সামনেই বিশ্বকাপ খেলা। খেলাকে ঘিরে অনেকেরই রয়েছে অনেক উদ্দীপনা ! থাকাটাই স্বাভাবিক। আবার নানান দলভেদও রয়েছে সেই সাথে।কেউ নিজের দেশের পাগল সমর্থক আবার কেউ কেউ অন্য দেশের। ব্যাপারটা অনেকটা “নিজের খেয়ে পরের গীত গাওয়ার” মতোই। এতো এতো দল ভেদের মধ্যে আমাদের দেশে যেই দুই দলের সমর্থকদের মধ্যে তীব্র লড়াই দেখা যায় সেই দুই দল হল “বাংলাদেশ ও পাকিস্তান”। পাকিস্তান সমর্থকেরা যে কথাটা বেশি বলে থাকে সেটা হল –“খেলার সাথে রাজনীতি মেশাবেন না”। কিন্তু আমরা মেশবো, আমরা অবশ্যই খেলার সাথে রাজনীতি মেশাবো। এবার প্রশ্ন হল কেন মেশাবো? উত্তর খুঁজতে একটু কষ্ট করে যেতে হবে সেই ৪৪ বছর আগের মরিচা ধরা ইতিহাসে…
ছেলেটার খেলায় একটা মারকুটে ভাব ছিল। বল জিনিসটা যে পেটানোর জন্য সেটা তাঁর ব্যাটিং দেখলে বোঝা যেতো। স্বাধীন বাংলাদেশের ন্যাশনাল টিমে খেলতে চেয়েছিল সে। কিন্তু ছেলেটার হাতে ব্যাটের বদলে বন্দুক উঠেছিল…একাত্তরের ৩১ শে মে বাড়ির কাউকে কিছু না বলেই বেরিয়ে গিয়েছিল সে।সিদ্ধিরগঞ্জ অপারেশনে পাকিদের বুলেটের আঘাতে ডান হাতের তিনটা আঙুল ভেঙে যায় তাঁর।আঙুলগুলো কেটে ফেলতে হবে শুনে আকুল হয়ে ডাক্তারকে বলেছিল-“দেশ স্বাধীন হইলে আমি ন্যাশনাল টিমের হইয়া ওপেনিং এ নামুম,ক্যাপ্টেন হমু।আঙুল তিনটা রাইখেন স্যার”। ছেলেটার আর ন্যাশনাল টিমে খেলা হয়নি। কিন্তু দেশ স্বাধীন হয়েছে…
আচ্ছা, আপনারা কি জানেন একাত্তরে গোটা পদ্মার চর লাল মানে রক্তবর্ণ হয়ে গিয়েছিলো বাঙালির রক্তে? সেই ঘটনাটাই শোনাবো আজ। একাত্তরের ১৫ ই এপ্রিল।রাজশাহীর কাজলা এলাকার মানুষ খবর পেলো পাকিরা পুরো এলাকা ঘিরে ফেলেছে এবার আর রক্ষে নেই !! ভয়ে সবাই ছুটতে লাগলো পদ্মার চরের দিকে। সেখান থেকে নদী পার হয়ে নিজেদের বাঁচাবে বলে।একেবারে চরের কাছাকাছি চলে আসার পরে ঠা ঠা শব্দে কেঁপে উঠলো পুরো এলাকা। কিছু বুঝে উঠার আগেই মাটিতে মুখ থুবড়ে পড়লো অনেক অনেক মানুষ। পাকিরা নির্বিচারে গুলি চালাচ্ছে। আর একের পর এক বাঙালি লুটিয়ে পড়ছে মাটিতে।তাঁদের গগনবিদারী আর্তনাদ আর বাঁচার মিনতিতে ভারী হয়ে যায় পদ্মার পাড়।রক্তের ফোয়ারা বের হয়, লাল হয়ে যায় পদ্মার জল…
কিন্তু তাতেও মনের আশ মেটে না হায়নাগুলোর। “অপারেশন সাকসেসফুল” বলে চন্ডালনৃত্য করে থাকে হায়নাগুলো। সেইসাথে “পাকিস্তান জিন্দাবাদ” স্লোগান দিতে দিতে পানির জন্য প্রার্থনারত মা-বোন-শিশু-বৃদ্ধদের মুখে,ঘাড়ে,বুকে লাথি দিতে থাকে আর বলতে থাকে- “তোম বাঙালি, পানি মাং তা কিউ? বাঙালি সব কাফির, তোম জয় বাংলা খাও!”
হ্যাঁ, আমরা বাঙালি! আমরা একাত্তরকে ভুলি নি।আমরা এইজন্যই খেলার সাথে রাজনীতি মেশাই, মেশাবোই।আমরা ঘৃণা করে ঐ পাকি হায়নাদের এমনকি এই ৪৪ বছর পরেও আর ঘৃণা করেই যাবো। 3 million reasons, to hate Pakistan…
১১টি মন্তব্য
লীলাবতী
খেলার সাথে রাজনীতি অবশ্যই মিশাতে হবে,তা যদি হয় পাকিস্তানিদের সাথে।
ফাতেমা জোহরা
সহমত (y)
খসড়া
যাই মেশাই পাকিস্তানের সাথে কোন ছার নাই।
ফাতেমা জোহরা
ঠিক। ওদের কোন ছাড় নাই… (y)
জিসান শা ইকরাম
পাকিদের সাথে কোন আপোষ নেই,খেলার সাথে রাজনীতি মিলাতেই হবে এখানে।
এমন লেখার জন্য ধন্যবাদ।
ফাতেমা জোহরা
পড়বার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ 🙂
প্রজন্ম ৭১
যারা পাকি খেলার সমর্থক,তাদের জন্মে ভেজাল আছে।এরা এদের মাকে ধর্ষন কারীর সাথেও বন্ধুত্ব গড়তে পারে।খেলার সাথে রাজনীতি না মেশানোর কোন কারণ নেই।
ফাতেমা জোহরা
ওরা হল বেজন্মা।
নওশিন মিশু
খেলার সাথে রাজনীতি তো মেশাবই সাথে পাকিস্থানকেও ঘৃনাই করে যাব ……
খেয়ালী মেয়ে
ভালোবাসা/সাপোর্ট যদি দিতে হয় তার সর্বোচ্ছ ঢেলে নিজ দেশকে দাও–
সীমান্ত উন্মাদ
ঐ নরপিশাচদের সাথে কোন আপোশ হতেই পারেনা। সেটা খেলা হোক আর যাইহোক। লিখার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ এবং শুভকামনা।