
* হাদিস_
= তুমি এবার খালা মনির টাকাগুলো ফেরত দাও প্লিজ। অনেকদিন হলো অর্ধেক শোধ করেছো বাকিটা দিচ্ছোই না। ঋণ রাখা ভালো না। ইচ্ছাকৃত ভাবে ঋণ রেখে দিলে আল্লাহ তায়ালা অখুশি হন।
– তুমি দিয়ে দাও। স্বামীর ঋণ শোধ করা অনেক সওয়াবের কাজ।
= কিন্তু আমি তো কোনো চাকরী করিনা, তাহলে শোধ করবো কিভাবে?
– সংসার খরচ থেকে টাকা বাঁচিয়ে মেয়েরা কতকিছু করে, আর তুমি এই সামান্য ঋণ শোধ করতে পারবে না?
= হু, পারবো ইনশাআল্লাহ। চিন্তা করোনা। আমি থাকতে তোমাকে কারো কাছে ঋণী হতে দেবো না।
এই তুমি আমার পার্স থেকে টাকা নিচ্ছো কেন! এগুলো তো আমার জমানো টাকা।
– মানে! বউয়ের টাকা কি আলাদা হয় নাকি! স্ত্রীর সব কিছুই তার স্বামীর। আর এগুলোতো আমারই টাকা। তুমি কি চাকরী করো নাকি!
= যদি আমি কারো কাছ থেকে লোন নেই তুমি পরিশোধ করবে?
– মানে! আমি কেন করবো? লোন যে করবে সেই তো পরিশোধ করবে।
* পরকীয়া_
– আজও মন খারাপ?
= হু, কাল তোমার ভাইয়া ঐ মহিলার সাথে সিনেমায় গিয়েছিলো। আমি জিজ্ঞেস করতেই গালাগালি শুরু।
– ধুর, বাদ দাও তাকে। সে যদি নিত্য -নূতন নারীর সাথে প্রেম করতে পারে, তাহলে তুমি করোনা কেন? তুমিও তো দেখতে কম সুন্দর না।
= নারে ইচ্ছে করে না। নিজের মানুষ পর হয়ে গেলে কেমন লাগে তা আমি জানি। আমি চাইনা অন্য কারো কষ্টের কারণ হতে। লক্ষ পরকীয়ার থেকে একটি সংখ্যা অন্তত কম থাকবে।
* সন্তান_
– কি ব্যাপার! আজ এত বাজার হাতে? বাসায় মেহমান এসেছে নাকি?
= হ্যা, আমার বড় সমন্ধি আর ছোট শ্যালক এসেছে। তারা দেশের বাইরে থাকেন। শাশুড়িকে আমাদের কাছেই রেখে যাবেন। তাদের সংসার অনেক বড়। তাদের ওয়াইফ, ছেলে-মেয়ে সহ সবাই চাকরী-বাকরী, পড়াশোনা করেন। বৃদ্ধা শাশুড়িকে দেখার কেউ নেই। তাই বলেছি এখন থেকে তিনি যেনো আমার কাছেই থাকেন।
– বাহ! খুব ভালো। আসলেই আপনার মত মানুষ হয় না। আপনার মা কেমন আছেন? শুনলাম তিনি অসুস্থ। কিছুদিন আগে হাসপাতাল থেকে ফিরেছেন। এখন কেমন আছে ? আপনার বাসায় এনেছেন?
= কেন! আমার বাসায় আনবো কেন? ছেলে কি আমি একা? আমি বাদেও তার আরও ছয় ছেলে আর চার মেয়ে আছে। সে তাদেরও মা হয়। তারা দেখলেই পারে। আর বাসাতেও এক্সট্রা রুম নেই। অসুস্থ মানুষকে এনে রাখবো কোথায়?
২৭টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
মানুষের মাঝে দুটো সত্বা বিরাজমান, নিজের স্বার্থে রং পাল্টে ফেলেন মুহুর্তেই।
হাদিস এবং সন্তান এমন কথাই বলে।
পরকীয়া সবাই পারেনা, যদিও এটি একটি প্রেমও বটে।
ভিন্ন ধরনের লেখা নিয়ে এলেন।
ভাল লেগেছে,
শুভ কামনা।
সাবিনা ইয়াসমিন
মানুষ রঙ বদলানোর ক্ষেত্রে অনেক সময় গিরগিটি কেও হার মানায়।
প্রথম এবং সুন্দর কমেন্টের জন্যে আপনাকে ধন্যবাদ।
জিসান শা ইকরাম
খুচরো গল্প : পর্ব – ২ এর জন্য অপেক্ষা করছি ম্যাডাম,
অপেক্ষার শেষ হবে কবে?
