
হাড় কাঁপানো শীতের কুয়াশা কেটে গিয়ে দখিনা বাতায়ন বেয়ে আসা ফাল্গুনের প্রথম মৃদু-শীত মৃদু-উষ্ণ বাতাস শরীর ছুঁয়ে গেলে যেমন অদ্ভুত অন্যরকম এক শিহরণ জাগানো অনুভূতি অনুভূত হয়। তার প্রথম আগমনে ঠিক তেমনই এক অদ্ভুত অন্যরকম অনুভূতি হয়েছিল আমার। আমার মনে হয়েছিল ফাল্গুনের ঐ প্রথম নাতিশীতোষ্ণ বাতাসটা ও। যে আমায় না ছুঁয়েও ছুঁয়ে গেলো অদ্ভুত ভাবে, শিহরণ জাগালো হৃদয়ে, কাঁপন ধরালো পুরো অস্তিত্বে সে নিশ্চয়ই খুব স্পেশাল কেউ!
আজন্ম নিকষ কালো আঁধারে ঢাকা বিষন্ন বিষাদিত মনে হঠাৎ হীরকের উজ্জ্বল ঝলমলে দ্যুতি এসে যেনো ভেনিস করে দিল সমস্ত আঁধার, সমস্ত বিষন্নতা। এই প্রথম আমার মনে হলো না চাইতেই যে দ্যুতি আলোকিত করলো আমার মন সে আমারই। এ দ্যুতির উৎপত্তি আমারি জন্যই। বেশ আনন্দিত আপ্লুত হলাম। একটা সময় মনে হলো না শুধু দ্যুতি কেনো ঐ হীরকটাও তো আমারই! তবে কেনো কেবল দ্যুতিতেই থেমে থাকি? যা পেয়েছিলাম তাতে সন্তুষ্ট হতে পারলাম না। একটু একটু করে লোভ বেড়ে গেলো। আমার হীরকটাও চাই সাথে চাই হিরণ্য প্রণয়।
অদ্ভুত কথা হলো আমি চাইলাম আর হীরকটাও আমার হাতে ধরা দিল, আমার সাথে সাথ দিল, আমার কাছে এলো। আমি যা যা চাইলাম হীরক আমাকে সবটায় দিল দুহাত ভরে। হীরক দ্যুতির চোখ ধাঁধানো ঝলকানিতে স্থির থাকে পারিনি। আমি নিজেকে উজাড় করে দিলাম। শুরু হলো হিরণ্য প্রণয়ের শুভ সূচনা। তারপর থেকে লাল পলাশের রক্তিম আভা যেনো ছড়িয়ে পড়লো আমার চতুর্দিকে। হীরক সহ দ্যুতি পেয়ে এতোটায় মগ্ন হলাম যে, পলাশের মাসের অন্তরালে আমার জীবনের চলছিল মহা সর্বনাশ তা টেরই পেলাম না।
একদিন জানতে পারলাম অন্যের হীরক স্থানচ্যুত হয়ে পথভুলে/ভুলপথে এসে পড়েছে আমার কাছে। এ হীরকটা আমার নয়। যখন জানতে পারলাম তখন আমার যা কিছু ছিল তার সবটা ঐ হীরকের দখলে। সর্বশান্ত নিঃস্ব আমি কেবল পড়ে রইলাম শূন্যে। ক্ষণিক প্রণয়ের প্রলয় এখন জলোচ্ছ্বাস হয়ে আছড়ে পড়ে ক্ষত বিক্ষত করছে আমাকে। কালবৈশাখীর ভয়াবহ ঝড়ের মতো তাণ্ডব করছে আমার হৃদয়ে। কাঁচের মতো ভেঙ্গে চুরে খান খান করছে মনটাকে। হিরণ্য প্রণয়ের পরিণত বুঝি এমন বিভৎস হয়!
