
বাঙ্গির মাঠে যাওয়ার ইচ্ছেটা অনেক দিনের কিন্তু সময় সুযোগ করে যাওয়া হয়ে উঠছোলো না। খবর নিয়ে জানতে পারলাম আমার জেলা নরসিংদীতেই বাঙ্গির চাষ হয়। যেতে হবে রায়পুরা উপজেলার চর এলাকার মধ্য নগর গ্রামে। যখন গেলাম ততোদিনে দেরী হয়ে গেছে । তবু যেটুকু দেখলাম, যেটুকু ছবি তুললাম, তা আপনাদের সামনে উপস্থিত করার চেষ্টা করলাম আজকের ছবিব্লগের মাধ্যমে।
(২) নরসিংদীর রায়পুরা থানার পান্থশালা থেকে ট্রলারে মেঘনা নদী পার হয়ে চলে গেলাম সায়দাবাদ।
(৩) ছোট্ট বাজার সায়দাবাদে দেখলাম ভ্যান গাড়ি ভরে বাঙ্গি আনা হচ্ছে ট্রলারে করে নদীর ওপার যাবে বলে।
(৪) সায়দাবাদ থেকে বাঙ্গির মাঠের দিকে অটোতে করে ছুটলাম এই রাস্তা ধরে। দুইপাশে সবুজের ব্যাপক সমারোহ মাঝখানে পাকা রাস্তা বেশ চমৎকার লাগছিলো।
(৫) এক সময় পাকা রাস্তা থেকে অটো ছেড়ে দিয়ে মেঠো পথ ধরলাম। বেশ ভালো লাগছিলো সবুজের ভেতর এই গ্রামীন পথে হাটতে।
(৬) যাওয়ার পথটা ছিলো এমন বাঙ্গিময়।
(৭/৮) তারপর আরো বাঙ্গি………
(৯) পথে বসে বাঙ্গি খেয়ে ওরা মাথার বোঝা হালকা করে নিচ্ছিল।
(১০) এক সময় আমরা চলে এলাম বাঙ্গি ক্ষেতের সরু আলে।
(১১/১২) রায়পুরার চড়ের এই অঞ্চলটা বাঙ্গির জন্য বিখ্যাত হলেও সাথে এমন লাল মরিচ ক্ষেতেরও দেখা মিলে। শিশুরা ক্ষেত থেকে লাল মরিচ তুলে নিচ্ছে।
(১৩/১৪) বাঙ্গি ক্ষেতের ফাঁকে ফাঁকে এমন কিছু বাদাম আর ধান ক্ষেতেরও উপস্থিতি বিদ্যমান। যার ভেটর থেকে উঁকিঝুকি মারে বক সারষেরা।
(১৫/১৬) এখানে এতো বিশাল বিশাল বাঙ্গির দেখা মেলে যা আমি আগে কোথাও দেখিনি। বাঙ্গির সাথে পোজ দেওয়া মানুষটা একজন ব্লগারের। যিনি এই ব্লগেই জাহাঙ্গীর নামে আছেন। ( তাকে অবশ্য আমার পোষ্ট ছাড়া অন্য কোথাও কমেন্ট করতে বা কোন পোষ্ট দিতে আমি দেখিনি)
(১৭) বাদাম ক্ষেতে দাঁড়িয়ে তিনটি শিশু এভাবেই আমার ক্যামেরায় পোজ দিল।
(১৮/১৯) ক্ষেত থেকে বাঙ্গি সংগ্রহ করছে একজন কৃষক।
(২০) কাঁচা বাঙ্গি তুলছে কেন জানতে চাইলে তিনি একটা বাঙ্গি ভেঙ্গে আমাদের খাইয়ে দেখিয়ে দিলেন এগুলো কাঁচা না। লাল রং করে ক্ষেত থেকে তুলতে গেলে তা ভেঙ্গে যায়। পরে রশি দিয়ে অনেক কসরত করে ওদের ভাঙ্গন ঠেকিয়ে বাজারে পাঠাতে হয়। এখানকার বাঙ্গিগুলো অত্যন্ত বেলে এবং বেশ সুস্বাদু।
(২১/২২) বাড়ি থেকে ওরা খাবার নিয়ে এসেছে নশিশুরা, বাঙ্গি তোলার পরই কৃষকরা খাবে।
(২৩) সামনে একটা ছোট্ট খাল আছে,ওখানে ছোট বড় কয়েকটি নৌকায় বাঙ্গি বোঝাই হচ্ছে। কাদাময় এই পথেই নৌকাগুলোর কাছে যেতে হয়।
(২৪/২৫) নানা দিক থেকে নৌকাগুলোতে বাঙ্গি নিয়া আসছে কৃষকরা।
(২৬/২৭) সব বাঙ্গি এসে জমা হচ্ছে এই নৌকাগুলোতে।
