174146_174২০১৬ সাল ২২ ডিসেম্ভর সংঘটিত হতে যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিটি নির্বাচন।নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বাছাইয়ে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী ও বিএনপির অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান সহ ৭ প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র বৈধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।এছাড়া ৩৭ সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর সহ মোট ১৫৬ জন কাউন্সিলর প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।বাছাইয়ে এক জন মেয়র প্রার্থী,এক জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থী ও ১৩ জন সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হবে ২২ ডিসেম্বর।
নগরীর মোট ভোটার ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৩৯২ জন এর মধ্যে পুরুষ প্রায় ২ লাখ ৪১ হাজার ৫১৪ এবং নারী ২ লাখ ৩৭ হাজার ৮৭৮।ভোটারের বেড়েছে প্রায় পৌনে এক লাখ।সম্ভাব্য ভোট কেন্দ্রগুলো হলো ১৭৪ টি ও ভোট কক্ষ ১৩০৪ টি।তবে ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।১৬৩ প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, ১২১৭ সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও ২৪৩৪ জন পোলিং কর্মকর্তা ভোট নেবেন।

পুরো নারায়ণগঞ্জ এখন উৎসব মুখর বিশেষ করে ৪ নং আসনটি।গত সাংসদ নির্বাচনে ৪ নং আসনটির কোন নির্বাচন ছাড়াই সাংসদ বণে যান ক্ষমতাসীন দলের এক নেতা। সেই images_cms-image-000005848ভোট দেয়ার আক্ষেপটা জনগণের মাঝে রয়ে গেছে তাই এ মুহুর্তে বলা মুশকিল কে হবেন নগর পিতা অথবা মাতা।যদিও গত নাসিক নির্বাচনে নগর মাতা হিসাবে ডাঃ সেলিনা হায়াৎ আইভী ছিলেন সে হিসাবে সে অপেক্ষাকৃত অন্য সব নেতাদের তুলনায় অনেক পরিবর্তনই নারায়ণগঞ্জে এনেছেন।উন্নয়ন হয়েছে রাস্তা ঘাটের।পাড়ায় মহল্লার কোণায় কোণায় বিজলী বাতির আলোতে আলোকিত করেছেন।নগর জীবনে কিছুটা সেবার ছোয়াঁ লেগেছে মাত্র,কিছুটা চলমান আছে তথাপি চারিত্রিক ক্লিন ইমেজ নিয়ে বি এন পি হতে এড.শাখাওয়াত হোসেনকেও জনগণ জয়ের টার্গেটে রেখেছেন।এর মুল কারন হতে পারে মার্কা।নারায়ণগঞ্জে ক্রমাগত সন্ত্রাসীর কর্ম কান্ডে জনগণ অতিষ্ট বিশেষ করে সিদ্ধির গঞ্জে সরকার দলীয় লোকের টেন্ডার সীমানা নিয়ে ক্ষমতার ভাগা ভাগিতে সেভেন মার্ডার জনগণের স্বাভাবিক মৃত্যুকে অনিশ্চিত করে দেয়।ক্ষমতাসীন দলের এমন সব ঘটনার জন্য আইভীর ভোট জয়ে প্রভাব পড়তে পারে বলে অনেকেই একমত।গত নির্বাচনে আইভী কোন দলীয় প্রার্থী ছিলেন না এ ছাড়াও বি এন পি প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকারকে হঠাৎ দলীয় সিদ্ধান্তের উপর প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন বলে শামীম ওসমান ঠেকাও হিসাবে বি এন পি-জামাতের অনেকেই আইভীকেই ভোট দেন তার সেই ইমেজটিও এখন আর নেই।

