প্রকৃতির রায়

মাসুদ চয়ন ২৮ জুন ২০১৯, শুক্রবার, ১২:১৫:২৩অপরাহ্ন গল্প ১৩ মন্তব্য
  • হরিণটি আনন্দে উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠলো’
    সে খুঁজে পেয়েছে বিস্তৃত তৃণভূমি–
    রুগ্ন পেটপৃষ্ট ধীরে ধীরে টৈটম্বুর হয়ে উঠলো খেয়ে দেয়ে।
    চোখে মুখে চিরতরুণ আনন্দ হিল্লোল ফুটলো।
    একবেলা ছিড়ে ছিড়ে খেয়ে দুপুরের কড়া রোদে এগিয়ে চললো শঙ্খ নদীর তীরে
    এবার পানি চাই_
    তাকে দেখে নিঝুম ঝোঁপ হতে হালুম হুলুম হুংকার ছেড়ে বেড়িয়ে এলো ক্ষুধার্ত বাঘ-
    হরিণটি ছুটছিলো প্রাণে বেঁচে যাওয়ার জন্য।
    কিন্তু পেরে উঠলোনা,মাইল খানেক ছুটেই নেতিয়ে পড়লো বাঘের থাবায়।
    এরপর মৃত্যু।ক্ষুধার্ত বাঘের কি যে আনন্দ এমন সুখাদ্য পেয়ে !মিনিট পনেরোর মধ্যে সুস্বাদু মাংস ভোগ করে ধীরে ধীরে এগিয়ে চললো বনশালী বৃক্ষের নিচে।
    কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিবে নির্জন ছায়ায়।
    খাওয়াটা একটু বেশিই হয়ে গেছে
    বিশ্রামরত অবস্থায় ঝড় শুরু হলো।
    বাঘের শরীরে ভেঙে পড়লো বনশালী বৃক্ষের পাশে অবস্থান করা শক্তপোক্ত মোটা জামগাছ।
    সাথে সাথে বাঘটি কুঁকড়ে উঠলো প্রচন্ড যন্ত্রনায় ।
    পাঁজড় ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে।
    অনেক অনেক প্রচেষ্টা চালিয়েও সেই চাপ হতে বেড়িয়ে আসতে পারলোনা।
    বাঘটি যখন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে যাচ্ছিলো তার কিছুক্ষণ আগে ঝড় থেমে গেলো।
    বনশালী বৃক্ষটি উচ্চস্বরে আওয়াজ তুললো-
    আফসোস করছো কেনো বাঘ মশাই।
    হরিণটি নিরীহ সবুজকে হত্যা করেছিলো,তার অপরাধে ঘাঁসেরা প্রাণ হারায়।নগন্য তৃণ হলে কি হবে,ওরা আমাদেরি বংশধর।সেই হত্যার প্রতিশোধ তুমি নিয়েছো হরিণকে হত্যায় ।তোমাকে হত্যা করলো জাম বৃক্ষ,হরিণের প্রতিশোধ ছিলো এটা’
    জাম বৃক্ষকে হত্যা করলো প্রকৃতির তান্ডব-এটা তোমার প্রতিশোধ।এখন তুমি শান্তিতে মরে যেতে পারো।
    কেউ কাউকে হত্যার জন্য দায়ী নয় এখন আর।
    একমাত্র প্রকৃতির আদালত সঠিক রায় দিয়ে থাকে বুঝলে।
    পৃথিবীর সমস্ত স্মৃষ্টি পরস্পরকে হত্যা করে চলেছে পালাচক্রে।আমরা সকলেই হত্যাকারী”
    বাঘটি শেষ বারের মতো গর্জন দিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লো/
৭৩৮জন ৫৭৮জন

১৩টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