
দুই শতাংশ ভূমি,
চোক্ষু করে লাল বাবু ক্ষণকাল রহিল মৌনভাবে
বলিলেন শেষে ক্রুর হাসি হেসে, আচ্ছা, সে দেখা যাবে।
ছয় মাসপরে ভিটে মাটি ছেড়ে বাহির হবো পথে,
করিল ডিক্রি, সকল কিছু বিক্রি মিথ্যে দেনার খাতে।
এ-জগতে, হায়, সেই বেশি চায় যার রয়েছে শত শত ভূমি,
বড় বাবু হস্ত করে সমস্ত গরীবের ধন চুরি।
মনে মনে ভাবিলাম মোর ঈশ্বর আল্লাহ রাখিবেনা মোহগর্তে
তাই লিখি দিল সঞ্জয় দুই শতাংশ ভূমি পরিবর্তে।
কাঙ্গালবেশে ঘুরি দেশে দেশে হইয়া সাধুর শিষ্য
কত দেখিলাম মনোহর ধাম, কত দেখিলাম মনোহর দৃশ্য।
নয়ন সাগরে জীবনে নগরে যখন যেখানে ভ্রমি
আমি যেনো ভুলিতে পারি নে সেই দুই শতাংশ ভূমি।
দেশ বিদেশে বাটে এই মতো কাটে বছর দশ বার
এতোদিন শেষে ফিরিবার দেশে কতোই বাসনা হলো।
নমঃনমঃনমঃ মধুর মম জননী বঙ্গভূমি
নদীর তীরে, সিগ্ধ সমীর জীবন জুড়ালে তুমি।
অবারিত মাঠ গগনললাট চুমে চরণধূলি
ছায়াসুনিবিড় শান্তির নীড় ছোট ছোট গ্রামের ঘরে।
পল্লবঘন মন্দিরকানন রাখলে খেলাঘরে,
স্তব্ধ অতুল দিঘি কালোজল নিশীথশীতল স্নেহ।
শুধু দুই শতাংশ ছিল মোর ভুঁই বাঁকি সবই গেছে ঋণে,
বাবা বলিলেন বুঝেছ সঞ্জয় এই দুই শতাংশ ভূমি লইব কিনে।
কহিলাম আমি,তুমি বাবা ভূমির অন্ত নাই।
চেয়ে দেখো বাবা মোর আছে বড়ো-জোর মরিবার মতো ঠাঁই।
শুনি বাবা কহে, বাপু জানো তো হে বাগানখানা করেছি কতশখে।
পেলে দুই শতাংশ পস্তু ও দিঘে সমান হইবে টানা –
এটাও দিতে হবে, বলিলাম তবে বক্ষে জড়াইয়া পাণি,
সজল চক্ষে, করুণ রক্ষে গরীবের ভিটেমাটি গেলো ঋণের দায়ে।
সপ্ত পুরুষ যেথায় মানব সে মাটি সোনান বাড়া
ঋণেন দায়ে বেচিব সে মায়ে এমন লক্ষ্মীছাড়া!
দুই দিন পরে দ্বিতীয় প্রহরে প্রবেশিনু নিজগৃহে
কামারের বাড়ি দক্ষিণে ছাড়ি, দূর্গামন্দির করি বামে,
মায়া হাটখোলা, সঞ্জয় গোলা, মন্দির করি পুর্বে
ঋণদাতা শেষে পঁহুছিনু এসে আমার বাড়ির কাছে !
ধিক ধিক ওরে, শত ধিক ঘুরে, নিলাজ কুলাটে ভূমি,
তুমি যখনি যাহারা তখনি তাহার, এক কি জননী তুমি।
একথা কি মনে হবে তোমার একদিন যবে ছিলে দারিদ্রমাতা,
আঁচল ভরিয়া রাখিতে ধরিয়া ফল ফুল শাক পাতা।
আজ কোন রীতে কারে ভুলাইতে ধরেছ তুমি বিলাসবেশ
পঁচারাঙা পাতা অঞ্চলে গাঁথা, পুষ্পে খচিতে কেশ,
তোমার দুই শতাংশ ভূমি শেষ।
কিছু কথা সংগ্রহিত,,
সঞ্জয় মালাকার //
২০টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
শক্তিহীনেরাই লুণ্ঠিত হয় বার বারে,
তাই আর ফিরে আসা হয় না, ফেলে আসা মনের চরাচরে।
সঞ্জয় মালাকার
ঠিকই বলেছেন দাদা, এ জগতে শক্তিহীনেরাই লুণ্ঠিত হয় বার বারে।
অসংখ্য ধন্যবাদ শ্রদ্ধে দাদা।
সাবিনা ইয়াসমিন
লেখাটি কি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দুই বিঘে জমি থেকে নেয়া? হুবুহু একই শব্দ-কথা!!
