
নয়না পরীক্ষা দিতে বাড়ি গেলো। বাপের বাড়ি যেতে না যেতেই একের পর এক ফোন আসে। নয়নার এটা করেছে, ওটা করেছে। ভালো না এ মেয়ে নিয়ে সংসার হবে না। এসব শুনতে শুনতে অস্থির হয়ে উঠে নয়না ও তার পরিবার। এতোকিছুর মধ্যেও নয়না পরীক্ষা দিচ্ছে। একদিন পরীক্ষার সেন্টারে নয়নার বর এলো। নয়না পরীক্ষা দিয়ে বের হয়ে দেখতে পেলো ওর বরকে। পাশাপাশি হাঁটছে দুজন। এমন সময় নয়নার বর কী ভেবে যেনো নয়নার এক হাত ধরলো। নয়না সহসায় বলে উঠলো হাতটা সারাজীবন ধরে রাখতে পারবে? মুহূর্তেই নয়নার হাত ছেড়ে দিলো। নয়না হেসে উঠলো। নয়নাকে বাসে উঠিয়ে দিলো। এভাবেই একটা পর একটা পরীক্ষা দিচ্ছিল নয়না। ভীষণ কষ্ট হচ্ছিল যাওয়া আসাতে । কারণ নয়নার বাড়ি থেকে পরীক্ষার সেন্টার অনেক দূরে। তবুও সে যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছিল ভালো রেজাল্ট করার জন্য। মাঝে মাঝে নয়নার বর আসে নয়নার সাথে দেখা করতে।
একদিন রাত নটায় খবর এলো নয়নাকে ডিভোর্স করেছে। পরের দিন নয়নার রসায়ন পরীক্ষা ছিলো। পুরো পাড়া হৈচৈ পড়ে গেলো নযনাকে তালাক দিয়েছে। নয়না খুব কান্নাকাটি করলো। কারণ এতো দিনে লোকটার উপর নয়নার বেশ মায় পড়েছে। আগের পরীক্ষা গুলো দিতে নয়না একাই গিয়েছিল সেন্টার। সেদিন একা ছাড়লো না নয়নাকে। নয়নার মা সাথে সাথে গেলো। নয়না পরীক্ষাতে বসলো। সবগুলো প্রশ্ন কমন পেলো নয়না। লিখতে শুরু করলো কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার হলো সে একটা উত্তরও সম্পূর্ণ করতে পারলো না। প্রচণ্ড অসহায় হয়েও নয়নার মাথায় একটাই কথা ঘুরছিল সত্যিই কী ডিভোর্স করলো? দেখতে দেখতে তিনটা ঘন্টা পার হলো কিন্তু নয়না একটাও প্রশ্নের ঠিকটাক উত্তর লিখতে পারলো না। এমনি করেই পরীক্ষা দিয়ে গেলো। পরীক্ষার পর নয়নাকে বিদায় করে পাঠালো এটা ভেবে যে এবার সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু যা ঠিক হবার নয় তা কি অঢেল উপঢৌকন দিয়েও ঠিক হয় না। নয়নার বর নয়নার সাথে কথা বলে না। পাশাপাশি থাকলেও নয়নাকে স্পর্শ করে না। নয়না বরের সাথে কথা বলার জন্য উদ্গীব হয়ে রইলো।
একদিন নয়নার বর বেশ মিষ্টি করে কতা বলতে শুরু করলো। যেনো সব ঠিক হয়ে গেলো। প্রায় সপ্তাহ খানেক দারুণ ব্যবহার করছে নয়নার সাথে। একদিন সকালে উঠে বলরো নয়নার জন্য একটা একাউন্ট করে দেবে। নয়না তো খুশিতে আত্মহারা। কিছু কাগজ পাতি নিয়ে এসে নয়নাকে দিয়ে সই করালো। যা নয়না কখনো কল্পনাতেও আনতে পারে না সেই কাজ সুকৌশলে করলো নয়নার বর। সাদা স্টেম পেপারে সই করে নিলো ।নয়নার লেখা ডায়রী চুরি করে রেখে দিল।
