আমি গর্বিত আমি বাঙালী। বাংলা আমার মায়ের মুখের ভাষা, আমার মুখের বুলি। আমার ভাষা তাই মায়েরই অংশ। এই চির সবুজ দেশ আমার ষড়ঋতুর দেশ। গাজির গান, পালা গান , রবীন্দ্র নজরুল , বাউল গান সবই আমার অস্তিত্ব। আমার দেশের মতো পৃথিবীর আর কোনো দেশে এই ষড়ঋতুর প্রকৃতির খেলা আছে কিনা সন্দেহ। ঋতুর বৈশিষ্ট আনুযায়ী বাঙালী লালন করে আছে আজও হাজার বছরের ইতিহাস ও তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি। এই সংস্কৃতিই যে বাঙালীর প্রাণ। কিন্তু এই সংস্কৃতিই যদি বিকৃত করি, আমি আমরা যে জাত হারাব, আমাদের ঐতিহ্য হারাব। কিন্তু এ দায় কার? কাকে দায়ী করব আমরা? সময়কে না পশ্চিমা সংস্কৃতিকে?
উন্নয়নের জন্য বা সামনে আগানোর জন্য, বিশ্বের সাথে তাল মিলাতে ইংরেজী ভাষা অবশ্যই রপ্ত করতে হবে। অনেক কিছু পরিবর্তন করতে হবে কিন্তু তা জাত নষ্ট করে নয়। নিজের মাতৃভাষা নষ্ট করে নয়। কথায় আছে, যা চির সত্যঃ বাঙালী যেদিন পশ্চিমা সংস্কৃতির গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসাবে সেদিন তার আর বাঙালিত্ব থাকবে না।কারণ আমি মানি, সৌন্দর্য্য মানে একটি স্বাভাবিক সমন্বয়। যেমন পাত্রের সাথে তার নিজস্ব স্থানের সমন্বয়। ঠিক বাংলা, বাঙালী, সংস্কৃতি ও ভাষার মতো।
তাই বলে আমি বলছি না অন্য ভাষা, অন্য সংস্কৃতি খারাপ। সব দেশের ভাষা , সংস্কৃতি তার তার দেশেই মানানসই। আলাদা সৌন্দর্য। আর এই সৌন্দর্য্য হল সার্বিক পরিপূর্ণতা বোধ। পাত্রকে তার নিজস্ব স্থানে স্থিত রাখলে যে সৌন্দর্য্য ফুটে ওঠে ,এও ঠিক তাই।
“সোনার হাতে সোনার কাঁকন
কে কার অলংকার”
যাইহোক আমি যা বলব বলে আজ কলম ধরেছি; বাঙালী জাতি আজ আসলে অনেকটা আধুনিক হতে চাইছে নিজের বাঙালিত্ব বাদ দিয়ে। প্রত্যক ক্রিয়ারই একটি সমান এবং বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া আছে। নিউটনের এই বিশ্বজনীন সূত্র কেবল বস্তু জগতের ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। মানব জীবনের ক্ষেত্রেও ও তা প্রযোজ্য। মানুষ চলার পথে নতুন যা ধারণ করে, তারও রয়েছে সমান এবং বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া। যেমনঃ বাঙালী এক সময় একে অপরের সাথে পরিবার পরিজন নিয়ে সহঅবস্থানে বসবাস করত। তারা ছিল একই সুখ দুঃখের গাঁথা মালা। আজ সেখানে পশ্চিমা ঢেউ এসেছে। মানুষ হয়ে গেছে একটু বেশিই যান্ত্রিক। আত্ম সন্মান বোধ, ব্যাক্তি স্বাধীনতার দোহাই দিয়ে কেউ কাউকে একফোঁটা ছাড় দিতে রাজি নই। এই দৃষ্টি ভঙ্গির করণে মানুষ আজ নিজে নিজেই বড় একা।
এর জন্য মানুষের দৃষ্টি ভঙ্গি, ভারতীয় টিভি চ্যানেলের প্রতি অতি ভালোবাসা,পশ্চিমা সংস্কৃতিই বেশি দায়ী। হ্যাঁ, আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলাতে ইংরেজী শিখতে হবে অবশ্যই কিন্তু তা সুষ্ঠু ভাবে। বিকৃতি করে নয়। তাকে তার জায়গাতে রাখতে হবে। সে মেহমান। আর মেহমান বাড়ির বাইরের ঘর পর্যন্তই সীমাবদ্ধ। শোবার ঘরে তার স্থান হলে আর নিজস্বতা থাকল কোথায় ?
