প্রবীণ আইনজীবি ব্যারিষ্টার রফিকুল ইসলামও শেষ পযর্ন্ত সংলাপের উপরই জোর দিলেন।তিনি বললেন, সরকারের উচিৎ সংলাপের উদ্যোগ নেয়া, যেহেতু তারা ক্ষমতায় আছে। শুধুমাত্র দুই নেত্রীকে সংলাপে বসলে হবেনা, দেশের সুধীগণদেরও বসতে হবে। (সূত্র: আমাদের সময়.কম; ১৫/০২/২০১৫)।
আমি একজন কম-বোঝা মানুষ। একবার মনে হয় আগে সহিংসতা বন্দ্ব করা উচিৎ, তারপর সংলাপ। আবার মনে হয়, জোর করে সংবিধান রক্ষার ২০১৪-র ৫-ই জানুয়ারীর নিবার্চন করে আর কোন নিবার্চন না দেওয়ার ফলে আজকের উদ্ভুত যে-সমস্যা, সেসমস্যা নিরসণে সরকারেরই আগে সংলাপের আহ্বান করার কথা। আসলেই, আমার মনে দোদুল্যমানতা আছে। মনে হয় এটা অনেকেরই আছে। কিছু মানুষের আলোচনাতে এটা উঠে আসে, ”আরে ভাই, আপনার ক্ষমতা শেষ, আপনি সম্পূর্ন নিরপেক্ষতার সাথে নিবার্চন করুন, পাশ করলে এলেন আর না করলে গেলেন। ভাল ভূমিকা রাখুন, আগামীতে আসবেন। এরকম গণতান্ত্রিক পরিবেশ থাকলে দেশ মালয়েশিয়া-সিঙ্গাপুর হতে কতক্ষণ?” এরকম গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিরাজ করলে এবং সাথে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হলে অথবা হওয়ার একটা চেষ্টা থাকলে (প্রতারণামূলক চেষ্টা হলে হবেনা) আসলেই দেশ অনেক অনেক এগিয়ে যাবে।
দেশে যে হচ্ছেটা কী, আসলেই অনেকে জানেননা। পানি এবং বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের শত শত কোটি টাকার কাজ DPM (Direct Procurement Method)-এর আওতায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। অর্থাৎ কোন টেন্ডার ছাড়াই এসমস্ত কাযর্ক্রম গ্রহন করা হচ্ছে। আবার দরও উর্দ্ধে করে নেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও দেশের প্রায় অধিকাংশ কাজের টেন্ডারের ক্ষেত্রে এরকম অনিয়মের আশ্রয় নেয়া হচ্ছে। দেশে বিল্ডিং/রাস্তা বানালে টেকেনা, দ্রুত নষ্ট হয়ে যায় কর্তাব্যক্তিদের অবৈধ অর্থলিপ্সুতায়। হলমার্ক, ডেসটিনি, বিসমিল্লা গ্রুপ, এসমস্ত সংস্থার ব্যাংক লুটের ঘটনা আমরা জানি। কী করে আপনি বলবেন, ’দেশ কী খারাপ চলছে’? এভাবে চললে দেশ কোনদিন মালয়েশিয়া-সিঙ্গাপুর হবে? এদেশে নদী খনন করতে হলে এলাকার মানুষকে দিয়ে খনন করাতে হবে। তাতে ঐ এলাকার দরিদ্র-অসহায় মানুষগুলোর দু’এক বছরের জন্য আয়ের কোন চিন্তা করতে হয়না আবার অন্যদিকে অর্থেরও সাশ্রয় হয় প্রচুর। আবার গরীব-অসহায় মানুষকে অর্থাৎ গার্মেন্টস শ্রমিকদেরকে ভালবেসে গার্মেন্টস মালিকদেরকে তঁদের লাভটা একটু কম করতে তাঁদেরকে উদ্বুদ্ধ করাতে পারলে গরীব ঐসমস্ত গার্মেন্টস শ্রমিক আপনাকে কত ভালবাসবেন! আর আমাদের এই খাতকে উন্নত করার ক্ষেত্রে প্রধান বাধা, জিএসপি সুবিধা এভাবে অর্জিত হতে পারে। বাংলাদেশে জিএসপি সুবিধা আনতে হলে এটা করতেই হবে অর্থাৎ মালিকদের কিছুটা স্বাথর্ত্যাগ করতেই হবে। না হলে কিন্তু মালিক-শ্রমিক সম্পর্ক এরকম থাকলে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন তাদের প্রদত্ত জিএসপি সুবিধা প্রত্যাহার আগামীতে করে নেবেই, নেবে।
ইদানিং এক ফোবিয়া শুরু হয়ে গেছে, কেজরীওয়াল আসতে হবে এদেশে। অলরেডি একজন ’আমজনতার দল’ গঠন করেই ফেলেছেন। পাশের রুম থেকে এক আলোচনায় জানা গেল একজন বললেন, কেজরীওয়ালের ঘোষণা কেউ দিক এদেশে, পরদিন সে ডিসএ্যাপিয়ার হয়ে যাবে। কোন খোঁজ থাকবেনা তার। ষোল কোটি মানুষের এদেশে একজন মানুষকে কে খুঁজে বের করবে, কার দায়িত্ব এটা? সরকারের এব্যাপারে কোন দায়িত্ব নাই, স্রেফ বলে দেবে ওরা, আমাদের কোন দায়িত্ব নেই।
