
একদিন বিকেল বেলা কয়েক বন্ধু মিলে রেল লাইনে হেটেছিলাম, আশেপাশের চমৎকার পরিবেশ ও গ্রাম্য প্রকৃতি আমাকে পাগল করেছিল, তারপর আরো কিছু পাগলের সাথে শলা-পরামর্শ করে বেড়িয়ে পড়ি রেল লাইনে হেটে হেটে গ্রাম বাংলাকে দেখার জন্য। এবং সিদ্ধান্ত নেই ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত রেল লাইন ধরে হাটবো। এটাই ছিলো আমাদের রেল লাইন পরিকল্পনা, ইতিমধ্যেই আমরা চট্টগ্রাম পৌছে গিয়েছি ………….
ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যেতে অনেকগুলো ছোট স্টেশন আছে যেগুলোর নাম এবং সংখ্যা অনেকেই জানেন না, আমি ও জানি না । আমি এক ষ্টেশন থেকে পরবর্তী স্টেশনের মধ্যবর্তী স্থানগুলোর ছবি দিব এবং প্রতি ষ্টেশনের জন্য একটা করে পোষ্ট । এতে করে স্টেশনের নাম এবং সংখ্যাটা ও হিসেব হয়ে যাবে ।
আমাদের হাটার ধরণঃ- সারাদিন রিলাক্স মুডে রেল লাইন ধরে হাটব, সন্ধ্যায় গাড়িতে করে বাড়িতে ফিরে আসব । এই সপ্তায় যেখানে আমার হাটা শেষ হবে আগামী সপ্তায় সেখান থেকে হাটা শুরু করবো এবং আবারো সন্ধ্যায় বাড়িতে ফিরে আসব । এভাবেই পর্যায়ক্রমে আমি চিটাগাংএর দিকে অগ্রসর হব এবং যতদিন না আমি চিটাগাং পৌছতে পারি । প্রতি সপ্তাহে হাটা আমাদের দ্বারা সম্ভব
না হওয়ায় দীর্ঘ দিন লেগে গিয়েছিল চট্টগ্রামে আমাদের পৌছতে। যদিও দিনের হিসেব করলে পনের দিন লেগেছিল।
স্টেশনের অবস্থানঃ আশুগঞ্জ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা স্টেশন।
(২) আশুগঞ্জ ষ্টেশন পার হয়ে আমরা এগিয়ে যেতে থাকি চট্টগ্রামের দিকে ……
(৩) অতি পুরোনো যাত্রাপুর কেবিন মসজিদ।
(৪) সাইন বোর্ডে লিখা, এখানে কোন গেইটম্যান নাই, কোন দূর্ঘটনা ঘটলে নিজেই ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকিবে । অথচ স্কুলের বাচ্চারা নিয়মিত এখান দিয়ে যাতায়াত করে ।
(৫) আর মাত্র ২৩০ কিলোমিটার দূরে চট্টগ্রাম।
(৬) সুতরাং তাড়াহুড়ার কিছু নাই, শুধু আস্তে আস্তে হেটেই এই পথে এগোলাম।
(৭) এটাও একটা রেল লাইন, ভয় পাওয়ার কারণ নাই এই লাইন দিয়ে এখন আর ট্রেন চলে না 😀
(৮) যখন কিছুই দেখার না থাকে তখন এমন সাধারণ জংলী ফুলগুলোও মন কেড়ে নেয়।
(৯) চলন্ত ট্রেনের পাশে ওকে কান ধরে দাড় করিয়ে দিলাম 😀
(১০) সবাই ছোটে জীবিকার খোঁজে, আমরাই ঘুরি অকাজে …..
(১১) একটি গ্রামীন মেঠো পথ মেরামত কাজ চলছে…….
(১২) চোখে সর্ষে ফুল দেখেই আমার দুই সাথী ক্ষেতে নেমে পড়ে ।
(১৩) এখন না কব কথা, আনিয়াছি…..
