
গ্রামীন ফোনের একটা এ্যাড এর মাধ্যমে প্রথম কাউয়ার চরের নাম শুনি। ভেবেছিলাম ওখানে হয়তো শুধুই কাউয়াদের বসবাস বা তাদের সংখ্যা বেশী। তারপর কুয়াকাটা যাওয়ার পর কাউয়ার চরের হদিস পেয়ে ভাবলাম কাউয়াদের চর এতো কাছে যেহেতু ওখানে একটু পদধুলি দিয়া আসি। আসলে ওখানে পদধূলি দেওয়ার বদলে পদধুলি এবং পাছায় ধুলি নিয়াই ফেরৎ আসতে হয়েছিল। ওখানে যাওয়ার একমাত্র বাহন হলো বাইক ভাড়া করে যাওয়া। কাউয়ার চরের স্পেশালিটি হলো এখানে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্ত এবং সূর্যোদয় দুটোই দেখা যায়। আর সামুদ্রিক লাল কাকড়ার জন্য এই কাউয়ার চর বিখ্যাত। তবে কাউয়ার চর দেখার সময় ভাগ্য আমাদের পুরোপুরি সহায় ছিলোনা বলে অনেক কিছুই মিস করতে হয়েছে।
কাউয়ার চরের শেষ প্রান্তে রয়েছে বঙ্গোপসাগর। আর সাগরের বেলাভুমিতে নামার আগে বিশাল কেওড়া বন পেড়িয়ে সামনে ঝাউ বন। দুই সবুজ বেষ্টনি পার হয়ে সাগরের গর্জন শোনা যায় কাউয়ার চরের আরো অনেক ভেতর থেকে। এই বনভুতে বেশ কিছু বন্য প্রাণী আর পাখিদের বসবাস। ভেতরে কাঁচা পাকা সড়কে পাশের বেশির ভাগ বাড়ি ঘরই জেলেদের বলে জানা যায়। বনভুমি পেড়িয়ে সৈকতের রুপালি বালির ওপারেই বঙ্গোপসারের নীল পানির বিশাল বিশাল ঢেউ যে কোনো মানুষের মন কেড়ে নেবে। এখানে খুব কাছ থেকে দেখা যায় জেলেদের জীবনযাত্রা। কেউ জাল বুনছে, কেউবা সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আর সাগর পারে জেলে বাচ্চাদের ছুটো ছুটি। এবার আমার ক্যামেরায় দেখে নেই কাউয়ার চরের কিছু চিত্র।
(২) কুয়াকাটার প্রধান সৈকতের দিকে না ঢুকে বাম দিকের একটি নির্মানাধীন রাস্তা ধরে আমরা বাইকে রওয়ানা হয়ে এক সময় এমন চমৎকার মেঠো পথটি পেয়ে গেলাম। এটা অবশ্য কাউয়ার চরের ভেতর না, ওখানে যাওয়ার সময়ের একটা রাস্তা।
(৩) কাউয়ার চরের ভেতরের কিছু রাস্তা রয়েছে এমন পাকা।
(৪) ফসল তুলে নেওয়া জমির উপড় দিয়া উড়ছে সাদাগুলো কিন্তু বক, কেউ আবার কাউয়া ভাববেন না।
(৫) কাঠের জেলে নৌকা তৈরি হচ্ছে কাউয়ার চরের ভেতর।
(৬) কাউয়ার চরের কয়েকটি বাড়ি ঘর।
(৭) একটি ছোট নৌকা ভ্যানে করে সাগরের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
(৮) আমরাও এক সময় চললাম সাগের দিকে।
(৯) পাতা ঝড়া সুনসান কেওড়া বন। ভেতরে স্বর্পিল এই পথ চলে গেছে বীচের দিকে।
(১০) কেওড়া বন পেড়িয়ে ঝাউ বন তারপরই কাউয়ার চর বিচ।
(১১/১২) জেলেদের নৌকাগুলো হয়তো সগরে বেড়োনোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।
(১৩) কাউয়ার চরের ভবিষ্যত ওরা।
(১৪/১৫) বীচে চলছে জাল নৌকা নিয়ে চলছে জেলেদের কর্মযজ্ঞ।
(১৬) গোধূলী বেলায় কাউয়ার চরের কৃষকের ঘরে ফেরা।
(১৭) কাউয়ার রের শেষ প্রান্তে যেখানে গঙ্গা মতি খাল তার পাড়েই এমন বনসাইয়ের মতো একটা বন। গঙ্গা মতির খাল পেরিয়ে গঙ্গা মতির চর।
(১৮) গঙ্গা মতির চরের ওপারের সাগরে সূর্য্যি মামা ডুব দেওয়ার অপেক্ষায়।
(১৯) গঙ্গামতি খাল পারি দেওয়ার শেষ খেয়াটাও চলে গেছে, ফোন করেও ওদের অপেক্ষায় বসেছিলাম সেই বনসাই তলায়। তবে শেষ খেয়াটা আর আসেনি বলে উল্টো পথেই আমাদের ফিরতে হয়েছিল।
