় লাগে। ওদের বডি শেপের কারনে। এজন্য কেঁচো, সাপ, বিছা , ল্যাদা পোকা আছেনা ওগুলো কিচ্ছু দেখতে পারিনা। জঘন্য লাগে । আরেকটা হলো ইঁদুর। ছবি দেখলেও ভয় পাই
ছাইরাছ হেলাল
কিছু মনে নিবেন না, কিছু মনে হলে আমি না জিজ্ঞেস করে থাকতে পারি না।
অবশ্যই যাদের আপন ভাবি।
আপনার অন্যান্য ছবির মত এই ছবি গুলো কড়াকড়া না কেন?
শামীম চৌধুরী
খুব সুন্দর প্রশ্ন করেছেন ভাইজান, আপনি একজন ফটোগ্রাফার বলেই আপনার চোখে ছবির মান ও শার্পনেস ধরা পড়েছে। আপনার ক্যামেরা সম্পর্কে জ্ঞানও অনেক। তাই আমরা যারা ছবি তুলি তাদের মূল বিষয়বস্তু হলো ফোকাস। আইএসও, শাটার ও এ্যাপারচারের মাত্রা আলোর সাথে তাল দিয়ে সঠিক মাত্রায় রেখে ফোকাস করতে পারলেই ছবির মান ভালো ও পরিস্কার বা চকচকা ছবি হয়। আর এর গরমিল হলেই ছবির মানেও গরমিল হয়। তাই গাড়িতে বা নৌকায় চড়ে ছবি তুললে সেগুলিতে শাটার চাপার সময় কম্পন হয়। যার জন্য ছবি কিছুটা ব্লার হয়। আর সাবজেক্টও বেশ দূরে থাকে। এটাও একটা মূল বিষয়। আর গাড়ি ব্য নৌকায় ট্রাইপডও ব্যাবহার করা যায় না। নৌকার দুলনী ও গাড়ির কম্পনে ছবি ৩০% ব্লার হবেই। বিশ্বে এমন কোন ফটোগ্রাফার নেই যে চকচকা ছবি বের করে নিয়ে আসতে পারবে। আবার যদি সাবজেক্ট খুব কাছে হয় সেক্ষেত্রে ৯০% ছবি চকচকা হয়। আশা করি আপনার প্রশ্নের উত্তর পেয়েছেন। আপনার এই প্রশ্লের উত্তরে অনেকেই জানতে পারবেন ও শিখতে পারবেন।
ভালো থাকবেন ভাইজান।
ছাইরাছ হেলাল
আমি তেমন কিছুই জানি না,
ছবির প্রতি আমার অনেক আবেগ, একটু শেয়ার করি।
দৃকে ভর্তি হবো, বেসিক কোর্স না, ডিপ্লোমা, গুণিদের সাথে আলাপ হলো। শুধু জানতে চাইলো ফাইনালি,
ছবি কেন তোলেন, প্রফেশন হিসেবে নিতে চান, আরে নাহ, শুধুই ভাললাগা, ওরা বলে দিল, এই কোর্স আপনার দরকার
নেই। আপনার ছবি দেখেছি, ওতেই আপনার হবে। কত শত স্মৃতি।
আপনার ছবি দেখে শুধুই মনে হয়েছে, ভুল হতে পারে, আপনি বলার আগে, অনেক দূর থেকে ছবি নিয়েছেন বলেই
প্রধানতঃ এমন হয়েছে। অন্যান্য ফ্যাক্টরগুলো অবশ্যই আছে। সরি, আপনার ছবির বিষয়ে কথা বলে ফেলেছি।
সাথে আছি সব সময়।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
আমার ও কিঞ্চিত এ বিষয়ে ধারণা আছে আপনার লেখায় ঝালাইটা হয়ে গেল। ধন্যবাদ পাখি ভাই
শামীম চৌধুরী
ভাইজান আপনার অধিকার আছে আমার প্রতিটি কাজের আলোচনা ও সমালাচোনার। আমি কৃতার্থ। আর সরি বলা মানেই দূরে ঠেলে দেয়া। প্লীজ সরি বলে দুর সরিয়ে দিবেন না। ভাল থাকুন।
কামাল উদ্দিন
ভীষণ ভীষণ ভালোলাগে এমন গল্পগুলো পড়লে, মনে হয় আমিও জিপসির একজন আরোহী, সাটার টিপে যাচ্ছি যুদ্ধক্ষেত্রে।
শামীম চৌধুরী
ধন্যবাদ কামাল ভাই। আশা রাখি কোন এক সফরে আপনিও আমাদের সাথে সফর সঙ্গী হবেন। ভাল থাকবেন ভাই।
কামাল উদ্দিন
সেই আশায়ই তো আছি আমি ভাইজান
হালিম নজরুল
চমৎকার লেখা। তবে ছবিগুলো অন্যবারের মত না।
শামীম চৌধুরী
জ্বী।
প্রদীপ চক্রবর্তী
দাদা নীলগাই মেয়েটা নীল রঙের নয় কেন?
