
তাদের প্রথম পরিচয় গাজিপুরের কোণাবাড়িতে একটি ফ্যাক্টরীতে। পিরিচটি আরো একগাদা পিরিচের সাথে কয়েকদিন থেকে ফ্যাক্টরীর গুদামে পড়ে ছিল। হঠাৎ ঝনাৎ করে কি যেন পড়ে পিরিচের সাথে বাড়ি থেয়ে ঠুন করে শব্দ হল। পিরিচটি ভয় পেয়ে কাঁপতে কাঁপতে বলল, কে গো তুমি, এভাবে নির্লজ্জের মত গায়ে ধাক্কা দিচ্ছ কেন?
পিরিচের উপর হুমড়ি খেয়ে পড়া কাপটি বলল, সরি বোন, তাল সামলাতে না পেরে তোমার গায়ে ধাক্কা লেগেছে, ডুন্ট মাইন্ড।
ওকে, ওকে, আমি মাইন্ড করিনি। কিন্তু তুমি কে?
আমি কাপ, এই ফ্যাক্টরীতেই আমার জন্ম। গন্তব্য কোথায় কিছুই জানিনা। তুমি ?
আমি পিরিচ, তোমার মত আমারও এই ফ্যাক্টরীতেই জন্ম এবং তোমার মত আমিও জানি না আমার গন্তব্য কোথায়!
বাহঃ আমাদের দুই জনের তো বেশ মিল। আমরা কি পরস্পর বন্ধু হতে পারি না!
পিরিচঃ আমার মনের কথাটাই তুমি বললে, আসলে প্রথম দেখাতেই তোমাকে কেমন আপন আপন মনে হচ্ছিল।
কাপঃ তোমার কোলটা না, ভীষণ আরাম! তোমার সুডোল মধ্যখানটা যেন আমার সাইজেই তৈরী করা।
পিরিচঃ আমারও মনে হচ্ছিল তোমাকে আমার মধ্যখানে বসিয়ে ঘুরাতে পারলেই যেন আমার জীবন সার্থক হয়, কিন্তু……
কাপঃ কিন্তু কি?
পিরিচঃ তোমার পেটটা দেখতে যত মোটা তুমি কিন্তু একেবারেই হালকা। তোমাকে আরো ভারী হতে হবে, তবেই তোমাকে বুকে নিয়ে ঘুরতে ভাল লাগবে।
কাপঃ সেটা কোন সমস্যা নয়, আমাকে যে জন্যে বানানো হয়েছে তাতে আমি ভারী হয়েই তোমার বুকে চড়বো।
পিরিচঃ তাই যেন হয়। এসোনা বন্ধু আমরা দু’জনে দোয়া করি।
কাপঃ কি রকম দোয়া।
পিরিচঃ আমরা যে দোকানেই যাই, যে বাসাতেই যাই, যেন উভয়ে এক সাথেই থাকি।
কাপঃ আমরা যেন এক দেহ এক প্রাণ। যেন এক বাক্সতেই আমাদেরকে প্যাকেট করা হয় আমি সেই কামনা করি।
পিরিচঃ শোন বন্ধু, আমার মনে একটি স্বপ্ন আছে।
কাপঃ তাই নাকি? তাড়াতাড়ি বলনা শুনি!
পিরিচঃ আমি মনে মনে ভাবি, আমাদেরকে বাসাতে অর্থাৎ যে বাসাতে আমাদের ঠিকানা হবে ঐ বাসার যে বধুটি আমাদেরকে যত্ন করে ধুয়ে মুছে ব্যবহার করবে তার দুই হাতে যেন অনেকগুলো চুড়ি থাকে।
কাপঃ কেন, কেন, চুড়ি কেন?
পিরিচঃ চুড়ির ঝুনঝুন আওয়াজ আমার ভীষণ ভার লাগে। তাইতো প্রথম দেখায় তোমার গায়ে বাড়ি খেয়ে ঠুনঠুন শব্দের ছন্দে দুলায়িত হয়ে তোমার উপর রাগ না করে তোমাকে ভালবেসে ফেলেছিলাম।
কাপঃ কিন্তু আমার ভয় হয়।
পিরিচঃ কেন, কিসের ভয়!
কাপঃ আমরা যে ঘরে থাকব তাদের স্বামী-স্ত্রীর মাঝে আমাদের মত ভালবাসা থাকবে তো? নাকি একজন পালং এ আরেকজন সোফাতে শুবে!
পিরিচঃ ইশ! এজন্যই আমাদের দুজনের মধ্যে এত মিল। ঠিক আমার মনের কথাটাই তুমি বলেছ।
কাপঃ স্ত্রী আপন সৌন্দর্য্যে ভালবাসার ছোয়ায় স্বামীর সামনে যখন আমাদের সাহায্যে চা এগিয়ে দেবে তখন যদি স্বামীটি অর্ধেক চা তোমাতে করে অর্থাৎ পিরিচে নিয়ে স্ত্রীর দিকে এগিয়ে দেয় তখন মনে করব আমাদের জন্ম স্বার্থক। দু’জনের ভালবাসের চুমুকে আমাদের দেহমন শিহরিত হবে, আমরা রোমাঞ্চিত হব।
পিরিচঃ তোমার কথায় আমি আবেগিত হয়ে গেলাম, আমার কণ্ঠ বাস্পরোদ্ধ হয়ে আসছে, চক্ষু মুদে আসছে। আমি আর ভাবতে পারছি না….
