– টুনটুনি পাখি তুমি আসছো?
– হ্যাঁ।কিন্তু তুমি কোথায় বাবুতা ?
– আমি তো তোমাকে খুচ্ছি। তুমি কোথায় আছো?
– এই যে লাল ফার্মেসির সামনে বাবুতা।
আজ একমাসের ফোনালাপের প্রথম দেখা হতে যাচ্ছে শুভ আর সুপ্তির। প্রেমটা একটু এক দশক পুরোনো ধাঁচের। রং নাম্বার থেকে শুরু।
– গোলামের পুত আর যদি জ্বালাইছস তোর নাম্বার র্যাবের কাছে দিয়ে দিবো। তারপর বুঝবি লাউ কি জিনিস আর কদু কি জিনিস।
– এমনিতেও এক, পেটে গেলেও এক, দুইটার দায়িত্বও এক। ভোগ নিবারন করা।
কথার ঝলাকানিতে ভালোলাগা। রোজ রাত জেগে কথা বলা। প্রেম, মহব্বত সব শুরু ধীরে ধীরে। আজ তাদের দেখা হবার কথা। সুপ্তি বলেছিলো ও ততটা সুন্দর না। তবে ততটা খারাপ ও না। শুভ বলেছে যার কন্ঠ এত মধুর সে নিশ্চয়ই দেখতেও হবে অনেক সুন্দর। সেই ভরসাতেই আজ দেখা করা।
– ও! হাতেম আলী ফার্মেসী?
– হ্যাঁ। হাতেম আলীই তো। লাল রঙ্গে লেখা।
– কিন্তু তুমি কোথায়? ঐটার নিচে তো সাহারা খাতুনের মতো কে দাঁড়িয়ে আছে! :3
– আরে কি বলছো! আমিই দাঁড়িয়ে আছি।
– দূর থেকেই খালাম্মার মতো লাগছে। কাছে এলে জানি কি লাগবে! এই!সত্যি কি এটাই তুমি?
– হ্যাঁ। এটাই আমি বাবুতা।
– সিরিয়াসলি! তুমি পাঁচ মিনিট দাঁড়াও আমি আসতেছি।
এই কথা বলেই শুভ সেই স্থান ছেড়ে পালালো। মোবাইলের সুইচ অফ করে সে দিলু মামার দোকানে চা খাচ্ছে। চায়ে চুমুক দিয়ে বললো
– মামা! আজকে সকালে ঘুম থেইকা উঠে বাইরে এসে তোমারেই তো দেখছিলাম – না?
– জে মামা।
– ধুর মেয়া! তুমি একটা জাত কুফা।
– মুই কি করছি!!
শুভ কোন জবাব দিলো না। সে চা খাচ্ছে। আর হিসাব করছে এতগুলা টাকা আমি সাহারা খাতুনের পিছনে ব্যয় করলাম!হটাৎ করে চিকন সুরে কেউ বললো “কপালের লিখন না যায় খন্ডন”। এই তো সেই মিস্টি কন্ঠ। টুনটুনি পাখির কন্ঠ। শুভ ভয়ে ভয়ে তার পাশে তাকালো। অতি সুন্দর একটা মেয়ে তার পাশে বসে আছে। আর শুভর দিকে কটমট করে তাকিয়ে আছে।
– আপনি কে?
– আমাকে চিনো না চান্দু!
-ঠিক চিনতে…
– পাঁচ মিনিটের কথা বলে আসলা! এখন পঁচিশ মিনিট পার হয়ে গেছে তোমার কোন খবর নাই। মোবাইল বন্ধ করছো কেন!! -_-
– আপনি সুপ্তি?
– না। সাহারা খাতুন। :/
– তবে যে আমি ঐখানে দেখলাম…
– থামো তো। যার তার সাথে কি আর দেখা করা যায়! তাই আমিও প্ল্যান করে রেখেছিলাম।
– আমাকে পেলে কিভাবে?
