
২৬ তারিখ সারাদিন বাড়ি থেকে বের হইনি। অফিসের কিছু কাজ পেনডিং ছিল বলে বিকেল বেলা বের হলাম। বাড়ির সামনের রাস্তা দেখলাম লোকে লোকারণ্য। কাজ নেই তাই রাস্তায় দাঁড়িয়ে বসে আড্ডা দিচ্ছে। হাইওয়েতে উঠে দেখলাম শুনশান, দুয়েকটা বাইক ছাড়া কিছুই নজরে পড়লো না। অফিসের সামনের ডিসপেনসারিটা খোলা, মালিককে পেলাম পাশের কনফেকশনারী দোকানে। বুঝলাম বাংগালী কোয়েরান্টাইন এমনি হয়।
ভাবছিলাম পাশের চায়ের টং দোকানটা থেকে একটা চা খেয়ে অফিসে ঢুকে পড়বো। কিন্তু হায়! দোকানটা বন্ধ। অন্য সময় এই টং দোকানে জগতের সমস্ত আইনস্টাইন নিউটন আর্কিমিডিসদেরকে পাওয়া যায়, যারা চায়ের সাথে সাথে আমাদের মতো দীনহীনদের পৃথিবীর তাবৎ সমস্যার সমাধান নিয়ে অপেক্ষায় থাকেন। সরকার যদি এই ডাউলোড না সাডডাউন কি যেন নাম, এটা যদি না দিতো। আমি নিশ্চিৎ বিশেষজ্ঞরা (বিশেষ+অজ্ঞ) করোনাকে ঝেটিয়ে বিদায় করার একটা ব্যবস্থা করে ফেলতো এই সময়ে। অবশ্য সরকারের ডাউনলোড থেরাপির আগেই ওনাদের মতো কিছু আর্কিমিডিসদের মাধ্যমে থানকুনি পাতা ছাড়াও করোনার বিরুদ্ধ ভাইরাস আবিস্কারের ফর্মুলটা অনলাইনে ব্যপক প্রচার পেয়ে গেছে।
যাক এসব নিয়ে বেশী না ভেবে অফিসে ঢুকে পড়াটাই মনে হয় শ্রেয় হলো। দেশে কোন হরতাল অবরোধ নাই অনেক দিন হলো। পুলিশ ভাইদের জীবন হয়ে গেছিল একেবারে নিরামিষ। দীর্ঘদিন পরে করোনার উছিলায় তাদের অভুক্ত লাঠি খোঁজ পেয়েছে জনগনের সেই পুরনো পশ্চাদদেশ! করোনা বিদায় হওয়াটা বড় কোন ব্যাপার না, ওনাদের প্রেক্টিসটা তো সেরে নেয়া গেল। ওনাদের প্রেক্টিসটা আর দীর্ঘায়িত করার সুযোগ না দিয়ে আমি অফিসের ভেতরে ঢুকে পড়লাম।
ছবিঃ গুগুল মামুর বদান্যতায়
২২টি মন্তব্য
সাবিনা ইয়াসমিন
চায়ের মজলিস দেখেই আঁতকে উঠেছি! পরে মনেহলো ছবিটা হয়তো প্রতীকী হিসেবে ব্যাবহার করেছেন। শাট ডাউন/ লক ডাউন এবং ছুটির দিনেও আপনার অফিস খোলা ছিলো?