তাহলে! তাহলে এটাই কি আমাদের ভবিতব্য, এভাবেই চলবে দেশ? আমি তা মনে করিনা। আমি মনে করি, কেজরীওয়াল এদেশেও আসবে। একজন একজন করে আসবে আর ডিসএ্যাপিয়ার হয়ে যাবে। আবার আসবে, আবার ডিসএ্যাপিয়ার হয়ে যাবে। এভাবেই একটা প্রচন্ড শক্তির উদ্ভব হবে দেশে। তখন আর কোন কেজরীওয়াল হত্যা হবেনা, গুমও হবেনা। প্রচন্ড সেই শক্তির কারনে দেশ হতে সকল অপশক্তি দুরীভূত হয়ে যাবে।
তবে সবার্গ্রে আমাদের এই সন্ত্রাস, এই সহিংসতা থামাতেই হবে। কৃষক-শ্রমিক-ক্ষুদ্র থেকে মাঝারী এবং বড় ব্যবসায়ীগনের তথা সহায়-অসহায় নিবির্শেষে সকলের স্বার্থে।
৮টি মন্তব্য
আবু জাকারিয়া
এসব রাজনিতী বুঝিনা, বুঝতেও চাইনা। শুধু দেশের উন্নতি হোক এটাই কামনা করি।
আজিজুল ইসলাম
রাজনীতি বুঝতে না চাইলেও রাজনীতি-সংষ্লিষ্ট ঘটনা-দুর্ঘটনা আমাদের কিন্তু ছাড়েওনা। এর শিকার হতে না চাইলেও কিন্তু হতেই হয় আমাদের। তাই রাজনীতি বুঝতে না চাইলেও বুঝতেই যে হয় ভাইয়া। আপনাকে ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
তবে সবার্গ্রে আমাদের এই সন্ত্রাস, এই সহিংসতা থামাতেই হবে। কৃষক-শ্রমিক-ক্ষুদ্র থেকে মাঝারী এবং বড় ব্যবসায়ীগনের তথা সহায়-অসহায় নিবির্শেষে সকলের স্বার্থে।
আপনার শেষ লাইনটি সহ সহমত -{@
আজিজুল ইসলাম
এটুকু যে বলেছেন ভাইয়া, এতেই আপনাকে ধন্যবাদ। আমার পোষ্টে কেউ যেখানে মন্তব্যই করতে চায়না, সেখানে আপনি করে আমাকে কৃতার্থ করলেন।
জিসান শা ইকরাম
যে কোন মুল্যে এই জঙ্গি তৎপরতা থামাতে হবে।
এটি সরকার পরিবর্তনের উদাহরন হতে পারেনা।
যে দলই বিরোধীদলে থাক,সে এমন করবে তখন।
আজিজুল ইসলাম
আপনার সাথে একমত জনাব জিসান ভাই যে, এটি যাতে উদাহরন হয়ে না থাকে। তবে এটি উদাহরন হয়ে কিন্তু রয়েই আছে।
যখনই অধিকারের প্রশ্ন হয়ে দাঁড়ায়, করার আর কিছু থাকেনা, তখনই এসমস্ত হয়; যদিও প্রচন্ড ঘৃণা করি এটাকে আমি। এই দ্গ্বংসযজ্ঞ কোনই রাজনীতি হয়, এটা স্রেফ নৃশংসভাবে, নিষ্ঠুরভাবে মানুষ খুন করা। এর হুকুমদাতাগনকে বিচারের কাঠগড়ায় দাড় করানো উচিত, না করানোটাই অন্যায় হবে। কিন্তু এটা করার সতসাহস নাই কারো। কেন এটা, ভেবে দেখতে বলি আপনাকে।
হা, এটাও ঠিক যে, চলমান যুদ্ধাপরাধীর বিচার চরমভাবে বাধাগ্রস্থ হবে। আবার এটাও ঠিক, চুরানব্বইতে বিএনপি আমলেও জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে এদেশে যুদ্ধাপরাধীদের প্রতিকী বিচার হয়েছিল, ২০০৬-এ জনগনের চাপে শায়ক আব্দুর রহমানসহ বাংলা ভাই এবং আরো কিছু জঙ্গীকে বিএনপি সরকারই গ্রেপ্তার ও সাজা দিতে বাধ্য হয়েছিল আর গণজাগরন মঞ্চও সৃষ্টি হয়েছিল। অর্থাত মানুষের প্রচন্ড চাপ অব্যাহত থাকলে বিএনপি সরকারও যুদ্ধাপরাধীর বিচার বন্দ্ব করতে পারবেনা।
এগুলি আমার মতামত জিসান ভাই। আমি দলকানা মানুষ নই। মনে কিছু করবেননা।
আজিজুল ইসলাম
একেবারে সহমত পোষণ করছি জনাবা।
নওশিন মিশু
জঙ্গিদের কঠোর হস্তে দমন করতে হয়। এদের সাথে এক টেবিল এ বসে আলোচনার অপর নাম হবে এদের আস্কারা দেয়া আর পোড়া মানুষের আর্তনাদ নিয়ে মস্করা করা।