(২০) মামা সাগরে ডুব দেওয়ার আগে সর্বশেষ এভাবেই ধরা দিয়েছিল আমার ক্যামেরায়।
২৩টি মন্তব্য
সুপর্ণা ফাল্গুনী
অসম্ভব সুন্দর একটা ছবি ব্লগ পেলাম। ৪, ৯-২০ ছবিগুলো খুব সুন্দর, চমৎকার। ২০ নং ছবিটার কথা আর কি বলবো! বাকরুদ্ধ হয়ে গেছি। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ আপু, চেষ্টা করি সব সময় ভালো কিছু ছবি তুলতে। যদিও আমি ফটোগ্রাফার নই…….শুভ কামনা জানবেন
সাবিনা ইয়াসমিন
কাউয়ার চর! নামটাই অদ্ভুত। এমন নাম শোনার পর জায়গাটির প্রতি কৌতূহল আসবেই। তবে চরটা মনোমুগ্ধকর। আর কেওড়ার বন! এই প্রথম দেখলাম।
চমৎকার সব ছবির সমন্বয়ে সুন্দর পোস্ট। ভালো লাগলো পড়ে- দেখে।
শেষ দিকের একটা ছবিতে আপনার একটু পাশে একজন অপরুপা সুন্দরীকে দেখতে পাচ্ছি। এবারের শুভ কামনা তার জন্যে। সে পাশে না থাকলে আপনার ঐ ছবিটা একটুও ভালো হতো না 😜😜
কামাল উদ্দিন
কাউয়ার চরে আমারবাড়ির সুন্দরীকে সাথেই নিয়া গিয়েছিলাম আপু। আমার ছবি এমনিতেই সব সময় ভালো হতে বাধ্য 😉
সুপায়ন বড়ুয়া
অপরুপ সৌন্দর্যের সমাহার ছবি গুলো দেখলে
মন ভরে যায় এই কষ্টের দিনে।
শুভ কামনা।
কামাল উদ্দিন
কষ্টের দিন শেষে আমাদের সবার জন্য হয়তো অনেক ভালো দিন অপেক্ষা করছে দাদা…….শুভ সকাল।
ফয়জুল মহী
অনন্য অপূর্ব I
কামাল উদ্দিন
হুমম
আকবর হোসেন রবিন
দারুণ। শুধু একবার করোনা শেষ হোক, এক দোঁড়ে চলে যাবো।
কামাল উদ্দিন
আমিও অনেক যায়গায় দৌড়ানোর পরিল্পনা করে রেখেছি আকবর ভাই…….শুভ সকাল।
সুরাইয়া পারভীন
৯,১৮,২০ জাস্ট ওয়াও।
কাউয়ার চর নাম শুনলে তাই মনে হবে। ওখানে কাউয়া ছাড়া আর কিছু ই থাকবে না। পদধূলি দিতে গিয়ে পাছা ধূলি নিয়ে এলেন! হা হা হা হা
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ আপু, ভালো থাকুন সব সময়।
ছাইরাছ হেলাল
আপনার ক্যামেরার চোখে কাউয়ার চর দেখলাম, কিন্তু বরিশালে কীর্তণখোলা নদীর ওপারে
আর একটি সাদামাটা কাউয়ার চর আছে।
১৯ কিন্তু দারুণ!!
কামাল উদ্দিন
বুঝছি আরো একটা কাউয়ার চরের খোঁজে বের হতে হবে।
মাহবুবুল আলম
ভাল লাগলো। আপনার সাথে আমরাও বিনা পয়সা ও বিনাশ্রমে কাউয়ার চরে ঘুরে এলাম।
কামাল উদ্দিন
শুভেচ্ছা জানবেন মাহবুব ভাই, কেমন আছেন আপনি?
জিসান শা ইকরাম
এত কাছে, কিন্তু যাওয়া হয়নি কখনো কাউয়ার চরে।
খুব নিরিবিলি মনে হচ্ছে কাউয়ার চর সৈকত।
শুভ কামনা।
কামাল উদ্দিন
নিরিবিলি এবং কক্সবাজার বা অন্যান্য সীবিচের মতো সাগর এতোটা উত্তাল ও নয়……মনে হচ্ছে এবার খুব শীঘ্রই যাবেন বড় ভাই।
হালিম নজরুল
চমৎকার সব দৃশ্য মানকে আকুল করে
কামাল উদ্দিন
শুভেচ্ছা জানবেন ভাই।
শান্ত চৌধুরী
আমিও গিয়েছিলাম, ১ ঘন্টা আপেক্ষা করে গঙ্গামতি খাল পার হয়েছি মোটর সাইকেল নৌকায় করে।
সূর্যাস্ত এবং সূর্যোদয় দুটো ছাড়া কুয়াকাটায় তেমন ভালো লাগেনি। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
কামাল উদ্দিন
সময় স্বল্পতায় আমি তো দেখতেই পারিনি কুয়াকাটাকে ঠিক মতো, তাইতো পরবর্তী ট্যুরের অপেক্ষায়……শুভেচ্ছা জানবেন ভাই।
তৌহিদ
ভালো লাগলো। কাউয়ার চর সম্পর্কে জানলাম। ছবিগুলিও সুন্দর।
শুভকামনা ভাই।