(১৪) মানুষের চলাচলের জন্য একটা লাইনের ভেতর লোহার রড দিয়ে এমন বুনন এই প্রথম দেখলাম।
(১৫/১৬) ট্রেন আসে ট্রেন যায়, আমাদের যাওয়া শুধুই চট্রগ্রামের দিকে।
(১৭) সিগন্যাল গাছ বলে পরবর্তি স্টেশন আর বেশী দূরে নয়।
(১৮) রেল লাইনের পাশের মানুষগুলো বেশীর ভাগই এমন ভাবে রেল লাইন ধরে চলাচল করে।
(১৯/২০) চলে এলাম পরবর্তি স্টেশনে। ষ্টেশনের নাম তালশহর, যদি ষ্টেশনের আশে পাশে অনেক খুঁজেও কোন তাল গাছ পাইনি আমরা। আর স্টেশনটাও একেবারেই গ্রামীন।
***আগের পাঁচটি পর্ব এখানে দেখে নিতে পারেন
ঢাকা টু চট্টগ্রাম – ভৈরব জংশন (স্টেশন নং –১৮)
ঢাকা টু চট্টগ্রাম – দৌলতকান্দি (স্টেশন নং –১৭)
ঢাকা টু চট্টগ্রাম – শ্রীনিধি (স্টেশন নং –১৬)
ঢাকা টু চট্টগ্রাম – মেথিকান্দা (স্টেশন নং –১৫)
ঢাকা টু চট্টগ্রাম – হাটুভাঙ্গা (স্টেশন নং –১৪)
২২টি মন্তব্য
ফয়জুল মহী
অসাধারণ ।
কামাল উদ্দিন
শুভেচ্ছা
সুপর্ণা ফাল্গুনী
বাহ্ আপনার চলার পথ আরো মসৃণ হোক এই কামনা করি। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ আপু, আপনিও ভালো থাকুন সব সময়।
ছাইরাছ হেলাল
তাল শহর এই প্রথম শুনলাম-দেখলাম।
যদিও আপনার ছবি-লেখা থকে অনেক কিছুই দেখলাম,
প্রথম বারের মত।
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ ভাই, তবে নামটা তাল গ্রাম হতেও পারতো, এটা কোন শহরই নয়, নিরেট গ্রাম।
সাবিনা ইয়াসমিন
একটা রেললাইন ঘিরে কত শত গল্প থাকে ছবিগুলো দেখে উপলব্ধি করলাম! প্রায় সব গুলো ছবিতেই জীবন আর জীবিকার পাশাপাশি বসবাস।
আশা করছি সামনের ২৩০ কিঃমিঃ হাটতে ভালোই লাগবে।
শুভ কামনা কামাল ভাই,
ভালো থাকুন 🌹🌹
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ আপু, সামনের ২৩০ কিলোমিটার অবশ্যই ভালো লাগবে। রেল লাইনের আশপাশ ক্রমান্বয়ে পরিবর্তিত হয়, তবে সৌন্দর্য্য হারায় না।
সাবিনা ইয়াসমিন
৭ নং ছবির রেললাইন এমন বাঁকাত্যাড়া হলো কিভাবে! আর ঐ লাইনে ট্রেন চলতে পারে না কেন?
কামাল উদ্দিন
ওটা পরিত্যক্ত রেল লাইন আপু
রুমন আশরাফ
খুব ভালো লাগলো কামাল ভাই। আজ অনেকদিন পর ব্লগে ঢুঁ মারতেই দেখি অনেক অনেক পোস্ট।
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ আশরাফ ভাই, ভালো থাকুন সব সময়।
আরজু মুক্তা
তালশহর নামটা মজা লাগলো।
কামাল উদ্দিন
হুমম, মিষ্টি তালের বড়ার মতোই 😀
সুপায়ন বড়ুয়া
গ্রামীন ছবিগুলো প্রাণবন্ত হয়ে উটে আপনার
ক্যামেরায়।
আর আমরা হাটতে থাকি আপনার ইশারায়
শুভ কামনা।
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ দাদা, মন্তব্যেও ছন্দে চমৎকৃত আমি।
নিতাই বাবু
তালশহর থেকে চট্রগ্রাম পৌঁছাতে আর ক’দিন লাগবে? যে ক’দিন-ই লাগুক-না-কেন, যাত্রা কিন্তু গন্তব্যে পৌঁছাতে হবে।
আমি আপনাদের পেছনে পেছনে সাথেই আছি! একটু ঘাড় ফেরালেই দেখতে পেতেন!
কামাল উদ্দিন
সামনের দিকে পেছনফিরে আপনাকে খুঁজে নেবো দাদা, আপনি যেন আবার লুকিয়ে পড়বেন না 😀
তৌহিদ
আজ কিন্তু ৮ ১১ ১২ নম্বর ছবি ভালো লেগেছে। তালশহরে তালগাছ নেই, হয়তো একসময় ছিলো!
ভালো থাকুন ভাই।
কামাল উদ্দিন
হুমম, হয়তো তাল গাছ ছিলো, কিন্তু এখনো যেহেতু গ্রাম শহর কিন্তু ছিলো না তৌহিদ ভাই 😀
জিসান শা ইকরাম
আপনার সাথে সাথেই আছি ভাই।
তাল শহরে কি তাল পাওয়া যায় খুব!
শুভ কামনা
কামাল উদ্দিন
🍉🍍🍐🍈🍇🍒🍓🍎🍌🍋🍏
নাহ এখানে তো তাল দেখছিনা ভাই😀