
বাস ষ্ট্যান্ডে দাড়িয়ে আছি এক ঘন্টার মতো। কোন বাস নেই। অফিস থেকে বাসায় ফিরব বলে একটু তারাতারি বের হয়েছি। কিন্তু তাতে কোন লাভ হল না। যেই লাউ সেই কদু অবস্থা। বাস সব গেল কই। অনেক ক্ষন বাস না আসায় ষ্ট্যান্ডে লোক জমে গেছে। ওদের ঠেলে বাসে উঠা যাবেতো। এসব ভাবছিলাম। কোথা থেকে যাত্রি বোঝাই একটি বাস এসে থামল। অপেক্ষমান যাত্রিদের মাঝে হুটপুটি লেগে গেল বাসে উঠার জন্য। না! উঠতে পারলাম না। বাসের গেইটা পর্যন্ত লোড। ঝুলে যাব তারও উপায় নেই। তবুও উঠার শেষ চেষ্ট করলাম না! পারলাম না। বাস ছেরে দিল।
হঠাৎ দ্রীম! দ্রীম! আওয়াজে হতচকিয়ে গেলাম। একটু দুরে কারা যেন বোমা মেরেছে সেই বাসটিতে। দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। পেট্রল বোমা হবে হয়তো। আজকাল তো ককটেল বেকডেটেড হয়ে গেছে। প্রেট্রল বোমার জমানা । ঘটানার আকস্মিকতা আমাকে বাক্যহারা দিশাহারা করেদিল। কি হল এটা! মুহুর্তে বাসটি পুরে ছাই। আগুনের ভয়াবহতা আর মানুষের আত্ম চিৎকারে পুরো এলাকা হয়ে গেল যেন জাহান্নাম পুরী।
আমি মাঝে মাঝে টুকটাক লেখা লেখি করি । আজ কয়দিন হলো কিছু লিখতে পারছিনা। মাথায় কিছুই আসছে না। কি নিয়ে লিখি? কি নিয়ে লিখি? সারাক্ষন একটি হাসপাস হাসপাস ভাব। ঠিক এমন সময় এইভাবে এমন একটি ভয়ংকর অভিজ্ঞতা লিখে যে এ সমস্যার সমাধান হবে ভাবতে পারিনি। দৌড়ে ছুটে গেলাম পোড়া বাসটির কাছে।
আমার সামনে এতোক্ষন যে ছেলেটি বাসের জন্য অপেক্ষা করছিল। এইতো কিছুক্ষন আগে কেমন সুস্থ স্বাভাবিক ছিল। আমাকে অনেকটা ঠেলেই বাসে উঠে পরেছিল সে।একখন রাস্তায় কাতরাচ্ছে। তার শরীর আগুনে ঝলসে গেছে। আসে পাস থেকে লোকজন ছুটে এসেছে। কেউ জলন্ত বাসটি নেভানোর চেষ্টা করছে। কেউ বাস যাত্রিদের বের করছে। সবারই শরিরের কোন না কোন জায়গা ঝলসে গেছে। কি বিভৎস! কি ভয়ংকর! মানুষ এমন কাজ কিভাবে করে?
ডায়রীতে এতটুকই লেখা ছিল আর নেই। ডাইরিটা পাওয়া গিয়েছিল ঢাকা মেডিকেলের মর্গে এক বেওয়ারিশ ডেডবডির পকেটে। তার শরীরে ৮০% পুরে গিয়েছিল।
সাংবাদিক হাসান দেশের নামকরা একটি পত্রিকার সাংবাদিক। শাহবাগে একটি বাসে বিকেলে কারা যেন পেট্রল বোমা ছুড়েছে। এ সংবাদ পেয়ে সে ছুটে আসে ঘটনাস্থলে। বাসটি আগুন তখন ফায়ার সার্ভিস নিভিয়ে ফেলেছে। যাত্রিদের উদ্ধার করা হয়েছে। কম বা বেশী সবাই আহত। কিন্তু নিহত শুধু একজন।
ডাইরীটার কিছু অংশ পুরেগিয়েছিল। পুরা ডাইরীটা হাতে নিয়ে ভাবছে হাসান। এ জগৎ কত বিচিত্রময়! যে গল্প সে একদিন রচেছিল, হয়তো তা সত্য হয়তোবা কাল্পনা। সে লেখক আজ নিজেই তেমন গল্পের ট্রাজিক চরিত্র হয়ে গেল।
১০টি মন্তব্য
সুপর্ণা ফাল্গুনী
হুম খুব ভয়ংকর একটা দুঃস্বপ্নের কথা মনে করিয়ে দিলেন। ইসলাম ধর্মে আছে মৃত ব্যক্তির সৎকার পুড়িয়ে করা যাবে না অথচ এইসব মুসলিমরা কিভাবে মানুষকে পুড়িয়ে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়! ঈশ্বর সহায় হোন সবার
আতা স্বপন
আসুন ভুলে যাই যত অশুভ স্মৃতি। নতুন প্রেরনায় এগিয়ে চলি। আল্লাহ সবাইকে হেফাজত করুন। ধন্যবাদ
ফয়জুল মহী
দুর্দান্ত লিখেছেন । চমৎকার লেখা পড়লাম।
আতা স্বপন
আল্লাহ সবাইকে হেফাজত করুন। ধন্যবাদ
নিতাই বাবু
আজ কয়েকদিন ব্লগে প্রবেশ করতে পারছিলাম না। কারণ এ লকডাউনের আলামতে আমার নিজের ছোট চাকরিটা যায় যায় অবস্থা, তাই। তা এখনো ঠিক করা যাচ্ছে না যে, চাকরিটা যাচ্ছে, না থাকছে! এটা নির্ভর করছে দুইজন মালিকের মনোভাবের এব তাঁদের দয়ার উপর।
তো আজা ব্লগে প্রবেশ করে আপনার লেখায় নজর পড়তেই মনে পড়ে গেল, কোনোএক সময়ে ঘটে যাওয়া পেট্রোলবোমার কথা। সাথে মনে পড়ে গেলো ব্লগ বিডিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের লেখক স্বর্গীয় উৎপল দাদার কথা। এর বেশিকিছু আর লিখতে পারছি না, দাদা। ক্ষমা করবেন।
আতা স্বপন
আসুন ভুলে যাই যত অশুভ স্মৃতি। নতুন প্রেরনায় এগিয়ে চলি। আল্লাহ সবাইকে হেফাজত করুন। ধন্যবাদ
সঞ্জয় মালাকার
ডাইরীটার কিছু অংশ পুরেগিয়েছিল। পুরা ডাইরীটা হাতে নিয়ে ভাবছে হাসান। এ জগৎ কত বিচিত্রময়! যে গল্প সে একদিন রচেছিল, হয়তো তা সত্য হয়তোবা কাল্পনা। সে লেখক আজ নিজেই তেমন গল্পের ট্রাজিক চরিত্র হয়ে গেল।
একদম সত্যি বলেছেন ভাইজান।
শুভ কামনা রইলো🌹🌹
আতা স্বপন
আল্লাহ সবাইকে হেফাজত করুন। ধন্যবাদ
হালিম নজরুল
শুভকামনা রইল ভাই।
আতা স্বপন
আল্লাহ সবাইকে হেফাজত করুন। ধন্যবাদ