এখনকার অতি আধুনিক ছেলেমেয়েরা বাংলার নিজস্ব অনেক উৎসবই জানেনা। বাংলার মূল ধারার সংস্কৃতি সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণাই নেই। বাংলার সংস্কৃতি এখন হয়েছে নামে মাত্র একদিনের ফ্যাশন। নতুন নতুন পার্বনে নতুন নতুন কাপড় পরে রাস্তায় ঘোরাটা ই এখন যেন উৎসব! যাই হোক আমি দুটো উৎসবের পার্থক্য তুলে ধরি, যার বর্তমান ও অতীতের চিত্র।
মূল বাঙালীর পহেলা বৈশাখ, অতীতে যেটা হতঃ পহেলা বৈশাখ , বাংলা বছরের প্রথম দিন। একটা ভাল বছরে প্রবেশ করার প্রার্থনার দিন। তাই বছরের শুরুটা যেন ভাল হয়, সেই আশায় তখনকার মানুষ, ঘরে ঘরে ভালমন্দ রান্না করত। পুকুর থেকে বড় মাছ ধরত, চিকন চালের ভাত রান্না করত। বাড়ির গরুর দুধের খেজুর পায়েস রান্না করত। কারো বাড়ি থেকে কোনো কিছু ধার নিত না। বিকালে গ্রামের মাঠে বসত বৈশাখি মেলা। সেই মেলায় থাকত, মুড়ি, মুড়কি, মাটির খেলনা, নাগরদোলা, চূড়ি ফিতার দোকান। কিশোরী মেয়ের লাল ফিতায় বেণি বুনে, ঠোঁটে লাল টুকটুকে লিপিস্টিক দিয়ে মেলায় ঘুরে বেড়ানোর দৃশ্য ছিল পটে আঁকা ছবির মতো। সন্ধ্যায় মোড়ল বাড়ি অথবা গেরস্ত বাড়ির উঠানে বসত বিভিন্ন পালাগান, জারিগান, পুঁথি পড়া, গাজি কালুর গীত। সেই গানে থাকত বাংলার মানুষের কথা। সেই মাটির গানে সূচনা হত নতুন কোনো কপোত কপোতীর প্রেম। গান শুনতে শুনতে প্রথমে চোখাচোখি তারপর ভাবের আদান প্রদান। গ্রামের সাধারণ সাজের যুবতীর কাজল টানা মায়াবী চোখের চাহনি, এক অতল সমুদ্র ডুবে যেতে ইচ্ছে করে কোনো এক যুবকের।
এখন বলি বর্তমান পহেলা বৈশাখঃ যাদের প্রতিটা দিনই শুরু হয় এক কাপ চা দিয়ে, তারা যখন গরম ভাতে পানি দিয়ে হাজার টাকার ইলিশ দিয়ে পহেলা বৈশাখে পান্তা খায় তখন বড় বেমানান লাগে। গ্রামের সাধারণ কৃষককে কটাক্ষ করা ছাড়া আর কিছুই নয়। এই পহেলা বৈশাখ পালন করতে গৃহকর্তা হয় দিশেহারা। হাজার টাকার ইলিশ, দামি শাড়ি, ছেলেমেয়ের দামি পোষাক, সব মিলিয়ে গৃহকর্তা শেষ। পান্তা খাওয়ার পরে তরুন প্রজন্মের আনন্দ করার পালা। মেলা বলতে তাদের পার্টি, গানের নামে পশ্চিমা সংগীতের ব্যান্ড বাজনা, নতুবা হিন্দি গানঃ ঢিংকা চিংকা, যার শব্দে মাথা ঝালাপালা, সাথে তাদের পানিয়, টাইগার।
এবার আসি অতি আধুনিক কিছু ছেলেমেয়ের ইংরেজী ভাষার অতি ব্যাবহার নিয়ে। তাদের আমেরিকান স্টাইল উচ্চারন! ছ্যাঃ জালা ধরায় আমার। যেমনঃ hi, bro, what’s up, lol, pops, pipes nice, ইত্যাদি। ইংরেজী গ্রামার এর ধারে কাছেও যায় না। Syllable তো মানেই না। মুখে যদিও উচ্চারন করছে,খাতায় একশোটার মধ্যে নিরানব্বইটি ভুল। তাই তো বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজী বিভাগে কোটাই পূরণ হয় না।
