রাত ১টা ৪৫।
As usual আমি আমাদের বেলকুনির প্রাচীরে দুই পা কোলে নিয়ে বসে আছি। আর পাউরুটি খাচ্ছি। বসতে একটু বেজুত হলেই ৫ তলা থেকে সোজা মাটিতে গিয়ে আছাড় খাবো, আর আমার নাড়ি-ভুঁড়ি, গু সব বের হয়ে যাবে।
প্রতিদিন যে পাউরুটি থাকে তা না। অন্যান্য দিন মুড়ি খাই। মুড়ি খাওয়ার সমস্যা হল, খাওয়াটা কখন বন্ধ করতে হবে তা বোঝা যায়না। আর প্রায়ই গলায়, জিহ্বায় বিভিন্ন জায়গায় কামড়ে ধরে।
এই মুহূর্তে খুব মজার একটা কাণ্ড ঘটছে। বাসার সামনে রাস্তার ঠিক মাঝখানে একজন লোক মাথায় পানি ঢালছে। গোসল করছে নাকি?
করতেও পারে, পাগল হয়ত কোনো। কিন্তু আমি নিজের ভিতরে কি পরিমাণ ঈর্ষা অনুভব করছি তা বলে বোঝানো যাবেনা। আমারও ভীষণ ইচ্ছা করছে গায়ের সব কাপর চোপড় ফেলে দিয়ে রাস্তার মাঝখানে দাড়িয়ে গোসল করি।
রাত দুপুরে, ঢাকা শহরের নির্জন কোন রাস্তায়, নাংগা হয়ে মাথায় পানি ঢালার মজা স্বাভাবিক মানুষ ধরতে পারবেনা। আমি ঠিক করেছি, আমি যদি কখনো পাগল হয়ে যাই (সম্ভাবনা তো আছেই) তাহলে অবশ্যই নাঙ্গু পাগল হব।
ভালো মানুষের মত পরিপাটি ড্রেস পড়ে কারো বাড়িতে নক করব। আর গেট খোলা মাত্রই বলব,
“আপনার বাসায় কি পানি আছে? একটু গোসল করতাম……”
কথা শেষ করার আগেই হেস্কা টান দিয়ে কাপড় চোপড় খুলে ঘরের ভিতরে দৌড়ে ঢুকে পড়ব। বেচারা কি ঘটছে চিন্তা করার পর্যন্ত সময় পাবেনা। ছুটতে ছুটতে ঘরের ভিতরে যদি দা, ছুরি, বটি কিছু পেয়ে যাই তাহলে তো কথাই নাই। বটি উপরে তুলে উনার উপর ঝাপিয়ে পড়ে চোখ বড় বড় করে হুঙ্কার দিয়ে বলব, “পানি কইরে হারামজাদা, পানি?? ”
লোকটার সেই মুহূর্তে কি অবস্থা হবে তা ভেবে আমার পেটে এখনই মোচড় দিচ্ছে।
আমি প্রায়-ই ভাবি ৫তলা থেকে লাফিয়ে পড়লে ঠিক কেমন লাগবে। এতো উপর থেকে পড়লে পড়ার পর আমি কতক্ষন জীবিত থাকবো? ২ মিনিট? এর বেশি নাকি কম? কম হলেই ভালো।
লাফ দিলে মাথাটা অবশ্যই নিচে রেখে লাফ দিতে হবে, যাতে মাথাটা আগে পড়ে। কারন এতো উপর থেকে পড়েও যদি কোনোভাবে বেঁচে যাই তাহলে খবরই আছে। লেংড়া লুলা হয়ে বাঁচা possible না।
শুনেছি, জীবন মৃত্যুর মাঝখানের একটা সময় বলে কিছু আছে, যে সময়ে আমার সারা জীবনের সব মূল্যবান স্মৃতিগুলো একে একে রিকেপ করে দেখানো হবে। সময়টা ঠিক কতক্ষনের? শুনেছি মানুষ তখন অনেক অদ্ভুত কিছু জিনিস দেখতে পায়, অদ্ভুত অনেক কিছু শুনতে পায়। এগুলো কি হেলুসিনেশন- নাকি মৃত্যুর আগে জেনে যাওয়া অত্যন্ত গোপনীয় কোন সত্যি ঘটনা বা কথা, যা জীবিতদের জানতে হয়না??
নাকি এমন কোনো ধাঁধার উত্তর যা মানুষ সারাজীবন ধরে খুঁজে বেরিয়েছে কিন্তু পায়নি!!!??
হতেও পারে, নাও পারে। আবার হতে পারে সেটা আরও অনেক জটিল কোনও সমীকরণ!!! কি জানি!!
লাফটা তাইলে দি দিই!! 😀 সমাধানটা হয়ে যাক!!!
২৫টি মন্তব্য
ইলিয়াস মাসুদ
এই লিখাটা কি পাগল হওয়ার আগে না পরের?
যদি আগের হয় তই আমারে সাথে রাইখেন 😀
শাওন এরিক
অনলি পাগল ইজ রিয়েল!! 😀
শুন্য শুন্যালয়
রহস্যের সমাধান যদি না পান, তাহলে তো আমও যাবে ছালাও যাবে। না রহস্যের সমাধান হবে, না নাংগু পাগল হবার খায়েশ মিটবে! যদিও আপনাকে আমার এখন খাঁটি এক নাম্বার পাউরুটি পাগলই মনে হচ্ছে। কোন ব্রান্ডের পাউরুটি খাচ্ছিলেন? পাউরুটি ভালো না হলে আবার পেটের রোগের সমস্যা হবার সম্ভাবনা আছে। 🙂
জাত লিখিয়ে মনে হচ্ছে আপনাকে 🙂 দারুণ!