কামাল উদ্দিন
অফিস খোলা ছিল না, অফিস আমিও খুলেছিলাম। বাড়ি আর অফিস দুজায়গাই আমি সেফে থাকার চেষ্টা করি। আমার ছোট্ট ব্যবসায়ের অফিসটা না খুললে মাঠে মারা যাওয়ার শংকা প্রবল।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ভালো লাগলো আপনার প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা পড়ে। অফিস খোলা ছিলো? করোনা আমাদের অনেক শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছে। শুধু জায়গায় জায়গায় আলোচনার ঢেউ উঠছেনা। লকডাউন শেষ হোক আবার পুরোদমে শুরু হবে। ভালো থাকুন সাবধানে থাকুন। শুভ কামনা রইলো
কামাল উদ্দিন
অফিস খোলা না আপু, বিশেষ প্রয়োজনে যেতে হয়েছিলো। এবং আজকেও আসতে হয়েছে……শুভ কামনা।
সুরাইয়া পারভীন
মাস্ক পরা দেখে অনেকেই উপহাস করে বলছে গোমাই লাগিয়েছে মুখে। এর পর আর বলার অপেক্ষা রাখে না বাঙ্গালী জাতি হিসেবে আমরা কতোটা (বিশেষ+অজ্ঞ)
সাবধানে থাকুন ভালো থাক
সুরাইয়া পারভীন
ভালো থাকুন সবসময়
কামাল উদ্দিন
গরুর মুখে যেটা লাগায় ওটাকে আমরা বলি কাফাই। বেঁচে থাকার জন্য সবই করতে হয় আপু…..শুভেচ্ছা
সুপায়ন বড়ুয়া
প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা দিয়ে
মুখরোচক গল্প টা ভালই লাগলো।
সুস্থ থাকবেন।
শুভ কামনা।
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ দাদা, আপনিও ভালো থাকুব সব সময়।
হালিম নজরুল
সতর্কতা জরুরি
কামাল উদ্দিন
হুমম, কথা ঠিক।
সঞ্জয় মালাকার
দাদা ভালো লাগলো আপনার প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা পড়ে।
সতর্কতা জরুরি সবার জন্য।
আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো।
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ দাদা, আপমনার জন্যও শুভ কামনা সব সময়।
ছাইরাছ হেলাল
দিনে দিনে আমরা অভিজ্ঞ!! হচ্ছি আর হচ্ছি।
করোনা-ফরোনা কিচ্ছুনা, প্রার্থনা কেন্দ্রে উপছে পড়া ভিড়! ঠাঁই নাই ঠাঁই নাই অবস্থা।
একদল বলছে ভিড় চালু রাখুন, অন্য দল বলছে বাড়ীতেই ক্ষমা প্রার্থনা চালু রাখুন।
কৈ যাই কী করি!!
কামাল উদ্দিন
নিজে সতর্ক থেকে মানুষের উপদেশ বাণী আর নাটক দেখতে থাকুন। সেই সাথে পাশের বাড়ির মানুষটি যদি না খেয়ে থাকে তার একটু খোজ খবর ও আমাদের নেওয়া উচিৎ
তৌহিদ
জীবন ধারন করতে গিয়ে কতকিছুই অমান্য করতে হচ্ছে আমাদের।জীবন যেন স্থবির হয়ে পড়েছে। তবু প্রার্থনা বেঁচে থাকুক মানুষ। ভালো থাকুক আমাদের আপনজনেরা।
শুভকামনা সবসময়।
কামাল উদ্দিন
হুমম, এই আপদ বিদেয় হোক খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে
তৌহিদ
এটাই প্রার্থনা ভাই।
ফয়জুল মহী
কেমন আছেন। সাবধান থাকবেন। গুজব এড়িয়ে চলবেন। ধর্মকর্ম পালন করেন। ভালোবাসা রহিল আপনার প্রতি এবং আপনার পরিবারের প্রতি। আল্লাহর পর রাষ্টই আমাদের অভিভাবক । ভয় পাবেন না।
কামাল উদ্দিন
গুজব কতোটা এড়িয়ে চলা যায় বলুন।
এস.জেড বাবু
বাংগালী কোয়েরান্টাইন এমনি হয়।
চা দোকান খোলা থাকলে এতোদিনে একটা না একটা রাস্তা ঠিকই বের হতো- ওখানে সব ডাক্তার হয়ে যেত কিছুদিনের জন্য।
সদবুদ্ধির উদয় হউক
সবাই ভালো থাকুক
জিসান শা ইকরাম
টং ঘর চায়ের দোকানে জগতের সবচেয়ে জ্ঞানী মানুষেরা জ্ঞান বিতরনের জন্য বসে থাকে।
অফিসে ঢুকে ভালো করেছেন। পুলিশ আর মেজিস্ট্রেটদের যা অবস্থা!,