ইতালিতে রোমের তাইবার নদীতে ঝাঁপ দিয়ে ডুবন্ত এক নারীকে উদ্ধার করে বীরত্ব দেখিয়েছেন বাংলাদেশী অভিবাসী সবুজ খলিফা। পুরস্কার হিসেবে ইতালিতে এক বছর বৈধভাবে থাকার অনুমতি পেয়েছেন তিনি। আত্মহত্যার জন্য পানিতে ঝাঁপ দিয়েছিলেন ৫৫ বছর বয়সী ইসরাইলি ওই ইহুদি নারী। সাঁতার না জানায় তিনি তলিয়ে যাচ্ছিলেন। সবুজ তা দেখে পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে তাকে উদ্ধার করেন।
সবুজের ইতালিতে থাকার বৈধ কাগজপত্র না থাকলেও তাকে দেশ থেকে বহিষ্কার না করে; বরং তার মানবতা ও বীরত্বের সম্মাননায় দেয়া হয় এক বছরের বৈধতা। সবুজ ২০০৮ সাল থেকে ইতালিতে আছেন। শুরুতে একটি অস্থায়ী অনুমতিপত্র নিয়ে ইতালিতে প্রবেশ করলেও বহুদিন আগেই তার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। ঘটনার ব্যাখ্যায় সবুজ বলেন, ‘আমি পানির মধ্যে একটি জিনিস দেখতে পাই। প্রথমে ভেবেছিলাম, সেটি একটি বড় মাছ। কিন্তু ভালো করে লক্ষ্য করতেই দেখি, সেখানে একজন মানুষ। আমি দৌড়ে নদীর তীরে যাই এবং দেখি, তিনি স্রোতে ভেসে যাচ্ছেন।’ সবুজ বলেন, ‘লোকজন একটি সেতুর ওপর থেকে ঘটনাটি দেখছিল। আমি চিৎকার করি এবং তাদের সাহায্যের জন্য ফোন করতে বলি। এরপর আমি নদীতে ঝাঁপ দেই। সময় নষ্ট হবে ভেবে আমি আমার জুতাও খুলিনি। আমি একদম ভয় পাইনি।’ সবুজ একাই ওই নারীকে টেনে পাড়ে তোলেন। তার এ সাহসীকা-ে রোম কর্তৃপক্ষ দারুণ খুশি। রোমের মেয়র ইগনাজিও ম্যারিনো সবুজকে ফোনে শুভেচ্ছা জানান। ইতালির গণমাধ্যমে সবুজ বলেন, ‘আমি খুবই উৎসাহ পাচ্ছি। আগে কখনও এত খুশি হইনি।’
দ্যা টেলিগ্রাফ এ প্রকাশিত সংবাদ এবং ফটো
রোম কর্তৃপক্ষ সবুজ খলিফার হাতে এক বছর বৈধ ভাবে থাকার অনুমতি পত্র তুলে দেন।
এ সম্পর্কে ইটালীতে প্রকাশিত সংবাদ এর উল্যেখ যোগ্য হচ্ছে – রোমের মেয়র সবুজ খলিফাকে ফোন দিয়ে অভিনন্দন জানান। মেয়র তার ফেইসবুক পেইজে লেখেন “I called Sobuj Khalifa, the young Bengali who saved a woman from the Tiber,”
“I congratulated him on his beautiful heroic and human gesture.”
ইসরায়েলেও এটি খুব গুরুত্ব সহকারে প্রচার পেয়েছে।
সবুজ খলিফা একজন মুসলিম হয়ে একজন ইহুদী মহিলাকে ডুবন্ত অবস্থা থেকে জীবনের ঝুকি নিয়ে উদ্ধার করেছেন। অন্য সবাই যখন ব্যস্ত মোবাইলে ফটো তোলাতে তিনি তখন ঝাপ দেন নদীতে ডুবন্ত নারীকে উদ্ধারে। তিনি একবারো ভাবেননি, ইতালিতে অবৈধ ভাবে বসবাস করে এমন কাজের পর পুলিশ আসবে, এরপরে তাকে গ্রেফতার করা হতে পারে। একজন মানুষকে বাঁচাতে হবে এর বাইরে তিনি আর কিছু ভাবেননি।
একজন প্রকৃত হিরো তিনি। আমরা সবুজ খলিফার জন্য গর্বিত। তাকে অভিনন্দন -{@
একটি অবাক করা কাঁকতলিয় বিষয়ঃ
যে তাইবার নদীতে ঝাঁপ দিয়ে ডুবন্ত এক নারীকে উদ্ধার করেছেন সবুজ খলিফা,সে স্থানের অল্প কিছু দুরেই নদীর তীরের ওয়ালে এই চিত্রটি আঁকা আছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে একজন পুরুষ একজন নারীকে পানি হতে উদ্ধারের পরে হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। এমন একটি ঘটনা ঘটবে এই নদীতে এটি ভেবেই কি এই চত্রটি অংকন করেছিলেন কোন চিত্রশিল্পী ?