আমি আমার শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং বয়সের অভিজ্ঞতায় যেটুকু বুঝি Syllables মেনে না চললে সঠিক উচ্চারন সম্ভব নয়। নয় সঠিকভাবে এর বানান লেখা। তাই ইংরেজী ভাষা সঠিক ভাবেই শিখতে হবে। পাশাপাশি নিজের সংস্কৃতি ও ভাষাকে ভালোবাসতে হবে।
বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন , পৃথিবীর মানুষ যেন জানতে পারে, শুনতে পারে বাঙ্গালির ভাষা কেমন, গলা কেমন, কতটা মধুর তার উপস্থাপন। তাই তিনি জাতিসংঘের ঐতিহাসিক সেই বক্তৃতা মঞ্চটিতে আরোহন করলেন ২৪সে সেপ্টেম্বর ১৯৭৪ সালে। ভাষন শুরু করেন তিনি তার নিজের মাতৃভাষা বাংলাতে। তিনি বিশ্ব দরবারে বাংলা ভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছেন। বাংলায় ভাষন দিয়ে। আজ বাংলাভাষা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা।
আমি বলছি না ইংরেজী ভাষা ব্যাবহার করা যাবে না। করতে হবে কিন্তু সঠিক ভাবে।
এবার অন্যান্য উৎসব নিয়ে কিছু কথা না বললেই নয়। বর্তমানে বিবিসির এক তথ্যমতে বাঙালী যতো উৎসব পালন করে তা অন্য কোনো দেশ তা পালন করে কিনা সন্দেহ। নবান্নে পৌষ মাসে যে পিঠা মেলার আয়োজন করা হয় সেখানেও থাকে ফার্স্ট ফুডের ছড়াছড়ি। উৎসব পালন করব ঠিকই কিন্তু তা দেশীয় সংস্কৃতিকে ধারন করে।
এই প্রজন্ম আসলেই বড় অভাগা । সব কিছুতেই তাদের ধরাবাধা নিয়ম। কোনো কিছুতেই যেন এদের কোনো প্রাণ নেই, যান্ত্রিক যেন সব কিছু। এরা বড় হচ্ছে হিন্দি গান শুনে, পশ্চিমা সঙ্গীত শুনে। লোকসংস্কৃতি মানেই তো এরা জানেনা। যে লোক সংস্কৃতি সাধারণ মানুষের কথা বলে জীবনের কথা বলে। লোক কথার অর্থ হল , একটি পরিবার, একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠিকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা সংস্কৃতির বিকাশ। এই লোকগানের মধ্যেই শিল্পী ফুটিয়ে তোলে তার কথা ও সুরে একটি এলাকার জনগোষ্ঠীর আচার আচরন, জীবন জীবিকা, খাওয়া দাওয়া চলাফেরা। আর এই সংস্কৃতির প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে তারা যে সকল রীতি বেছে নেয় তা একই রকম হয়। এ কারনে অঞ্চলভেদে সংস্কৃতির মাধ্যমগুলোর ভিন্নতা প্রকাশ পায়। যেমনঃ উত্তরের ভাওয়াইয়া এবং দক্ষিণের ভাটিয়ালির মধ্য তাই পার্থক্য সহজেই বোঝা যায়। আমি দক্ষিণের মেয়ে তাই শুনেছি গাজির গান, হালই গান, অষ্টক গান, পট গান ইত্যাদি।
শুধুমাত্র একদিন নবান্ন পালন, পহেলা বৈশাখ পালন, ফাল্গুন পালন করলেই কি বাঙালী হওয়া যায়?
