একান্ত ভাবনা

আদিব আদ্‌নান ৭ আগস্ট ২০১৪, বৃহস্পতিবার, ০৪:৪৫:৪০অপরাহ্ন একান্ত অনুভূতি ২৭ মন্তব্য

গ্রামের হতদরিদ্র দিন মজুর । কিছুটা হাবাগোবা টাইপের । আকাল হেতু শহরে কাজের সন্ধানে এসে হারিয়ে যায় বা নিখোঁজ হয় । গ্রামে রয়ে যায় তার স্ত্রী ও ছোট ছোট দুই সন্তান প্রচন্ড অভাবের মধ্যে । এক মাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটিকে হারিয়ে সহায় সম্বলহীন এই ভাগ্যহত পরিবারটির বেঁচে থাকাই দায় হয়ে যায় । এহেন চরম বিপদে সাহায্যের আশায় গ্রামের ভূস্বামী থেকে সমাজপতি সবার কাছেই ধর্না দেয়া শেষে এক অবস্থাসম্পন্নের বাড়ীতে কাজের মানুষ হিসাবে নিযুক্ত হয় । অবশ্য স্বাস্থ্যবতী হওয়ার কারণে ‘বিনিময়’ প্রথায় সাহায্যের প্রস্তাব যথেষ্ট প্রতুল ছিল । সে পথ মাড়ায়নি এই নারী । ছোট শিশু দুইটিকে নিয়ে কায়-কস্টে খেয়ে ,আধপেটা খেয়ে ও না খেয়ে দিন পাড় হতে থাকে । এই শিশুদের কথা ভেবে বিয়ে ও করেনি । বড় ছেলেটি কলেজে ও মেয়েটি স্কুলে পড়ে । তাদের পিতা ফিরে আসে প্রায় পনের বছর পর । পরিবারটিতে ঈদের আনন্দ ।
কাজ দেয়ার নাম করে আরো কিছু লোকের সাথে দুর্গম স্থানে নিয়ে আটকে রেখে এত বছর জোর করে শুধু খাবারের বিনিময়ে কাজ করিয়ে নিয়েছে । নদী ,সমুদ্রে মাহ ধরা থেকে আর অনেক অনেক কঠিন পরিশ্রমের কাজ বছরের পর বছর । কোন কান্নাকাটিতে ই মন গলেনি দস্যুদের । এত বছর পর হঠাৎ করে দয়া হয়। লোক সাথে করে বাড়ীর কাছাকাছি পৌছে দিয়ে গেছে ।

দুদিনের মাথায় সমাজপতিদের বৈঠকে ফতোয়া জারি হয় যে স্বামীর দীর্ঘ অনুপস্থিতির কারণে তাদের তালাক হয়ে গেছে । এখন হিল্লা বিয়ে দিতে হবে । যারা এই ফতোয়া জারি করেছেন তাদের মধ্যে ‘বিনিময়’ এর প্রস্তাবকারী গন ও আছেন ।
পরে মিডিয়ার কারণে জানাজানি হয়ে গেলে সব কিছু ভেস্তে যায় ।

আমার কথা হল – ফতোয়া ভালো কিংবা মন্দ , দেয়া যাবে কী যাবে না সেটি আমার প্রশ্ন না । প্রশ্ন হল বিশেষ একটি ‘কর্ম’ হলেই ফতোয়া উজ্জীবিত হয়ে ওঠে কেন ? গ্রামে যে ইয়াবা ব্যাবসায়ী ,ভূমি দস্যু ও চোরাকারবারীদের সর্দার বহাল তবিয়তে আছে তাদের বিরুদ্ধে ফতোয়া কেন ‘দাঁড়িয়ে’ যায় না ?

যে কেউ আমাকে জ্ঞ্যান দ্যান করার চেষ্টা করতে পারেন , আমি প্রস্তুত ।

৭১৯জন ৭১৯জন
0 Shares

২৭টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