নারায়ণগঞ্জে অনেকেই দ্বিধায় আছেন কাকে ভোট দিবেন।যদিও আইভীর উন্নয়ণ প্রথম বারের মতো চোখে লাগার মতো তথাপি তার এখন মার্কা নৌকা যা ধর্মের মতোই আমার পূর্ব পুরুষ মুসলমান ছিলো তাই আমিও মুসলমান।তেমনি জীবনে নৌকায় সিল দেইনি এবারো দিবো না,এমন সব কুসংস্কার মতবাদের ভোটারের সংখ্যা নেহাত কম নয় তাছাড়া দলীয় গুপ্ত কোন্দলে নৌকার ভোট ভাগ হয়ে যাবার সম্ভাবনাকে অনেকে উড়িয়ে দিচ্ছেন না।আবার ধানের শীষে প্রার্থীর ব্যাক্তি ইমেজের সাথে বহু কাল পর ধানের শীষে সিল মারার হিড়িক আর জামাত জাতীয় ধর্মান্ধদের নৌকা ঠেকানোর মনোবাসনা হয়তো জয়ের দিকে নিয়ে যাবে।
দেশের শীর্ষ স্থানীয় দুটি দলের এই দুই মেয়র প্রার্থীর দলীয় নির্বাচনী মেন্ডেট পেতে ঘটেছে বিভিন্ন নাট্যাংশ।নারায়ণগঞ্জ চার নং আসনের সাংসদের ইচ্ছে ছিলো এবার হয়তো দলীয় মেন্ডেট সরকার তার কোন প্রিয় লোককেই দিবেন আইভীকে নয়।বিচক্ষণ মাননীয় ্প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বহু আগেই বুঝেছিলেন হয়তো এখানে জয়ে আইভীর বিকল্প দলে অন্য কেহ নেই তাই আগেই সে আইভীকে সিলেক্ট করে ঘোষনা দিয়ে দেন।শুধু ঘোষনাই নয় এ দুজনকে বঙ্গ ভবনে ডেকে এনে এক সঙ্গে কাজ করার নির্দেশ দেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।
সব চেয়ে মজার বিষয় হলো আইভীকে সাংসদের শাড়ী উপহার দেয়া নিয়ে বক্তব্য পাল্টা বক্তব্য এবং জনগণের হাস্যকর কথোপকথন যা ইতিমধ্যেই বেপক আলোচিত।আরো একটি বিষয় লক্ষনীয় তা হলো সাংসদ শামীম ওসমান যতই বলছেন আইভীর সাথে এক সঙ্গে কাজ করব ততই যেনো জনগণের ভিন্ন মত।তাছাড়া তাদের দীর্ঘকালের ক্ষমতা পারিবারিক রেশারেশি,কোন্দল তাই বলে হঠাৎ পরিবেশ পরিবর্তনের কোন সম্ভাবনা নেই।তবে আইভীর জয় পরাজয় যাই ঘটুক এর জের সাংসদ শামীম ওসমানের উপর এক তরফা ভাবেই তার উপরই পড়বে বলে জনগণের মত।তবে জনগণ এখন অনেক সচেতন।জনগণ কোন সন্ত্রাস মাধকতা চায় না,চায় নিরাপত্তায় নির্বিগ্নে পথ চলতে,চায় দু বেলা দুমুঠো অন্ন যোগানের নিশ্চয়তা।
এ দেশে উন্নয়ণ দিয়ে ভোটে পাস করা খুবই কঠিন কারন আমরা হুজুগে বাঙ্গালী চিলে কে কার কান নিলো কি নিলো না সেদিকে দেখা বা সত্য জানার সময় নেই… দে দৌড় মার মার কাট কাট,কর ভাঙ্গচূড় লাগাও আগুন।সে দেশে উন্নয়ণের জোয়ার দেখিয়ে জয় পাওয়া খুবই দুষ্কর।ধর্মান্ধতা সমাজের প্রতিটি স্থরে অপর পক্ষে ক্ষমতাধর ব্যাক্তিরা দেশে আসা সকল বৈদেশিক অনুদান,সরকারী অনুদান লুটপাটের পর যা অবশিষ্ট তাই জনগণের।তাইতো যা উন্নয়ণ তা যৎ সামান্যই বটে।

নির্বাচন এলেই অস্ত্রের ঝন ঝনানি শুরু হয় তাই ভয় হয় এ নির্বাচনে না জানি কার মায়ের বুক খালি হয়।এ সব নির্বাচনে প্রার্থীতা হতে বিশেষ কোন যোগ্যতা লাগে না নিরক্ষর জ্ঞান শূণ্য হলেও যদি থাকে সমাজে আপনার সন্ত্রাসী প্রভাব তবেই আপনি নির্বাচনে জয়ী হবেন।এমন সব প্রার্থীতার কাছে চারিত্রিক শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রার্থী দাড়ানো সাহসী ব্যাক্তি সমাজে নেই বললেই চলে তাই প্রার্থী মন্দ ভালো যাই হোক আমি ভোট না দিলেও তারাই ক্ষমতায় আসবেন এটা এখন এ দেশের সংস্কৃতি হয়ে দাড়িয়েছে।আর হবে না কেনো চোর ছেচ্চোর যদি একবার ক্ষমতা পায় তবে সে হয়ে যান রাতা রাতি কোটি পতি।যেখানে টাকা কামানোর ধান্দা থাকে সেখানে জনগণের কোন উন্নয়নের আশা করতে পারি না তাই প্রয়োজন আছে নির্বাচনে অংশ গ্রহনের যোগ্যতার নিদিষ্ট শক্ত আইন,নির্বাচনে কালো টাকার ছড়া ছড়ি নজরদারিতে রাখা।

এই নির্বাচন নিয়ে সরকারের মনোভাব স্পষ্ট করেছেন।বিরোধীদলকে এ নির্বাচনের ফলা ফল নিয়ে আন্দোলনের কোন ইস্যু সৃষ্টি হতে দেবেন না।আমরা সাধারণ জনতা সেটাই চাই।আমার ভোট আমি দেবো যাকে খুশি তাকে দিবো।আপনার আমার ভোট প্রয়োগর বিচক্ষণাতাই আমাদের ভাগ্যের সু-প্রসন্নতা এনে দিবে।

৭৬৬জন ৭৬৬জন
0 Shares

৮টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