হালিম নজরুল
টুকরো টুকরো গল্প ভাল লাগলো।
সাবিনা ইয়াসমিন
ধন্যবাদ নজরুল ভাই।
শুভ কামনা অফুরান 🌹🌹
চাটিগাঁ থেকে বাহার
অনু গল্পগুলোতে জীবনের চিত্র ফুটে উঠেছে।
কিন্তু প্রথম গল্প হাদিস কেন?
আমরা জানি হযরত মুহম্মদ (স.) এর নবুয়তি জীবনের বিধি নিষেধ সমূহকে হাদিস বলে!!
সাবিনা ইয়াসমিন
হাদিসের ব্যাখ্যা একই ব্যক্তি কত রকমভেদে উপস্থাপন করেন সেটাই লেখার চেষ্টা করেছি বাহার ভাইয়া। অনেক সময়ে মানুষ নিজ স্বার্থে ধর্মীয় বাণী গুলোকে অস্ত্র হিসেবেও ব্যবহার করতে দ্বিধা করেনা।
শুভ কামনা সব সময় 🌹🌹
সুরাইয়া পারভিন
চমৎকার বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তুলেছেন গল্পে
এটাই এখন আমাদের চরিত্র।
সাবিনা ইয়াসমিন
ধন্যবাদ সুরাইয়া।
শুভ কামনা ও ভালোবাসা 🌹🌹
প্রদীপ চক্রবর্তী
অনুগল্পে মানুষের অনেক স্থিরচিত্র ফুটে উঠে।
মানুষ তার নিজস্বার্থের জন্য যখনতখন গিরিগিটীর ন্যায় রঙ পরিবর্তন করে থাকে।
আজকাল এ চরিত্র মানুষের মধ্যে প্রতিফলিত হচ্ছে।
অন্যরকম লেখনী দিদি।
ভালো লাগলো।
সাবিনা ইয়াসমিন
সুন্দর মন্তব্যের জন্যে শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা রইলো প্রদীপ 🌹🌹
বন্যা লিপি
মনুষ্যত্বের রকমফের নিয়ে খন্ড খন্ড গল্পের আইডিয়া প্রশংসার যোগ্য। খুবই চমৎকার করে ফুটিয়ে তুলে ধরেছো। সন্তানের কি চমৎকার ব্যাখ্যা!
হাদিসের কি চমৎকার যুক্তি!
পরকীয়ার উপস্থাপন। গোটা গল্পেই রেখেছো মুন্সিয়ানার ছাপ। ভালবাসা তোমাকে❤❤
সাবিনা ইয়াসমিন
তোমার কমেন্ট মানেই হলো আমার লেখাটির সার্থকতা। এভাবে, এমন করে অনুপ্রেরণা দিয়ে যাও সব সময়, তাই মনে আনন্দ নিয়ে লিখতে পারি।
ভালোবাসা নিরন্তর সখী ❤❤
সঞ্জয় মালাকার
অনেক ভালোলাগলো দিদি, মানুষের মাঝে দুটো সত্বা বিরাজমান, নিজের স্বার্থে রং পাল্টে ফেলেন মুহুর্তেই।
= হু, পারবো ইনশাআল্লাহ। চিন্তা করোনা। আমি থাকতে তোমাকে কারো কাছে ঋণী হতে দেবো না।
= নারে ইচ্ছে করে না। নিজের মানুষ পর হয়ে গেলে কেমন লাগে তা আমি জানি। আমি চাইনা অন্য কারো কষ্টের কারণ হতে। লক্ষ পরকীয়ার থেকে একটি সংখ্যা অন্তত কম থাকবে।
সাবিনা ইয়াসমিন
সেটাই দাদা।
যারযার বুঝ তারতার মত।
ধন্যবাদ ও শুভ কামনা 🌹🌹
সঞ্জয় মালাকার
