ক্রিংক্রিং। মোবাইল ফোনটা বেজেই যাচ্ছে। অপরিচিত একটা নাম্বার। রিসিভ করে কানে দিলাম,
– হ্যালো …….. হ্যালো,
– বলেন, শুনতে পাচ্ছি।
– কোথায় তুমি, কল রিসিভ কর না কেন? এতো কল দিলাম, মেসেজ দিলাম। একটারও রিপ্লাই নাই!!
– ব্যস্ত আছি, পরে কল দেন।
– রাগ করে না হয় একটু ঝগড়া করেছি। তাই বলে কি আমার সাথে এমন করবে?
– পরে কল দেন ব্যাস্ত আছি।
– পরে কল দিব মানে কি? কোথায় তুমি? কি কর??
– রবিঠাকুরের সামনে বসে আছি। উনি চেয়ারে বসে ঝিমাচ্ছেন আর আমি তা পর্যবেক্ষণ করে উনার হাবভাব বুঝার চেষ্টা করছি।
– রবিঠাকুরের সামনে?? মানে কি!!! কি বলছো এসব। বলতো আজেবাজে কি খেয়েছো??
– আজেবাজে খাব কেন?? খেয়েছেন তো উনি। উনার ঝিমানি তে বুঝা যায় এটা কোন বিশেষ দ্রব্য সেবনের ফল।
– কি আবোলতাবোল প্রলাপ বকছো তুমি!!! তুমি ঠিক আছো তো??
– আবোলতাবোল না। উনি জমিদার বংশের ছেলে। গাজাঁ, ভং, শিশা, মদ এসব তো নিত্যদিনের ব্যাপার হতে পারে তাই না? তাছাড়া উনি ত বিলেতে ছিলেন, না জানি ওয়াইন, হুইস্কির স্বাধ নিয়েছেন কিনা!!
– আমার সাথে কি তুমি মজা নিচ্ছ?
– না না মজা নিব কেন?? কথা বলবে তার সাথে? ডেকে দিব??
– …………(লাইনটা কেটে গেল)
রবিঠাকুর চোখ খুললেন। তার সাদা ভ্রু চোখকে ঢেকে দিচ্ছে প্রায়। রাগান্বিত কণ্ঠে বললেন??
– ওরে বোকা, নারীর সাথে কি কেহ অপমানের সহিত কথা বলে??
– তো আর কিভাবে কথা বলবো গুরু??
– আমার কাছ হইতে কি কিছুই শিখিস নি? দেখিস নি আমি কিভাবে মানষী, কাদম্বিনির সহিত আলাপ করিয়াছি? – জ্বি গুরু আপনার চরিত্র সম্পর্কে আমার যথেষ্ট ধারণা আছে।
– ( হাত দিয়া টেবিলে বারি দিলেন) ওরে নরাধম, তুই কি আমাকে চরিত্রহীন বলিতে চাস?
– আর যাই হোক না কেন বাঙ্গালী নারীর প্রথম প্রেমিক কখনো চরিত্রবান হতে পারে না।
কথা শুনে রবিঠাকুর মিটমিট হাসলেন। তারপর আবার সেই ঝিমানিতে গেলেন।
আবারও সেই নাম্বার থেকে কল।
– আপনি যে একটা হারামী এটা কি আপনি জানেন?
– রবিঠাকুর প্রায়ই আমাকে বোকা, নরাধম, হাঁদারাম বলে থাকেন। হারামী তো কখনোই বলেন নাই। উনাকে জিজ্ঞেস করবো??
– চুপ থাক বেয়াদব। এটা রং নাম্বার কইলেই ত হইতো।
– প্রথমত, আপনি আমাকে চুপ করতে বলছেন আবার প্রশ্নের উত্তরও চাচ্ছেন। কিভাবে সম্ভব?
দ্বিতীয়ত, এটা রং নাম্বার না, রাইট নাম্বার। নিজের রাইট নাম্বার কে আমি রং নাম্বার বলতে যাব কেন?
– তুই একটা বদের হাড্ডি। সামনে পাইলে গলাটিপে খুন করবো।
– চলে আসুন বাসায়। ঠিকানা বলবো?
– ……….. ( লাইনটা কেটে গেল)
রবিঠাকুর আবারও চোখ খুললেন। রক্তবর্ণ চোখ। তাকে কিছু বলার সুযোগ দিলাম না।
– গুরু এখন আর কিছু বইলেন না। গত ২ দিন ধরে ঘুমাই না। মাথাটা ব্যাথা করতাছে। আপনি যান আজকে।
গুরু কিছু বলতে পারলেন না। বিড়বিড় করতে করতে চলে যেতে থাকলেন। তার হাটা দেখে মনে হচ্ছে ওই বিশেষ দ্রব্যের রেশ এখনো রয়ে গেছে। আর আমি? আমি ডুব দিলাম ঘুমে। গভীর ঘুমে
I’m Ti Az
৮টি মন্তব্য
নুসরাত মৌরিন
বাহ্। এভাবে যদি রবি ঠাকুরের সাথে দেখা হয়ে যায় কি ভালই না হয়।
দেখা যখন হয়েছিলই কয়েকটা নতুন কবিতা চেয়ে নিলেই পারতেন…। 😀
ভাল লাগলো…।
হিলিয়াম এইচ ই
পরেরবার ঠিকই চেয়ে নিব। ;?
কৃন্তনিকা
হ্যালুসিনেশনের গল্প… বাহ, ভালোই লাগলো।
হিলিয়াম এইচ ই
ধন্যবাদ 😀
লীলাবতী
ভালোই লেগেছে । ব্লগে অন্যের লেখাও পড়তে হয় ভাইয়া। না হলে আমরা উৎসাহ পাবো কিভাবে ?
হিলিয়াম এইচ ই
পড়ি। কিন্তু কমেন্ট করা হয় না।!!!!!!
ছাইরাছ হেলাল
আপনি মন্তব্যের উত্তর দেন না। পড়েন না অন্যের কোন লেখা !
হিলিয়াম এইচ ই
লেখা পড়ি না এটা ভুল। তবে কমেন্ট করি না বলে আপনারা বুঝেন না!!!! যাই হোক এখন থেকে কমেন্ট করবো ইনশাআল্লাহ।