আমার পরিবারে আমি ছাড়া আরও চারজন সদস্য রয়েছে…বলছিলাম আমার তিন সন্তান আর ওদের বাবার কথা…বয়সের পার্থক্যের কারণে তাদের একের সাথে অন্যের সেভাবে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠেনি…এমনকি ভাইবোনদের মধ্যেও নয়….তাই বলে যে ওদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক নেই তা কিন্তু নয়…সবার সাথেই সবার বেশ ভালো সম্পর্ক…শুধু কেবল বন্ধুত্বটাই সেভাবে গড়ে ওঠেনি…যেরকম বন্ধুত্ব হলে একে অন্যের সাথে নিজেদের সব কথা শেয়ার করতে পারে।
যাই হোক, এর সব ধকল এসে পড়ে আমার ওপর…আমাকেই ওদের সবার সব কথা শুনতে হয়। ধরন অনুযায়ী তারা আবার দুই প্রকৃতির … একদিকে রয়েছে আমার বড় ছেলে সৌমিক আর তিনবছরের মেয়ে টুনটুনি, অন্যদিকে রয়েছে চতুর্থ শ্রেনীতে পড়া স্বপ্নীল আর ওর বাবা… স্বপ্নীল ওর স্কুলের বন্ধুদের গল্প বলে,ওর ক্লাসের গল্প বলে আর ওর বাবা তার ব্যবসায়ের কোথায় কি ঘটনা ঘটলো সেসব নিয়ে গল্প বলে…ওদের গল্পগুলো কিছুটা দীর্ঘ হয়ে থাকে…অনেক সময় সেগুলো শুনতে শুনতে আমি ধৈর্য্যহারা হয়ে যাই, তখন আমি ফেসবুকিং করি, রান্না করি অথবা অন্যকোন কাজ করি, এদিকে ওরা ওদের কথা বলতেই থাকে বলতেই থাকে…আমি যখন রান্নাঘরে যাই তখনও ওরা কথা বলতে বলতে আমার পেছন পেছন রান্নাঘরে যায়…ওদের একমাত্র উদ্দেশ্য হলো আমার সাথে ওদের কথাগুলো বলে শেষ করা…আমি সেগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনছি কি শুনছিনা তাতে ওদের কোন সমস্যা নেই…স্বপ্নীলের কথার শেষে শুধু হ্যাঁ বললেই হলো আর ওর বাবার কথার শেষে একটা কিছু বলে দিলেই হলো।
অন্যদিকে টুনটুনি আর সৌমিক বেশিরভাগ সময় আমাকে কিছু ভিডিও দেখতে বলে সেগুলো আমাকে খুব মনোযোগ দিয়ে দেখতে হয়…এতোটাই মনোযোগ দিয়ে দেখতে হয় যে অনেক সময় হয়তোবা চোখের পলকও ফেলিনা…কারণ টুনটুনির যদি মনে হয় যে ওর ভিডিও আমি মনোযোগ দিয়ে দেখছিনা তাহলেই সে সামনে যা পাবে সব ছুঁড়ে ফেলে দিবে আর বলতে থাকবে তুমি দেখো নাই, তুমি দেখো নাই…যতোই বলি মা আমি দেখেছিতো কিছুতেই তাকে বুঝানো যাবেনা…আর সৌমিকের ক্ষেত্রে যা হয় তা হলো মনোযোগ দিয়ে ওর ভিডিওটা দেখে বলতে হবে সেখানে কি বোঝানো হয়েছে, যদি উল্টাপাল্টা কিছু বলে ফেলি তাহলেই সে বুঝতে পারে যে ভিডিওটা আমি মনোযোগ দিয়ে দেখিনি। তখন সেও রাগ করে সেখান থেকে চলে যায়, দ্বিতীয়বার আর ভিডিওটা দেখার সুযোগ দেয়না, তাই টুনটুনি আর সৌমিকের ক্ষেত্রে বাধ্য হয়েই আমাকে মনোযোগী ছাত্রী হতে হয়।
এটাই আমার পরিবার…এখানেই আমার আনন্দ.. 🙂
২৯টি মন্তব্য
ইঞ্জা
সু-স্বাগতম সোনেলায় আপু আর অসাধারণ এই লেখাটির জন্য ধন্যবাদ।
সবার লেখা পড়ুন আর কমেন্ট করুন এতে আপনিও সাপোর্ট পাবেন।
২৪ ঘন্টা পর পর লিখতে পারবেন এর আগে নয়।
পারলে নিচে দেওয়া নিয়মাবলী একবার পড়ে নেবেন। 🙂
শুভেচ্ছা আর শুভকামনা। \|/
শাহানা আক্তার
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া…আমি নিয়ম মেনে চলতে চেষ্টা করবো..
