
করোনা সময়ে এদেশে “সীমিত আকারে” শব্দটি একটি জাতীয় শব্দে পরিণত হয়েছে। সরকারের এই সীমিত আকারের অনেক ঘোষণাতেই মাঝেমধ্যে গ্যাঁড়াকলে জর্জরিত হতে হচ্ছে আমাদের। এসব ঘোষণা পক্ষে বিপক্ষে যাই হোক তা হতে হবে কিন্তু সীমিত আকারে। এই যেমন- সীমিত আকারে দোকানপাট খোলা থাকবে বলে ঘোষণা এসেছে। এখন বাজারে গিয়ে ঈদের বাজার করবেন নাকি সীমিত আকারে হলেও করোনার শিকার হবেন সেটা আপনাদের বিবেচ্য।
তবে সমস্যা হতে পারে ভীন্ন। এই যেমন সরকারের সীমিত আকারে বাজার খোলার ঘোষণা দিয়ে আমরা অনেকেই পড়েছি নানাবিধ বিপাকে। করোনা ছুটিতে বাজার-ঘাট সব বন্ধ থাকবে, ঈদে কাউকে কোন উপহার সামগ্রী, জামাকাপড় কিছু দিতে হবেনা এটা ভেবে আগেই কিছু অসহায় মানুষকে সাহায্য সহযোগীতা করে ফেলেছি। ফলে হাত প্রায় ফাঁকা ফাঁকা অবস্থা।
এখন সীমিত আকারে বাজার খোলার এই ঘোষণায় আমাদের ভাবী সাহেবানগণ এবং আপুগণ কি আমাদের ও পরিবারের কাছ থেকে সীমিত আকারে ঈদ বাজার করার টাকা নেবেন নাকি পুরো আকারেই নেবেন এটা ভেবেই আমি শংকিত। এই সমস্যা সব পতিদেবগণেরই হবে আমি নিশ্চিত।
তো আর কি! পতিদেব গোল্লায় যাক, শেষতক ভাবী সাহেবানগণ এবং আপুদের দীর্ঘ বন্দীদশার অবসান হলো। এতদিন পর বাজার খুলছে আর তাদের পায় কে! এখন মনের আনন্দে আপনারাও ঈদ বাজার করতে বেড়িয়ে পড়ার প্রস্তুতি নিন।
সবাই সকাল ছয়টা হতে রাত আটটা পর্যন্তই সীমিত আকারে বাইরে থাকতে পারবেন এবং রাত আটটার পরে কিছুতেই কাউকে বাইরে থাকতে দেয়া হবেনা আর থাকলেও তা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। তার মানে আশার কথা হলো, এদেশে করোনা সন্ধ্যা নিশিতেই শক্তিশালী হওয়া শুরু করে এবং ভোর হতে হতে কিছুটা নিস্তেজ হয়ে পড়ে। তাই অবশ্যই অবশ্যই রাত আটটার মধ্যেই ঘরে প্রবেশ করবেন।
মনে রাখবেন, যেহেতু সীমিত আকারে দোকানপাট খোলা থাকবে তাই আপনি প্রতিদিনই সকাল ন’ টায় বাসা থেকে বেড়িয়ে বেলা দশটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত মোট দশ ঘন্টায় অত্যন্ত সীমিত আকারে, আবারো বলছি অত্যন্ত সীমিত আকারেই বাজারসদাই করবেন।
আর হ্যা, বাজারকারীর সকলের সুবিধার্থে আমিও সীমিত আকারে কিছু টিপস দিলাম। এগুলো মেনে চলুন, উপকৃত হবেন নিশ্চিত –
– সবার আগে সেলুন কিংবা পার্লারে যান। কারন আপনি সুদর্শন/সুদর্শনা কিনা তা দেখেই কিন্তু দোকানী আপনাকে মুল্যায়ন করবে।
– যারা অনেকদিন দুই বা তিনজন মিলে হাসিঠাট্টায় মশগুল হয়ে রিক্সায় ওঠেননি তারা এবার মনের আশা পূরণ করে নিন।
– সীমিত আকারে মানে সীমিত আকারেই এটা ভুলবেননা। শপিংমল টু শপিংমল টইটই না করে একদিনে এক শপিংমলেই কাজ সারুন।
– আপনার মত অন্যরাও মার্কেটে যাবে তাদেরকেও সুযোগ দিন। বেশি হুড়োহুড়ি করলে দোকানদার আপনাকে ফটকা জিনিস ধরিয়ে দিতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখুন।
– যেদিন যে মার্কেটে যাবেন ফেসবুকে তার চেক ইন দিন। তাহলে অন্যরাও মার্কেটের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত হতে পারবেন।
