মুদ্রার কত পিঠ!

আজিজুল ইসলাম ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫, রবিবার, ০৮:০৩:৩৬অপরাহ্ন সমসাময়িক ৮ মন্তব্য

প্রবীণ আইনজীবি ব্যারিষ্টার রফিকুল ইসলামও শেষ পযর্ন্ত সংলাপের উপরই জোর দিলেন।তিনি বললেন, সরকারের উচিৎ সংলাপের উদ্যোগ নেয়া, যেহেতু তারা ক্ষমতায় আছে। শুধুমাত্র দুই নেত্রীকে সংলাপে বসলে হবেনা, দেশের সুধীগণদেরও বসতে হবে। (সূত্র: আমাদের সময়.কম; ১৫/০২/২০১৫)।

আমি একজন কম-বোঝা মানুষ। একবার মনে হয় আগে সহিংসতা বন্দ্ব করা উচিৎ, তারপর সংলাপ। আবার মনে হয়, জোর করে সংবিধান রক্ষার ২০১৪-র ৫-ই জানুয়ারীর নিবার্চন করে আর কোন নিবার্চন না দেওয়ার ফলে আজকের উদ্ভুত যে-সমস্যা, সেসমস্যা নিরসণে সরকারেরই আগে সংলাপের আহ্বান করার কথা। আসলেই, আমার মনে দোদুল্যমানতা আছে। মনে হয় এটা অনেকেরই আছে। কিছু মানুষের আলোচনাতে এটা উঠে আসে, ”আরে ভাই, আপনার ক্ষমতা শেষ, আপনি সম্পূর্ন নিরপেক্ষতার সাথে নিবার্চন করুন, পাশ করলে এলেন আর না করলে গেলেন। ভাল ভূমিকা রাখুন, আগামীতে আসবেন। এরকম গণতান্ত্রিক পরিবেশ থাকলে দেশ মালয়েশিয়া-সিঙ্গাপুর হতে কতক্ষণ?” এরকম গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিরাজ করলে এবং সাথে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হলে অথবা হওয়ার একটা চেষ্টা থাকলে (প্রতারণামূলক চেষ্টা হলে হবেনা) আসলেই দেশ অনেক অনেক এগিয়ে যাবে।

দেশে যে হচ্ছেটা কী, আসলেই অনেকে জানেননা। পানি এবং বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের শত শত কোটি টাকার কাজ DPM (Direct Procurement Method)-এর আওতায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। অর্থাৎ কোন টেন্ডার ছাড়াই এসমস্ত কাযর্ক্রম গ্রহন করা হচ্ছে। আবার দরও উর্দ্ধে করে নেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও দেশের প্রায় অধিকাংশ কাজের টেন্ডারের ক্ষেত্রে এরকম অনিয়মের আশ্রয় নেয়া হচ্ছে। দেশে বিল্ডিং/রাস্তা বানালে টেকেনা, দ্রুত নষ্ট হয়ে যায় কর্তাব্যক্তিদের অবৈধ অর্থলিপ্সুতায়। হলমার্ক, ডেসটিনি, বিসমিল্লা গ্রুপ, এসমস্ত সংস্থার ব্যাংক লুটের ঘটনা আমরা জানি। কী করে আপনি বলবেন, ’দেশ কী খারাপ চলছে’? এভাবে চললে দেশ কোনদিন মালয়েশিয়া-সিঙ্গাপুর হবে? এদেশে নদী খনন করতে হলে এলাকার মানুষকে দিয়ে খনন করাতে হবে। তাতে ঐ এলাকার দরিদ্র-অসহায় মানুষগুলোর দু’এক বছরের জন্য আয়ের কোন চিন্তা করতে হয়না আবার অন্যদিকে অর্থেরও সাশ্রয় হয় প্রচুর। আবার গরীব-অসহায় মানুষকে অর্থাৎ গার্মেন্টস শ্রমিকদেরকে ভালবেসে গার্মেন্টস মালিকদেরকে তঁদের লাভটা একটু কম করতে তাঁদেরকে উদ্বুদ্ধ করাতে পারলে গরীব ঐসমস্ত গার্মেন্টস শ্রমিক আপনাকে কত ভালবাসবেন! আর আমাদের এই খাতকে উন্নত করার ক্ষেত্রে প্রধান বাধা, জিএসপি সুবিধা এভাবে অর্জিত হতে পারে। বাংলাদেশে জিএসপি সুবিধা আনতে হলে এটা করতেই হবে অর্থাৎ মালিকদের কিছুটা স্বাথর্ত্যাগ করতেই হবে। না হলে কিন্তু মালিক-শ্রমিক সম্পর্ক এরকম থাকলে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন তাদের প্রদত্ত জিএসপি সুবিধা প্রত্যাহার আগামীতে করে নেবেই, নেবে।

ইদানিং এক ফোবিয়া শুরু হয়ে গেছে, কেজরীওয়াল আসতে হবে এদেশে। অলরেডি একজন ’আমজনতার দল’ গঠন করেই ফেলেছেন। পাশের রুম থেকে এক আলোচনায় জানা গেল একজন বললেন, কেজরীওয়ালের ঘোষণা কেউ দিক এদেশে, পরদিন সে ডিসএ্যাপিয়ার হয়ে যাবে। কোন খোঁজ থাকবেনা তার। ষোল কোটি মানুষের এদেশে একজন মানুষকে কে খুঁজে বের করবে, কার দায়িত্ব এটা? সরকারের এব্যাপারে কোন দায়িত্ব নাই, স্রেফ বলে দেবে ওরা, আমাদের কোন দায়িত্ব নেই।

তাহলে! তাহলে এটাই কি আমাদের ভবিতব্য, এভাবেই চলবে দেশ? আমি তা মনে করিনা। আমি মনে করি, কেজরীওয়াল এদেশেও আসবে। একজন একজন করে আসবে আর ডিসএ্যাপিয়ার হয়ে যাবে। আবার আসবে, আবার ডিসএ্যাপিয়ার হয়ে যাবে। এভাবেই একটা প্রচন্ড শক্তির উদ্ভব হবে দেশে। তখন আর কোন কেজরীওয়াল হত্যা হবেনা, গুমও হবেনা। প্রচন্ড সেই শক্তির কারনে দেশ হতে সকল অপশক্তি দুরীভূত হয়ে যাবে।

তবে সবার্গ্রে আমাদের এই সন্ত্রাস, এই সহিংসতা থামাতেই হবে। কৃষক-শ্রমিক-ক্ষুদ্র থেকে মাঝারী এবং বড় ব্যবসায়ীগনের তথা সহায়-অসহায় নিবির্শেষে সকলের স্বার্থে।

৬০৭জন ৬০৬জন
0 Shares

৮টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