ইঞ্জা
-{@
ব্লগার সজীব
স্বপ্নীল আর ভাইয়ার কথা পড়ে হাসতেই আছি, কথা শুনে একটা কিছু বলে দিলেই চলে :D) দারুন লাগলো এই অংশটুকু 🙂 আমার লেখা পড়ে একটা কিছু বলে দিলে কিন্তু চলবে না, আমিও কিন্তু বলে দেবো ‘ আমার লেখা পড়েননি, আমার লেখা পড়েননি 🙂
সব কিছু মিলিয়ে দারুন এক পোস্ট। আপু এটি পর্ব হিসেবে ধারাবাহিক দিন। আনন্দময় পারিবারিক বন্ধনের উদহারন হবে সে সব লেখা।
#আমিও এক সময় লেখার লাইনের পরে ডট ডট দিতাম……. এখন আর দেইনা :p
আমাদের সোনেলার নীড়ে স্বাগতম -{@
শাহানা আক্তার
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে …আসলে ছোটো ছট এই আনন্দগুলোই আমাদেরকে এক সুঁতোয় বেঁধে রাখে…প্রতিদিনের ঘটনা নিয়ে ধারাবাহিক লেখা যাবে হয়তো…আমি চেষ্টা করবো…আপনাদের নীড়ে সাদরে গ্রহণ করার জন্য কৃতজ্ঞতা…ভুল হলে শিখিয়ে দেবেন অবশ্যই…
শাহানা আক্তার
*ছোট
শাহানা আক্তার
আমিও এখন ডট…দেই, একসময় আর দিবোনা
ব্লগার সজীব
আপু, পারিবারিক বন্ধন আস্তে আস্তে শিথিল হয়ে যাচ্ছে, পারিবারিক আনন্দ যে কত মধুর হতে পারে,এমন লেখা তা প্রমান করে।
ডট ডট নিয়ে মন্তব্য করেছি বলে কিছু মনে করবেন না আপু।
শাহানা আক্তার
না কিছু মনে করিনি বরং খুশি হয়েছি। এরপর থেকে ডট ছাড়াই লিখতে চেষ্টা করবো।
অরুনি মায়া অনু
সো সুইট। অনেক সুন্দর পরিবার আপনার মাশাল্লাহ্। এখন থেকে ওদের গল্প গুলো আপনাকে একা একা শুনতে হবেনা। আমরাও শুনব। আপনি লিখবেন ওদের জমানো কথাগুলো।
সোনেলায় স্বগত আপু। আপনার ও আপনার পরিবারের সাথে পরিচিত হতে পেরে খুব ভাল লাগছে। আশাকরি আমরা আপনাকে নিয়মিত পাশে পাব। -{@
অরুনি মায়া অনু
অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য দু:খিত। স্বাগত জানাচ্ছি আপনাকে।
শাহানা আক্তার
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। আমারও অনেক ভালো লাগছে আপনাদেরকে পাশে পেয়ে। আপনাদের সাথে আমার পরিবারের গল্পটি শেয়ার করতে পেরে খুশি আমিও।
নীলাঞ্জনা নীলা
সোনেলার নীড়ে স্বাগত জানাচ্ছি প্রথমেই।
প্রথম লেখাতেই ভালো লাগা কাজ করছে। এমন আরোও চাই। রোজনামচা আমিও আগে লিখতাম ফেসবুকে। এখন আর লিখিনা।
টুনটুনি আর সৌমিককে ফাঁকি দেয়াটা কঠিন, মজা পেয়েছি।
আরোও লিখুন।
শাহানা আক্তার
ধন্যবাদ জানাচ্ছি। জি চেষ্টা করবো আমার পরিবারের গল্পগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করতে। পাশাপাশি আপনাদের পরিবারের সাথে পরিচিত হবারও আগ্রহ রয়েছে।
নীলাঞ্জনা নীলা
আমার “এলোমেলো কিছু কথা” পোষ্টে কোনো কল্পনা কিংবা উপমার প্রয়োগ নেই। কারণ আমি নিজে অনেক এলোমেলো কিনা! 🙂
অপেক্ষায় রইলাম রোজনামচার।
শাহানা আক্তার
এতো গুছানো লেখা অথচ শিরোনাম “এলোমেলো”কেন?
