ছোট ছোট নুড়ি পাথরের বুকে লিখে রাখা গদ্যময় অনুরোধের পুঁথিমালা।
সুখ;
নাম খোঁজে হন্যে হওয়া উড়নচণ্ডী এলোমেলো বৈরী বাতাসের ধুম্রতার আভাসে।
পাশবিকতা:
চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে নষ্টভ্রূণের ছড়াছড়ি।
জানান দিচ্ছে পঁচা দূর্গন্ধের-
নাক সিঁটকানো উপাচারে;
ভুল ভালবাসার পরিনাম।
কাব্য:
বৃষ্টি, রোদ্দুর,চন্দ্রজোছনায় নেচে গেয়ে খেলে যায় ধানসিঁড়ি পাড়ে বৈঠকী শব্দের বনলতা।
মেঘের আঁচলে রাশি রাশি স্বপ্নেরা রংধনু আঁকে ভাষার অহংকার।
গর্ব:
আমাকে আমার মতো দেখতে চাওয়া হরিৎ প্রজাপতি ডানার রঙে।
কষ্ট,যন্ত্রনার ছাঁচে গড়ে নেয়া ভাস্বর প্রতিমূর্তি ।
অভাবে অভাবী নয়…..
নয় প্রেম অথবা বিপরীত ভালবাসার পিছুটান!
মন:
অতঃপর পাড়ি জমাই নিঃসীম অপার নিলীমার রংয়ে।
যখন তখন মেঘ আনি, ইচ্ছে হলেই কাব্য লিখি। ইচ্ছে হলেই ক্যাকটাসে ফুল ফোটাই ।
বারান্দাটা আমার একান্তই আমার।
পাশুটে ভাবনারা আর আমায় করেনা বর্ণহীন।
নিরেট আয়নায় স্পষ্টই দেখি, ভেতর বাহির সবটুকু।
জল শ্রাবণের ময়ূরাক্ষী চোখে আর আজ কাজল পরায় না। সত্যের শার্শিতে ঝলসানো রোদের আগুন তাপ।
তবুও:
পলকহীন ভ্রূপল্লবে স্থির দৃষ্টি, মাঝে মাঝেই আঁটকে থাকে সবুজ আলোর দিকে।
মুঠো ফোনটা নির্জীব পরে থাকে এক কোনে।
তবুও অবচেতনে উৎর্ণ কর্ণ শুনতে চায়……ফোনটা বেজে উঠবে কখন?
সমাপিকা:
হাতড়ে ফেরা পিছুটানের কাছে মিনতি রেখেই, ফিরে যেতে চাই নিটোলো ভূমির ঠিকানায়।
সময়ের কাছে থাকুক কিছু পোড়ামাটির স্মৃতীর কথন!
আরো থাকুক অজস্র অ-প্রাপ্তির প্রাপ্য হাজারো ফুলঝুরির নক্ষত্রের আলো।
বন্যা ইসলাম
২৫:১১:২০১৯
সময়কাল: ২:২৫ .
১৯টি মন্তব্য
আরজু মুক্তা
এটা পড়ে অনেক ভালো লাগলো।অসাধারণ। বিশ্লেষণ করা যায় প্রতিটা লাইন। মনে হলো গল্প পড়ে এলাম।
বন্যা লিপি
আমার মনে হয়েছিলো, এলোমেলো লেখা।
বিশ্লষণ টুকু ধরতে পেরেছেন জেনে খুশি হলাম আপু।ভালবাসা জানবেন 💕
তৌহিদ
আপনার মত করে এত সুন্দর বিশ্লেষণ আমি করতে পারতামনা। ছোট নুড়ি পাথরের একদিকে সুখ অন্যদিকে পাশবিকতা, কাব্যকথা লেখা যা তা কম্ম নয় কিন্তু। নিজের মনকে নিজের মত করে সামলানো কিংবা অপেক্ষা এ কেবল যেন একজন শব্দশিল্পীর অপার সৌন্দর্য কথামালা।
দারুণ লিখেছেন আপু।
বন্যা লিপি
কেউ কেউ আমায় পাশবিক,পাথর উপাধিতে ভূষিত করে। ইনসমনিয়ায় ভুগি আমি। মাঝরাত্তিরে হঠাৎ মাথায় এলো এগুলো নিয়ে এভাবেও লেখা যায় কিনা?
