কি সুন্দর একটি গান। হিন্দি গান। ও না-যা, পারিন্দে ঘার আ-যা……..
পুরো গান আর কথা গুলো আমারও অনেক পছন্দের। মাঝে মাঝে আমিও শুনি। অনেক কিছুই ভাবি এই গান টা শুনতে শুনতে। আমার ঘরের অন্য কারো গানটি অতো পছন্দের না। মানে ঘরের মানুষ হিন্দি গান একটু কম পছন্দ করে এই আরকি। এর জন্য অল্প সল্প সাইন্ডে শুনি, আবার মাঝে মাঝে কানে হেডফোন দিয়ে শুনি। কারন ভালো লাগার মানুষদের অত্যাচার করা ঠিক না নিজের পছন্দের জন্য।
এখন ব্যাক্তিগত প্রসঙ্গে এতোটা বলার কারন হলো। পাশের বাড়ীর বিয়ে এবং সংগীত অনুষ্ঠান নিয়ে। অবশ্যই ছেলে মেয়ে বড়ো হয়েছে। লেখা পড়া করে স্বনির্ভর হওয়ার পরেই তাদের বিয়ের আয়োজন। কিন্তু সম্মানিত প্রতিবেশী রা ভূলে গিয়েছেন যে এসএসসি পরীক্ষা চলছে। কতো প্রতীক্ষার পর নিজেদের জীবনের স্মরনীয় একটি দিন আজ তাদের। স্কুল, প্রাইভেট পড়া কোচিং এর পিছনে কতো সময় ব্যায় করে তারা এই পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আত্বীয় স্বজনের সাথে দেখা করা, কোথাও বেড়াতে যাওয়া, অনেকে হয়তো আয়নায় দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখেওনি এই পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য। যারা লেখাপড়া করেছেন তারা যানেন এই পরীক্ষা কতো গুরুত্বপূর্ণ একজন শিক্ষার্থীর জন্য। নিজেদের সন্তানের হয়তো লেখাপড়া শেষ, কিন্তু এই পরীক্ষার্থীদের কথা একটু ভাবুন। এদের ও তো বিয়ে শাদী করতে হবে!
ঠিকমতো না পড়লে কিভাবে পাশ করে ভালো চাকরি করে বিয়ে করবে। লেখাপড়া নিয়ে না ভাবলেও বিয়ে নিয়ে ভাবেন অন্তত। পারিন্দে ঘার আ-যা এই গানের সাউন্ডে আমার ঘরে থাকা দায় হয়ে গিয়েছে। আমার সন্তান পরীক্ষার্থী না। কিন্তু সে স্কুল থেকে ফিরে একটু বিশ্রাম নেয়। সে বিশ্রাম বাদ দিলাম। অনেক বয়স্ক মানুষ আছেন যাদের বেশি সাউন্ডে কানে সমস্যা হয়। যারা একটু স্পর্শকাতর ঘুমের ব্যাপারে তাদের কথা ভাবুন। যাদের উচ্চ রক্তচাপ রোগ আছে তাদের কথা ভাবুন। কাল ও প্রতিবেশী একজন মারা গিয়েছেন, দু-এক বাড়ী পরেই, তাদের মনের অবস্থা বোঝার চেষ্টা করেন। বলতে কি পারবেন যে আপনাদের বাসার এমন কেউ নেই? আপনার বাসার কেউ অসুস্থ থাকলে তার কানের সামনে কি এভাবে উচ্চ শব্দে গান ছেড়ে দেন!
