টেপ রেকর্ডারে প্র্রেমিক কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতাটি বেজে উঠতেই পিছু ফিরে তাকায় নন্দিনী।সূর্য্যকে দেখে নিজেকে বুঝতে না দেয়ার সূত্রে প্রস্তুত করে নিলেন।সূর্য্যও যেন ভেবে পাচ্ছেন না এই একটি মুহুর্তে কি বলবেন!তবুওতো বলতে হবে।
-কি অবস্থা,এতো নীরব কেনো?
-কৈ…এইতো,বাহির থেকে এসেছি শরিরটা টায়ার্ড লাগছিল।বসো…।
-না ঐদিকে সমর বসে আছে….ভাবলাম তুমি হঠাৎ এ ভাবে চলে আসলে তাছাড়া তোমার মামী ওর বিয়ের দাওয়াতেও যেতে পারবেন না…ঘটনা কি বুঝতে পারছি না।তুমি কিছু জানো?
-হুম সমস্যা আমাকে নিয়ে….
-তোমাকে নিয়ে!আচ্ছা বলো দেখি সমস্যাটা কি?
-আমাকে চলে যেতে হবে?
-কোথায়?
-মায়ের কাছে….।মা খুব অসুস্থ্য।
-তুমি কি সুস্থ্য?আমারতো…মনে হচ্ছে এখানে অন্য কোন কারন আছে।
বুক ফেটে যায় বিরহের আগুনে…নয়নে নেই জল তা নিভাবার।এ এমনি অসুখ যার কোন তথ্য পথ্য নেই…নেই শান্তনার বাণী আছে কিছু দীর্ঘশ্বাসের ছড়া ছড়ড়ি।
ঐপাশে সমরের গলার আওয়াজ শুনতে পেলেন সূর্য্য….গুরুত্বপূর্ণ মুহুর্তগুলো কখনোই সূর্য্যের ফেভারে ছিল না।অগত্যা নিজের রাগ সামলিয়ে সমরদের কাছে গেলেন।তার কিছুক্ষণ পর নন্দিনীও গেলেন।
-কি রে ঢাকছিস কেনো?
-ঐ দেখ টিভিতে…আর যায় কোথায় রাজাকার কাইস্সার রিভিউ খারিজ।অনেক ধৈর্য ধরেছি আর নয়।জয় বাংলা।
যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেমের রিভিউ খারিজে মানুষ এতোটা উৎফুল্লো হয় আগে জানা ছিল না নন্দিনীর।সমর আর সূর্য্যের মাঝে চলে মিষ্টি মুখের যত অনুষ্টান আয়োজনের কথা।ফাসি কার্য্যকর হলে এটা করবে সেটা করবে ইত্যাদি ইত্যাদি….।এরই ফাকে সূর্য্য নন্দিনীর দিকে তাকায়।নন্দিনীর চোখ ছল ছল অশ্রুজলে।এ অশ্রু কোন কষ্টের নয় সুখের অশ্রু….নন্দিনীর মতো যুদ্ধ শিশুদের পরিচয় হারানোর নির্মম প্রতিশোধ।
-তুমি দেখছি কাদছো নন্দিনী….আজ তো তোমার হাসবার দিন…তুমি হাসবে তোমার হাসিই ওদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ।যাক সে কথা এখন একটু টি এস সিতে যেতে হয়।তাহলে আজ উঠি নন্দিনী?
-দাওয়াতে যাবো কি যাবো না শুনে গেলে না?
-তাহলে দাওয়াতে আসছো…!
নন্দিনী মাথা ঝঝাকিয়ে উৎফুল্লো মনে হ্যা বললো..আর মামীও মুচকি হাসলেন কিন্তু সূর্য্যের মনে খটকা লাগে হঠাৎ নন্দিনীর সিদ্ধান্তের এমন পরিবর্তন!
-বলোতো ঘটনা কি?
-শয়তানটার ফাসি দেখেই যাবো….।
(y) মীর কাসেমের অপরাধ সমুহ
(y) অপরাধ সমূহ নিয়ে একটি প্রতিবেদন
(y) কেউ যদি বলেন ওদের পক্ষে আদালতে কথা বলার কেউ ছিল না তবে লিংকে ক্লিক করুন
টি এস সি মোড়ে তাদের বেশ আনন্দের মাঝেই কেটেছিল রাতটি,সবাই একত্রে হয়েছিলেন সে দিন মিষ্টি বিতরণ ভাল খাবার দাবারের ব্যাবস্থা ইত্যাদি।তার পর দিন সূর্য্যের ঘুম ভাঙ্গে ঘরে টেলিফোনের রিং এর যন্ত্রনায়।কে আবার এতো সকালে জালাতন করছেন।আধো ঘুমে রিসিভারটি কানে ধরেন।
-হ্যালো…
-কি রে তুই এখনো ঘুমিয়ে আছস,আজকে না রিশা হত্যার প্রতিবাদে ইভেন্ট আছে…..জলদি করে আয় অনেক লোকজন এসে গেছেন।
-কি লাভ হবে এমন ঘটনাতো অহরহ ঘটছে….
