
চট্টগ্রাম শহর থেকে পারকি সমুদ্র সৈকত এর দূরত্ব প্রায় ২৫ কিঃমিঃ। চট্টগ্রামের নেভাল একাডেমি কিংবা বিমানবন্দর এলাকা থেকে কর্ণফুলী নদী পেরোলেই পারকি সমুদ্র সৈকত যাকে স্থানীয়রা বলে পারকির চর। কর্ণফুলী নদীর মোহনার পশ্চিম তীরে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এবং পূর্বদক্ষিণ তীরে এই পারকী সমুদ্র্র সৈকত। চট্টগ্রামের যে কোন জায়গা থেকে ট্যাক্সি বা সিএনজি করে দক্ষিণ পতেঙ্গার ১৫ নং ঘাটে গিয়ে ট্রলারে কর্ণফুলী পাড় হয়ে আবার ১০০ টাকায় সিএনজি রিজার্ভ করলেই চলে যাওয়া যায় এই মনোরম সৈকতে। এখানে কক্সবাজারের মতো এতোটা পর্যটক নেই, নেই তেমন থাকা খাওয়ার ভাল ব্যবস্থা, তবে নির্মল একটা সমুদ্র সৈকত রয়েছে এখানটাতে।
অনেকটা যেন গ্রামীন পরিবেশ। জেলেদের মাছ ধরা, ঝাউ বনে বাতাসের কানাকানি, উত্তাল সমুদ্রের ফেনায়িত তরঙ্গমালা আর বালুকারাশির ভেতরে কাকড়াদের খেলা করা, এ এক অনন্য সৌন্দর্য্য। বাম দিকে দূরে দেখা যায় গহিরার জেলে পল্লী, যেখানে জেলেদের কর্মযজ্ঞে মুখরিত থাকে সারা বেলা, ইচ্ছে করলে সৈকত ধরে বাইক নিয়ে ওখানে গিয়ে দেখে আসা যায় স্বল্প সময়ে। সব মিলিয়ে একটা অনন্য সমুদ্র সৈকত। চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ার থানায় অবস্থিত এই উপকূলীয় সমুদ্র সৈকতটি। আসুন এবার নেমে পড়া যাক এই সৈকতে।
(২) চট্টগ্রামের যে কোন যায়গা থেকে পতেঙ্গার ১৫ নম্বর ঘাট দিয়ে কর্ণফুলি পাড়ি দিয়ে ওপারের সিইউএফএল ঘাটে যেতে হবে।
(৩) ১৫ নং ঘাটের পাশেই বিমান বন্দর হওয়ায় ক্ষণে ক্ষনেই মাথার উপরে খুব নিচু দিয়া বিমান আসা যাওয়া করতে দেখা যায়।
(৪) ১৫ নং ঘাটের পাশের ঘাটেই বাধা রয়েছে কোষ্ট গার্ডদের বিলশালাকার জাহাজগুলো।
(৫) কর্ণফুলী নদীর তরঙ্গমালায় খেলা করছে সীগার্লরা।
(৬) মাঝ নদীতে সারিবদ্ধ দাঁড়িয়ে কার্গো জাহাজগুলো।
(৭) ওপারে সিইউএফএল ঘাট, (যেখানে দেশের সর্ব বৃহৎ ১০ ট্রাক অস্র খালাস করে দেশের ভেতরে ঢোকানোর চেষ্টা হয়েছিল) আপাতত আমাদের গন্তব্য ওখানে।
(৮) সিইউএফএল ঘাটে উঠেই দেখলাম সাপে নেওলের যুদ্ধ, কিছুটা সময় এখানে ক্ষেপন করে ছুলটাম পারকির উদ্দেশ্যে।
(৯) সিএনজি নিয়ে যাওয়ার পথে ডান পাশে এই স্থাপনাটা কি জানিনা, সম্ভবত সারকারখানার কোন অংশ।
(১০) ২০/২৫ মিনিটেই এলে এলাম পারকি সৈকতে। সকালের দিকে হওয়াতে সৈকতে একেবারেই সুনসান। একপাশে ঝাউ বন, অন্য পাশে বিশাল বালুকাবেলায় আছড়ে পরছে সমুদ্র।
(১১/১২) সমুদ্রের দিকে কিছু জেলে মাছ ধরছে।
(১৩) ওদের জালে ধরা পড়া কিছু মাছ।
(১৪) মাছ ধরে আবার নেমে যাচ্ছে পানিতে, এভাবেই সমুদ্রের সাথে চলছে ওদের নিরন্তর খেলা।
(১৫) কিছুক্ষণের মাঝেই এক ঝাঁক তরুণ সাইক্লিষ্ট চলে এল সৈকতে, কিছুটা প্রাণ চাঞ্চল্য দেখা দিল পারকিতে।
(১৬) সওয়ারির আশায় ঘোড়াওয়ালাও তার ঘোরা নিয়ে চলে চলো সৈকতে।
(১৭) দূরে দেখা যাচ্ছে কিছু জেলে নৌকা অলস বসে আছে বীচে, হয়তো একটু পড়েই পাড়ি দিতে হবে উত্তাল তরঙ্গমালা, তাই হয়তো একটু জিরিয়ে নেওয়া।
(১৮) পাশের খাবারের দোকানিরা ঝাউ বনের ভেতরে সুন্দর করে চেয়ার টেবিল সাজিয়ে রেখেছে, ক্লান্ত হয়ে এখানে বসে অনায়াসেই কিছুটা খেয়ে নেওয়া যায়।
(১৯) একটি খঞ্জনা পাখি ঝাউ বনের ছায়ায় আনমনে ঘুরে বেড়াচ্ছিল।
(২০) আমার সফর সঙ্গী আবার ডাব খাওয়ার আগে ওদের সাথে সেলফি তুলে নেয় 😀
২৩টি মন্তব্য
তৌহিদ
আপনার পোস্টের ছবিগুলি দেখে আবার কক্সবাজার যেতে ইচ্ছে করছে। ধন্যবাদ ভাই অনেক কিছু জানলাম।
আপনার ভ্রমণপোস্টগুলি সোনেলাকে সমৃদ্ধ করছে যেমন, ভ্রমনপিপাসু পাঠকরাও উপকৃত হচ্ছেন নিশ্চিত।
কামাল উদ্দিন
সুন্দর জায়গাগুলোতে বার বারই যেতে ইচ্ছে করে তৌহিদ ভাই। আমি ভ্রমণ ছাড়া অন্য কোন পোষ্ট লিখতে পারি না তাই এখানেই পড়ে আছি……..শুভ রাত্রী।
তৌহিদ
তাইতো আমরা পড়ে/ দেখে পৃথিবী ঘুরছি।
ছাইরাছ হেলাল
চিংড়ি মাছের পেটের দিকে লাল রঙ্গের হয়!
