
ভুটানের একমাত্র এয়ারপোর্ট রয়েছে পারো শহরে। পারো থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে তিব্বত সীমান্তে ড্রুকগিয়াল জং বা জং এর ধ্বংসাবশেষ। সেই পোড়া ধ্বংসপ্রাপ্ত জং নিয়াই আমার আজকের ছবি পোষ্ট। জং হল এমন এক ধরনের স্থাপনা যা একাধারে প্রশাসনিক কেন্দ্র, দূর্গ, উপাসনালয়। প্রাচীনকালে এগুলো মূলত দূর্গ ছিল। বর্তমানে জংগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যবহার হলেও ড্রুকগিয়াল জংটা শুধুই একটা পোড়া বাড়ি বা দূর্গ । ড্রুকগিয়াল জং প্রাচীন একটা জং। ১৬৪৬ সালে সাবড্রং গুয়াং নামগিয়াল তিব্বতী আগ্রাসন থেকে ভূটানকে রক্ষা করতে এটি নির্মাণ করেন। ১৯৫১ সালে আগুনে পুড়ে গেলেও জংটি এখনো পর্যটকদের সমানভাবেই আকর্ষণ করে থাকে। এখান থেকেই দেখা যায় তিব্বতের বাসিন্দাদের কাছে অতি পবিত্র পর্বতমালা ‘চোমো লহরি’।
(২) পারো থেকে পা নদীকে ডানে রেখে ট্যাক্সিতে করে ছুটে চললাম ড্রুকগিয়াল জং এর দিকে। এবং এক সময় এই মাইল পোষ্ট বলল ড্রুকগিয়াল জং শুন্য কিলোমিটার। শেষ বিকেল, তাই সময় নষ্ট না করে আমরাও দ্রুত ট্যক্সি থেকে নেমে এগোলাম পোড়া বাড়িটার দিকে, কে জানে সন্ধ্যা হলে আবার ভুত টুত বের হয়ে আসে কিনা।
(৩) পাশে হাতে গোনা কয়েকটি বাড়িঘর, বাড়িগুলোর নিচের অংশে ছোট ছোট দোকান, পর্যটকদের প্রয়োজনীয় টুকিটাকি জিনিসপত্র কেনার সুযোগ রয়েছে দোকান গুলোতে।
(৪) অন্য পাশে একটা টিলা মতো জায়গার উপর দাঁড়িয়ে আছে সেই অতি পুরোনো পোড়া জং।
(৫) ভুটানের লোকেরা বেশীর ভাগই বোদ্ধ ধর্মালম্বী, এবং ওরা যথেষ্ট ধার্মিক। তাই জনসমাগম ঘটে এমন প্রতিটা জায়গায় ওদের উপাসনার ব্যবস্থা রয়েছে। এখানে ঘুড়ির নাটাইয়ের মতো বিশাল চাকতি এটা ঘুড়িয়ে কিছু একটা জপে ওরা ওদের ধর্মীয় কোন একটা বিষয় পালন করে। অন্যান্য জায়গায় ছোট ছোট দেখলেও থিম্পুর বাসষ্টপ এবং ড্রুকগিয়াল জং এর পাশে এইগুলো অনেক বিশাল সাইজের রয়েছে, হয়তো আরো অনেক জায়গায়ই রয়েছে, তবে আমার দেখা হয় নাই।
(৬/৭) সামনের তুলনামূলক ভাবে সহজ পথটা বাদ দিয়ে পেছনের কঠিন পথটা দিয়েই আমরা উপরে উঠার সিদ্ধান্ত নিলাম।
(৮) এই তো চলে এসেছি, ভুতুরে পোড়া বাড়িটিতে।
(৯) একটু দূরে তিব্বতের পাহাড় চুড়ায় চলছে মেঘদের ব্যপক আনাগোনা।
(১০/১১) সর্বত্রই শুধু পোড়া আর ধ্বংসের ছাপ।
(১২) এক সময় হয়তো এটাই ছিলো জং এর প্রধান প্রবেশ পথ।
(১৩/১৪) মাঝখানে একটা উঠান মতো, আর চারিদিকে এমন পোড়া দেয়াল।
(১৫) নিচের উপত্যকায় দেখা যাচ্ছে ভুটানি গ্রাম।
(১৬) এই ধ্বংসাবশেষের মাঝেও কিছু প্রাচীন সৌন্দর্য্য এখনো বর্তমান।
(১৭) এই ধ্বংসাবশেষের ভেতরই ওর বসবাস কিনা কে জানে, নাম না জানা এই পাখিটা আগে কখনো দেখিনি।
(১৮) বন্ধুদের নিয়ে একটা স্মৃতি না থকলে কি হয়?