২১টি মন্তব্য
খসড়া
উৎসব একদিনই হয় বাকি দিন তার আচার। যত ভাবেই বলি সময়ের সাথে সময়ের প্রয়োজনে সংস্কৃতি এগিয়ে চলে তা পরিবর্তনশীল । পরিবর্তিত না হলে যে অচলায়তন হয়ে যাবে। দেবে আর নেবে মিলিবে মেলাবে তবেই সমাজ আগাবে। ভালমন্দ দুটি স্রোত সবসময়েই থাকে যা ভাল তা কুরানোই মানুষের কাজ।
মৌনতা রিতু
পাড়ার মোড়ে যখন পহেলা বৈশাখে নতুন বখাটে প্রজন্ম হিন্দি ঢিংকা চিকা গানটা জোরে জোরে বাজায়, তখন আসলে মন কাঁদে। এই বিষয়টা নিয়ে আমাদের শমার্থি প্রায়ই গলা ভাঙছে “কে ন এতো জোরে এই সব হিন্দি গান বাজে”। তখন আশায় বুক বাঁধি এরাও তরুন প্রজন্ম।
জিসান শা ইকরাম
খুবই ভালো একটি পোষ্ট, এজন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
বাংলাকে ধারন করতে হবে, তাহলেই আমরা যথার্থ বাঙ্গালী হতে পারবো,
আমরা নিজেদের ঐতিহ্য ভুলে গিয়ে বিদেশী ঐতিহ্য নিয়ে মেতে আছি
পূর্বের পহেলা বৈশাখ আর বর্তমানের পহেলা বৈশাখের তুলনাটা সঠিক ভাবেই দিতে পেরেছেন।
আমাদের ভাষা অত্যন্ত সমৃদ্ধ,
আমাদের সংস্কৃতিও অত্যন্ত সমৃদ্ধ
বিদেশী ভাষা বা সংস্কৃতি আমাদের ধার করতে হয়না
তারপরেও কিছু সংখ্যক শংকর বাঙ্গালীরা তা ধারন করবেই।
মৌনতা রিতু
পৃথিবীতে প্রায় সাত হাজার ভাষা আছে। এর মধ্যে শুধু এশিয়াতেই চালু আছে ২২০০ ভাষা। এই পর্যন্ত ২৩১ টি ভাষা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বিলুপ্ত হওয়ার আশংকায় আছে ২৪০০টি ভাষা। পৃথিবীতে গড়ে ১৪ দিনে একটি ভাষা বিলুপ্ত হয়ে যায়। জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষার সংখ্যা ৬টি। এর মধ্যে আছেঃ ইঃরেজী, ফরাসি, চীনা, রুশ, স্পানিশ, ও আরবি। দক্ষিণ আফ্রিকার সরকারি ভাষার সংখ্যা মোট ১১টি। আর যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সরকারি ভাষাই নেই।
পুরো বিশ্বে বাংলা ভাষায় প্রায় ৩০কোটি মানুষ কথা বলে।
পৃথিবীর সর্বাধিক ব্যবহৃত ভাষার মধ্যে বাংলার অবস্থান চতুর্থ। তবে আরেক হিসেবে বাংলার অবস্থান সপ্তম।
প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত দ্বীপরাষ্ট্র পাপুয়া নিউগিনিতে ভাষার সংখ্যা ৮৩০। পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি অনুবাদ হওয়া বইয়ের নাম পিনোকিও।
তথ্য কিআ।
জিসান শা ইকরাম
আপনি তো দেখছি একটি চলমান বিশ্বকোষ,
এত কিছুর কিছুই জানতাম না
