শুভ রেলওয়ে তে অনেক্ষন ধরেই বসে আছে,খানিকটা তার নিজের উপর রাগ ও হচ্ছিল,সালার বেটারা খালি লেট করে ট্রেন রাত ১১.৪০ এর অথচ কারও এখন ও আসার নাম নাই,বলেই ফোন দিল আকাশ কে-হ্যলো তুই কই?কয়টা বাজে?
-অন দ্যা ওয়ে ম্যান,কিপ কুল
তোর কুল এর নিকুচি করি জলদি আয়
-বাস এ আছি,প্রায় চলে আসছি,ওয়েট।
৫বন্ধু মিলে চিটাগাং ঘুরতে জাবে তারা,প্ল্যান টা অনেক দিন আগে থেকেই ছিল কিন্তু টাকা থাক্লে বন্ধু নাই, বন্ধু থাকলে টাকা নাই,অনেক সময় সময়ের ও ব্যাপার সেপার থাকে..
রাত ১১.২৫ এর মধ্য সবাই হাজির,শুভ ব্যাটা পুরাই গরম,ওই সালারা মামুর ব্যাটারা বারিত কি বৌ ফালায় আসচস এত লেট কেন!!
তাকে শান্ত করে সবাই রেলওয়ে তে বসে তুর্ণা এক্সপ্রেস এর অপেক্ষায় থাকল..কিছুক্ষণ পরে রেলওয়ে কতৃপক্ষ জানালো সিডিউল জ্যাম এর কারনে রাতের ট্রেন আসতে আসতে ৪-৫ টা বাজবে,কেউ টিকিট ফেরত দিতে চাইলে দিতে পারে।
কথা টা শুনা মাত্রই সবার মাথায় জেন বাজ পরল,এত প্ল্যান তাহল ভেস্তে জাবে,নাহ এটা মানা জায় না বললো ফিরজ,ফিরোজ ছিল সবার মধ্য সাহসী, দু:সাহসিক অভিজানে ফিরোজ এর তুলনা নেই,যেমন বন্ধুর বাড়ি বেরাতে গিয়ে মধ্য রাতে খেজুরের রস চুরি করে খাওয়া,রাতের বেলা জংগল এ ঘুরাঘুরি এগুলো তে ফিরোজ ভাল এক্সপার্ট।হটাত বলে উঠল নাহ প্ল্যান যেহেটু হয়েছে যেমন করেই হোক আমরা চিটাগাং জাবই। সবাই দেখি প্রায় একমত শুভ শুধু চুপ চাপ,কিরে তোর মতলব কি আকাশ বলে উঠল,এই শুভ টা হল শান’ত শিষ্ট তবে লেজ বিশিষ্ট,চুপ চাপ থাকা তার স্বভাব কিন্তু এর দ্বারাই অনেক কিছু হবে সবাই জানে,যেমন এই ট্রিপ টাও তার প্ল্যান অনুযায়ী করা, চল বললো শুভ…
রাত তো অনেক হয়ে গেছে এখন বাস পাওয়া তো জাবে না কি করা যায়?
সায়দাবাদ গিয়ে দেখি তারপর দেখা যাবে,যেই কথা সেই কাজ বাস এ সোজা সায়দাবাদ। ২-১ টা পেপারের বাস দেখা জাচ্ছে কিন্তু সেটাতে দিয়ে জেতে আগ্রহি নয় মেহেদী।ওর কথা শুনে যা মনে হল সে হেটে জেতে রাজি তাও এই বাস এ না,ওর কথা বার্তায় ন্যাকামি ভাব আছে যেটা নিয়ে শুভ,আকাশ প্রায় হাসা হাসি করে।হাতে কোন উপায় নেই জেতে চাইলে এই বাসেই উঠতে হবে তোরা কি বলিস!
সারা রাত বসে থাকার চেয়ে চলে জাওয়াটাই বেটার মনে হয় ফিরোজ বলে উঠল।
ওকে তাহলে চল।সবাই উঠে পরল,মেহেদীকে সবাই বুঝিয়ে বাসে উঠাল। ১০ মিনিট বাস চলার পর থামল বাসের লোক এসে বললো আপনাদের ডেক এ বসতে হবে..
কেন! বলে উঠল শুভ!
এখানে পেপার রাখা হবে তাই।বলেই বাস অফ করে লোকেরা পেপার উঠাতে লাগল..
এভাবেও বাস টা তে কেউই ভাল ফিল করছিল না,আবার এই অবস্থা ধুরর চল সবাই,বলেই সবাই নেমে পরল।
আসে পাসে কিছুই নেই সব,খাওয়া দাওয়া করবে হোটেল গুলো ও বন্ধ,সালার কি কপাল রে,কে জানত আজ এই রকম হইব বাসাতেও মিথ্যা কথা বলসি যে ট্রেন এ আছি অথচ ট্রেন এর গন্ধ ও নাক নিজে থেকেই বলে উথল শুভ।
আসলে তোদের সাথে আসা টাই আমার ভুল হইসে সজিব বলে উঠল,সজিব দূর থেকে এসেছে একসাথে জাবে বলে,সাথে তার শখের DSLR. তোরা চুপ করবি কমলাপুর চল ওইখানেই ভাগ্য নির্দিষ্ট ফিরজ বলে উঠল।
একটা লেগুনা পেয়ে সবাই উঠে পরল হয়ত গ্যারাজ এ নিজে জাচ্ছে,লেগুনা থেকে নেমে রাস্তায় কতক্ষণ হাটাহাটি করে কমলাপুর রেলওয়ে তে সবাই বসে পরল।এভাবেই শীতের সময়ে কি করে সারারাত কাটবে কেউ বুঝে উঠতে পারছিল না।ফিরোজ এসে বললো ট্রেন আসতে ৫ টার মত বাজবে,কি আর করার বসে থাক তোবে ঘুমোস না তাইলে নিজেকে পাবি তবে তোর জিনিসপাতি না পাবার সম্ভাবনা টাই বেশি।
ওকে।সবাই ক্লান্ত হয়ে বসে রইল ঘুম ও পাচ্ছে বেশ,শুভর প্রায় চোখ লেগেই গিয়েছিল হতাত শুনতে পেল গান বাজতেসে “কখন ও ভালবাসনি,ভেংগেছ শুধু এ হ্রিদয়” মনে মনে বললো কোন হারামী ছেকা খাইয়া এই রাইত বিরাইত এ এই মরা গান শুনতাসে।বলে পাশ ফিরতেই দেখে সালা মেহেদী এই মরা গান ছারসে,ফিরোজ আর আকাশ ও দেখি ওর দিকে তাকায় রইল একটু পর সবাই হাসি।না রে ভাই মেহেদী তুই আসলেই একটা পিস লাইফ এ অনেক কিসু করতে পারবি,মেহেদী বুঝতে পারল না হটাত শুভ এর এরকম বলার মানে টা কি!