(১৯) এবার এই প্রাচীন জং থেকে বেড়িয়ে যাওয়ার পালা।
(২০) বের হয়ে আসার পথে আরো একজনের সাক্ষাৎ পাই।
১৯টি মন্তব্য
সুপর্ণা ফাল্গুনী
খুব ভালো লাগলো। সাপের ছবি ইদানিং বেশী দিচ্ছেন এটা ঠিক না। আমার খুব ভয় লাগে। ১৫ নাম্বার ছবিটা অসাধারণ লেগেছে। শুভ কামনা রইলো
কামাল উদ্দিন
সাপগুলো কেন যে আমার সামনে চলে আসে বুঝি না, ক্যামেরা হাতে না থাকলেও একটা কথা ছিলো….শুভ রাত্রি আপু।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
🙄🙄🙄🙄। আমি ও বুঝিনা
সুপায়ন বড়ুয়া
আপনার সৌজন্যে অনেক অজানা জায়গা জানার সৌভাগ্য হচ্ছে। এই জন্য ধন্যবাদ আপনার প্রাপ্য।
আড্ডা বাদ দিয়ে আপনার লেখা না পড়ে যাই কই ?
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ দাদা, ভালো থাকবেন সব সময়।
তৌহিদ
ভূটান সসম্ভব সুন্দর একটি দেশ। আপনার ছবিগুলি দেখে মুগ্ধ হলাম ভাই। অনেক অজানা তথ্য জানলাম আজ।
ধন্যবাদ।
কামাল উদ্দিন
হুমম, আমার দেখা সব থেকে সুন্দর শান্ত এবং ভদ্র দেশ ভুটান।
ছাইরাছ হেলাল
আমার নেট সমস্যা, লেখা আসে ছবি আসে না।
পরে দেখব।
কামাল উদ্দিন
আশা করি খুব দ্রুত সমস্যা কেটে যাবে বড় ভাই।
জিসান শা ইকরাম
আপনার চোখ দিয়ে দেখলাম অদেখা ড্রুকগিয়াল জং কে।
ভাবতেছি আপনার সাথে একবার যাবো সার্কভুক্ত যে কোনো দেশে। মহামারি কমুক, এরপর আলাপ করব এ বিষয়ে।
ভ্রমন পোস্ট ভালো লেগেছে খুব।
শুভ কামনা।
কামাল উদ্দিন
আমারও ইচ্ছে আপনার মতো গুণীজনের সাথে কোন একটা ট্যুর করার, দেখা যাক করোনাকাল কবে কাটে বড় ভাই।
ফয়জুল মহী
নান্দনিক ♥️♥️
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ।
পার্থ সারথি পোদ্দার
শেষ সাক্ষাৎটি যেন সারপ্রাইজ সাক্ষাৎই বটে!! ড্রুকগিয়াল জং পরিচয় সুন্দর বর্ননায় পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ,ভাই।
কামাল উদ্দিন
হুমম, পাশ কেটে নেমে আসার সময়টা বেশ ভয়ে ভয়ে ছিলাম ভাই।
ছাইরাছ হেলাল
যাই যাই করেও এখানে যাওয়া হয়নি।
প্রকৃতির এই নিবিড় ছোঁয়া শুধু এখানেই পাওয়া যায়।
সাপ!!
তিন নং ছবিটি খুব সুন্দর।
কামাল উদ্দিন
আমিও বেশ কিছু যায়গায় যাই যাই করে যেতে পারিনি, এক জীবনে কতো কিছুসবই দেখা হয়তো বাকী থেকে যাবে।
আরজু মুক্তা
সাপ দেখে পা শিরশির করলেও ভুতের বাড়ি দেখে মজা পাইছি।
কামাল উদ্দিন
বের হওয়ার পথের উপরই ছিল সাপটা, তাই খুবই ভয়ে ভয়ে ছিলাম, ভালো থাকবেন আপু।