আজব!!! আপনাদের বিবেক নিয়ে। এতো বড়ো একটি এলাকায় এভাবে উচ্চ শব্দে গান বাজানোর মানে কি! বলবেন আমার আনন্দ তে আপনার হিংসা হয় বা কেনো আমার আনন্দ কে আপনার আনন্দ মনে করেন না। পাশের বাড়ীর মানুষকে দাওয়াত দিবেন না আবার তাদের জোর করে গান শুনিয়ে আনন্দ দিতে চান 🤣।
আমরা দিন দিন খুবই স্বার্থপর হয়ে যাচ্ছি। শুধুই নিজের কথা ভাবী। একজন এর কোন সমস্যা হলে অপরজন ভাবি আমার তো কোন সমস্যা নেই। উল্টো ভুক্তভোগীর পাশে কেউ দাড়াতে চাইলেও তাকে নিরুৎসাহিত করি। বলি আপনার তো সমস্যা হয়নি আপনি কেনো ঝামেলায় জড়াচ্ছেন!!! একটুও ভাবি না যে কাল আমারও কোন সমস্যা হবে না এটা বিধাতা আমাদের আগে জানিয়ে দেয়নি। এটাও ঠিক যে সবাইকে খুশী করা বা সবার উপকার করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। কেউ বেচারা হয়েই থাকতে চান কারো দ্বারা উপকৃত হতে চান না। আবার কেউ কেউ আছেন উপকার প্রত্যাশা ভিন্ন। যেমন বাসে একজন ভাড়া দিতে পারছেন না। বাস কন্টাক্টর দূরে বলে। বাস কন্টাক্টর আর সেই যাত্রীর মাঝখানে আমি। ভাবলাম তাকে সাহায্য করি তার হাত থেকে ভাড়া নিয়ে কন্টাক্টর কে দেয়ার সময় ওই যাত্রীর হাত থেকে দুই টাকার কয়েন পরে গেলো, আহা!!! সে কি চাহনি!! আমি ভয়ই পেয়ে গেলাম। তখনও জানতাম না কতো টাকার কয়েন ছিল। পরে আরেকজন তুলে দেয়ার সময় দেখলাম দু টাকা। কয়েন ফেরত পাওয়ার আগ পর্যন্ত ভাবছিলাম বলবো যে কতো টাকা? আমি দিচ্ছি। কি বাচা টা যে বেচেছি। ভয়ে ওই যাত্রীর দিকে তাকাইনি। কিন্তু মনে হয়েছে কন্টাক্টর আমার মনের অবস্থা বুঝতে পেরেছে। এমন কঠিন সময় অতিবাহিত করার পর আমি সে বিয়ে বাড়িতে যেয়ে গান বন্ধ করতে বলার সাহস রাখিনা। জানি গেলেই প্রশ্ন করবে আপনার বাসায় কে পরীক্ষার্থী? ভূল ভাল বলার অভ্যাস ও নেই। এরজন্য আশাবাদী যাদের বাসায় শিক্ষার্থী বা এসএসসি পরীক্ষার্থী আছে তারা কেউ যেয়ে উনাদের সাথে কথা বলবেন। কথা বলার সময় অবশ্যই মনে রাখতে হবে চোরের মায়ের বড়ো গলা।
আর আমি শুনতে থাকি বিয়ে বাড়ির নতুন গান ” পার্টি আভি বাকি হে”
হা হা হা কি অবস্থা। নাদান পারিন্দে নিশ্চয়ই ঘরে এসেছে তাই পার্টি তো আভি শুরু হুয়ি হ্যায়,,,,🤪
আজ সকালে কলেজ যাওয়ার পথে দেখলাম প্রচন্ড বৃষ্টি মাথায় কচি কচি মুখগুলো শুকনো মুখে দৌড়াচ্ছে। অথচ আমরা সহযোগিতা না করে আনন্দে মত্ত। দিনে দিনে যেন আমাদের বিবেক লোপ পাচ্ছে।
আপনি এ ব্যাপারে প্রশাসনের সাহায্য চাইতে পারেন। তারা হয়তো বুঝতে পেরে বন্ধের ব্যবস্থা করবে।
অশেষ শুভকামনা 🌹
অনেক ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য। আমিতো সকালের ঘটনায় এতোই বিব্রত ছিলাম যে প্রশাসন এর সাহায্য নিতে সাহস পাইনি। আমার উপস্থিত বুদ্ধি কিছুটা কম। এরপর অবশ্যই ব্যাপার টি বিবেচনা করবো।
এইরকম বিবেক যদি থাকত আপু তবে এভাবে বাচ্চাগুলার ডিস্টার্ব না করে সাউন্ড কমিয়েও প্রোগ্রাম করা যেত অন্তত এলাকার পরীক্ষার্থীদের মেন্টাল টরচার হত না।
আমরা একে অন্যের পাশে থাকি না বলেই যার যার তার তার হয়ে যাচ্ছে দিন দিন।
ভালো লিখেছেন আপু।
শুভকামনা।
কি যে হয়ে যাচ্ছি দিন দিন। কিভাবে সন্তানদের এমন হওয়া থেকে বিরত রাখতে পারবো আল্লাহই জানেন। ভয়ে আছি কবে জানি আমিও এমন হয়ে যাই। অনেক ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
হাদিসেই আছে বিংশতাব্দীর পর পৃথিবী এবং মানুষের মাঝে কি পরিবর্তন আসবে তা কেউ জানে না একমাত্র আল্লাহ ছাড়া।
যাই হোক
বিবেক যেখানে মৃত
সেখানে ভাল মন্দ ভাবা কষ্টকর।
তবুও মানুষ হিসাবে ভাবতে হয় ভাবনা এসে যায়।
সবার বোধদয় ঘটুক।
সুন্দর উপস্থাপনা।
ছবি তো কন্যা তুলতে দিলো না, বিয়ের দাওয়াত পায়নি বলে…..