– পারলে সীমিত আকারে এক দু’মিনিটের জন্য নতুন কেনা জামাটি পরে ফেসবুক লাইভে আসুন। এতে দোকানদার এবং আপনার বন্ধুবান্ধবী উভয়েই সমানভাবে উপকৃত হবেন।
– বাজারে থাকাকালীন সীমিত আকারে হলেও মাঝেমাঝে খাবার দোকানগুলোর আপডেট দিন। অন্যান্য বাজারকারীদের অভুক্ত অনুভূতি থেকে মুক্ত থাকতে সহায়তা করুন।
– সর্বোপরি সীমিত আকারে দোকানপাট ও শপিংমল খোলা রাখার এই সিন্ধান্তকে অবশ্যই সাধুবাদ জানাবেন।
শুভ শপিং☺
২৯টি মন্তব্য
ফয়জুল মহী
সীমিত আকারে যেন মানুষও মরে। বাচ্চারা বলবে দোকান খোলা শপিং করবো কিন্তু বাবার যে দুই মাস বেতন নাই । লাগো লড়াই বাসায়।
তৌহিদ
ভাই, এমনটা যেন না হয়। সবাই হাসিখুশি থাকুক এটাই কাম্য।
ভালো থাকবেন ভাই।
সুরাইয়া নার্গিস
চমৎকার একটা পোষ্ট ভাইয়া।
পোষ্টটা অনেক ভালো হয়েছে, অনেকের কাজে লাগবে।
করোনার জন্য আব্বু বাসায় মেহমান আসা নিষেধ করেছেন, তাই বড় আপু আসবেন না।
তবে সীমিত সময়ের জন্য আত্মীয় স্বজনরা বাসায় এসে তাদের ঈদের গ্রিফ্ট গুলো নিতে পারবেন।
আমরাও সীমিত আকারে মার্কেট করবো, ভাবছি যা কিনবো তা লিস্ট করে সীমিত সময় কেনাকাটা শেষ করবো।
সীমিত সময়ে বাসায় ফিরবো, সীমিত ঘুরাঘুরি করবো অকারনে ঘুরাঘুরি করবো না।
পরিচিত দের সাথে রাস্তাঘাটে সীমিত কথা বলে জায়গা ত্যাগ করবো।
দোকানে বেশি সময় ব্যয় করে যানজট সৃষ্টি না করে সীমিত সময়ে পছন্দের কেনাকাটা করে অন্যকে সুযোগ করে দিব।
আপনার অসাধারন পোষ্টে আমার সীমিত মতামত জানালাম ভাইয়া।
দেশ করোনা মুক্ত হলে আশা করি ব্যাপক লিস্ট নিয়ে হাজির হব।
আমরা সবাই ব্যাপক সাবধানতায় করোনাকে
সীমিত আকারে নিয়ে আসি।
ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
শুভ কামনা রইল ভাইয়া আপনাদের জন্য।
তৌহিদ
হা হা হা….
সীমিত আকারে মন্তব্যের জন্য বড় আকারে ধন্যবাদ দিলাম এই সীমিত আকারের মন্তব্যে আপু।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
সবকিছুতেই সীমিত আকার। মানুষ সীমিত আকারে মরছে বলে সবাই সীমিত আকারেই দোকান খুলবে, ভাবীরা/আপারা সীমিত আকারেই স্বামীর /ভাইয়ের/বাপের পকেট খালি করবে, ঈদের ফূর্তি করতে সীমিত আকারেই ঘুরতে যাবেন!! ধন্যবাদ ভাইয়া
তৌহিদ
ইয়েস, সীমিত আকারে সুন্দর বলেছেন। ধন্যবাদ দিদিভাই।
সুপায়ন বড়ুয়া
মানুষ বুঝে গেছে করোনা তাদের কাবু করতে পারবে না।
ক্ষুধায় মরে অন্যদের মারার ছেয়ে করোনায় মরি।
টিভির পর্দায় বিদেশের ছবি দেখে দেখে আতঙ্কে ডাক্তার রোগী প্রতারনা খেলতে গিয়ে রোগী গেল বেড়ে। না হলে চিখিৎসায় ভাল হওয়ার কথা।
বনানীর বস্তির ৫০ হাজার লোকতো আগে মরার কথা ছিল?
করোনা পরাজীত হবে কারন এদেশের মানুষ চুমা মদ আর ঠান্ডা খায় না বিদেশের মতো।
শুভ কামনা।
তৌহিদ
করোনা আমাদের কিচ্ছু করতে পারবেনা। এটাই ঠিক। আমরা জয় করে নিয়েছি করোনাকে।
জিসান শা ইকরাম
রম্য পোস্ট ভালো হয়েছে ভাই।
আপনার দেয়া টিপসও দারুন পছন্দের হয়েছে।
সব কিছুতে সীমিত আকারে সীমাবদ্ধ থাকলেও সরকার তার প্রগ্রামগুলো সীমিত আকারে করছে না। সাধারন ছুটি যে কাদের জন্য এটিই এখন বুঝতেছিনা।
ভাবী/আপুরা ঈদের খরচ সীমিত আকারে করবে কিনা কে জানে!