ছাইরাছ হেলাল
এখানে লেখার জন্য ধন্যবাদ,
প্রথম লেখা পড়েই রোজনামচার নিয়মিত পাঠক হয়ে গেলাম।
তবে ভিডিওগুলো এবার থেকে মন দিয়েই দেখবেন কিন্তু।
শাহানা আক্তার
আমার লেখা পড়ার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ। চেষ্টা করবো নিয়মিত লিখতে। বাধ্য হয়েই ওদের ভিডিও আমাকে মনোযোগ দিয়ে দেখতে হয়।
মিষ্টি জিন
সোনেলার আংগিনায় সু স্বাগতম।
খুব সুন্দর রোজনামচা।
টুনটুনির অভিব্যাক্তি বেশী ভাল লেগেছে। (3
অনেক আদর এবং দোয়া বচ্চাদের জন্য।
শাহানা আক্তার
ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমার পরিবারকে নিয়ে লেখাটি পড়ার জন্য। আপনাদেরকে পাশে পেয়ে আমিও ভীষণ খুশি 🙂
নাসির সারওয়ার
সোনেলায় পরিবারে স্বাগত এবং এ পরিবারকেও আপনার ভালো লাগবে।
পাঁচ আঙ্গুল পাঁচ রকমের হবারইতো কথা।
ভিডিও বুঝতে না পারলে ব্লগার সজীবকে বলবেন। এসব ব্যপারে সে একজন গুরু।
শাহানা আক্তার
সোনেলা পরিবারের সবার সাথে পরিচিত হচ্ছি আস্তে আস্তে। অনুভূতি ভীষণ ভালো। ভিডিও না বুঝলে ব্লগার সজীবকে বলবো বুঝিয়ে দিতে। অনেক ধন্যবাদ 🙂
ব্লগার সজীব
ব্লগার সজীবের কত্ত গুন এবার বুঝলেন তো আপু? :p 🙂
শাহানা আক্তার
হ্যাঁ বুঝেছি। এতো গুন না থাকলেতো কেউ এমনি এমনি সজীব থেকে সজু হতে পারেনা।
মৌনতা রিতু
সোনেলার পরিবারে স্বাগতম। পরিবারের সম্পর্কগুলো এমনি। আমি তো সকালে খুন্তি ঘুরাই। তিন বাপ ব্যাটা পাগল করে ছাড়ে। বিছানাটাই যেন ওদের ফুটবল মাঠ। ছোটছেলের অনেক বন্ধু। বড়টার মাই তার সব থেকে প্রিয়। মায়ের কাছে তার সব গল্প বলা। অনেক ভাল লাগল আপু।
ভাল থাকুন এমনি সব সময় সবাইকে নিয়ে।
শাহানা আক্তার
পরিবারে এসব না থাকলে ভালোও লাগেনা। আপনার পরিবারের রোজকার ঘটনাগুলিও বেশ মজার। আরও আরও ঘটনা জানাবেন আশা করি। সোনেলা পরিবারে সাদরে গ্রহন করবার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
শুন্য শুন্যালয়
ভিডিও দেখাতে ফাঁকিবাজি? উহু একদম মানবো না। চরম মজা পেয়েছি আপনার সংসারনামচা পড়ে 😀
আমিও কিন্তু পরীক্ষা নেবো, তবে প্রথমবার ফাঁকিবাজি করলে দ্বিতীয়বার সুযোগ দেবো, নো ওরিজ। 🙂
সবার কথা শুনতে চাই আরো বেশি বেশি করে।
শাহানা আক্তার
ওদের ভিডিও দেখতে হলে চোখের পলক ফেলা নিষেধ আপু।চোখের পলক ফেললেই তুলকালাম কান্ড। ওদের কথা জানাতে চেষ্টা করবো আপু।
জিসান শা ইকরাম
এই সমস্ত সুখ, আনন্দ, মুহুর্তের জন্যই আমাদের বেঁচে থাকা,
এমন আনন্দের মাঝে থাকুন চিরকাল।
আপনি ভাল লেখেন।
স্বাগত আপনি আমাদের এই ছোট সোনেলার উঠোনে
এসির ঠান্ডা আপনি এখানে হয়ত পাবেন না,
তবে পরম যত্নে তাল পাতায় বানানো হাত পাখা দিয়ে বাতাস দিতে আমরা জানি।
লেখুন নিয়মিত।