ধন্যবাদ দিদি শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা নিবেন 🌹🌹
অনন্য অর্ণব
মনুষ্যত্ব হীনতাই আজ মানুষের চরম আরাধ্য।
সাবিনা ইয়াসমিন
হয়ত তাই।
মনুষ্যত্ব বিকৃতি করে কেউ কেউ অপরের মনুষ্যত্ব বিনষ্ট করেই সুখ পায়।
অনেক ধন্যবাদ অনন্য,
শুভ কামনা 🌹🌹
এস.জেড বাবু
নিজের স্বার্থে হাদিসের যথাযথ ব্যাবহার-
অনেকটা কমন আজকাল।
পরকীয়া সামাজিক ব্যাধি-
তবুও
কেউ কেউ নিজ সংসারের প্রতি বিমুখ হয়ে নতুন কিছুর আশায় নতুন দুয়ারে দাড়ায়। তবে সেটাও অনুচিত-
উচিত হলো, যথাযথ কারণ থাকলে, একটা সম্পর্কের ইতি টেনে পরবর্তি বৈধ সম্পর্কে জড়ানো।
তৃতীয় এবং চরম বাস্তবতা- হরহামেশাই দেখা যায়। এরা অযোগ্য সন্তান- একদিন ওরা ওদের সন্তানের কাছ থেকে তেমনটাই পাবে, যেমনটা আজ ওদের সন্তানেরা শিখছে, দেখছে।
পোষ্ট ভাল লেগেছে।
শুভেচ্ছা।
সাবিনা ইয়াসমিন
লেখাটির সম্পূর্ন বিশ্লেসন আপনি দিলেন বাবু ভাই।
আন্তরিকতার চমৎকার নিদর্শন দেখে আপ্লুত হলাম। অজস্র ধন্যবাদ ও শুভ কামনা 🌹🌹
এস.জেড বাবু
আপনার পোষ্ট অনেক মূল্যবান অবশ্যই।
এবং আপনি ভাল লিখেন।
শুভকামনা সবসময়
ভাল থাকবেন।
মাহবুবুল আলম
“বউয়ের টাকা কি আলাদা হয় নাকি! স্ত্রীর সব কিছুই তার স্বামীর। আর এগুলোতো আমারই টাকা।”
মাইন্ড করবেন না কথাটা কিছুটা উচিকৎ কিন্তু…
আর বেশিী নয়। দৌড়ানী খেতে হবে!!!!
সাবিনা ইয়াসমিন
কথাটা শতভাগ উচিৎ এবং সঠিক বলেছেন,
বউয়ের জান-মাল, নিষ্ঠা, বাধ্যতা সবই তার স্বামীর। সাথে বউয়ের ঋণ পরিশোধের ব্যাপারটিও স্বামীর , তাইনা?
এভাবে প্রতি লেখায় কমেন্ট দিবেন,
না দিলেই মাইন্ড করবো 🙂
শুভ কামনা প্রফেসর সাহেব 🌹🌹
রুমন আশরাফ
ছোট ছোট গল্পগুলো বেশ ভাল লাগলো।
সাবিনা ইয়াসমিন
ধন্যবাদ রুমন ভাই।
ভালো থাকুন সারাক্ষণ,
শুভ কামনা 🌹🌹
ছাইরাছ হেলাল
শাশুড়িরা সব সময়ই আপন, এ সময়ে।
প্রকৃত প্রস্তাবে কেউ কারো আপন হয় না, যেখানে আমরা নিজেই নিজের আপন না।
আমাদের সমাজে স্ত্রীরা স্ত্রী-ই, পরস্ত্রী না, তাই ভালোবাসা ভাল হয় না! ভাববেন না, পরকীয়া সমর্থন করছি।
আর স্ত্রীদের স্বামীর মুখাপেক্ষী করে রাখা হয় আমাদের সমাজে।
লেখায় নানামুখী ভাবনা ভালই লাগে।
সাবিনা ইয়াসমিন
পরকীয়া! নয়তো সহজিয়া
বেলা শেষে কজনই বা যোগ দেয় তাতে,,,
ধন্যবাদ মহারাজ,
শুভ কামনা 🌹🌹