আপনার যথাযথা ব্যাখ্যায় আমি হাফছেড়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিলাম।
কৃতজ্ঞতা আপনার প্রতি। শুভ কামনা।
অনন্য অর্ণব
এত কাব্যিক হৃদয় কি করে নুড়ি পাথর হতে পারে 🤔🤔
বন্যা লিপি
নুড়ি পাথর নয়,একেবারে নিরেট চট্টান পাথর।আর সেখানেই দুর্বোধ্য গদ্যকাব্যের আহাজারী! মন্তব্যে ধন্যবাদ অনন্য অর্ণব।
নিতাই বাবু
দারুণ বিশ্লেষণ! অসাধারণ লেখনী। জীবনের সুখ থেকে সমাপিকা পর্যন্ত বিশ্লেষণ করলে অনেককিছু বেড়িয়ে আসে।
কবির জন্য শুভকামনা।
বন্যা লিপি
অসংখ্য কৃতজ্ঞতা জানবেন দাদা।
মন্তব্যে আপ্লুত হলাম।
এস.জেড বাবু
পাশবিকতার পরও কাব্য আছে, আছে গর্ব, আছে মন আরও আছে পিছুটানের কাছে মিনতি।
অপ্রাপ্তির অনুভুতিও আছে দেখছি-
নুড়ি পাথর – অনন্য সৃষ্টি
বন্যা লিপি
বাহ্…. চমৎকার মন্তব্য।
ধন্যবাদের পর আর কিছু খুঁজে পাচ্ছিনা কি বলা যায়????
আপনার মন্তব্য আমার ভালো লাগে।
শুভেচ্ছা জানবেন।
এস.জেড বাবু
যা বলেছেন এতেই মুগ্ধ আমি।
অনেক শুভেচ্ছা রইলো প্রিয় আপু
জিসান শা ইকরাম
পুঁথিমালা ভালো লেগেছে,
সমাপিকা টা বেশী ভালো লেগেছে।
শুভ কামনা।
বন্যা লিপি
আপনার ভালোলাগাটুকুই আমার প্রাপ্তি।
কৃতজ্ঞতা, শুভ কামনা।
সাবিনা ইয়াসমিন
অভাবে অভাবী নয়…..
নয় প্রেম অথবা বিপরীত ভালবাসার পিছুটান!….
গল্প-কবিতায় এই লাইনটাই আমার কাছে মুখ্য মনে হয়েছে। পুরো লেখাটি যদি ভাবসম্প্রসারন হয়, তাহলে এই দেড় লাইন তার সারাংশ।
কোনো কিছুর কামনা নেই, কিছু চাওয়ার নেই। নুড়ি পাথরের সুখ বা আর্তনাদ যাইহোক, কঠিন প্রাচীরে আবদ্ধে থাকুক সবটাই।
শুরুটা শুন্যে রেখে সমাপিকায় আত্মসমর্পণ!
অনবদ্য লাগলো ❤❤
বন্যা লিপি
সখী ভাবনা কাহারে বলে?
সখী যাতনা কাহারে বলে?
তোমরা যে বলো দিবস রজনী ভালবাসা ভালবাসা…… সখী ভালাবাসা কারে কয়?
সখী, তোমার মন্তব্যে আপ্লুত হলেম।
প্রিতীময় ভালবাসা তোমায়❤💚
সুরাইয়া পারভিন
সুখ, পাশবিকতা, কাব্য,গর্ব, মন সব মিলিয়ে অজস্র অপ্রাপ্তির চমৎকার বিশ্লেষণ।
দারুণ লিখেছেন আপু ❤
বন্যা লিপি
আপনার মন্তব্যে প্রাণিত হলাম খুব আপু।
শুভেচ্ছা জানবেন, শুভ কামনা।
ছাইরাছ হেলাল
শত শত প্রাপ্তির মাঝেও অপ্রাপ্তিগুলো মুখ ব্যাদান করেই থাকে অভাব্যতা নিয়ে।
বন্যা লিপি
অ-প্রাপ্তিগুলোর ভব্যতা অ-ভব্যতা সব কাব্যেই সীমাবদ্ধ থাকলে, কাব্য সুন্দর হয়ে ওঠে ☺