-তুই রিশার ছবটির দিকে দেখেছিস কতটা নিষ্পাপ মেয়েটি ওকে বাচতে দিল না ইভটিজিং নামক একটি সামাজিক অবক্ষয়।
-ঠিক আছে আমি আসছি…।
ওবায়েদকে ধরিয়ে দিলেন একজন মাংস বিক্রেতা মানুষ রূপি অমানুষটি অবশেষে ধরা পড়েন।তার দৃষ্টান্তমুলক শাস্থি চান দেশবাসী।টি এস সি মোড়েই বিভিন্ন ইভেন্টটে যোগ দিচ্ছেন তারা পরবর্তীতে দিনে দুপুরে ফোনে তাদের সাথে যোগ দেন স্বর্ণা ও নন্দিনী আর নন্দনীর মামী।
এক নদী রক্ত পেড়য়ে
বাংলার স্বধীনতা আনলে যারাআমরা তোমদের ভুলবো না…..
বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামে কবিতা কিংবা শ্রদ্ধেয় প্রয়াত স্যার হুমায়ুন আহহ্মেদের সেই কাল জয়ী উক্তি তুই রাজাকার সুরে আনন্দে উত্তাল পুরো গণ জাগরন মঞ্চ এবং টি এস সি চত্বর।এই কোরবানীটা শুক্রবারেই হয়তো হয়ে যেত যদি না সেদিন রাতে জঙ্গি সামরিক শাখার প্রধান মুরাদ মিরপুর রূপ ণগরে পুলিশের সাথে বন্ধুক যুদ্ধে নিহত হওয়া মত ঘটনা না ঘটত।
আজ রাত ১০ঃ৩০ মিনিটে যুদ্ধাপরাধী রাজাকার মীর কাসেমের রায় কার্যকর হলো।ঈদে কোরবানীর বলির দাম হেকেছ ৬৫কোটি টাকা।উল্লাসিত জনতা মায়ের ইজ্জতের ঋণে বদলা একটু একটু করে শোধরানোর চেষ্টায় এ নতুন প্রজন্ম যদিও তা কখনো সম্ভব নয়।
আমাদের গর্বিত পুলিশ বাহিনীর অবদান চমৎকার।মিরপুরে জঙ্গি নিধনে দুজন পুলিশ অফিসার গুরুতর আহত হয়।দেশকে ভালবেসে এমন আরো অনেক দেশ প্রেমিক আছেন যারা দেশের স্বার্থে জীবন দিতে জানেন।স্যালুট তোমাদের।
চলবে
কৃতজ্ঞতায়ঃ বিভিন্ন ব্লগ ও অনলাইন পত্রিকাগুলো
২১টি মন্তব্য
মোঃ মজিবর রহমান
ভাল লাগলো।
রিশার হত্যাকাররের ফাসি চাই ।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
অবশ্যই দেরী কেনো রিমান্ডের কি প্রয়োজন যেখানে সে নিজেই খুনি।ধন্যবাদ
লীলাবতী
আপনার চলতি ঘটনা নিয়ে ইতিহাস ভিত্তিক পোষ্ট গুলো ভাল হয় ভাইয়া। ধন্যবাদ আপনাকে।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
ধন্যবাদ আপু -{@
শুন্য শুন্যালয়
হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে ইভেন্ট করে কী লাভ হচ্ছে? নতুন আরেকটি হত্যাকান্ডে চাপা পড়ে যাচ্ছে আগেরটা। আমরা সবকিছুতেই অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছি, প্যাথেটিক।
গল্পের মাঝে এভাবে সত্য জুড়ে দিলে তা পড়তে আর গল্প মনেই হয়না। অনেক ধন্যবাদ মনির ভাই।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
লাভ হবে এমন চিন্তা করে কেউ আন্দোলন করেন না আন্দোলন একান্তই মনের তাগিদে নিরুপায় হয়ে।ইভেন্টে লাভ হচ্ছেতো ।জীবন যেহেতু ঘটনাবহুল সেখানে ঘটনার সিরিয়াল থাকবেই।ধন্যবাদ
ইঞ্জা
বুক ফুলিয়ে ২ হাত করে দিলেন ভাই, চলেন সবাই মিলে ছাগুর কাচ্চি খাই। 😀
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
ধন্যবাদ ভাইয়া
ছাইরাছ হেলাল
দারুণ ভাবে উপস্থাপন করেছেন, সত্য ঘটনা উপজীব্য করে।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
রাজাকার আমার চোখের দুষমন ইঞ্জা ভাই
নীলাঞ্জনা নীলা
ওই রাজাকারটা গেছে। কিন্তু এখনও রক্তের ঋণশোধ হয়নি। রাজাকারের পুরো পরিবার যেভাবে শহীদ হিসেবে পরিচয় তুলে ধরছে, আর সেটার পক্ষে হাজার হাজার অমানুষ।
আর রিশা হত্যার বিচার কি হবে আদৌ? তনুর বিচারের খবরই আর নেই।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
অবাক করা বিষয় এত প্রমানাদি শেষ করে রায় দেন আদালত তারপরও তাদের পক্ষে জনগণ কি ভাবে যায় তারা কি ভাবেন না সে একজন প্রমানিত রাজাকার।
বিচারের বাণী নিভৃতে কাদে হয়তো -{@ ধন্যবাদ
নীলাঞ্জনা নীলা
কাল আমার বন্ধুর সাথে কথা বলছিলাম। কথা হচ্ছিলো স্বজনপ্রীতি নিয়ে। আমার দুই দাদু(বাবার বাবা ও মায়ের বাবা) একটা কথা বলেছিলেন অন্যায়কারী সে যদি বাবা-মা কিংবা নিজের সন্তানও হয়, কোনোদিন তাকে ক্ষমা করতে নেই। কিন্তু আমি অবাক এসব কীটের উত্তরাধিকারী এরা আরোও জঘণ্য। নিজের বাবার জঘণ্য কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনা তো দূরের কথা, উল্টো বাবাকে বীরশহীদের আসনে বসাচ্ছে। ছিঃ!
