
অনেকটা জায়গা জুড়ে খোলা মাঠ। এক পাশে পুকুর । পুকুরের পাশে বেশ বড় এক ফলের বাগান। তারমধ্যে একপাশে পুরানো আমলের দোতলা বাড়ি। বাড়িটি একটি যৌথ পরিবারের। নীলা সেই পরিবারেরই সদস্য। বাড়িতে ঢোকার মুখে সিং দরজা । দরজাটি বেশ কারুকাজ করা কিন্তু দীর্ঘ অযত্ন অবহেলায় রং উঠে মরিচা ধরে বিবর্ণ দশা। নীলা সেই মরিচা ধরা দরজায় হাত দিতে ই তীব্র চিৎকারে যেন প্রতিবাদ করে উঠলো সেটি । এতো সকালে যে কোন শব্দ ই বেশি জোরে প্রকাশিত হয়। সে একটু সাবধানী হলো। বাড়ির মেয়ে এত সকাল সকাল বাইরে জানলে সমস্যা হবে।সকাল সকাল বাড়তি কথা শুনতে মোটেও প্রস্তুত নয়। সব সামলে নীলা চুপি চুপি সিড়িতে পা দিতেই জুবাইদা বেগম অভিযোগের সুরে বললেন ,
-কোথায় গিয়েছিলি?
-এই তো একটু বাইরে।
-এত সকালে না তোর বাইরে যাওয়া বারণ।
-কাছেই তো ছিলাম মা।
-কাছে থাকো আর দুরে যাও সেটা কথা না, মেয়েদের এতো সাহস ভালো না । তোমাকে তো কিছু শুনতে হয় না, সব দায় আমার । যাও বাড়ির লোকজন এমুখো হবার আগে ঘরে যাও। তোমার জন্য কথা শুনে শুনে আমি জ্বলে পুড়ে মরে গেলাম। আমার আর ভালো লাগে না এই নিত্য অশান্তি।
নীলা জানে মায়ের যত রাগ মুখে মুখে ,মনে কিছুই রাখে না সে। মনটা একেবারে ঝিলের জলের মতো টলটলে।যৌথ পরিবার তাকে অনেক পরিস্তিতির সম্মুখীন হতে হয়। অনেক বিধিনিষেধ আছেেএখানে, এবাড়িতে।সবকিছু তাকে সামলাতে হয়।ইচ্ছা অনিচ্ছায় মানতে হয় মুখ বুঝে।
-চায়ের পানি কি চড়াবো?
-চড়াও,আটা মেখে রেখেছি তোমার দাদুর জন্য, রুটিগুলো আগে করা দরকার।উনি সকাল সকাল বেরুবেন আজ।
-মা আমিও আজ রুটি খাবো।
সকালের প্রাত্যহিক কাজ শেষে নীলা ঘরে এসে খিল এটে দেয় । কলেজে যাওয়ার আগে এই সময়টা তার একান্ত নিজস্ব, এই সময় সে অনেকটা সময় ধরে গোসল সারে। গোসল সেরে সে পুরোনো দিনের বড় আয়নায় নিজেকে একটু একান্ত ভাবে দেখে। দেখার পর চলে সাজুগুজু। সাজুগুজুতে সে ভীষণ রকমের পটু্ । যদিও বাড়ির মুরুব্বীরা এতো সাজগোজের বিপক্ষে তবু দাদুর নিরব সম্মতিতে সে এক্ষেত্রে পার পেয়ে যায়।
কলেজ হাঁটা পথে মাইল খানেক।নীলা তরতর করে সিড়ি বেয়ে নেমে আসে। নিমেষে সিংদরজা ,খোলা মাঠ পেরিয়ে রাস্তায়
চলে আসে ,আজ বেশ খানিকটা দেরী হয়ে গেছে ,অনিতা আজ ঠিক রেগে যাবে ।নীলা জোরে হাঁটতে চেষ্টা করে ।
শাড়ি পরে এই এক সমস্যা খুব জোরে পা চালানো দায়। হঠাৎ নীলার মনে হয় কেউ বুঝি তার পিছু নিয়েছে। সে সামান্য ঘাড় কাত করে নির্জন রাস্তা। এমনিতে সে বেশ সাহসী কিন্তু এপাশে ঘন জঙ্গলময় এলাকায় এর আগে বেশ কিছু দূর্ঘটনা ঘটেছে । নিলা নিজের অজান্তেই আরো জোরে পা চালায়……
২৪টি মন্তব্য
ত্রিস্তান
একা যেতে সমস্যা হলে আমাকেও বলতে পারেন। আমি আপনার নায়িকা কে গার্ড দিয়ে কলেজে পৌঁছে দিয়ে আসবো হা হা হা 😀 দারুন হবে দাদাভাই, চালিয়ে যান।
ইসিয়াক
অনেক ধন্যবাদ রইলো ভাইয়া্
সুপর্ণা ফাল্গুনী
চলুক গল্প । আমরা আছি সাথে সাথে। শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য
ইসিয়াক
আপনার প্রতি ও শুভকামনা রইলো দিদি
ফয়জুল মহী
বাহ্ দারুণ প্রকাশ
ইসিয়াক
শুভকামনা নিরন্তর।
সাবিনা ইয়াসমিন
যৌথ পরিবারের অনেক নিয়ম রীতি-নীতি থাকে, থাকে অনেক নিষেধাজ্ঞা। এগুলোর বেশিরভাগই বাড়ির মেয়েদের উপর বর্তায়। শৃঙ্খলায় একটু ঢিল দিলেই কথা শুনতে হয় মেয়ের মাকে, কারণ সেও বাড়ির মেয়ে/বউ।
গল্পের সূচনা বেশ চমৎকার। পরের পর্ব গুলো পড়ার আশা করছি।
শুভ কামনা ইসিয়াক ভাই 🌹🌹
মোঃ মজিবর রহমান
কেন আপু শাশুড়িরা কি বাড়ির বউ না!!! তারা একটু পুরাতন হয়েছে এই যা। আসলেই একত্রে থাকলেই শাসন।
ইসিয়াক
ধন্যবাদ
ইসিয়াক
শুভকামনা ও ধন্যবাদ রইলো আপু্
মোঃ মজিবর রহমান
ভাল লাগল ডায়রির সাথে আছি।
ইসিয়াক
অনুপ্রাণিত হলাম ভাইয়া্। শুভকামনা।
নিতাই বাবু
চমৎকার উপস্থাপন! খুবই ভালো লাগলো দাদা। শুভকামনা থাকলো।
ইসিয়াক
জেনে ভালো লাগলো। শুভকামনা নিরন্তর।
সঞ্জয় মালাকার
চমৎকার উপস্থাপন দাদা, পড়ে ভালো লাগলো খুব।
ইসিয়াক
ধন্যবাদ ভাইয়া্
সুরাইয়া পারভীন
বাহ্ দারুণ!
পরে পর্বের অপেক্ষা…..
ইসিয়াক
পরের পর্ব আজই দেব আপু।
শুভকামনা।
আরজু মুক্তা
চলুক গল্প। ভালো লাগলো
ইসিয়াক
ধন্যবাদ রইলো্
জিসান শা ইকরাম
মেয়েদের নিয়ম নীতির বেড়াজাল এ বড় হতে হয়,
পরের পর্বে যাই।
সুন্দর উপস্থাপনা।
ইসিয়াক
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। শুভকামনা।
জাকিয়া জেসমিন যূথী
ওরে বাবা… কী হবে এখন? পরের পর্বে যাই
ইসিয়াক
কৃতজ্ঞতা রইলো আপু।