১ম যুগ :- ( সবল পুরুষতান্ত্রিক)

– এই যে শুনছেন?
– কি? খিদা লাগছে। ভাত নিয়া আসো আগে।
– আগে কথাটা শুনেন। আপনার মা বলে আমি নাকি কোন কাজেরই না আপনার মতো!
– ঐ হারামজাদি! তুই আমার মায়ের নামে আমার কাছে আজেবাজে কথা বলিস! তোর উদ্দেশ্য কি আমি বুঝি না! পিডাইয়া একদম ভূত সোজা কইরা দিমু।
– ও আল্লাহ গো! আমার ভুল হইয়া গেছে মাফ কৈরা দ্যান। আমার চুল ছাইড়া দ্যান।
– আর যেন এমন না হয়। ভাত নিয়া আয়। জলদি কর।

দ্বিতীয় যুগ :- ( প্রেমিক পুরুষতান্ত্রিক)

– এই বউ চাঁদের মতো মুখটা কালা কৈরা রাখছো কেন?
– এমনিই । :-/
– কেউ কিছু বলছে?
– বললেই বা কি! কেউ কি আর আমার দুঃখ বুঝে!
– আহহা! বলোই না কি হইছে?
– তোমার ছোট বোন ডাং ডাং কৈরা ইস্কুলে যায়! আর তোমার মা আমারে দিয়া সব কাজ করায়।
– কি কাজ করায়?
– এই যে ভাত তরকারি রান্না, ঘর ঝাড়ু দেয়া।
– ও! খুব কষ্ট হয়?
– হুম।
– ও কি আর করা! আরেকটা বিয়া তাহলে কর্তে হবে।
– আরে! আমি কি তোমার লগে একটু মজাও করতে পারবো না!! ভাত তরকারি রান্ধন এসব কোন কাজ হৈল নাকি! তাছাড়া তোমার মা তো আমাকে সবকিছুতেই সাহায্য করে।
– ওওওও! চমৎকার মজা করো তো। এখন যাও ভাত আনো।

তৃতীয় যুগ :- ( সিরিয়াল যুগ)

– কি হইছে? সুটকেস গুছাচ্ছো কেন?
– এই বাড়িতে আমি আর এক সেকেন্ডও থাকবো না। দিস হাউজ ইজ শীট!
– কেন? আর এই যে এক সেকেন্ড তো শ্যাষ।
– সব সময় মজা ভালো লাগে না। ডিজগাস্টিং।
– আচ্ছা! কি হইছে বলো?
– তোমার বোন আমাকে কিভাবে এমন কথা বলতে পারলো? হাউ ডেয়ার শি ইজ!!!
– কি কথা?
– তোমাকে বলে কি হবে? তুমি তো আর আমাকে বিশ্বাস করবে না!
– ওহহো! মূল কথা বলো।
– তোমার বোন বলে আমি নাকি সারাদিন সাজুগুজু করি! ঘরের কাজ একটুও করি না। সিরিয়াল নিয়ে বসে থাকি! সিরিয়ালের নায়িকাদের মতো ঢং করে কথা বলি! তুমি বলো? আমি? আমি কি কখনো ঢং করি?
– ভাত রান্না হইছে?
– ইয়ে মানে!
– ইয়ে মানে কি?
– আমরা একটা কাজের বুয়া রাখতে পারি না? পাশের বাসার ভাবির স্বামী তো কাজের বুয়া রাখছে। তুমি কেন রাখছো না?
– সুটকেস ভালো করে গুছিয়ে বাপের বাড়ি থেকে কয়েকদিন ঘুরে আসো।
– এ্যাঁই! রাগ করছো? এ্যাঁই??

চতুর্থ যুগ :- ( নারীতান্ত্রিক যুগ)

– কিগো তোমার কতদূর হইলো?
– গ্যাস কম তো! হয়ে যাবে আরেকটু।
– ধ্যাত! তোমার মতো পুরুষ মানুষরা আসলে কোন কাজেরই না। সামান্য ভাত রান্না করতে এত সময় লাগে! ভাত রান্না করতো আমাদের পূর্বমহিলারা!! শুনেছি তারা নাকি এক ঘন্টা শেষ হওয়ার পূর্বেই ভাত তরকারি সব রেঁধে ফ্রেসও হয়ে যেত।
– তাই নাকি!! কোথায় পেলে এই খবর?
– গুগলে।
– আসলেই। ভাত রান্নাটা পুরুষদের ঠিক মানায় না। ও বউ কাল থেকে কি ভাত রান্না করবে তুমি?
– চুপ করো তো। জলদি ভাত রান্ধো। আমি ফ্রেস হয়ে টেবিলে যাচ্ছি।
– ঠিকআছে।

৮২০জন ৮২০জন
0 Shares

২১টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