২০টি মন্তব্য
ব্লগার সজীব
শ্রদ্ধা ও অভিনন্দন সবুজ খলিফাকে। নিজের জীবন বিপন্ন করে পানিতে ঝাপ দিয়ে একজন ডুবন্ত নারীকে উদ্ধার করার জন্য।তিনি একজন রিয়েল হিলো।
অবাক লাগছে ওয়ালের চিত্রকর্ম দেখে।
চিত্রকর্মের বাস্তব রুপ হচ্ছে এই ঘটনা।
এমন পোষ্ট শেয়ারের জন্য ধন্যবাদ।
আশা জাগানিয়া
সবুজ খলিফা আমাদের মুখ উজ্জ্বল করেছেন।চিত্র কর্মটি আমাকে অবাক করেছে খুব।
রিমি রুম্মান
পৃথিবীতে এখনো ভাল মানুষ আছেন, আমি বিশ্বাস করি। আর বিশের সবখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাংলাদেশী’রা ইতিমধ্যে সুনামের সাথে কাজ করে যাচ্ছে, নিজের জীবন বিপন্ন জেনেও। ছবিটি কাকতালীয় বটে !
আশা জাগানিয়া
মানুষ মানুষের জন্য। আমরা গর্বিত তার জন্য।
খেয়ালী মেয়ে
স্যালুট জানাই সবুজ খলিফাকে–
এরাই সত্যিকার অর্থে হিরো/বীর, যারা নিজের বিপদের কথা ভুলে গিয়ে অন্যের বিপদে পাশে গিয়ে দাঁড়ায়—এদের কাছ থেকে শিখার আছে অনেক কিছু….
সবুজ খলিফার হাতে এক বছর বৈধ ভাবে থাকার অনুমতি পত্র তুলে দেওয়ার জন্য রোম কর্তৃপক্ষকে জানাই ধন্যবাদ….
আশা জাগানিয়া
আমার ধারনায় এই হিরোকে ইটালি রেখেই দিবেন।পারমানেন্ট করে দিবেন এক সময়।
জিসান শা ইকরাম
সবাই ফটো তোলায় ব্যাস্ত
একজন বাঙালী ঝাপিয়ে পরলো নদীতে একজন মানুষকে উদ্ধার করতে-
দৃশ্যটা কল্পনা করতেই তো ভালো লাগছে।
ছবিটা স্বার্থকথা পেলো।
ধন্যবাদ সবুজ খলিফা।
আশা জাগানিয়া
আমারো ভালো লেগেছে এসব কল্পনা করতে।
সোনিয়া হক
বাঙ্গালীকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেলেন উনি।
আশা জাগানিয়া
হ্যা আপু, বাঙ্গালীকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন সবুজ খলিফা।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
স্বদেশীয়দের বিশ্বে কিছু মহৎ কাজ সত্যিই অবাক করে।স্যালুট সবুজকে ধন্যবাদ ইতালীয় মেয়কে।
আশা জাগানিয়া
এনাদের মত অল্প কয়েকজন মানুষ আমাদেরকে উজ্জ্বল করে।
শুন্য শুন্যালয়
একটি মহৎ কাজ অনেক খারাপ কাজকে নিমিষেই দূর করে দিতে পারে। এটি তার প্রমাণ। একজন বাংলাদেশী হিসাবে তাকে আমাদের স্যালুট। কাকতালীয় চিত্রকর্মটি দেখে মজা পেলাম।
আপনি কোথা থেকে এ খবরগুলো এনে আমাদের সামনে তুলে ধরছেন? সত্যিই আনন্দ পাচ্ছি, হাজার হাজার হতাশার মধ্যে কিছু আশার আলো পেয়ে।
আশা জাগানিয়া
তাকে নিয়ে নিয়ে গর্ব হচ্ছে খুব। এত হতাশার মাঝে দু একটা আশার খবর শান্তি এনে দেয় আপু। ডুবন্ত মানুষ খড় কূটোকে ধরে বাঁচতে চায়।এটিও তেমন এক খবর। বিভিন্ন পত্রিকা পড়ি নিয়মিত।এর মাঝে যেটা আশা জাগানিয়া হয়,তা শেয়ার দেই 🙂
মেহেরী তাজ
এরকম কোন কিছু শুনলে আমার খুশিতে দম বন্ধ লাগে।
এখন ও তাই হচ্ছে।
শ্রদ্ধা সেই বাঙালী কে যিনি আমাদের সকল কে গর্বিত করেছেন।
আশা জাগানিয়া
গর্বিত আমরা তার কাজের জন্য।
রাইসুল জজ্
আমরা গর্বিত
আশা জাগানিয়া
হুম গর্বিত।
ইমন
গর্বে গায়ের লুম দাড়িয়ে গেলো।
আশা জাগানিয়া
কিছুটা গর্ব তো হয়েছেই ভাই।