কাপ, পিরিচের অবস্থা দেখে তাড়াতাড়ি লাফ দিয়ে পিরিচের বুকের মধ্যখানে বসে পিরিচকে ভালবাসার বন্ধনে জড়িয়ে ধরল।
২৪টি মন্তব্য
ক্রিস্টাল শামীম
বাহ্ কাপ পিরিচ নিয়েও বুঝি এমন মধুর লেখা হয় ? দারুণ :c
bahar2007
অনেক ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
আমি এই ব্লগে নতুন।
ইঞ্জা
কাপ পিরিচের পিরীত ভালোই লেগেছে।
bahar2007
অনেক ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
নীলাঞ্জনা নীলা
সোনেলায় স্বাগতম বাহার২০০৭। আপনি আপনার নিক বাংলায় করে নিন। সোনেলায় সকলেরই নিক বাংলায়।
এখানে এসেছেন নিয়মিত লিখুন। ওহ আর অবশ্যই সোনেলার নিয়মাবলীগুলো পড়ে নিন।
আশা করবো প্রত্যেকের লেখা পড়বেন, মন্তব্য করবেন।
bahar2007
আপনাকে ধন্যবাদ,
আমি সিনিয়র ব্লগার শিকদার ভাইয়ের কাছ থেকে ঠিকানা নিয়ে শুরু করলাম। কর্তপক্ষ কে অনুরোধ করবো আমার নিকটিকে ‘চাটিগাঁ থেকে বাহার’ নামে পরিবর্তন করে দেবার জন্য।
নীলাঞ্জনা নীলা
আপনি নিজেই আপনার নিক পরিবর্তন করতে পারবেন। আপনার প্রোফাইলে গিয়ে দেখুন।
নীলাঞ্জনা নীলা
ওহ আপনি নিক দেখি ঠিক করে নিয়েছেন। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
মৌনতা রিতু
দারুন গল্প দিয়ে শুরু করলেন। কাপ পিরিচ হাতে ভেজা চুলে রিনিঝিনি চুরির শব্দে ঘুম ভাঙাতে বধুর আগমন ভাল লাগল।
সোনেলায় স্বাগতম। সবার লেখা পড়ুন। নতুন যারা আসে অনেকেই পোষ্ট দিয়ে ভাব নিয়ে থাকেন, অন্যের পোষ্টে মন্তব্য করেননা। আমরা একদিন দেখি, দুই দিন, তিন দিন দেখি, তারপর আর তার পোষ্টে মন্তব্য করতে অস্বস্থি বোধ করি।
ব্লগিং শুভ হোক।
bahar2007
পোষ্টে মন্তব্য করা উচিত লেখার মানের উপর নির্ভর করে। অথবা ভাল মন্দ সমালোচনা করার জন্য। এতে মন্তব্যকারীর জ্ঞান চর্চাও কম হয় না। আমি ব্লগ থেকে এত বেশী শিখেছি যা স্কুল কলেজ থেকেও শিখিনি।
অপরের লেখায় মন্তব্য না করা মানে ভাব নিয়ে থাকা নয়। অনেকের সময়ের সীমাহীন সীমাবদ্ধতাও এর জন্য দায়ী। আমি মূলত কারো মন্তব্যের জন্য লিখিনা। আমি হয়তো সবার লেখা পড়ে মন্তব্যও বেশী করতে পারব না । কারণ সমাজের প্রতি আমার অনেক দায়বদ্ধতা আছে। আমি বেকারও নই। দু:খিত এত কথা বলে ফেলাতে। পজেটিভলী নিবেন প্লিজ। আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
মৌনতা রিতু
আপনার প্রতিমন্তব্য দেখে মনে হচ্ছে, এখানে যারা সবাই সবার ভাল মন্দ সব লেখা পড়ে ও মন্তব্য করে বলে, এরা বেকার ? এদের কাজ কর্ম নেই ?