সঞ্জয় মালাকার
হে দিদি, তবে সব কথা নয়, দুই বিঘা জমি কবিতাথেকে কিছু কথা সংগ্রহ করেছি।
ধন্যবাদ দিদি।
সাবিনা ইয়াসমিন
বুঝতে পেরেছি দাদা।
কষ্ট যদি একই রকম হয়, তাহলে অনুভবের প্রকাশ খুব একটা ভিন্ন হয় না। যার দুই বিঘে জমি হারায় তার যেমন কষ্ট, তেমনি দুই শতাংশের কষ্টও একই। নিঃস্ব যে হয় সে-ই বোঝে নিঃস্ব হওয়ার বেদনা।
সঞ্জয় মালাকার
একদম ঠিক বলেছেন বাস্তবটা দুই বিঘা জমি মতো, আমিও একইসাথে দুই শতাংশ নিঃস্ব হওয়ার বেদনা বুকে নিয়েছি।
ধন্যবাদ দিদি শুভেচ্ছা রইলো।
কামাল উদ্দিন
………….দুনিয়ার মানুষগুলো এমন কেন হয়? কেন আমাদের এত্তো চাহিদা বুঝিনা!
সঞ্জয় মালাকার
অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা, দাদা চাহিদা শেষ হবে না মৃত্যুর আগে পর্যন্ত ।
নিতাই বাবু
আমার মনে হচ্ছে রবিঠাকুরের কবিতা “দুই বিঘে জমি”ই পড়লাম। চমৎকার লিখেছেন, সঞ্জয় দাদা। শুভেচ্ছা জানবেন।
সঞ্জয় মালাকার
হে দাদা আমি দুইবিঘে জমি কবিতাথেকে কিছু কথা সংগ্রহ করেছি। ধন্যবাদ দাদা শুভেচ্ছা অফুরন্ত।
অনন্য অর্ণব
এটা দুই বিঘা জমি কে কপি করা হয়েছে। যাই হোক সাধু চলিত সংমিশ্রণ টা একটু সংশোধন করে নেবেন।
সঞ্জয় মালাকার
না দাদা কপি করিনি, তবে দুইবিঘা জমি কবিতাথেকে কিছু কথা সংগ্রহ করেছি।
ধন্যবাদ দাদা শুভেচ্ছা রইল।
আরজু মুক্তা
মনে হচ্ছে, দুই বিঘের নকল।
সঞ্জয় মালাকার
হু দিদি, তবে নকল করিনি আমি দুইবিঘে জমি থেকে কিছুকথা সংগ্রহ করেছি।
ধন্যবাদ দিদি শুভেচ্ছা রইলো।
রেহানা বীথি
রবি ঠাকুরের ‘দুই বিঘা জমি’ র নতুন সংস্করণ মনে হল যেন!
সঞ্জয় মালাকার
হু দিদি, আমি রবি ঠাকুরের ‘দুই বিঘা জমি’ র
কিছু কথা সংগ্রহ করেছি।
ধন্যবাদ দিদি ভালো থাকুন সব সময় শুভেচ্ছা রইলো।
এস.জেড বাবু
সজল চক্ষে, করুণ রক্ষে গরীবের ভিটেমাটি গেলো ঋণের দায়ে।
গরীবের ভিটেমাটি থাকতে নেই। থাকলেই যাবে, না থাকলে আর যাবে না।
ঋণেন দায়ে বেচিবে সে মায়ে
ঋণের হবে হয়ত।
সুন্দর লিখেছেন ভাই।
সঞ্জয় মালাকার
ধন্যবাদ শ্রদ্ধে বাবু ভাই, ঠিকই বলেছেন থাকলেই যাবে না থাকলে যাবেনা।
জিসান শা ইকরাম
শক্তিমানরা লুন্ঠন করে শক্তিহীনদের।
কিছুই করার নেই।
সঞ্জয় মালাকার
ঠিক বলেছেন ভাইজানা, শক্তিহীনদের।
কিছুই করার নেই।
ধন্যবাদ শ্রদ্ধে ভাইজান।