২০টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
বাহ্, প্রকৃতি আর প্রেমের মহা স্মমিলন বিয়োগাত্বক পরিণতিতে শেষ হলো।
ছোট গল্পের মত আবেশ লেখাটিতে।
চালু থাকুক।
টাইপিং মিস্টেক ঠিক করে নিন।
সুরাইয়া পারভীন
ঠিক করে নিয়েছি ভাইয়া
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময়
সুপর্ণা ফাল্গুনী
অসাধারণ লেগেছে। ভালো লাগার মানুষ টা হীরক দ্যুতি হয়েই আসে তারপর কাঁচের টুকরোর মতো সব ভেঙ্গে চলে যায়। তখন মনে হয় সব ভুল ছিলো, হীরক হয়ে যায় সাধারণ কাঁচ। ধন্যবাদ আপু। শুভ কামনা জানিয়ে গেলাম
সুরাইয়া পারভীন
দারুণ মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে
দিদি
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময়
ফয়জুল মহী
দারুণ লেখা । ভালো থাকুন।
সুরাইয়া পারভীন
ধন্যবাদ অশেষ
আপনিও ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন
তৌহিদ
দেখুন নিরাশ হবেননা। নিজের মমতা ভালোবাসা দিয়ে বর্তমানকেই হীরকখন্ড বানিয়ে নিন এটাই উত্তম।
বর্তমানই আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে কিন্তু!! ভালো লিখেছেন।
সুরাইয়া পারভীন
ভালো বলেছেন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন ভাইয়া
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময়
জিসান শা ইকরাম
আমরা অনেক সময়ই যা চাই তা ভুল করে চাই,
বুঝতে ভুল হয়, কোনটা সত্যি, কোনটা মিথ্যে।
যখন নিজের মাঝি ফিরি তখন আর ভুল শোধরানোর উপায় থাকেনা।
লেখাটি অনেক ভালো হয়েছে ছোট আপু।
শুভ কামনা।
সুরাইয়া পারভীন
কৃতজ্ঞতা সহ আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন ভাইয়া ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময়
প্রদীপ চক্রবর্তী
একান্ত অনুভূতি নিজের ভালো লাগার বহিঃপ্রকাশ সবসময় চমৎকার হয়ে থাকে।
অনেক ভালো লেখা।
শুভকামনা দিদি।
সুরাইয়া পারভীন
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে দাদা
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময়
সুপায়ন বড়ুয়া
ভালো লাগার মানুষ টা হীরক দ্যুতি হয়েই আসে তারপর কাঁচের টুকরোর মতো সব ভেঙ্গে চলে যায়।
খুব ভালো লেগেছে।
ধন্যবাদ আপু। শুভ কামনা।
সুরাইয়া পারভীন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন দাদা
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময়
কামাল উদ্দিন
ব্যর্থতার গল্প। প্রথম থেকেই ভালোভাবে যাচাই করার সময়, সুযোগ এবং সাহস আমাদের কমই হয়। তাইতো হারানোর পর আফসোসটা কেবলই বেড়ে চলে।
সুরাইয়া পারভীন
একদম সঠিক বলেছেন ভাইয়া
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময়
হালিম নজরুল
মানুষের সব চাওয়া সঠিক হয় না। তবুও জীবনের বাঁকে বাঁকে আমরা কতকিছুই না চাই।
সুরাইয়া পারভীন
একদম সঠিক বলেছেন ভাইয়া।
আর কিছু অপূর্ণতা থাকা ভালো বোধহয়
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন ভাইয়া
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময়
সাবিনা ইয়াসমিন
** যে আমায় না ছুঁয়েও ছুঁয়ে গেলো অদ্ভুত ভাবে, শিহরণ জাগালো হৃদয়ে, কাঁপন ধরালো পুরো অস্তিত্বে সে নিশ্চয়ই খুব স্পেশাল কেউ!…..
এমন অনুভব উপলব্ধ হওয়ার পর হীরকদ্যুতি নিয়ে আর ভাবনা কেন! হীরক একটা কাঁচের খন্ড বইতো অন্যকিছু নয়। না ছুঁয়েও যে ছুঁয়ে যায় অন্তরের অন্তঃস্থল সেতো ঐ তুচ্ছ হীরক হতে পারে না!
সেই অনন্ত উজ্বল-অলৌকিক আলোয় যার মন উছলে উঠে, তাকে আর কোন অন্ধকার গ্রাস করতে পারে না।
স্বচ্ছ পাথর অথবা কাঁচের টুকরোর সাধ্য নেই এমন হৃদয়ের উচ্ছ্বাস ম্লান করবে।
শুভ কামনা অবিরত 🌹🌹
সুরাইয়া পারভীন
আহ্! এমন মন্তব্যে প্রাণ ভরে যায়
না পাওয়ার আক্ষেপ ভুলা যায়
কৃতজ্ঞতা অশেষ আপু
ধন্যবাদ অনেক অনেক
ভালো থাকুন সবসময়