আমরা প্রচন্ড ভাগ্যবান মনে করছি যে, আপনি স্কুল থেকেও ব্লগ থেকে অনেক শিখেছেন। আমরা একজন অতি ব্যস্ত ও অভিজ্ঞ ব্লগার পেয়েছি। মন্তব্যের জন্য না লিখলে, আপনার পোষ্টে মন্তব্য করাটাই ভুল।
প্রতিটা মানুষেরই সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা আছে। ব্লগ মানে উপন্যাস বা প্রেমের গল্পই শুধু না, যে দোকানে গেলাম সেই বই কিনে আনলাম আর ঘরের মধ্যে চুপচাপ পড়ে নিলাম। এখানে আলোচনা হয়, সমালোচনা হয়।
স্যরি, কারন আপনি অনেক বেশী অভিজ্ঞ ব্লগ সম্পর্কে। তাই এই বিষয়ে আপনি ভালোই জানেন।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
আহমেদ রশিদ বাহার
অনেকেই নিক নাম নিয়ে আছে দেখা যাচ্ছে, আমি মন্তব্য করেছিলাম আমাকে ‘চাটিগাঁ থেকে বাহার’ নামে পরিবর্তন করার জন্য। কারণ ব্লগ দুনিয়ায় আমি ঐ নামে পরিচিত। দেখা যাচ্ছে আমাকে ‘আহমেদ রশিদ বাহার’ নামে পরিবর্তন করা হয়েছে। কিন্তু বাংলায় আমি ‘আহমদ’ ব্যবহার করি। ^:^
bahar2007
পোষ্টে মন্তব্য করা উচিত লেখার মানের উপর নির্ভর করে। অথবা ভাল মন্দ সমালোচনা করার জন্য। এতে মন্তব্যকারীর জ্ঞান চর্চাও কম হয় না। আমি ব্লগ থেকে এত বেশী শিখেছি যা স্কুল কলেজ থেকেও শিখিনি।
অপরের লেখায় মন্তব্য না করা মানে ভাব নিয়ে থাকা নয়। অনেকের সময়ের সীমাহীন সীমাবদ্ধতাও এর জন্য দায়ী। আমি মূলত কারো মন্তব্যের জন্য লিখিনা। আমি হয়তো সবার লেখা পড়ে মন্তব্যও বেশী করতে পারব না । কারণ সমাজের প্রতি আমার অনেক দায়বদ্ধতা আছে। আমি বেকারও নই। দু:খিত এত কথা বলে ফেলাতে। পজেটিভলী নিবেন প্লিজ। আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
bahar2007
মন্তব্য মুছে দেবার কোন অপশন পাচ্ছি না।
ব্লগার সজীব
সোনেলায় স্বাগতম -{@ কাপ পিরিচ নিয়ে লেখা ভালো লেগেছে। নিয়মিত লেখুন, অন্যের লেখা পড়ুন। নীতিমালাটি একটু সময় করে পড়ে নিবেন। দুই পোষ্টের মধ্যের সময় হবে কমপক্ষে ২৪ ঘন্টা। ২৩ ঘন্টা, ঊনষাট মিনিট, ঊনষাট সেকেন্ড নয়, ২৪ ঘন্টা অর্থ ২৪ ঘন্টাই। সোনেলার এই আইন খুবই কঠিন ভাবে মানা হয় 🙂
আহমেদ রশিদ বাহার
ভাই, নীতিমালার লিংক টি দিবেন ? খুঁজে পাচ্ছি না
ব্লগার সজীব
নীতিমালার লিংক আছে প্রতি পেইজের একদম নীচে। নীতিমালায় ক্লিক করলেই পড়তে পারবেন।
চাটিগাঁ থেকে বাহার
পেয়েছি এবং পড়েও নিয়েছি, ধন্যবাদ আপনাকে।
সকাল স্বপ্ন
ভালো লাগার মাঝে—- লিখায়
চাটিগাঁ থেকে বাহার
আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। -{@
শুন্য শুন্যালয়
আপনার নিকটি বোধহয় এবার ঠিক করা হয়েছে। আপনি প্রোফাইলে গিয়ে নিজেই কিন্তু এটা ঠিক করে নিতে পারতেন, তাইনা ভাইয়া? যাই হোক, সোনেলায় আপনাকে স্বাগতম জানাচ্ছি, খুব সুন্দর একটি লেখা এটা, একদম ভিন্নরকম। আপনার যদি পড়তে ইচ্ছে করে তবেই পড়বেন অন্যের লেখা, তবে মান বুঝতে হলে, না পড়লে তা বুঝবেন না 🙂 যাই হোক মন্তব্য মোছার অপশন চেয়েছেন তাই বুঝতে পেরেছি, আপনি আপনার মন্তব্যটা ফিরিয়ে নিতে চান, অনেক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।
চাটিগাঁ থেকে বাহার
আমি আমার একটি মন্তব্য দুবার প্রকাশ হয়ে পড়েছিল বলে তা মুছে দেয়ার অপশন খুঁজেছিলাম। অন্য কারো মন্তব্য মুছার ইচ্ছা আমার ছিল না যদিও আমাকে তীর্যক মন্তব্য করা হয়েছিল। যাক, আমার নিক নেমটা আমার মনের মত করে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।
আবু খায়ের আনিছ
স্বাগতম সোনেলায়। আপনি অভিজ্ঞ ব্লগার মনে হচ্ছে, সুতরাং আপনার কাছে আমাদের চাওয়া থাকবে অনেক। শুভ কামনা নিরন্তর।
চাটিগাঁ থেকে বাহার
এটা ঠিক যে দীর্ঘদিন ধরে ব্লগিং এর সাথে জড়িত আছি, তবে অভিজ্ঞ হতে পারিনি। এখনও শিখেই যাচ্ছি। আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ।