
এক.
সঞ্জীবনী কবিতা
———————–
ইদানিং সন্ধ্যায় বারান্দায় দাঁড়ালেই অন্ধকারাচ্ছন্ন আকাশ আর ঝিঁঝিঁ পোকার শব্দে অদ্ভুত এক বিষণ্ণতা গ্রাস করে আমায়। উত্তরের শীতল বাতাসে ছন্দহারা সব ইচ্ছেরা মুক্ত হতে চেয়েও কোন এক অজানা আশঙ্কায় গৃহবন্দিত্ব বরণ করে নিয়েছে নিজে থেকেই। কেমন আছে পৃথিবীর মানুষ এ প্রশ্ন এখন অবান্তর। কে দেবে এর উত্তর? করোনা যেনো দেখিয়ে দিলো আমাদের যাপিত জীবনের উত্থান পতনগুলো।
আমার গৃহবন্দিত্বের নীরব সাক্ষী টবে ফোটা লাল গোলাপটিও আমার মত কেমন বিষণ্ণ হয়ে ঝিমিয়ে পরছে দিনে দিনে। বারান্দায় যখনি আসি বাতাসে দোল খাওয়া নিস্তেজ গোলাপটির দিকে তাকালেই মনে হয় সে আমাকে জিজ্ঞেস করছে- হে পৃথিবীর মানুষ, তুমি কি আমার জন্য একটা সঞ্জীবনী কবিতা লিখবে?
দুই.
অশ্বথের বুকে লেখা নাম
———————————–
শুধু তোমাকে ভালোবাসবো বলে এই
করোনাতঙ্কেও অসহায় বন্দিত্ব মেনে নিয়েছি। একদিন দু’দিন তিনদিন করে করে আজ তেপ্পান্ন দিন ঘরবন্দি আমি তুমি দু’জনেই। নিত্যদিন নতুন করে দেখছি, চিনছি তোমায়। যাপিত জীবনের ব্যস্ততায় আমি ভুলে গিয়েছিলাম সংসার, প্রেম সবকিছু। মধুচন্দ্রিমার রাত্রিতে তোমাকে দেয়া কথাগুলো না হয় এবারে ঝালাই করে নেব। আমি এখন নিগূঢ় প্রেম পিয়াসী প্রেমিক।
মাঝেমধ্যে বারান্দায় ধুলোজমা গ্রীল আঁকড়ে দাঁড়িয়ে তাকিয়ে থাকি দূরের ঐ অশ্বথ গাছটির দিকে। ভাবছি করোনা ছুটি শেষ হলে তোমাকেও নিয়ে যাব সেখানে। সহস্র যুগলবন্দীর হাজারো প্রেম উপাখ্যানের নীরব সাক্ষী সে গাছটির বুকে আমাদের ভালোবাসার স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে যোগচিহ্ন দিয়ে লিখে রাখবো দু’জনের নামের আদ্যক্ষর।
৩২টি মন্তব্য
ফয়জুল মহী
দুর্দান্ত প্রকাশ। যথার্থ বলেছেন। ভালো লাগলো ।
তৌহিদ
পড়ার জন্য ধন্যবাদ মহী ভাই।
সাবিনা ইয়াসমিন
ওয়াও! দারুণ লিখেছেন। বিমর্ষ গোলাপকে ২য় গল্পটা শুনিয়ে দিন। আরও ভালোবাসবে বলে যে প্রেমিক স্বেচ্ছায় নিজেকে বন্দী করে নিয়েছে, তার গল্প শুনে গোলাপ ফিরে পাবে তার সঞ্জীবনী সুধা।
শুভ কামনা 🌹🌹
তৌহিদ
২য় গল্পটা চুপি চুপি বলেছি তাকে। ভালোবাসার নতুন উদ্যমে সে এখন উজ্জীবিত আপু। কি সুন্দর বাতাসে দোল খাচ্ছে গোলাপটি।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ☺
সাবিনা ইয়াসমিন
এমন গল্প আরও কয়েক ডজন চাই।
অণুগল্প শিখবো আপনার কাছ থেকেই,,
তাড়াতাড়ি লিখুন প্লীজ..
তৌহিদ
আফা, আপনে আমারে অকবিতা শেখান আগে। আমিও লিখতে চাই আপনার মতন।
ছাইরাছ হেলাল
এ দেখছি কবিতা-খোর গোলাপ। দিন একখানা ছুঁড়ে। খেয়ে তো বাঁচুক!
করোনা তো দেখছি ঝালাইকারের চাকরি নিছে,
তা t+s লিখে লিখে ঘরে বসে প্রাক্টিস টা সেরে রাখুন।
করোনা প্রেমিক!
তৌহিদ
আমার কবিতা নিজ হাতে লাগানো গাছগুলো ছাড়া আর কেউ শোনেনা ভাই। আদ্যক্ষর লেখার জন্য বেরোতে দিচ্ছেনা কেউই।
চান্স পেলেই যাব।
প্রদীপ চক্রবর্তী
অসাধারণ বহিঃপ্রকাশ দাদা।
সুদিন ফিরে আসুক আবার একসাথে বসা একসাথে দেখা হোক প্রকৃতির বুকে।
শুভকামনা দাদা।
তৌহিদ
পড়ার জন্য ধন্যবাদ দাদা। শুভকামনা সবসময়।
ইঞ্জা
মাঝেমধ্যে বারান্দায় ধুলোজমা গ্রীল আঁকড়ে দাঁড়িয়ে তাকিয়ে থাকি দূরের ঐ অশ্বথ গাছটির দিকে। ভাবছি করোনা ছুটি শেষ হলে তোমাকেও নিয়ে যাব সেখানে। সহস্র যুগলবন্দীর হাজারো প্রেম উপাখ্যানের নীরব সাক্ষী সে গাছটির বুকে আমাদের ভালোবাসার স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে যোগচিহ্ন দিয়ে লিখে রাখবো দু’জনের নামের আদ্যক্ষর।
আর কিছু বলার আছে?