শাওন এরিক
বাংলাদেশের জাতীয় পাউরুটি ” অলটাইম বাটার বান” 😉
নীলাঞ্জনা নীলা
কথায় আছে “রতনে রতন চেনে।” কিন্তু পাগলে পাগল চেনে না। 😀
পাগল যদি পাগলকে চিনতো, তাহলে কি হতো বলুন তো! উত্তর জানি না।
তবে এমন পাগলামী আছে বলেই এতো ভালো লিখতেও পারছেন।
শাওন এরিক
তার মানে পাগল তো হয়ে গেছি!
জাস্ট, নাঙ্গু খেতাব টা পাওয়া বাকি থাকল 😀
আবু খায়ের আনিছ
রম্য হিসাবে ভালোই হয়েছে, কিন্তু পড়তে গিয়ে বারবার হুমায়ূন অাহমেদ এর কথা মনে পড়ছিল। মনে হচ্ছিল হিমু পড়ছি।
শাওন এরিক
বেঁচে থাক হুমায়ুন শত পাগলের ভিড়ে…. 🙂
ইঞ্জা
মাথাটার মাথায় খেয়েছেন দেখছি, আউলামীরো সীমা থাকা উচিত, যান যান রাস্তায় গিয়া মাথাই পানি ঢালুন তারপর বাসায় ফিরে একটা প্যারাসিটামল ট্যাবলেট গিলে সোজা বিছানায় ঝাপ দেবেন।
শাওন এরিক
আমি কিন্তু নিয়ম করে প্রায়ই মাছের মাথা খাই! 😀
বিশেষ করে পুটি মাছের :p
জিসান শা ইকরাম
মুড়ি খেতে গিয়ে আমি এই সমস্যায় ভুগি, আর একটু বেশি– মুড়ির কৌটার তলানিতে হাতড়ে আর মুড়ি পাইনা, অথচ খাবার পূর্বে কৌটা বোঝাই থাকে।
নেংগু পাগলের আইডিয়া মনে ধরছে,
ছাদ থেকে পড়ার ইচ্ছে বাদ দিন, নেংগুটা বাস্তবায়ন হোক।
চমৎকার উপস্থাপনায় চমকিত হয়েছি।
নিয়মিত লেখুন এখানে, আমরা বারবার চমকিত হতে চাই।
শাওন এরিক
বাদ বাদ!! লাফ দেয়া বাদ থাকল!!
সময় করে একদিন বলবেন, নাঙ্গু গোসল বাস্তবায়ন হবে!!! 😀
জিসান শা ইকরাম
অবশ্যই বাস্তবায়ন হবে 😀
মৌনতা রিতু
মৃত্যুর আগে কয়েক সেকেন্ডে মানুষের সামনে সত্যি হঠাৎ অনেক স্মৃতি ভেসে ওঠে। যদি মৃত্যু না হয় তবে সেই স্মৃতির মুখগুলো আজিবন সামনে ভাসে।
মুড়ি এমন একটা জিনিস, খাবনা করতে করতে সবই শেষ হয়ে যায় এক সময়।
আর হ্যাঁ, নিচে পড়ার সময় নিয়ম মতো মাথাই আগে পড়ে, তাই ঘিলুই বের হবার সম্ভাবনা আগে, অন্য কিছু না।
পাগল কি ইচ্ছে করে হওয়া যায় ! ভাবতে হবে।
রম্যটা পইড়া তো আমারই পেটে মোচড় দিচ্ছে।
খুব ভাল পাগলা পোষ্ট হইছে।
শাওন এরিক
dhonnobad 😀
মিষ্টি জিন
… মাথাটা নিচের দিকে পরলে ঠাস করে মাথা ফেটে ঘিলু বের হয়ে যাবে., এরপর বাঁচলেও বাঁচতে পারেন ..
পাগলা বাবার পাগলা পোষ্টে ভাল হঁয়েছে .,
শাওন এরিক
না না!!! এরপর বাঁচতে চাইনা!! 🙁
ঠাস করে পড়ে, লাশ হতে চাই একবারে!
শাওন এরিক
ধন্যবাদ 🙂
ক্রিস্টাল শামীম
রুটিখোর সত্যিই পাগল হয়ে গেল। এখন আর তার রুটি আর মুড়ির দরকার নেই। আদম শুমারী হলে তার মাথাটা ঠিকই বাদ পড়ে যাবে। কোন প্রার্থী তার ভোট চাইবে না। সরকারের কোন কাজেই সে আসবে না। সে কোন সন্তান জন্ম দেবে না, কোন সুন্দর স্বপ্ন দেখবে না, মজার কোন রসিকতায় কখনও হেসে উঠবে না। সুমনের গানের মতই- সে কেবল পাগল হয়ে সাপ-লুডু খেলতে চাইবে বিধাতার সঙ্গে। (y)
শাওন এরিক
ভালো বলেছেন! 😀
মেহেরী তাজ
লেখায় হুমায়ন আহম্মদ হুমায়ন আহম্মদ একটা ধরন আছে……
ভালো লেগেছে। 🙂
শাওন এরিক
🙂
গাজী বুরহান
আমি হলে পাঁচ তলা তলা থেকে লাফ দিয়ে ছয় তলা সাত তলা হয়ে সোজা আকাশে উড়ে বেড়াতাম। নিচে পড়ার কোন মানে হয়? এটা তো পাউরুটির বদনাম! \|/
শাওন এরিক
এটা বেষ্ট ছিল :D)
শাওন এরিক
একবার নীচে পড়ার পর আপনি উপরে চলে যেতে পারবেন কিন্তু! 😀