– ঐটা তোমার না জানলেও চলবে। নিজের কর্মের জন্য যে অন্যকে দোষ দেয় তার মাথায় এসব ঢুকবে না।
– স্যরি। তুমি তো আসলেই অনেক সুন্দর।
– :-/ এখানেই বসায়া রাখবা?
– হে হে! চলো অন্য কোথাও যাই।
– হাসেও বোকার মতো। মামার বিল দিয়া নাও ^_^
মামা বিল কত ১০ টাকা না? নাও ৫০ টাকাই রাখো। তুমি তো মামা সেই।
আসলে নিজের সাথে যখন খারাপ কিছু ঘটে তখন চারপাশের সবাইকে আমরা সেই খারাপ কিছুর দায়ভার দেয়ার চেষ্টা করি। আর যখন ভালো কিছু ঘটে। দিল খুশিতে ভরপুর থাকে তখন চারপাশ অনেক আলোকিত মনে হয়। চারপাশে শুধু কিউট কিউট জিনিস নজরে আসে। রাস্তায় জ্যাম হলেও আমরা তখন পজিটিভ কিছু ভাবি। নাহ্! দেশটার উন্নতি হচ্ছে। দেশে গাড়ি ঘোড়া বাড়ছে। 😀 :D)
১১টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
আসলেই নিজেই নিজে,
কত সহজে সুন্দর করে লিখলেন!
মুহাম্মদ আরিফ হোসেইন
যতই বলেন।
আপনাদের ধারে কাছেও যাচ্ছে না।
মৌনতা রিতু
কারো চেহারা বা বয়স নিয়ে এমন পোষ্ট আমার পছন্দ হয়নি।
মোবাইলে প্রেম করার সময় আতুপাতু কথা বলতে খুব ভাল লাগে এখনকার পোলাপানের। কিন্তু চেহারা দেখে আফসোস। বয়স দেখে আফসোস !
তবে বর্ননা দেওয়া ভাল হইছে।
মুহাম্মদ আরিফ হোসেইন
জগতে চলছে চেহারার উপর।
উদাহারন মাত্রে এসেছেন তিনি।
ধন্যবাদ
মৌনতা রিতু
জগৎটা চেহারার উপর চলছে ! অবা হলাম। এটা একান্তই আপনার ধ্যান ধারনা।
ওকে, ধন্যবাদ।
ক্রিস্টাল শামীম
মামা তো অনেক ভালো আমি হলে বলতাম দুরু,,,,, মিয়া লাগবনা ৫০ টাকা। এতোক্ষণ ছিলাম কুফা এখন ভালো হইয়াগেছি। ধরেন ৪০ টাকা। যত পাগলের কারখানা সকাল সকাল আমার দোকানে
মুহাম্মদ আরিফ হোসেইন
সেজন্যই তো আপনি মামা হতে পারবেন না।
নীলাঞ্জনা নীলা
জোকস আমরা সকলেই করি বিভিন্ন কিছু নিয়েই। এই যেমন কোনো মেয়ে/ছেলে রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে পড়ে গেলে হেসে ফেলি। অথচ প্রাক্টিক্যালি চিন্তা করলে হাসি না দিয়ে সাহায্য করা উচিৎ। তবে কি জানেন এই লেখাটা আমার পছন্দ হয়নি।
মুহাম্মদ আরিফ হোসেইন
পছন্দ না হলে আর কি করার! গল্প তো গল্পই। আর বাস্তবতার মিশেল যদি পছন্দ না হয় তাতে কি করার আছে!
নীলাঞ্জনা নীলা
আপনি যখন লেখেন তখন অবশ্যই আপনার অনেক দায়িত্ত্ব আছে। ‘কি করার আছে’ এ কথা কোনো লেখকের কলমে মানায় না, মুখে তো নয়ই।
ইঞ্জা
:D) সাহারা খাতুন। :D)