ভালো থাকবেন ভাই।
শুভ কামনা।
তৌহিদ
ভাই সবকিছুই চালু করে বলছে সীমিত আকারে। কেউ কিছুই মানছেনা। এর চেয়ে সব খুলে দিক, যে মরার সে মরুক।
ভালো থাকবেন ভাই।
ইঞ্জা
ভাই এই সীমিত আকারের বেড়াজালে পড়েছে দেশ, দেখবেন এই মাস এবং আগামী মাসের মধ্যে কতো মানুষ মরবে, বাকি যা হবে তা ইতিহাস হবে।
আপনার টিপস গুলো চমৎকার, আমার মনে ধরেছে।
তৌহিদ
ভাই সবকিছুই চালু করে বলছে সীমিত আকারে। কেউ কিছুই মানছেনা। এর চেয়ে সব খুলে দিক, যে মরার সে মরুক।
ভালো থাকবেন ভাই।
প্রদীপ চক্রবর্তী
আপনার চমৎকার টিপস গুলো প্রশংসনীয় দাদা।
তবে দেশ কোন পথে যাচ্ছে একমাত্র সৃষ্টিকর্তা ছাড়া আর কেউ বলতে পারবে না।
দেশের পরিস্থিতি ভয়াবহ না হোক।
শুভকামনা দাদা।
তৌহিদ
নিজেদের সাবধান হতে হবে। যারা নিজেরা নিজের বিপদ ডেকে আনবে তারা মরুক।
ভালো থাকবেন দাদা।
সুরাইয়া পারভীন
চমৎকার গুরুত্বপূর্ণ টিপস। যথার্থ লিখেছেন ভাইয়া।
তবে এই সীমিত আকার না ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনে। আমি ঘর থেকে বের হইনি আর হবও না। কেনাকাটা শপিং টপিং পরে হবে আগে তো বেঁচে বর্তে থাকি।
তৌহিদ
হ্যা আপু নিজে সতর্ক থাকুন। আল্লাহ ভরসা।
কামাল উদ্দিন
সীমিত আকারে দেওয়ার সামর্থও হারাতে বসেছি আমরা। তার উপর যদি পরিপূর্ণ ভাবে দিতে হয় মরার উপর খাড়ার গা হিসাবেই দেখা দেবে সেটা।
তৌহিদ
ভাই সবকিছুই চালু করে বলছে সীমিত আকারে। কেউ কিছুই মানছেনা। এর চেয়ে সব খুলে দিক, যে মরার সে মরুক।
ভালো থাকবেন ভাই।
কামাল উদ্দিন
এখন তো আর উপায়ও নাই, ঘরে থাকলে না খেয়ে মরবে, বাইরে থাকলে করোনায়!
ছাইরাছ হেলাল
বাহ্, খুবই সীমিত আকারে সব কিছু গুছিয়ে লিখেছেন।
করোনাকালে গোটা প্রাণটাই তো সীমিত হয়ে গেছে!
তৌহিদ
সীমিত আকারে আর লেখা হলো কই। কৃতজ্ঞতা বড় আকারেই দিলাম।
সঞ্জয় মালাকার
দাদা,আপনার চমৎকার টিপস গুলো প্রশংসনীয়।
এই সীমিত আকারের বেড়াজালে পড়েছে দেশ,
তাই মনে হচ্ছে জমরাজ ঘুরছে ধারে কাছে।
আপনিও ভালো থাকবেন সব সময় শুভ কামনা রইলো।
তৌহিদ
ধন্যবাদ দাদা। শুভকামনা সবসময়।
আরজু মুক্তা
এবার ঈদের দাওয়াতো সীমিত।
ভালো লাগলো রম্য
তৌহিদ
হ্য অবশ্যই সীমিত আকারে। ভাববেন না, আপনার বাসায় গেলেও সীমিত আকারেই যাবো হা হা হা
হালিম নজরুল
আমরা সীমিত আকারে মরতে যাচ্ছি!
তৌহিদ
আল্লাহ সহায় ভাই, তার রহমত যেন সীমিত না হয়।
সাবিনা ইয়াসমিন
সীমিত আকারের পোস্টে একটা সীমিত কমেন্ট দিতে চাচ্ছি, কিন্তু পারছি না। আমার জন্য কিছু সীমিত শব্দের ব্যবস্থা করে দিন তৌহিদ ভাই 🙂
তৌহিদ
সীমিত আকারে ধন্যবাদ দেবেন না হা হা হা। বলবেন বিশাল ধন্যবাদ ☺
এইতো হয়ে গেলো। ☺☺