
বাংলাদেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়। আর পঞ্চগড়ের সর্ব উত্তর উপজেলা তেতুলিয়া। টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া কথাটা শুনে শুনেই তেতুলিয়া দেখার ইচ্ছেটা মনের ভেতর জেগে উঠে। ‘‘তেতুলিয়া’’ চার অক্ষরে একটি নাম যা দেশের সকলের নিকট এক নামে পরিচিত। জনশ্রুতি আছে যে, প্রাচীন কালে তেতুলিয়া ছিল প্রচুর তেতুল গাছ। প্রজাদের মধ্যে যারা সঠিক সময়ে খাজনা দিতে পারত না জমিদাররা তাদেরকে তেঁতুলগাছের গোঁড়ায় বাঁধে রাখতো। আর এ কারণেই নাকি তেতুলিয়ার নামকরণ করা হয়। এখনো তেতুলিয়ার মূল বাজারটায় একটা বিশাল তেতুল গাছ রয়েছে।
তেতুলিয়ার বাংলাবান্ধা বাংলাদেশের একমাত্র স্থল বন্দর যার মাধ্যমে চারটি দেশের (বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভূটান) মধ্যে পণ্য আদান-প্রদানের সুবিধা রয়েছে। বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট একটা দর্শনীয় স্থানও বটে। তেতুলিয়া উপজেলার সদর হতে বাংলাবান্ধার দূরত্ব ১৭ কিলোমিটার। বাংলাবান্ধা থেকে ভারতের শিলিগুড়ি শহর মাত্র সাত কিলোমিটার এবং দার্জিলিং মাত্র ৬৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। আর বাংলাবান্ধা থেকে নেপালের কাকরভিটা সীমান্ত মাত্র ৩০ কিলোমিটারের মধ্যে। বাংলাদেশের এন৫ মহাসড়কটি বাংলাবান্ধা সিমান্ত এসে শেষ হয়েছে।
বাংলাদেশের সবচেয়ে উত্তরের উপজেলা তেতুলিয়া যাওয়ার ইচ্ছেটা ছিল অনেক দিনের। কারণ, তেতুলিয়ায় দাড়িয়ে নাকি দেখা যায় হিমালয়, তিব্বত, আর নেপালের অপরূপ কাঞ্চনজঙ্গা। তবে আমার ভাগ্যটা এতো সুপ্রসন্ন ছিলোনা যে আমি ভিসা ছাড়া কাঞ্চজঙ্গা দেখে ফেলবো, শীতের সময় হওয়ার পুরো এলাকাই ছিলো কুয়াশায় ঢাকা।
(২) তেতুলিয়ার আশপাশটা ঘুরে দেখার জন্য এমন বাহনের বিকল্প নাই।
(৩) তেতুলিয়া এসেই প্রথম দেখা পেলাম এই বাসর ফুলের, অথচ আরো ২৩ বছর আগে দেখা পাওয়ার কথা ছিলো।
(৪) এটা তেতুলিয়া সিমান্তের বিজিবিদের ওয়াচ টাওয়ার।
(৫) ওয়াচ টাওয়ার পেরিয়ে পাসপোর্ট ভিসা ছাড়া আমি এখন ভারতের সিমান্তের ভেতরে।
(৬) তেতুলিয়া ডাকবাংলো পিকনিক স্পট।
(৭) মমতা ফুচকা হাউজে কিছু খেয়ে কিছুটা চাঙ্গা হয়ে নিলাম।
(৮) ফুচকা হাউজের পেছনের এই শক্ত পোক্ত বেঞ্চগুলো থেকে নিচে নামলেই ভারত।
(৯) বেঞ্চগুলোর পাশে এই এঙ্গেলে দাঁড়িয়েই নাকি মহানন্দা পেরিয়ে দেখা যায় নেপালের কাঞ্চজঙ্গা, কিন্তু শীতের সময় হওয়ার পুরো এলাকাই ছিলো কুয়াশায় ঢাকা।
(১০) ওরা মহানন্দা থেকে পাথর তুলে আনে গাড়ির বাতাস ভরা টিউব দিয়ে, এমনটা আগে আর কোথাও দেখিনি।
(১১) টিউবে ভাসিয়ে নিয়ে আসছে মহানন্দার বুক থেকে তোলা পাথর।
(১২) সকাল বেলা তেতুলিয়ার তেতুল তলার বসার আসন গুলো থাকে এমনি ফাঁকা।
(১৩) আবার সন্ধ্যায় থাকে বেশ জমজমাট।
(১৪/১৫) একই কিলোমিটার পোষ্টের দুই পার্শ, এবার যাবো ১৭ কিলোমিটার দূরের বাংলাবান্ধায়।
(১৬/১৭) বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্টের প্রায় দুই কিলোমিটার আগে বাসষ্টেন্ড ওখানে বাস থেকে নেমে দার্জিলিং হোটেলে খিচুরী আর ডিম ভাজি দিয়ে ভরপেট খেয়ে নিলাম আগে।