ঘুম পাচ্ছে চল চা খেয়ে আসি,বলেই আকাশ আর ফিরোজ চলে গেল,তাদের মধ্য মিল হল তারা দুজনেই শুধু সিগারেট খেত তাই তারাই চলে গেল।বসে রইলাম আমরা তিন জন।
শীতের মাত্রা যেন বেরেই চলছে,চল তো আমরাও চা খেয়ে আসি বলে সজিব আর মেহেদী কে নিয়েই বের হলাম,কথা বার্তা বলছিলাম হটাত এক পুলিশ কর্মকর্তা আমাদের ডাকলেন,এই এদিক এ এস?
-কথা থেকে এসেছ?
আমরা আসি নি জাব,চিটাগাং রাতের ট্রেন এখন আসে নি।
-হাতে কি?
ব্যাগ,আমরা ছাত্র মানুষ,আইডি কার্ড আছে দেখাতে পারি,বলতেই ফিরোজ,আকাশ চলে এল আমাদের কাছে।
-এত রাতে তোমরা আড্ডা দিতে বের হইছ,ফাজলামির আর জায়গা পাওনা,জেল চিন,পরালেখা আমি ও করসি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে।এখন দেখ পুলিশ এ চাকরী করছি।
স্যার আপনি ভুল বুজতেসেন।
-কথা কম বল,হাজত এ ভরে দিব,যা রেলওয়ে যা আর এক বার বাহিরে এলেই কোন কথা নাই ধরে জেল,যা।
আমরা ভিতরে চলে আসলাম ভাবতে লাগলাম,সালায় এমন ভাব কেন নিল,এই সেই আবার জগন্নাথ এ পরে আরে বেটা তোর সময় অইটা ন্যাশনাল ছিল কলেজ বলতি আর কত কি।আবার বলে পুলিশ এ জব করি পুলিশ এ।।
অবশেষে আর বের হই নি,সারারাত শেষ হবার পর ভোর ৫.২০ এর দিকে এল স্বপ্নের তুর্ণা এক্সপ্রেস।মনে যেন শান্তির বাতাস বয়ে গেল আর বলতে লাগলাম তুই এলি রে ভাই তুই এলি….
১৪টি মন্তব্য
নীলাঞ্জনা নীলা
বেশ লাগলো গল্পটা। (y)
তামিম রুহুল
সময় নিয়ে পড়ার জন্য ধন্যবাদ
খেয়ালী মেয়ে
যাক বন্ধুরা মিলে ভালোই অভিজ্ঞতা অর্জন করা হলো 🙂
তামিম রুহুল
😀 🙂
অনিকেত নন্দিনী
পাঁচ বন্ধুর রাতবিরেতের অভিযানের গল্প ভালো লেগেছে।
তামিম রুহুল
অসং্খ্য ধন্যবাদ
বোকা মানুষ
লেখার প্লট টা দারুন! কিছু বানান ভুল বাদ দিলে আর লেখার বুননে আরেকটু মনোযোগ দিলে দুর্দান্ত একটা লেখা হতো! চালিয়ে যান! সামনে আরো লেখা চাই!
তামিম রুহুল
কমেন্ট করার জন্য অসং্খ্য ধন্যবাদ। ভুল ত্রুটি গুলো আগামিতে শুধরানোর চেস্টা করব…
সীমান্ত উন্মাদ
এই ধরনের গল্প আমার বেশভালো লাগে। নিজের জীবনের সাথে মিলে বলে তাই।
গল্পটা অনেক ভালো লেগেছে। শুভকামনা জানিবেন নিরন্তর।
তামিম রুহুল
সময় নিয়ে পড়ার জন্য অসং্খ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
অলিভার
গল্প মনে হচ্ছিল না, পুরোপুরি যাত্রার পূর্বের বিপত্তির ঘটনার বর্ণনাই মনে হয়েছে লেখাটা পড়ার সময়।
নতুন লেখার অপেক্ষায় রইলাম 🙂
তামিম রুহুল
ধন্যবাদ আপনাকে সময় নিয়ে পড়ার জন্য 🙂
শুন্য শুন্যালয়
মেয়েরা এই অভিজ্ঞতা থেকে বঞ্চিত হয় বেশিরভাগ সময়ই। 🙁 হিংসা হয়।
তামিম রুহুল
সেটা অবশ্য ঠিক কিন্তু মেয়েরাও কিছু এক্সেপসনাল অভিজ্ঞতা পেয়ে থাকে। পড়ার জন্য অসং্খ্য ধন্যবাদ