ধন্যবাদ আপনাকে।
মৌনতা রিতু
আসলে সাধারন মানুষের প্রাণের তাগিদেই জন্ম হয়েছে বাংলা ভাষার। কিন্তু অনেক পরে এই সাধারন সাবলিল হয়েছে এই বাংলা ভাষা।
এশিয়া আর ইউরোপের বেশ কিছু ভাষার ধ্বনিতে শব্দে গভীর মিল দেখে একদল বিজ্ঞানী এ বিষয়ে গবেষণা করতে শুরু করেন।তারা এই ভাষাগুলো যেসব অঞ্চলে ছিল তার একটা মানচিত্র বানাল। এবং সবচেয়ে পশ্চিম থেকে ইউরোপ আর পূর্বে ভারত উপমহাদেশ। বিজ্ঞানীরা পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নিলেন মানচিত্রের সবগুলো ভাষাই একটা ভাষাবংশের সদস্য। আর এই ভাষা বংশটির নাম দেওয়া হয়ঃ ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাগোষ্ঠি। আর্যভাষা নামেও একে ডাকা হয়। প্রাচীন ভারতীয় আর্যভাষার নিদর্শন পাওয়া যায় যিশুখ্রিস্টের জন্মেরও এক হাজার বছর আগে। এই ভাষায় বেদ লেখা হয়। তাই এটাকে বৈদিক ভাষাও বলা হয়। বেদের শ্লোকগুলি ছিল পবিত্র। তাই বছরের পর বছর প্রজন্মের পর প্রজন্ম বেদের শ্লোকগুলি মুখস্ত করে রাখত। এরপর শতাব্দির পর শতাব্দি কেটে েলো। মানুষ যে মুখের ভাষা ব্যাবহার করত তা তো ততদিনে বদলে গেছে। তাই সাধারন মানুষের কাছে একসময় বেদের ভাষা দুর্বোধ্য হয়ে উঠল। তখন ব্যাকরণ বিদেরা নানা নিয়ম কানুন বানিয়ে পরিশীল শুদ্ধমানের ভাষা তৈরি করলেন। এটাই সংস্কৃত।
পরে আরো বলছি। কাল বলব। যদি বেঁচে থাকি। ইনশাল্লিহ্।
ছাইরাছ হেলাল
আমরা অবশ্যই অধুনিক হব, তবে আধুনিকতা কোথায় অ কীভাবে তা একটু বুঝতে
হবে আমাদের, আমরা আমাদের ঐতিহ্যকে ও অস্বীকার বা ভুলে যাব না।
আপনার বিষয়ভাবনা আমাদের চমৎকৃত করেই যাচ্ছে,
লিখুন, লিখুন।
মৌনতা রিতু
১৯০৭ সালের আগে কেউ জানত না বাংলা ভাষার ইতিহাস। বাংলা ভাষার আদি নিদর্শন তখনো পাওয়া যায়নি।সে বছর মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী কি এক কাজে নেপাল গিয়েছিলেন। নেপাল রাজদরবারের গ্রন্থশালায় হঠাৎ তিনি আবিষ্কার করেন চারটি পুঁথি। তার একটি হল চর্য্যাচর্য্যাবিনিশ্চয়। শাস্ত্রী মশায় নিজেই এর নামকরণ করেন। এই পুঁথিটাই রচিত হয়েছিল আদি বাংলা ভাষায়। এ নিয়ে ১৯১৬ সালে একটি বই বের করেন হরপ্রসাদ শাস্ত্রী। ছেচল্লিশটি পুরো আর একটি খন্ডিত পদ ছিল ওই পুঁথিতে। আমরা এখন চর্যাপদ নামেই তা চিনি।
যেমনঃ ‘আলিএ কালিএ বাট রুন্দ্রেলা
তক দেখি কাহ্ন বিমন হইলা মানে?