সবাইকে তো বোঝানো সম্ভব নয় তবে তাদের ভূল থেকে নিজে শিখেছি কিছু। এরজন্য তারা একটি ধন্যবাদ পেতে পারে। আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
এর জন্যই স্বার্থপর এর মতো আগে নিজেই তাদের ভূল থেকে শিখে নিলাম। চেষ্টা করছি মনুষ্যত্ব টাকে বাচিয়ে রাখার। যেন মাথা উচু করে সন্তানকে ভালো কিছু করার উৎসাহ দিতে পারি। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
১০টি মন্তব্য
রোকসানা খন্দকার রুকু
হা হা হা কি অবস্থা। নাদান পারিন্দে নিশ্চয়ই ঘরে এসেছে তাই পার্টি তো আভি শুরু হুয়ি হ্যায়,,,,🤪
আজ সকালে কলেজ যাওয়ার পথে দেখলাম প্রচন্ড বৃষ্টি মাথায় কচি কচি মুখগুলো শুকনো মুখে দৌড়াচ্ছে। অথচ আমরা সহযোগিতা না করে আনন্দে মত্ত। দিনে দিনে যেন আমাদের বিবেক লোপ পাচ্ছে।
আপনি এ ব্যাপারে প্রশাসনের সাহায্য চাইতে পারেন। তারা হয়তো বুঝতে পেরে বন্ধের ব্যবস্থা করবে।
অশেষ শুভকামনা 🌹
শাহরিন
অনেক ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য। আমিতো সকালের ঘটনায় এতোই বিব্রত ছিলাম যে প্রশাসন এর সাহায্য নিতে সাহস পাইনি। আমার উপস্থিত বুদ্ধি কিছুটা কম। এরপর অবশ্যই ব্যাপার টি বিবেচনা করবো।
রেজওয়ানা কবির
এইরকম বিবেক যদি থাকত আপু তবে এভাবে বাচ্চাগুলার ডিস্টার্ব না করে সাউন্ড কমিয়েও প্রোগ্রাম করা যেত অন্তত এলাকার পরীক্ষার্থীদের মেন্টাল টরচার হত না।
আমরা একে অন্যের পাশে থাকি না বলেই যার যার তার তার হয়ে যাচ্ছে দিন দিন।
ভালো লিখেছেন আপু।
শুভকামনা।
শাহরিন
কি যে হয়ে যাচ্ছি দিন দিন। কিভাবে সন্তানদের এমন হওয়া থেকে বিরত রাখতে পারবো আল্লাহই জানেন। ভয়ে আছি কবে জানি আমিও এমন হয়ে যাই। অনেক ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
মনির হোসেন মমি
হাদিসেই আছে বিংশতাব্দীর পর পৃথিবী এবং মানুষের মাঝে কি পরিবর্তন আসবে তা কেউ জানে না একমাত্র আল্লাহ ছাড়া।
যাই হোক
বিবেক যেখানে মৃত
সেখানে ভাল মন্দ ভাবা কষ্টকর।
তবুও মানুষ হিসাবে ভাবতে হয় ভাবনা এসে যায়।
সবার বোধদয় ঘটুক।
সুন্দর উপস্থাপনা।
শাহরিন
জ্বি ভাইয়া একমত আপনার সাথে। আমরাও বিংশ শতাব্দীর অংশ। এই ভেবে ভয় লাগে, বিবেককে জাগ্রত করে রাখতে পারবো তো!!!
আল্লাহই সহায় এখন। অনেক ধন্যবাদ।
নাসির সারওয়ার
দুমদাম যখন হলো, তখন অবশ্যই রাস্তায় বাহারি৷ রঙের বাতির ব্যবস্থাও ছিলো। আমি সেখানে থাকলে একখানা সেলফি মেরে কভার ছবি বানিয়ে দিতাম।
আমরা আমাদের বা নিজের নিয়েই ব্যস্ত এখন। অন্যদের দিকে তাকাবার সময় এবং মানষিকতা কই!
অনেক ভালো একটা সামাজিক চিত্র যা আপনি ভালো ভাবেই তুলে ধরেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।
শাহরিন
ছবি তো কন্যা তুলতে দিলো না, বিয়ের দাওয়াত পায়নি বলে…..
সবাইকে তো বোঝানো সম্ভব নয় তবে তাদের ভূল থেকে নিজে শিখেছি কিছু। এরজন্য তারা একটি ধন্যবাদ পেতে পারে। আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
হালিম নজরুল
মানুষ মানুষের জন্য! কিন্তু আমাদের কর্ম প্রমাণ করে আমরা শুধুমাত্র আমাদের নিজেদের স্বার্থের জন্য। আমাদের প্রথমে মানুষ হওয়া প্রয়োজন।
শাহরিন
এর জন্যই স্বার্থপর এর মতো আগে নিজেই তাদের ভূল থেকে শিখে নিলাম। চেষ্টা করছি মনুষ্যত্ব টাকে বাচিয়ে রাখার। যেন মাথা উচু করে সন্তানকে ভালো কিছু করার উৎসাহ দিতে পারি। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।