অসাধারণ, যাস্ট অসাধারণ।
তৌহিদ
আপনার মন্তব্য বরাবরই উৎসাহ দেয় দাদা। প্রিয় ভাইয়ের মন্তব্যে ভালোলাগা জানিয়ে গেলাম।
শুভকামনা রইলো।
ইঞ্জা
ভালোবাসা জানবেন ভাই।
সুরাইয়া পারভীন
ওয়াও দুর্দান্ত অনুগল্প। বিষণ্ণ বিষাদে ঝিমিয়ে পড়া গোলাপের জন্য ‘অশ্বথের বুকে লেখা নাম’ দুর্দান্ত সঞ্জীবনী কবিতা। এটা শুনলে গোলাপের বিষণ্ণতা বিলীন হবে নিশ্চিত
তৌহিদ
বলছেন তবে! যাক গোলাপটিতে জল দিয়ে ভালোবাসার কবিতা শোনাবো তবে।
ভালো থাকবেন সবসময়।
কামাল উদ্দিন
আমিতো বলবো দুটি কবিতা। আজ বারান্দায় দাঁড়িয়ে পাশের তাল গাছটার দিকে ভালোভাবে নজর দিয়ে দেখলাম ওত লম্বা লম্বা ফুল ধরেছে, লম্বা ফুলগুলোতে আবার ছোট শত শত ফুলের রেনু ছড়িয়ে আছে। ঠিক যেনো আপনার গোলাপের মতোই……..ভালোলাগা জানিয়ে গেলাম কবি।
তৌহিদ
কবিতা বলছেন! আহা কতদিন কবিতা লিখিনা! যাক লেখা পড়ে কিছুটা প্রকৃতি দর্শণ করলেন এইবা কম কিসে!
সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাই।
ত্রিস্তান
একদিন আমিও বের হবো গেরুয়া গাঙচিলের ডানায় ভর করে সুদূর অশ্বত্থের তলায় মহুয়ার গন্ধ মেখে পৃথিবী আবার শান্ত হবে।
তৌহিদ
পড়ার জন্য ধন্যবাদ ভাই। শুভকামনা সবসময়।
হালিম নজরুল
ভাললাগা জানালাম ভাই।
তৌহিদ
পড়ার জন্য ধন্যবাদ দাদা। শুভকামনা সবসময়।
আরজু মুক্তা
প্রকৃতি মানুষ সবাই ফিরে পেয়েছে নতুন উপাখ্যান।
আমরাও অপেক্ষায় নতুন প্রেমের গল্প শুনব বলে
তৌহিদ
লিখবোতো বটেই। পড়ার জন্য ধন্যবাদ আপু। শুভকামনা সবসময়।
শামীম চৌধুরী
অল্প কোথায় সব বুঝয়ে দিলে তৌহিদ। একেই বলে সেরাদের সেরা। নামটাও অণুগল্প যথার্থ।
তৌহিদ
উৎসাহ পেলাম ভাইজান। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। শুভকামনা সবসময়।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
নিস্তেজ গোলাপটির জন্য খারাপ লাগলো। শেষের টা ভালোবাসায় পরিপূর্ণ।এমন ভালোবাসা, মিল মহব্বত আমৃত্যু বেঁচে থাকুক। শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য
তৌহিদ
ভালোবাসা পেতে সবাই মরিয়া। গোলাপটির আর কি দোষ বলুন! এই বিষণ্ণতা কেটে যাক এটাই কাম্য।
ভালো থাকবেন আপু।
সঞ্জয় মালাকার
মাঝেমধ্যে বারান্দায় ধুলোজমা গ্রীল আঁকড়ে দাঁড়িয়ে তাকিয়ে থাকি দূরের ঐ অশ্বথ গাছটির দিকে। ভাবছি করোনা ছুটি শেষ হলে তোমাকেও নিয়ে যাব সেখানে। সহস্র যুগলবন্দীর হাজারো প্রেম উপাখ্যানের নীরব সাক্ষী সে গাছটির বুকে আমাদের ভালোবাসার স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে যোগচিহ্ন দিয়ে লিখে রাখবো দু’জনের নামের আদ্যক্ষর।
অসাধারণ লেখা দাদা,
আপনারা জন্য অনেক অনেক শুভ কামনা //
তৌহিদ
পড়ার জন্য ধন্যবাদ দাদা। শুভকামনা সবসময়।
তৌহিদ
পড়ার জন্য ধন্যবাদ ভাই। শুভকামনা সবসময়।
জিসান শা ইকরাম
করোনাকালে ঘরবন্দী জীবনে এমন অনুগল্প আসলে ঘরবন্দীত্বই ভালো 🙂
অশ্বথের বুকে লেখা নাম টি একটু বেশিই ভালো লাগলো।
শুভ কামনা।
খাদিজাতুল কুবরা
খুব ভালো লাগলো ভাইয়া।
করোনা আগ্রাসন আল্লাহ পাকের এক বিশেষ কৌশল বলে আমার মনে হয়।
প্রকৃতির উপর মানুষের দুর্বিনীত মনোভাবের প্রহসন,
পারিবারিক বন্ধনের প্রতি পরস্পরের নিস্পৃহতা এসব রুখতে সৃষ্টিকর্তা আমাদের কাছে করোনা পাঠিয়েছেন।
এই করোনা আমাদেরকে অনেক কিছু শিখিয়ে দিলো।
ভাইয়া যদি কিছু ভুল বলি, বলবেন।
শুভকামনা রইল