
মেয়েদের বাপের বাড়িরে নিজের বাড়ি বলা যাবে না এই থিওরি কে আবিষ্কার করেছিলো? আগের দিনে ছিলো তাও বুঝলাম, আজকের দিনে এসেও এই কথা মানুষ বলে! একটা ছেলে যদি বাপের বাড়িতে নিজের বাড়ি বলতে পারে তাইলে একটা মেয়ে কেন পারবে না?
ইভেন কোনো মেয়ের ভাই নাই, ওখানেই থাকে তাও মানুষজন বলবে বাপের বাড়ি থাকে। একটা ছেলেরে তো বলেনা! নিজে বাড়ি বানানো তো খুব ভাল, কিন্তু যদি কেউ না বানায়? যদি কারো বাবার বাড়িতে থাকার মতোই হয় বা দরকার না পরে বাড়ি বানানোর? সেক্ষেত্রেও একই ঘটনা! ছেলের বাড়ি হয় সেইটা কিন্তু মেয়ে হইলে বাপের বাড়ি! তোমার বাড়ি কই বলবে মানুষ! আজাইরা নিয়ম। আজকের দিনে মেয়েরা বাবা মায়ের টেক কেয়ারও করে, সব দায়িত্ব পালন করে বরং কিছু ক্ষেত্রে ছেলেদের থেকে বেশি করে।
আমি যদি আমার কথা বলি আমার বাড়ি বলতে ওই বাড়ির কথাই মনে হয় যেখানে আমার জন্ম। ওইটাই আমার বাড়ি। আমি জীবনে যতো বাড়িই বানাই নিজের বাড়ি মনে হইলে আমার গ্রামের কথাই মনে পরে। ওইটা শুধু আমার বাবার বাড়ি না। আমার মায়েরও বাড়ি, জমি কেনা থেকে শুরু করে বাড়ি বানানো সবকিছুতে আমার মায়ের অবদান সমান। তেমনি পরে আমি নিজেও কনট্রিবিউট করেছি এবং করিও। যদি নাও করতাম চাইলেও আমার বাড়ি হইতো ওইটা।
আমার নিজের ইনকামে কেনা বাড়িও হবে, তারপরও ওইটা আমাদের দুই বোনের বাড়িই থাকবে! বাবার বাড়ি মেয়েদের বাড়ি না এই আজাইরা নিয়ম আমি মানি না, একটা ছেলের যদি বাবার বাড়িরে নিজের বাড়ি বলতে পারে তাইলে মেয়েও পারে!
বিয়ে হইলে গোত্রান্তর হয় অমুক তমুক.. মাই ফুট! মেয়েদের বরং আমার বাড়ি বলতে শেখা উচিত।
৭টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
এটি সামাজিক ভাবে প্রচলিত হয়ে গিয়েছে, মেয়ে বাড়ি গিয়েছে।
মেয়ে সন্তানদের যে ছেলে সন্তানদের সমভাবে দেখা হয় না এটি তার প্রমাণ।
অথচ বর্তমানে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরাই বাবা মা কে টেক কেয়ার করে বেশী।
সামাজিক এই দৃষ্টি ভঙ্গি পাল্টে যাক।
শুভ কামনা।
রোকসানা খন্দকার রুকু
চমৎকার বিষয়।
বাবার বাড়ি আমার এটা নিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতা আমার আছে। মা বেঁচে আছেন তার দায়িত্ব নিতে নারাজ কিন্তু বাড়িটা মায়ের নামে সেটা ভাইয়ের। বরং মেয়েদের ঘোরাঘুরিতেও তাদের মনকষ্ট।
নার্গিস রশিদ
আপনার মতো একই তিক্ত অভিজ্ঞতা আমারও। ” ঘোরাঘুরি” হ্যাঁ সেটাও ।
আরজু মুক্তা
আমার মা ব্যতিক্রম। উনি আমাদের ভাই বোন কে সমান ভাবে সবকিছু দিয়েছেন।
অবশ্যই মায়ের বাড়িই আমার বাড়ি।
নার্গিস রশিদ
আরে আপনি তো একেবারে আমার মনের কথাটি লিখেছেন। এর উপরে আমারও তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে। ভাবছিলাম এটা নিয়ে লিখব। আপনি তা লিখে দিয়েছেন। আমার বাবার বাড়ীতে ফ্ল্যাট হিসাবে বাড়ী করার বাবস্থা থাকলেও ছেলেরা ঠিকই করে ফেলছে। মেয়েরা করতে চায়লে তার অনুমতি তারা দায়নি। কি আর বলবো ।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
সমাজের এক কঠিন বাস্তবতা তুলে ধরলেন। সেই প্রাচীনকাল থেকে চলে আসা নিয়মে আজো আমরা বন্দী ।মেয়েরা যতই করুক বাবা-মায়ের জন্য বা ছেলে না থাকলেও মেয়েরা কখনো বাবার বাড়িকে নিজের বাড়ি বলতে পারেনা। তাদের নিজস্ব কোনো ঠিকানা নেই। ভালো থাকুন নিরাপদে থাকুন
হালিমা আক্তার
খুব কঠিন সত্য তুলে ধরেছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় বিয়ের পর বাবার বাড়িতে মেয়েদের আগের মতো সময় থাকেনা ওজন থাকে না। একযুগ বা তার ও বেশি সময় সংসার করার পর যদি বিচ্ছেদ ঘটে তাহলে মেয়েটি কে বাড়ি ছাড়তে হয়। বাড়িটা স্বামীর টাকায় আয় করা। কিন্তু মেয়েটা যে সারা জীবন শ্রম দিল তার কোন মূল্যায়ন হয় না। শুভ কামনা রইলো।