কয়েকদিন পর নয়নার রেজাল্ট বের হলো। খবর এলো একটা সাবজেক্টে ফেল করেছে। এটা তো জানা কথা। নয়না তো রসায়ন পরীক্ষা লিখতেই পারেনি। তবুও অনেক কান্নাকাটি করলো নয়না। পরের দিন নয়নার মা নয়নাকে বাড়িতে নিয়ে গেলো।বাড়িতে পা দিতে না দিতে নয়নার চাচী ওর মাকে বললো । মেয়েকে নিতে গেছেন আমাকে বলে গেছেন? নয়নার মা অবাক বলে কী! আমার মেয়ে কান্নাকাটি করছে আমি তাকে নিয়ে আসতে পারবো না? তোমাকে কেনো বলতে হবে? তখন নয়নার চাচী বললো জামাই ফোন দিয়েছিলো সে আর নিয়ে যাবে না নয়নাকে। অনেক কথা বললো । মানে নয়নাকে খারাপ প্রমাণ করতে যা যা করতে হয় সব করলো। ওর প্রেমিকাকে দিয়ে একটা ছেলের সাথে কথা বলে রেকর্ড করে রাখলো।
একদিন কথায় কথায় নয়না বললো মা ও আমার নামে একটা একাউন্ট করেছে। নয়নার মা বললো কোথায় সই নিয়েছে নাকী? নয়না বললো হ্যাঁ। নয়নার মা বললো সবর্নাশ করেছো তুমি! কিসে সই নিয়েছে আল্লাহ ভালো জানে। মায়ের আশঙ্কা ঠিক হয়েছিল। পরে পরে জানা গেলো স্টেম পেপারর কথা। একদিন সে সত্যি সত্যিই একটা কাগজে টাইপ করে পাঠিয়ে দিলো যে সে নয়নাকে তালাক দিয়েছ…..
১৫টি মন্তব্য
সুপায়ন বড়ুয়া
অবশেষে নয়নার তালাক নামায়
সই হলো।
নতুন অধ্যায়ের হলো শুরু
দেখা যাক।
শুভ কামনা।
সুরাইয়া পারভীন
আপাতত আর না
এ গল্প এখানেই রাখছি
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন দাদা
ভালো থাকবেন সবসময়
হালিম নজরুল
এ রকম বহু ঘটনাই ঘটে আমাদের সমাজে।
সুরাইয়া পারভীন
একদম সঠিক বলেছেন ভাইয়া
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন
ভালো থাকবেন সবসময়
সুপর্ণা ফাল্গুনী
তালাক টা হয়েই গেলো। এমনটাই ভেবেছিলাম। ধন্যবাদ আপু । নতুন রহস্যের অপেক্ষায় রইলাম । শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য
সুরাইয়া পারভীন
আপাতত এ গল্প এখানেই রাখছি দিদি
যদি আবার কখনো মনে হয় লিখবো।
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন দিদি
ভালো থাকবেন সবসময়
রুমন আশরাফ
ওহ
সুরাইয়া পারভীন
হুম। ধন্যবাদ অশেষ
ছাইরাছ হেলাল
লেখার এই জায়গাটি বুঝতেছি না,
নয়না কিছু না দেখে-টেখে সাইন করে দিল কেন!
সুরাইয়া পারভীন
নয়না তার তার বরকে ফিরে পাওয়ার আনন্দে এতটাই খুশী ছিলো যে সে আর এতো কিছু খেয়াল করেনি।
এমন কিছু হতে পারে না নয়না কখনো কল্পনাও করতে পারেনি। কিন্তু নয়নার মা বেশ বুদ্ধিমতী ছিলেন। এটা থানায় এফায়ার করে রেখেছিল বলে ও কাগজ দিয়ে আর কোনো সুবিধা করতে পারেনি
ফয়জুল মহী
ভাষা বাক্য গঠন সবই চমৎকার ।
সুরাইয়া পারভীন
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন ভাইয়া
ভালো থাকবেন সবসময়
কামাল উদ্দিন
প্রথমে ডিভোর্স দিল, যার কারণে পরিক্ষা খারাপ হলো। পরে আবার বর এসে মিষ্টি কথা বলে ভুলিয়ে সাডা ষ্ট্যাম্পে সাইন করিয়ে নিল, ব্যাপারটা ঠিক বুঝলাম না। ডিভোর্সের পর সম্পর্কটা থাকে কিভাবে!!
সুরাইয়া পারভীন
প্রথমে খবরটা উড়ো ছিল। এটা লিখতে ভুলে গেছি। ডিভোর্স পরে হয়েছিল। আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন। ভালো থাকবেন ভাইয়া
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ আপু, শুভ কামনা জানবেন।