
বহুল প্রতীক্ষিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির মায়ানমার সেনাবাহিনী কর্তৃক ধর্ষণ,অত্যাচার,নির্যাতন ও গণহত্যার বিচার শুরু হল নেদারল্যান্ডের হেগে আন্তজার্তিক বিচার আদালতে।এর আগে মামলাটি করেন আফ্রিকা মহাদেশের একটি দেশ গাম্বিয়া।যদিও এ মামলাটি আমাদের মানে বাংলাদেশকে করা কথা ছিলো কিন্তু তা আর হয়ে উঠেনি হয়তো আমাদের শক্তি সাহস আর প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সমর্থণে ঘাটতি ছিল।যেখানে সূদুর গাম্বিয়া হতে ঢাকার দূরত্ব ১১০৬৪ কিলোমিটার।এতো দূর হতে বাংলাদেশ সাপোর্টে মায়ানমারে রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনে,নির্যাতন,গণহত্যার বিচারের ডাক দিল আইসিজে তে যেখানে ভারত চীন সর্বকালের স্বার্থবাদী বন্ধুপ্রতীম দেশ নীরব দর্শক।তা যাই হোক মামলার শুনানী গত ১০ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বেলা তিনটায় শুরু হয়েছিলো আইসিজে(International Court Of Justice) বা আন্তজার্তিক ন্যায় বিচার আদালত প্রাঙ্গণে।
মামলার শুনানীতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির উপর গণহত্যা বন্ধের অন্তবর্তীকালীন নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে এবং রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির উপর গণহত্যা নির্যাতন চালানো মিয়ানমার সরকারের আন্তজার্জিক বা বৈশ্বিক সনদ এর সীমানা লঙ্ঘন হলো কীনা তাই জানতে চাওয়া হয়েছে।এ ছাড়াও শুনানীতে গাম্বিয়ায় নিযুক্ত একজন কৌশলী এ্যান্ড্রু লোয়েনস্টিন মিয়ানমারে মংডু শহরে মায়ানমার সেনাবাহিনী কর্তৃক রোহিঙ্গাদের একটি পাইকারী হত্যার অভিযোগ করেন।আরেক সেনাবাহিনী যাকে টাটমাডাও নামে সবায় চিনে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল অসংখ্য রোহিঙ্গা হত্যা এবং নারী ধর্ষণের হোতা হিসাবে বিবেচিত করেন।এ ছাড়া রোহিঙ্গা নিধন ও ধর্ষণের সকল প্রমানাদী ধ্বংস করার কারনও ও জবাব দিহিতাও আদালতের মাধ্যমে চাওয়া হয়।
গুরুত্বপূর্ণ এই বিচারটির গাম্বিয়ার পক্ষ হতে প্রথম অভিযোগ উত্থাপন করা হয় ১০ ডিসেম্বর এবং আজ ১১ ডিসেম্বর মিয়ানমার সরকারের সাফাই গাওয়ার সুযোগ পাবেন আর ১২ ডিসেম্বর ২০১৯ বৃহঃপতিবার সকালে গাম্বিয়া এবং একই দিনে বৈকালে প্রতিপক্ষ মিয়ানমারের চুড়ান্ত যুক্তি খন্ডনের দিন ধার্য করা হয়েছে।
আজ ১১ ডিসেম্বর মিয়ানমারের যুক্তি উপস্থাপনের দিন চলে গেল।কাঠগড়ায় সূচী বরাবরের মত রোহিঙ্গা জাতিগোষ্টির উপর নির্যাতনের সকল অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন-মিয়ানমারে রাখাঈন প্রদেশের পরিস্থিতি উপলব্দি করা সহজ নয়।১৯১৭ সালের আগস্টের বিতর্কীত ঘনটাগুলো শুরু হয়েছিল যখন স্থানীয় রাখাঈন সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো পুলিশ ফাঁড়ির ওপর আক্রমণ চালিয়েছিল।তিনি অনেকটা হুমকি স্বরূপ আইসিজেকে বলেন-রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠি রাখাঈন প্রদেশের গোলাযোগের ইতিহাস কয়েক শতাব্দী এবং এ সংঘাত যাতে আরো বেগবান না হয় এমন কিছু না করতে আহবান করেন আইসিজেকে।
যতটুকু জানি সর্বসম্মতভাবে এখতিয়ারের আললোকে নেদারল্যান্ডে আইসিজে আদালতে কোন দেশ বা ব্যাক্তির বিরুদ্ধে মামলা হয়ে থাকলে তাকে গ্রেফতারের নজির আছে কিন্তু এ ক্ষেত্রে সব নিয়ম মেনে মামলা হলেও মায়ানমারের কাউকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না।আমরা অভিলম্বে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির উপর অমানবিক নির্যাতন ও গণহত্যার জন্য জড়িত সংশ্লিষ্ট সবাইকে গ্রেফতারের আবেদন জানাচ্ছি এবং শান্তিতে নোবেল পাওয়া অং সান সূচীর নোবেল প্রাইজ তুলে নেয়ার জোর আবেদন করছি।