এই প্রথম দেখলাম। কত অদেখা লুকিয়ে আছে কে জানে।
কামাল উদ্দিন
এক জীবনে আমরা আর কতোটা দেখতে বা জানতে পারি ভাই, মাঝে মাঝে আফসোস হয় এই ভেবে যে দুনিয়াটা ভালোভাবে না দেকেই চলে যেতে হবে।
সুপায়ন বড়ুয়া
আমার চট্টগ্রাম কামাল ভাইয়ের সৌজন্যে দেখা
মনোরম সৌন্দর্য্যের আধাঁর ভূমি প্রিয় চট্টলা।
ভালো লাগলো। শুভ কামনা।
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ দাদা, শুভ সকাল।
জিসান শা ইকরাম
এই সমুদ্র সৈকত দেখা হয়নি আগে। এত নিরিবিলি পরিবেশ আমাকে খুব আকৃষ্ট করেছে।
এরপরে কক্সবাজার গেলে একদিন চিটাগাং থেকে এই সৈকত দেখে যাবো।
পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ ভাই।
কামাল উদ্দিন
মন্তব্য করে উৎসাহিত করায় আপনার প্রতিও রইল অগাধ শ্রদ্ধা ইকরাম ভাই।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
এমন নিরিবিলি বলেই যাবার জন্য মন আনচান করছে। খুব সুন্দর হয়েছে ছবি ব্লগ। ধন্যবাদ ভাইয়া শুভ কামনা রইলো
কামাল উদ্দিন
ভালো কবিতার রসদ খুঁজে পাবেন আপু।
প্রদীপ চক্রবর্তী
সমুদ্রের বিশালতা আজও অনুভব করা হয় নি।
তবে এ বিশালতা আমায় বড্ড আকৃষ্ট করে।
ভালো লাগলো দাদা।
কামাল উদ্দিন
বলেন কি! সমুদ্র দেখে আলাদা প্রেরণা খুঁজে পাওয়া যায়।
নিতাই বাবু
জীবনে এইসব জায়গায় না গেলেও, আপনার ফটো পোস্ট থেকে ফটো দেখে না যাওয়ার সখ অনেকেই মেটাতে পারবে বলে মনে করি।
এই সময়ে সপরিবারে ভালো থাকার জন্য কামনা করি।
কামাল উদ্দিন
কোন একদিন হয়তো ঠিকই যাবেন যাবেন দাদা, শুভ কামনা সব সময়।
ফয়জুল মহী
সাবলীল সুন্দর উপস্থাপন ।
কামাল উদ্দিন
হুমম
আলমগীর সরকার লিটন
কামাল দা মানেই জীবিন্ত ছবি
ছবিগুলো দেখে মনে হয় আর সমনে সামনি দেখা লাখবে
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ কবি, এমন মন্তব্য অনুপ্রেরণা যোগায়।
সুরাইয়া নার্গিস
অনেক সুন্দর একটা পোষ্ট, লেখার সাথে ছবি অসাধারন।
আমিও সমুদ্রে গিয়েছি তবে ঘোড়ায় ছড়ার ইচ্ছা থাকলেও ভয়ে ঘোড়ায় ছড়া হয়নি।
সত্যি অনেক সুন্দর ও মনোরম পরিবেশ ঘুরতে গেলে মন ভালো হয়ে যাবে এটা নিশ্চিত।
শুভ কামনা রইল আপনার জন্য।
কামাল উদ্দিন
আপনাকেও অনেক অনেক শুভ কামনা কবি।
হালিম নজরুল
একদিন যাবার লোভ বাড়িয়ে দিলেন
কামাল উদ্দিন
হে হে হে, তাহলে বেড়িয়ে পড়ুন ভালো একটা দিন দেখে