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
তাইতো সরকার এ ক্ষেত্রে পদক্ষেপ নিতে হবে তাদের নাগরিকত্ব বাতিল কিংবা নিদিষ্ট চোখে রাখা সম্পর্তিগুলোকে সিজ করতে হবেে তাদের সকল ক্ষমতা খর্ব করে রাষ্ট্রীয় সকল সুযোগ সুবিদা হতে হতে বঞ্চিত করতে হবে।নতুবা এই আমরা যারা এসব লিখছি প্রতিবাদ করছি কোন এক সময় হয়তো আমরাই বেশী ভুক্তভুগি হবো।
মৌনতা রিতু
সত্যি ভাই কোনো ইভেন্টই কাজ হয় না। প্রতিবাদের সুর ওঠে কিন্তু শেষ হয় না রিশাদের বিচার। প্রজন্মের ঋণ কি আদৌ শোধ হবে ! কোন প্রজনন্মের ঋন শোধ করব!
শুভকামনা রইল।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
একেবারে যে কাজ হয় না তা কিন্তু নয় তাছাড়া ফল ভোগের আশায় কেউ গাছ লাগায় না তা পরবর্তীতে তা কাজে আসতেও পারে।একে বারে চুপ থাকাটা কোন সচেতন নাগরিকের জন্য সম্ভব নয়।ঋণতো শোধ হবেই না এই যে রাজাকারদের ফাসি কিংবা দেশ উন্নয়নে নতুন প্রজন্মরা যে কাজ করে যাচ্ছেন তাতে ঋণ শোধ না হলেও চেষ্টা চলছে দেশকে বিশ্ব দরবারে মাথা উচু করে দাড়াবর।ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য। -{@
ব্লগার সজীব
গল্পের মাঝে সত্যি ঘটনা যোগ করে দেয়ার ধরনটা চমৎকার। রাজাকারদের প্রতিরোধে সমস্ত জাতি এক নয়। বিরাট একটি অংশের কাছে ফাঁসিতে ঝুলে যাওয়ারাজাকাররা শহীদ। এটি আমাদের জন্য লজ্জার।
নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতাবিরোধী মনোভাব গড়তে হবে আমাদের।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
ধন্যবাদ সজীব ভাইয়া
এ দেশে রাজাকার সাপোর্টের সংখ্যা নেহাত কম নয় এটা বাস্তব এর জন্য রাজাকারদের অপকর্মগুলোকে দেশের প্রতিটা মিডিয়ায় হাই লাইট করে জনগণকে বুঝাইতে হবে ওরা ৭১ এ কি অপকর্ম করেছিল।রাষ্ট্রের সর্বক্ষেত্রে রাজাকার সংশ্লিষ্ট কারো কোন ক্লু পেলেই তাকে রাষ্ট্রের সকল সুযোগ সুবিদা হতে দুরে রাখতে হবে।ধন্যবাদ। -{@
ব্লগার সজীব
রাজাকারদের সন্তান পোষ্যদের বাংলাদেশ থেকে প্রাপ্ত সমস্ত সুবিধা বাতিল করেই দেয়া উচিৎ। এরা এখনো পাকিস্থানকে নিজের দেশ ভাবে।
মিষ্টি জিন
ইভেন্ট খুলে কাজ হয় না কিন্তু অন্যায় দেখে বসেও তো থাকা যায় না।
গল্পের সাথে সত্য মিশিয়ে দারুন লিখেছেন।
রাজাকারদের জন্য ঘৃনা ঘৃনা ঘৃনা ..
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
ধন্যবাদ আপু এই সিরিজটি শুরু হয়েছে সেই ১৯৭১ থেকে চলমান সকল উল্লেখযোগ্য ঘটনবলী মিশ্রিত একটি মুক্তিযুদ্ধের গল্প।ধন্যবাদ। -{@