নীলগাই পুরুষ তো নীল দেখছি!
শামীম চৌধুরী
সেটাতো দাদাভাই সৃষ্টিকর্তা ভালো জানেন। যেমন পুরুষ কোকিল কালো আবার মেয়েটা অপরূপ সুন্দরী। অথচ পাখির জগতে পুরুষরাই সুন্দর বেশী হয়।
সুপায়ন বড়ুয়া
অপরূপ সৌন্দর্যের সমাহার
লেখা আর ছবিতে চমৎকার।
ভাল লাগলো। শুভ কামনা।
শামীম চৌধুরী
ধন্যবাদ দাদা। শুভেচ্ছা জানবেন।
আরজু মুক্তা
ভালো লাগলো ভ্রমণ কাহিনী
শামীম চৌধুরী
আপু কৃতার্থ। ভালো থাকবেন।
তৌহিদ
বাহ! চমৎকারভাবে যাত্রার টুকিটাকি লেখায় ফুটিয়ে তুলেছেন। নীল গাই, খরগোশ, বেজী, শেয়াল কত কিছু দেখলাম, জানলাম। বনে গাড়ি থেকে নামা উচিত নয় আসলে। ভাতিজার চোখে সাপ এড়ায়নি দেখছি।
উপরের মন্তব্যে ছবি ব্লার হবার কারন জানলাম। চলুক লেখা ভাইজান।
শামীম চৌধুরী
ধন্যবাদ তৌহিদ।
জিসান শা ইকরাম
নীলগাই এর ছবি এই প্রথম দেখলাম, নীলগাই যে আছে তাই জানতাম না।
বিস্তারিত লিখে পোষ্ট দিচ্ছেন, মনে হচ্ছে আমিও আপনার সাথে গিয়েছি।
ভালো লাগছে পোষ্ট।
শুভ কামনা ভাই।
শামীম চৌধুরী
আপনার জন্যও রইলো শুভ কামনা। ভালো থাকবেন।
জিসান শা ইকরাম
কম্পিউটার বা ল্যাপটপে পোষ্ট দিয়ে থাকলে, ছবি আপলোড করে পোষ্ট দেয়ার পরে এডিটে গিয়ে ছোট ছবিগুলোতে ক্লিক করে টেনে বড় করা যায়। এই পোস্টের কয়েকটা ছবিকে টেনে বড় করে দিয়েছে ব্লগের মডারেটর। চেষ্টা করে দেখবেন ভাই।
শামীম চৌধুরী
অনেক ধন্যবাদ ভাইজান। পরের বার অবশ্যই মাথায় থাকবে আপনার মূল্যবাদ শিক্ষনীয় উপদেশ।
ইঞ্জা
ভাই আমারও তো লোম দাঁড়িয়ে গেলো, সোনার কাঁঠাল তাও শৃগালের নাম বাপরে! 😱
মঙ্গুস দেখতে তো শৃগালের মতোই, বাংলায় নাম কি?
নীল গাইয়ের মাংস প্রচন্ড শক্ত, হাতুড়ি দিয়ে পিটালেও নরম হবে বলে মনে হয়না, আলীকদমে এক ফ্যামিলির বাসায় খেয়েছিলাম।
দারুণ এগুচ্ছে ভাই।