
শায়ন ভাবছে সুনয়না কী বিশ্বাস করলো আমার কথা? সার্ভিস ম্যানের মতো হয়েছে তো কথা গুলো! কেমন যেন একটা অস্বস্তি পেয়ে বসেছে। যদি সুনয়না আমার কথা গুলো বিশ্বাস না করে ভুলভাল এ্যাড্রেস দেয় তখন কী হবে, কী করে পাবো ওকে? নাহ্ তাড়াহুড়ো করে ভুল করলে চলবে না আবার হেরেও যাওয়া যাবে না। তার চেয়ে বরং অন্যকাউকে দিয়ে যাচাই করে নেওয়ায় বুদ্ধিমানের কাজ হবে। যেই ভাবা সেই কাজ
শায়ন তার ভাগিনা শ্রাবণকে খোঁজ নিতে বললো। সাথে একটা পার্সেল পাঠালো।
সেঁজুতি তার মাকে বলছিল ইউনিভার্সিটির প্রথম দিনের কথা। এমন সময় কলিংবেল বেজে উঠলো। সুনয়না বললো…
-এই অবেলায় আবার কে এলো?
পরপর কলিংবেল বেজেই যাচ্ছে দেখে সেঁজুতি বিরক্ত নিয়ে বললো…
-উফ্! কে তখন থেকে অভদ্রের মতো বেল বাজিয়েই যাচ্ছে। আরে বাবা একটু তো সময় দেওয়া যায়। তর সইছে না যেনো দরজা ভেঙে আসবে ভিতরে। মামুনি তুমি থাকো আমি দেখছি।
-সোনা তুমিই বসো আমি দেখছি। কে না কে তোমার যেতে হবে না।
-মামুনি আমি এখনো ছোট্টটি আছি! তুমি না সত্যিই
-হয়েছে বাবা হয়েছে যাও, তুমিই যাও
সেঁজুতি গজগজ করতে করতে দরজার দিকে এগিয়ে গেলো। দরজা খুলেই বলতে শুরু করলো কি পেয়েছেন বলুন তো! একটু তো সময় দেবেন আসার। এতো তাড়া কিসের।
-স্যরি ম্যাম! আই এম এক্সটেমলি স্যরি।
-আচ্ছা ঠিক আছে, হয়েছে। আর স্যরি বলতে হবে না। বলুন কী চাই?
-আমার কিছু চাই না। তবে দেবার আছে কিছু।
-মানে! কি বলছেন?
-এটা কী সুনয়না ম্যামের এর এ্যাড্রেস?
-জ্বী।
-উনি বাসায় আছেন? আসলে উনার নামে একটা পার্সেল ছিল। আমি কুরিয়ার সার্ভিস থেকে এসেছি।
-উনি আমার মা হন। আপনি আমাকে দিন পার্সেলটি।
-জ্বী ম্যাম। এই নিন
বেশ বড় একটা পার্সেল সেঁজুতির হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললো ম্যাম একগ্লাস পানি হবে? বেশ তেষ্টা পেয়েছে।
সেঁজুতি মনে মনে ভাবছে ছেলেটাকে দেখে বেশ ভদ্রই মনে হচ্ছে। একগ্লাস পানি খেতে চেয়েছে না করা ঠিক হবে না।
-আচ্ছা আপনি ভিতরে আসুন।
মেয়ের দেরী হচ্ছে দেখে সুনয়না চলে এলো। সেঁজুতি মাকে দেখে বললো…
-মামুনি তোমার নামে একটা পার্সেল এসেছে।
এই নাও বলেই কিচেনের দিকে গেলো পানি আনতে।
সুনয়না ছেলেটিকে ভেতরে বসতে বললো আর জানতে চাইলো সেই কল করেছিল কিনা!
শ্রাবণ বললো অফিস থেকে অন্য কেউ ফোন দিয়েছিল।
কথা বলতে বলতে শ্রাবণ একসময় সুনয়নার একটা ছবি তুলে নিল প্রমাণ হিসেবে। সেঁজুতি পানি সাথে একটু নাস্তা নিয়ে এলো। শ্রাবণ শুধু পানি খেয়ে বেড়িয়ে গেলো
– মামুনি কে পাঠিয়েছে এই পার্সেল? প্যাকেটের গায়ে তো প্রেরকের নাম নেই। মামুনি খুলো তো দেখি কী আছে?
-সোনা প্রেরকের নাম নেই। যদি খারাপ কিছু মানে বোম টোম!
– হা হা হা মামুনি তুমিও না পারো বটে। বোম কে পাঠাবে?
-খুব সাহস বেড়ে গেছে তাই না! যা সব হচ্ছে দেশে এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।
-মামুনি অনেক হয়েছে এবার থামো তো। দেখতে দাও কি আছে পার্সেলে?
সেঁজুতি পার্সেলটা খুলে ফেললো। পার্সেল খুলে মা মেয়ের চোখ ছানাবড়া হয়ে গেলো! এসব কি?