অং সান সূচী নিঃসন্দেহে একজন নারী বিদ্বেষী নারী নেত্রী।গত ১০ ডিসেম্বর আইসিজে আদালতের প্রথম শুনানীতে অংশ নেয়া আইনজীবিদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আইজীবি তাফাদজ পামিপান্দো বলেছেন-রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণের কথা অস্বীকার করে তাকে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সূ চি বলতে বলেছেন “সেনাবাহিনী এবং বৌদ্ধগোষ্ঠি কেউ নোংরা বাঙালী নারীদের ছোঁবে না।ওরাঁ ততো আকর্ষনীয় নয়। এছাড়াও তিনি সূ চির বরাত দিয়ে আরো বলেছিলেন যে ফেইসবুকে ফেকরেপ নামে যে পেইজটি খোলা হয়েছে তাও নিয়ন্ত্রণ হয় স্টেট কাউন্সিলরের দপ্তর থেকে।এখানে আমাদের কথা শুধু নয় পুরো বিশ্ব যেখানে দেখেছেন মিয়ানমার কি ভাবে কতটা নির্দয়ে রাখাঈন প্রদেশে নিরীহ রোহিঙ্গা জনগোষ্টির উপর নির্যাতন গণহত্যা ও ধর্ষণের তান্ডব চালিয়েছেন তাতে নোবেল বিজয়ী তাও আবার অশান্তির দূত শান্তিতে নোবেল পেয়েও চুপ করে পক্ষান্তরে সেসব অপরাধের সাপোর্ট দিয়ে বিশ্ব নেতাদের নিকট বেশ সমালোচিত হয়েছেন।এ ক্ষেত্রে সেও হুকুমের অপরাধী।আর এক নারী হয়ে আরেক নারীর প্রতি এমন কটুক্তি নিঃসন্দেহে তার নারী বিদ্বেষী রূপটি বেড়িয়ে এসেছে।
বিচারের রায় শেষ পর্যন্ত যাই ঘটুক অন্তুত বাংলাদেশ এবং গাম্বীয়া মিলে মায়ানমারের অহংকারের রাজকন্যা স্টেট কাউন্সিলর অং সান সূচীকে যে কাঠগড়ায় দাড় করাতে পেরেছেন এটাই কম কিশের।আগামীকাল ১২ ডিসেম্বর অপেক্ষার পালা শেষ পর্যন্ত কী হয়।তবে আমাদের বিশ্বাস নির্যাতন ও গণহত্যার যে ধরনে সাক্ষ্য প্রমান রয়েছে তাতে সূচীর নাকে খদ দিয়ে দোষ স্বীকার করে আদালত প্রাঙ্গণ প্রস্থান করতে হবে।এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারে চার ব্যাক্তির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন।
—————————————
তথ্য ও ছবি
bbc সহ অন্যান্য অনলাইন মিডিয়া,সামু ইত্যাদি
২৩টি মন্তব্য
কামাল উদ্দিন
এই নারী বিদ্বেষী সুচীর দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি প্রাপ্য। জানিনা বিশ্ব কতোটা কি করতে পারবে, যেখানে চীন ভারত ওদের পক্ষেই থকে যাচ্ছে।
মনির হোসেন মমি
এখানেই সমস্যা।ভারত চীন আমাদের সাথে থাকলে সব সহজ হত। ধন্যবাদ ভাইয়া।
কামাল উদ্দিন
এই দেশগুলোর বিরুদ্ধে বাংলাদেশেরও একটু কঠিন হওয়া উচিৎ
নিতাই বাবু
তাকে (সু চি) তো মনে হয় ফাঁসানো যাচ্ছে না দাদা। তা এ-বিষয়ে নিশ্চিত হলাম, একটি খবর পড়ে। খবরটি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের। নিচে হুবহু কপি করে দেখানো হলো:
“রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে দ্য হেগের ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) মিয়ানমারের পক্ষে বক্তব্য দিতে দাঁড়িয়ে বুধবার নোবেলবিজয়ী সু চির এই সাফাই আসে।
রোহিঙ্গা শব্দটি উচ্চারণ না করেই তিনি বলেন, রাখাইনে সেনা অভিযানে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের অভিযোগ হয়ত উড়িয়ে দেওয়া যায় না, তবে তার পেছনে গণহত্যার উদ্দেশ্য ছিল- এমন ধরে নেওয়াটাও মিয়ানমারের জটিল বাস্তবতায় ‘ঠিক হবে না’।”
সত্যি দুঃখজনক!