(১৮) সিমান্ত ঘেষে হালচাষ করছে একজন বাংলাদেশী কৃষক।
(১৯) বাংলাদেশের সর্ব উত্তরের বাংলাবান্ধার শেষ দোকান এটি, এই দোকান থেকে পশ্চিমে কুলি করলে ভারতের সিমানায় পড়বে পানি।
(২০) বাংলাবান্ধার জিরো পয়েন্টে বানিয়ে রাখা বিশাল জিরো এটি। বাংলাবান্ধা থেকে ভারতের শিলিগুড়ি শহর মাত্র সাত কিলোমিটার এবং দার্জিলিং মাত্র ৬৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। আর বাংলাবান্ধা থেকে নেপালের কাকরভিটা সীমান্ত মাত্র ৩০ কিলোমিটারের মধ্যে।
(২১) পেছনে বাঁশ দিয়ে বাধা বাংলাদেশের শেষ সিমানা, আমাদের ফেরৎ আসার জন্য এই অটো বাইকে চড়তে হবে দুই কিলোমিটার দূরের বাসষ্টেশনে যাওয়ার জন্য।
২২টি মন্তব্য
ফয়জুল মহী
বেশ ভালো লাগলো
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ
ছাইরাছ হেলাল
এক জায়গায় দাঁড়িয়ে তিন জায়গা এটি এই প্রথম জানলাম।
সম্ভব হলে এই ভ্রমণ নিয়ে আরও কিছু আলাদা করে বললে অনেক জানতে পারব।
কামাল উদ্দিন
প্রকৃতি নাকি পরিচ্ছন্ন হচ্ছে, দেশ সুস্থ্য হলে আরেকবার ট্রাই মারবো ভাইজান।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
খুব ভালো লাগলো। তেঁতুলিয়া নামটা আপনার মতো আমিও ওভাবে শুনেই দেখার খুব ইচ্ছে ছিলো । আপনার মাধ্যমে আজ সেই সাধটা পূরণ হলো। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন। শুভ সকাল
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ আপু, তেতুলিয়ায় আরো একবার যেতে হবে কাঞ্চনজঙ্গা দেকার উদ্দেশ্যে।
সুপায়ন বড়ুয়া
তেইশ তম বিয়ে বার্ষিকীতে বাসর ফুল দেখার
মজাটাই আলাদা।
কিন্তু ফুল গুলো দেখতে ভারী সুন্দর।
শুভ কামনা।
কামাল উদ্দিন
হুমম, নতুন করে পুরোনো কথাগুলো মনে হয়, ভালো থাকবেন দাদা।
সুরাইয়া নার্গিস
চমৎকার একটা পোষ্ট।
অনেক কিছু জানলাম ভালো লাগলো, ছবি গুলো দারুন।
লেখার সাথে সুন্দর সুন্দর লেখা সব মিলিয়ে মুগ্ধ হলাম।
শুভ কামনা রইল ভাইয়া।
কামাল উদ্দিন
আপনার জন্যও শুভ কামনা সব সময় আপু।
আরজু মুক্তা
এবার তেতুলিয়া যাবো।
ভালো লাগলো
কামাল উদ্দিন
হুমম, ভ্রমণে গেলে সত্যিই মন ভালো হয়।
তৌহিদ
আশ্চর্যজনক হলেও তেঁতুলিয়া আমার যাওয়া হয়নি অথচ পাশের জেলা এটি। আপনার লেখায় সে ইচ্ছে পূরণ হলো কিছুটা। ধন্যবাদ ভাই।
কামাল উদ্দিন
বলেন কি ভাই, আমার তো ওখানে যেতে হয়েছে সাত সমুদ্র তের নদী পার হয়ে 😀
তৌহিদ
মক্কার লোক হজ্জ পায়না এই হয়েছে আমার অবস্থা ভাই।
কামাল উদ্দিন
তা যা বলেছেন ভাই 😀
শামীম চৌধুরী
খুব ভালো লাগলো আপনার তেতুলিয়া ভ্রমন কাহিনী।
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ বড় ভাই, শুভ কামনা জানবেন।
হালিম নজরুল
বাংলাবান্ধা একবার যেতে চেয়েও যেতে পারিনি।
কামাল উদ্দিন
ভবিষ্যতে হয়তো পারবেন
জিসান শা ইকরাম
এক স্থানে গিয়ে তিনস্থান দেখা যাবে! বাহ দারুন তো।
টিউবে বাতাস ভরে পাথর ভাসিয়ে আনার কথা আর শুনিনি আগে।
ধন্যবাদ এমন পোস্টের জন্য,
শুভ কামনা ভাই।
কামাল উদ্দিন
আপাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ বড় ভাই।