সেঁজুতি মায়ের দিকে তাকিয়ে অট্টোহাসিতে ফেটে পড়লো। এই দেখো দেখো বোম বোম। সুনয়নার মুখখানি লজ্জায় লাল হয়ে উঠলো মেয়ের এমন হাসি দেখে।
-মামুনি এমন উপহার কে পাঠাতে পারে বলো তো!
-আমি জানি না সোনা। আমার কাছে তো আগে কখনো কোনো পার্সেল আসেনি।
পার্সেলে ছিল গাঢ় আকাশি রঙের একটি শাড়ি। মেচিং ব্লাউজ, চুড়ি, ইয়াররিং, মালা, একটি কাঠগোলাপ। সাথে একটু চিরকুট ছিলো।
প্রিয় মায়াবতী,
আমার ভীষণ ইচ্ছে ছিল গাঢ় আকাশি রঙের শাড়িতে তোমাকে দেখার। গাঢ় আকাশি রঙের শাড়িতে তোমাকে দারুণ মানাবে এ আমার বিশ্বাস। আমি রোজ স্বপ্নে তোমাকে ঐ রঙের শাড়িতেই দেখি। জানো, সে কী অদ্ভুত সুন্দর মায়াবী লাগে তোমায়! তাই তো তোমার নাম দিয়েছি মায়াবতী।
ভালোবাসি মায়াবতী, তোমায় খুব ভালোবাসি।
ওয়াও! হাউ রোমান্টিক
চিরকুট পড়া শেষ করে মুচকি হাসি সহ জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে মায়ের দিকে চেয়ে রইলো সেঁজুতি…
১৯টি মন্তব্য
খাদিজাতুল কুবরা
মাগো মা চোখ বন্ধ করে সুনয়নার বিব্রতবোধ দেখতে পাচ্ছি। আগের পর্ব পড়িনি তবুও মজা পেলাম। জীবনকে নতুন সুযোগ দেওয়ার জন্য সন্তানের সাপোর্ট ভীষণ জরুরি।
অপেক্ষায় রইলাম আগামী পর্বের জন্য
সুরাইয়া পারভীন
বেচারি সুনয়না সন্তানের সামনে এমন অবস্থায়
হা হা হা হা হা হা
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন আপু
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময়
সুপর্ণা ফাল্গুনী
শায়ন তাহলে ঠিকভাবেই এগোচ্ছে । সুনয়নার ঠিকানা পেয়েছে। দেখা যাক সুনয়না বিষয়টি কিভাবে নেয়! মেয়ে যেহেতু সব বুঝে আশা করি এ বিষয়ে সুনয়না ঠিকঠাক সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন শুভকামনা রইলো আপনার জন্য
সুরাইয়া পারভীন
মনে তো হচ্ছে শায়ন ঠিকই এগিয়ে চলেছে
কৃতজ্ঞতা সহ আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন দিদিভাই
ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সবসময় 💜
ছাইরাছ হেলাল
প্রেমের কোন বয়স নেই!! এই তো!!
সুরাইয়া পারভীন
আহা নতুন করে পড়ছে কি!
এ তো সেই বয়সের প্রেম যা আগে বলা হয়ে ওঠেনি।
কৃতজ্ঞতা সহ আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন ভাইয়া
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময়
আরজু মুক্তা
ভালোই লাগলো। চলুক এভাবে
সুরাইয়া পারভীন
ইনশাআল্লাহ
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন আপু
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময়
শামীম চৌধুরী
অন্যান্য পর্বের মতন এ পর্বটিও ভাল লাগলো। এগিয়ে যান।
সুরাইয়া পারভীন
ইনশাআল্লাহ। দোয়া করবেন দাদাভাই
ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সবসময়
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
রেজওয়ানা কবির
আমারও ধারণা সুনয়না ঠিক সিদ্ধান্ত নিবে।পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম। ভালো থাকবেন আপু।
সুরাইয়া পারভীন
দেখ যাক কী হয়?
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময়
সুরাইয়া পারভীন
*দেখা যাক
আলমগীর সরকার লিটন
অনবদ্য প্রকাশ অনেক শুভ কামনা জানাই
সুরাইয়া পারভীন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময়
রোকসানা খন্দকার রুকু
হুম চলছে ভালো। চলুক॥
শুভ কামনা।
সুরাইয়া পারভীন
কৃতজ্ঞতা সহ আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন আপু
ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সবসময়
তৌহিদ
চিরকুটটা সত্যিই আবেগী ছিলো কিন্তু। সুনয়না সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে আশা করি।
ভালো থাকুন আপু।
সুরাইয়া পারভীন
দেখা যাক গল্প কোন দিকে মোড় নেয়
কৃতজ্ঞতা সহ আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন ভাইয়া
ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সবসময়