এই বিষয়ের উপর একটা বই পড়তে চাই। কারো জানা থাকলে নাম জানতে চাই। আমি যেটুকু জানি তা স্বল্প।
অরুনি মায়া
আমি গর্বিত বাংলা ভাষায় কথা বলার সুযোগ পেয়ে। মনের ভাব প্রকাশ সব ভাষাতেই সম্ভব,কিন্তু বাংলা ভাষার মত এত চমৎকার ভাবে আর কোন ভাষায় কবিতা, গান, সাহিত্য লেখা যায় কিনা আমার জানা নেই।
আমরা যেদিন স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারব জাপানিদের মত,সেদিন আমাদের অন্যের ভাষা আর শেখার প্রয়োজন পড়বেনা।
নিজেদের সংস্কৃতিকে নিজেরা সম্মান করতে না শিখলে অন্যে কদর করবেনা।
ধন্যবাদ আপু অনেক সুন্দর উপস্থাপনার জন্য -{@
মৌনতা রিতু
ধন্যবাদ।
আবু খায়ের আনিছ
খুব কষ্ট হয়, যখন একুশে ফেব্রুয়ারীর রাতে শহিদ মিনারে যাওয়ার পথে ছেলে মেয়েরা হিন্দি গান বাজায়।
খুব কষ্ট হয় যখন, পহেলা বৈশাখ উর্যাপন করার হয় ভিন্ন সংস্কৃতির মাধ্যমে।
এবার আমার একটা গুপ্ত মনো বাঞ্চনার কথা বলি, অনেকদিন থেকেই ভাবছি একটা ইভেন্ট করব। সাইনবোর্ড, ব্যানারে কিংবা সর্বসাধারণের জন্য যে সকল বিজ্ঞাপন বা বিলবোর্ড,দোকানের নাম, বাস,ট্রাক ইত্যাদি যানবাহনে বাংলা বানান ভুল লেখা হয় তাদের বিরুদ্ধে জরিমানা ধরার জন্য, সাথে সাথে যে উপরোক্ত বিষয়গুলোতে অবশ্যই বাংলায় লিখতে হবে, যদিও ইংরেজীতে লিখতে চায় তবে আগে বাংলা পরে ইংরেজী।
মৌনতা রিতু
একমত। সবাইকে সচেতন হতে হবে।
শুন্য শুন্যালয়
চাইনিজ ভাষার নববর্ষ এখন ঘটা করে এইসব দেশে পালিত হয়। আমরা বোধহয় ভুলেই যেতে বসেছি বাংলা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার সম্মানে সম্মানিত।
তবে ভাষা নিয়ে আমার আশা অনেক আপু, যতই সবাই lol, hi, bro বলুক বাংলার অক্ষরগুলো না দেখলে কেউ তেমন শান্তি পায় বলে মনে হয়না। বিভিন্ন সোশ্যাল সাইটে বাংলার বিস্তার কিন্তু আশাব্যাঞ্জক।
ইংরেজী এবং বাংলা দুটোকেই অগ্রাধিকার দিয়ে চলুক সবাই, এবং অবশ্যই সঠিক ভাবে। আপনার পোস্টগুলো সত্যিই ভিন্নমাত্রার হচ্ছে আপু। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, এত ভালো কিছু পোস্ট দেবার জন্যে। -{@
মৌনতা রিতু
ধন্যবাদ।
নীলাঞ্জনা নীলা
অসাধারণ একটি পোষ্ট। (y)
মৌনতা রিতু
ধন্যবাদ। -{@
অপার্থিব
যৌথ পরিবার ভেঙ্গে গেছে। একক পরিবারে নিঃসঙ্গতায় বেড়ে উঠা শিশুদের বিনোদনের মাধ্যম একমাত্র প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তির সহজলোভ্যতাই এখন বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির জন্য বড় হুমকি। বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখতে হলে এই প্রযুক্তিকে ব্যবহার করেই তা টিকিয়ে রাখতে হবে।
মৌনতা রিতু
আসলেই ঠিক কথা। ধন্যবাদ।
লীলাবতী
লোকগান, লোকসংস্কৃতি আমাদের মধ্যে এখন আর কোথায় আপু, এখন মেয়েদের হাতে ইলিশ মাছ আর পান্তা খাবার জন্য সবাই বৈশাখী মেলায় যায় 🙁 আর বাংলিশ শুনলে তো মেজাজটাই চড়ে যায়। যে ভাষার জন্য মানুষ প্রাণ দিয়েছিল, তার ভবিষ্যত সত্যিই সংকটে। অত্যন্ত গোছানো আর মূল্যবান একটি পোস্ট। -{@
মৌনতা রিতু
প্রথমেই জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ। অনেকদিন পর মনে হয় আপনি।
লীলাবতী
জি আপু, অনেক দিন পরে আসা হলো প্রিয় সোনেলায়।