
চট্টগ্রাম থেকে কুড়িগ্রাম আসতে ১৬/১৮ ঘণ্টা লাগে। সাধারণত আমরা রোজার সময় আসি। ছুটি বেশি থাকে। মা মেয়ে আগে চলে আসি। কোন এক কারণে আমাদের কোরবানি ঈদে আসতে হলো। নাবার বাবাও সাথে। ঐ সময় ছুটিও কম। আবার জ্যাম। এবার ভালোই আক্কেল হলো। কানও ধরলাম, আর অন্য সময় যাবো না।
সেদিনের ঘটনা। বাস চট্টগ্রাম থেকে বিকেল ৫ টায় ছাড়লো। নারায়নগঞ্জের জ্যাম ঠেলে গাড়ি বাইপাইল নামক স্থানে এসে, পিঁপড়ের মতো চলা শুরু করলো। তখন ফযরের আযান দিয়েছে। বাসে আমার ঘুমও হয়না। নাবার বাবা একটু পিছনে, এফ ২ এ বসেছে। কিছুক্ষণ পর দেখি সবাই উঠতেছে। ওরে বাবারে থাকা যায়না, কে যে টয়লেট করছে। সবাই সুপারভাইজারকে ডাকছে,,ঐ ব্যাটা, কই গেলি?
সুপার ভাইজার এসে, ঐ লোককে বলছে, এইডা কেমন কাম করলেন? গাড়ি তো থামাই ছিলো।
লোকটা বলছে, জোরে চাপ আসছে, কিছু করার নাই।
গাড়ি এমন জায়গায় থামছে, আশেপাশে কোন ও বাড়িঘর নাই। জমির পর জমি। তার কিছু দূরে দুই একটা বাড়ি দেখা যাচ্ছে। লোকটাকে ওখানে পাঠানো হলো। যাও পরিষ্কার হয়ে আসো।
লোকটা আসার পর গাড়ি চলা শুরু হলো। এলেঙ্গায় এসে আবার জ্যাম। গাড়ি থামতেই কোথা থেকে মাছি এসে ঐ লোকটার চারিদিকে ভীড় করলো। পাশের লোকটা মনে হয় ঘুমাচ্ছিলো। মাছির শব্দে উঠে দেখে, আবারও গন্ধ। সবাই নেমে গেলো।
সুপারভাইজার ভাই এসে, চিলাচ্ছে; আবার অকাম করলেন।
লোকটি বলছে, করিনি তো?
তাইলে মাছি কেমনে আসলো? শালা তুই ব্যাগ খোল। দেখা গেলো, যে প্যান্টে অকাজটা করছিলো, সেইটা না ধুয়ে ব্যাগে ঢুকায় আনছে।
বোঝেন বাঙালির অবস্থা। কবে যে এরা সচেতন হবে?
এবার লোকটিকে পাশের জমিতে নামায় দিয়া, সুপারভাইজার বললো, প্যান্ট চটকা মার।
তারপর স্প্রে করে বাস চলা শুরু করলো।
গাড়ি এসে শেরপুরে থামলো।
সবাই খাওয়া দাওয়া শেষ করে উঠছে। আবার ও টয়লেটের গন্ধ। ফির চিল্লাচিল্লি, ঐ ব্যাটাই এই কাজ করছে। এইবার সুপার ভাইজর বলছে, কি দিয়ে ভাত খাইছোস? হজম না হইতেই তোর এই অবস্থা!
ভাই, চিতল মাছের পেটি খাইছি।
ধুর শালা! তুই বাস থেকে নাম।।
সেইদিন বাড়ি আসতে ৩০ ঘণ্টা লাগছিল!
A JOURNEY BY BUS!!!
😂😂😂😂
২৫টি মন্তব্য
সুপর্ণা ফাল্গুনী
🤣🤣🤭🤭 গন্ধ তো আমার নাকে এসে লাগলো আপু। ইস কি অবস্থা একেতো জ্যাম তার উপর বারবার একই ঘটনা। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন শুভকামনা অবিরত
আরজু মুক্তা
আর বলিয়েন না। এখনও লোকজন সচেতন নয়।
খাদিজাতুল কুবরা
খুব বিশ্রী অভিজ্ঞতা এবং কষ্টের জা্র্নির বর্ণনা পড়ে খারাপ লাগলো আপু।
যানজট এবং অসচেতনতা আমাদের বাঙালির অনেক বড় সমস্যা।
সবার সুবোধ জাগ্রত হোক।
আরজু মুক্তা
এতো বিজ্ঞাপন, এতো এনজিও কাজ করে, তারপরও লোকজনের সচেতনতা ফিরে না। রেল স্টশনের তো আরও ভয়াবহ অবস্থা!