মনির হোসেন মমি
মায়ানমারকে শাস্তির আওতায় কেউ আনতে পারবে না এটাও জানি কারন মায়ানমার সেনাবাহিনী সরকার কখনোই কোন ইস্যুতেই বিশ্ব নেতাদের সিদ্ধান্ত মেনে নেয়নি নতুবা আশপাশ সব গণতন্ত্র দেশের মাঝে তারাই একমাত্র সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রীত সরকার।আর এ বিচার শেষ হতে কয়েক বছর লেগে যাবে।তবে শান্তির বাণী হল অন্তত এক ঘাউরা জাতিকে কাঠগড়ায় দাড়াতে বাধ্য করেছি। সঠিক তথ্য সেয়ারে ধন্যবাদ দাদা।
ইঞ্জা
চমৎকার পোস্ট, সমসাময়িক বিষয়টি নিয়ে লেখার জন্য সাধুবাদ জানাই।
বিষয়টি নিয়ে এই মুহূর্তেই কোন কমেন্ট করতে চাইনা, আরেকটু সময় যাক এরপর কমেন্ট করবো।
মনির হোসেন মমি
হুম । অবশ্যই অপেক্ষার পালা।ধন্যবাদ ভাইজান।
ইঞ্জা
শুভকামনা
নুর হোসেন
অং সান সূচী নোবেলজয়ী নেত্রী,
রোহিঙ্গা গণহত্যা শুরু হওয়ার কিছুদিন পরেই উনি পদত্যাগ করেন;
চিন্তার বিষয়টা একটু জটিল উনি সম্ভবত মগ সেনাবাহিনীর হাতে ভিতরে ভিতরে গৃহবন্দী ছিলেন।
তবে যেহেতু আমরা তা জানিনা তাই উনার যথার্থ শাস্তি কামনা করছি।
জাপান আমাদের ভালো বন্ধু চীন বা ভারত নয়,
তাই কৌশলে চীন ও ভারতকে বয়কট করা যেতে পারে।
মনির হোসেন মমি
হুম আপনার কথাও ঠিক। সূচী নামে মাত্র।আর ভারত চীনকে এভয়েড করে বাংলাদেশ চলতে পারবে না এটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
নুর হোসেন
শুভ কামনা, জানবেন।
এস.জেড বাবু
সূচীর উপর কঠিনতম বিচার কার্যকর হলেও ভবিষ্যতে মিয়ানমারে এমন মানবতার নিকৃষ্টতম অপরাধ হয়ত দমিয়ে রাখা যাবে না-
সেনাবাহিনী মৌলিক ধর্মীয় অনুসারী- সকল ধর্ম বর্ণের লোকজন সেনাবাহিনীতে থাকলে এমনটা হওয়ার সম্ভাবনা হয়ত কমে যেত।
যা কল্পনা করলেও ভুল হবে।
তবে সূচীর বিচারে, ভবিষ্যত রাজনৈতিক নেতৃত্ব, সরাসরি ভাবে এমন জঘন্য হত্যাকাণ্ড/ অত্যাচার অনাচার থেকে হয়ত কিছুটা দুরে থাকবে।
মনির হোসেন মমি
সহমত ভাইয়া।ধন্যবাদ আপনাকে।
ছাইরাছ হেলাল
এই বিচারের শেষ না দেখে আমি আশ্বস্ত হচ্ছি না।
অপেক্ষা করতে চাই।
মনির হোসেন মমি
বছরের পর বছর। তবুও এর শেষ হলেই ভাল।ধন্যবাদ ভাইজান।
তৌহিদ
দাদা, মিয়ানমারকে কাঠগড়ায় আনানো গেছে এটা একটা বড় বিষয়। সূচি নিজের আদর্শ থেকে সরে এসেছে তার পিছনেও অনেক কারণ আছে।
রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান জরুরী। চীন এবং পাকিস্তান হচ্ছে উস্কানীদাদা। তবে ভারত নীরব থেকে দু কূলই ঠিক রাখছে যা দৃষ্টিকটু।
এসবের বিহীত হবে একদিন। তবে রোহিঙ্গারা স্বদেশে ফিরে যাক এটাই কাম্য।
মনির হোসেন মমি
হুম। ধন্যবাদ ভাইয়া।
জিসান শা ইকরাম
এ যুগের হিটলার হচ্ছে অং সান সূচী, কতবড় নির্লজ্ব একজন নারী নোবেল পুরস্কার পেলো।
ভালো পোস্ট।
মনির হোসেন মমি
ধন্যবাদ ভাইজান।
আরজু মুক্তা
এ কীভাবে নোবেল পেলো? আর কেনই বা তা উঠিয়ে নেয়া হচ্ছে না। বুঝতেছিনা। ওর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি।
মনির হোসেন মমি
ধন্যবাদ আপু।
নার্গিস রশিদ
আমারও একই প্রশ্ন সে কেমন করে নোবেল পায় । অনেক গুরুত্বপূর্ণ লেখা । ভালো লাগলো ।
মনির হোসেন মমি
অসংখ্য ধন্যবাদ।