পহেলা বৈশাখ উতযাপনের ইতিহাস অনেক পুরোনো হলেও পালনের রীতিটা কিন্তু সবসময়ই পরিবর্তনশীল।প্রাচীনকালে হয়তো বা সামাজিক-রাজনৈতিক এই রীতি কারনে বদলে যেত,এখন বেশিরভাগ পরিবর্তনের নিয়ামক হয় বানিজ্য।শোনা যায় এই দিনে ইলিস খাওয়ার যে রেয়াজ সেটাও কিন্তু চালু হয়েছিল ঢাকা নয়-কোলকাতাতে,দেশভাগের আগে।কারন একটা সিজনে ইলিশ খাওয়ার রেওয়াজ চালু করলে সেসময় বিপুল ইলিশের বানিজ্য করা যাবে।ঠিক যেমন এখন রেওয়াজ চালু হয়েছে ২১শে ফেব্রুয়ারিতেও ভাষা দিবসের সাথে সামঞ্জস্যপুর্ণ ড্রেস-আপ করা(মোস্টলি সাদাকালো),যেটা ১০ বছর আগেও ধারনার বাইরে ছিল।এটা কিন্তু মেইনলি বাংলাদেশের ফ্লোরিশিং বুটিক ব্যাবসায়ীদের চাল।যারা প্রথম-আলোর নকসার মত বিভিন্ন ফ্যাশনপেজগুলোতে বিভিন্ন দিবসের থিম মিলিয়ে স্টাইলের ট্রেন্ড চালু করে।যারই ফল স্বরূপ অবচেতন মনেই মানুশ তো বটেই,স্কুল বা ব্যাবসা প্রতিষ্টানও অফিসিয়ালি এতে গা ভাসিয়ে দেয়।আমি যখন সিটিসেল এ কাজ করতাম কল এজেন্ট হয়ে,আমাদের ভাষা দিবসে সাদাকালো,বসন্তে হলুদ ড্রেস কোড দিয়ে দেয়া হয়েছিল।
এইযে বৈশাখের যে শোভাযাত্রা যা মুলত ঢাকা ভার্সিটিকেন্দ্রিক,সেটাও কিন্তু আমাদের নিজস্ব ধারনা নয়।এই যে বিশাল বিশাল হাতি,ঘোড়া,বাঘ বানিয়ে তলায় চাক্কা লাগিয়ে সামনে টেনে নিয়ে যাওয়া আর সাথে অগ্রসরমান মানুষের ঢল-এটা মূলত এসেছে চাইনিজ বর্ষবরন উতসবের থেকে।চায়নাতে তাদের ঐতিহ্যবাহী প্রতীক,বিশেষত ড্রাগনের বিরাট রেপ্লিকা নিয়ে শোভাযাত্রা কিন্তু মেলা পুরানো।
এইযে একটা নির্দিষ্ট এলাকায় বিরাট আয়োজন করে বিশাল লোক সমাগমের ব্যাবস্থা,এটা মূলত হয় যেকোন উতসবকে একটা আইকনিক রুপ দেবার জন্য।আগেকার দিনের মত সবাই ঘরে বসে খাওয়া দাওয়া আরএকটি ছোট মেলা কিন্তু কোন আইকনিক রুপ পেত না।কিন্তু এখন সেটা পাচ্ছে টিএসসি কেন্দ্রিক বিশাল এক আয়োজনের মাধ্যমে।আজ যদি শুধু একটি বিশেষ এলাকায় না হয়ে শহরের দশটি স্পটে বর্ষবরন উতসব ভাগ হয়ে পালন হত-তবে এই বিশাল আয়োজন করা যেত না কারন ফান্ড পাওয়া যেত না।তখন দশটি ছোট ধরনের আয়োজন হত যেটা এতোটা চিত্তাকর্ষক হোতনা যতটা এখন হয় সমস্ত আয়োজন একটামাত্র স্পটে বিনিয়োগের কারনে।দুনিয়াব্যাপি খবর হয় বলতে গেলে।আমাদের দেশ যদি ট্যুরস্ট কান্ট্রি হোত তবে শুধু এই পহেলা বৈশাখের আয়োজনই একটা পিক টুরিস্ট সিজন ক্রিয়েট করত মনে হয়।
যাই হোক লাস্ট দশ-বিশ বছরে পহেলা বৈশাখ বরনে এতো কিছু এডিশন হয়েছে,মনে হচ্ছে ৫ বছর পর থাইল্যান্ডের সংক্রান উতসব যা পহেলা বৈশাখের সাথেই পালন হয়,যেখানে সবাই একে অন্যকে পানি ছিটিয়ে তাড়া করে সেটাও চালু হয়ে যাবে।সকালে শোভাযাত্রা করে দুপুরে পানি ছিটিয়ে সারা দেশ ভিজে একাকার।আর তারও বছর কয়েক পর চীনাদের মত রাত্রে লন্ঠন জ্বালিয়ে আকাশে উড়িয়ে দেয়া।লাখ লাখ লন্ঠন সারা আকাশ জালিয়ে দেবে।সকাল-দুপুর-রাত,এই তিন পার্টে তিন রকম ভাবে বর্ষবরন-ক্ষতি কি?