ফয়জুল মহী
মনোযোগ দিয়ে পড়লাম । মুগ্ধ হলাম লেখায়
আরজু মুক্তা
ধন্যবাদ ভাই
রোকসানা খন্দকার রুকু
ঈশ্ চিতল মাছের পেটি।যে গন্ধ খাওয়া যায়।
এটাই বাংলাদেশের মানুষ॥সুযোগ পেলেও ভালো হবেনা।
ভালো হতে কষ্ট লাগে।
শুভ কামনা।
আরজু মুক্তা
নাহ! সচেতনতারর বড়ই অভাব
শামীম চৌধুরী
ইশশশ আপু
যে কোন ভ্রমনে নির্ধারিত সময়ের বেশী সময় হলে তখন জীবনটা পুড়ে কয়লা কয়লা হয়ে যায়। মাঝে মাঝে আমিও এমন বিড়ম্বনার স্বীকার হই। একবার সোনাদিয়া দ্বীপে যাবো ছবি তোলার জন্য। সঙ্গী ছিলেন আমি সহ চার জন। চট্রগ্রাম এসে বাস নষ্ট হয়ে যায়। এসি বাসের বেল্ট পুড়ে যাওয়ায় এসি কাজ করে না। দোজগে থাকা যায় কিন্তু এসি বাসে এসি ছাড়া থাকা মানে দম বন্ধ হয়ে মারা যাওয়া। অগ্যতা বাস কাউন্টারে বসে থাকা। কোথা থেকে যেন দুপুর একটায় বাস আসে পরে সেই বাসে কক্সবাজার পৌছতে সময় নেই ৭ ঘন্টা। সন্ধ্যা ৭টায় কক্সবাজার পৌছি। পরের দিন কাজ করে চলে আসতে বাধ্য হই। কারন সবার অফিস ছিলো। টাকার টাকা নষ্ট হলো পাখির জন্য একটি দিন খোয়া গেল।
দারুন হয়েছে গল্পটা
আরজু মুক্তা
এই রকম কতো যে ঘটনা। এসি বাস তো না ছাড়তেই বমির প্রতিযোগিতা শুরু হয়। কি একটা অবস্থা।
সুপায়ন বড়ুয়া
আপু আপনার অভিজ্ঞতাটা আগে পড়েছি মনে হয়।
ফেইসবুক নাকি অন্য কোথাও।
প্রকৃতির ডাক সামলানো বড় কষ্ট
কিন্তু লোকটা বেকুবই বলা যেতে পারে।
অবশ্যই পানি কাছে থাকলে পরে।
ভাল থাকবেন। শুভ কামনা।
আরজু মুক্তা
জি ভাই। একবার এফবিতে দিয়েছিলাম।লোকটা বেকুব। এই রকম কতো যে ঘটনা আছে। আর একদিন লিখবো
রেজওয়ানা কবির
আপু প্রত্যেক ঈদে আমাদেরও একি অবস্থা হত,এত জ্যাম আর এত উটকো ঝামেলা লেগেই থাকত।১২ বছর এভাবে আসতে হয়েছিল।আলহামদুলিল্লাহ এখন আর এই কষ্ট করতে হ্য় না।মনে পড়ে গেল সেইসব দিন আর প্রত্যেকবার ভাবতাম আর বাড়ি যাব না অগত্যা তবুও যেতে হত।
আরজু মুক্তা
ঠিক বলেছেন আপু।
ছাইরাছ হেলাল
লেখায় তো স্প্রে করা লাগবে !!
আল্লাহ মাফ করে দিন সব্বাইকে।
ভ্যাগ্যিস নাবার বাবা না!!
আরজু মুক্তা
হা হা!
আর বলিয়েন না, কতো যে ঘটনা ঘটে যাত্রা পথে।
তবে, মানুষ বড়ই অসচেতন।
সুরাইয়া পারভীন
চা নিয়ে বসেছিলাম সোনেলা পড়তে
এটা কি কাম করলেন আপু বলেন তো।
চা আর খাওয়া হয়ে উঠলো না😷😷
আরজু মুক্তা
হায়, হায়!
আচ্ছা, কালকে একবারে দুইকাপ খাইয়েন।
আলমগীর সরকার লিটন
বেশ মজা পেলাম হু গন্ধ——————-
আরজু মুক্তা
হা হা।
ভালো থাকবেন
আলমগীর সরকার লিটন
জ্বি আপনিও
তৌহিদ
আমার অবস্থা এর থেকেও ভয়াবহ ছিলো একবার। রাত আড়াইটায় পুরো বাসের যাত্রীকে আধাঘণ্টা ওয়েট করিয়েছিলাম।
আরজু মুক্তা
হা হা।
ভাগ্যিস বাসে করেন নাই!😂
মোঃ খুরশীদ আলম
সেদিন যে আপনাদের কি কষ্ট হয়েছিল তা ভাবলেই ভীষণ খারাব লাগছে।
এসব ব্যাপারে মানুষ অনেক অচেতন। ড্রাইভার বা হেলপারদের সাহায্য নিতে চায়না পেসেঞ্জাররা।
যা হোক, আপনার বাড়ী চট্টগ্রাম কি ?
আরজু মুক্তা
বাড়ি রংপুর। থাকা হয় ওখানে