১২টি মন্তব্য
স্বপ্ন নীলা
সকালেই খুবই যত্ন ও মন দিয়ে পড়লাম আপনার পোস্ট — সেইরকম মজা পেলাম — বানিজ্য কোথায় গিয়ে দাড়িয়েছে বলুন — নীচের প্যারাটায় আরো মজা পেলাম — হুমম ইলিশ বানিজ্য হচ্ছে — এবার পানি ছিটানো হলে প্লাস্টিক কনটেইনার আর পানি ব্যবসাও লাভজনক হবে আর সাথে ফানুসরূপী হ্যারিকেন !!!!!!!!!! চলুক — তবে যেন নারীদের উপর কোনই অত্যাচার আর নিপীড়ণ করা না হয় হুমমমমম ———– ভাল থাকুন
আরিফ আরাফাত রুশো
thanks
নুসরাত মৌরিন
এখন সব দিবসই আসলে কর্পোরেটদের কারসাজিতে উদযাপনের চেয়ে আড়ম্বর বাড়িয়ে দিচ্ছে।আমাদের ঐতিহ্য আমাদের লালন করতে হবে হৃদয়ে,মননে,তা যেন দিবস উদযাপন আর পোশাকের রঙ এ চাপা পড়ে না যায়।এটাই কাম্য।
ভাল লিখেছেন।
আরিফ আরাফাত রুশো
thanks
ইমন
আপনার লেখার আগা মাথা কিছুই বুজলাম না। কোন উদ্দেশ্যে লিখলেন তাউ না। পহেলা বৈশাখ এখন একটা প্রাসঙ্গিক শব্দ এবং বিষয়। বিষয় নির্বাচন ঠিক আছে কিন্তু আপনার লেখার মোটিভ দেখে কেমন জানি লাগলো। আমি ভুল ও বলতে পারি। পহেলা বৈশাখ যদি কয়েক দশক আগে শুরু হয়ে আমাদের বিনোদনের বিষয় হয়ে যায় তাঁতে আপত্তির কি আছো? সংস্ক্রতি মিশ্র একটা প্রক্রিয়ার মাধমে বিবর্তিত হয়। এই সহজ ব্যাপারটা আমার যতো তাড়াতাড়ি বুজতে পারবো, ততো তাড়াতাড়ি আমরা ভাল জিনিসটা আমরা গ্রহন করতে পারবো। সভ্যতা, এবং জীবন যাপনের প্রয়োজনেই আমরা বাইরের দেশের জিনিস গ্রহন করে থাকি। বাইরের দুনিয়া ও আমাদের কৃষ্টি, কালচারের ভাল জিনিসটা গরন করে। খেয়াল করলে দেখা যাবে। উদযাপনে ভিন্নতা থাকতেই পারে। তাই বলে সাংস্কৃতিক আদান প্রদান বন্ধ করা যাবেনা। আমরা বরং, আমাদের মত করে উদযাপনের চেষ্টা টা করবো। ধন্যবাদ
আরিফ আরাফাত রুশো
এখানে কোথায় বলেছি আমি যে এই সংস্ক্রিতির পরিবর্তিন আমি লাইক করছিনা বা খারাপ হচ্চে?
জিসান শা ইকরাম
বৈশাখের শোভাযাত্রা সমস্ত দেশব্যাপী হয়। শুধু ঢাকাতে নয়।
এটি বহুল প্রচারে টুরিশ্মষ্টদের আকৃষ্ট করা সম্ভব।
থাইল্যান্ড বা চীনের মত পানি ছিটানো বা রাতে আলো নিয়ে বের হওয়া সম্বব হবেনা, করন আমাদের দেশের মেয়েরা নিরাপদ নয়।
আরিফ আরাফাত রুশো
সেটা আমাদের সমস্যা,কিন্তু আমি বলেছি যে এই বৈশাখ উতসবের সেইসম্ভাবনা আছে।
আর ইয়া শোভাযাত্রা সারা দেশে হলেও যে বিশাল আর ব্যায়বহুল আয়োজন ঢাকাতে হয় তা কিন্তু সারা দেশে হয়না
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
ভাবনাগুলো মন্দ নয় বাস্তব তর্থ্য তুলে ধরেছেন।
খেয়ালী মেয়ে
এই পৃথিবী তার জন্মলগ্ন থেকেই পরিবর্তনশীল–পরিবর্তনের ধারা কেউ থামিয়ে দিতে পারবে না–কিন্তু নারীদের উপর জানোয়ারদের ঝাঁপিয়ে পড়া কোনকালেই পরিবর্তন হলো না……
সঞ্জয় কুমার
বাংলাদেশ বহিঃবিশ্বের অনেক সংস্কৃতী জন্য উপযুক্ত নয় । বই মেলা পহেলা বৈশাখ ব্লগিং এমনকি ফেসবুকও বাংলাদেশের জন্য উপযুক্ত নয় । ।
আরিফ আরাফাত রুশো
অনেক হতাশ মনে হচ্ছে আপনাকে?