(২৮) পানি স্বল্পতায় এক সময় নৌকার তলা মাটিতে ঠেকে যায়, তাই ওভাবেই ঠেলতে হয় নৌকাগুলোকে।
(২৯) দেখা শেষ, আমরা বাড়ির পথ ধরলাম, একন কৃষকও তার গরুগুলো নিয়ে হয়তো বাড়ির পথেই রওয়ানা হচ্ছে।
(৩০) সব শেষে আবারো বাঙালীর আথিথেয়তার চিরচেনা রূপ। বাঙ্গির মাঠে পরিচয় হয় এক কৃষাণীর সাথে। ফেরৎ আসার সময় তিনি লোক পাঠিয়ে আমাদেরকে ওনার বাড়িতে নিয়ে বাঙ্গি দিয়ে আপ্যায়ন করে। বাঙ্গি খাওয়াটা বড় কিছু ছিলনা। কিন্তু ওনাদের আপ্যায়নে আন্তরিকতায় আমরা মুগ্ধ, মুগ্ধ মধ্য নগর সসধারণ মানুষ গুলোর ব্যবহারে। আমি নিশ্চিত, মধ্য নগরে আমি আরো অনেক বার যাবো।
৩০টি মন্তব্য
তৌহিদ
এতো কুমড়ো সাইজ বাঙ্গী! এত্তবড়ো এই প্রথম দেখলাম। ধন্যবাদ ভাই। আমাদের এখানে যেটা পাওয়া যায় সেটা ছোট সাইজের।
ছবিব্লগ ভালো লেগেছে।
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ তৌহিদ ভাই, ঐ এলাকায় যাওয়ার আগে এতো বিশাল সাইজের বাঙ্গি আমিও আগে দেখিনি……শুভ কামনা জানবেন ভাই।
সুরাইয়া পারভীন
এতো বড় আর এমন মিষ্টি কুমড়ার মতো বাঙ্গী এই প্রথম আপনার পোস্টে দেখলাম। দারুণ সব ছবি
বাঙ্গী গুলো দেখতে দারুণ হলেও আমি মুখে দিতে পারি না
কামাল উদ্দিন
বেলে বাঙ্গিগুলো কিন্তু খেতে খারাপ না আপু
সুপর্ণা ফাল্গুনী
বাপরে বাঙ্গী নিয়েও বিশাল ছবি ব্লগ করে দেখালেন, এটা আপনার দ্বারাই সম্ভব। অনেক অ-নে-ক সুন্দর হয়েছে। বিশাল বাঙ্গী দেখে মনটা ভরে গেল। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ আপু, ছবি তোলা আর ঘুরে বেরানোর নেশায় এসব কোন ব্যাপারই না…….ভালো থাকবেন সব সময়।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
একদম আমার মনের কথা বলেছেন । ধন্যবাদ ভাইয়া
ফয়জুল মহী
অনেক ভাল লাগলো
কামাল উদ্দিন
শুভেচ্ছা
সঞ্জয় মালাকার
দাদা এত্তো বড়ো বড়ো বাঙ্গী আমি আর কখনো দেখিনি,
আজ আপনার পোষ্টে দেখলাম,
ছবি ও লেখা অসাধারণ দাদা, ভালো লাগলো খুব ।
ভালো থাকবেন সবসময় শুভ কামনা।
কামাল উদ্দিন
এবার তো খালি দেখলেন, ভবিষ্যতে খাওয়ার ব্যবস্থাও হতে পারে দাদা……শুভ কামনা সব সময়।
সঞ্জয় মালাকার
খাওয়ার সুযোগ হলে তো ভালোই হবে।
আপনিও ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন শুভ কামনা।
শামীম চৌধুরী
কামাল ভাই যতগুলি ফল আছে তার মধ্যে বাঙ্গী আমার সবচেয়ে অপছন্দের। এর গন্ধ ছোটবেলা থেকে সহ্য করতে পারি না। আপনার লেখাটি পড়লাম আর ছবির সাথে ঘরে বসেই প্রকৃতিতে ঘুরে আসলাম। ধন্যবাদ।
কামাল উদ্দিন
এই ফলটা অনেকেই পছন্দ করেনা দেখছি। কিন্তু বেলে বাঙ্গি আমার খুবই পছন্দের, একটি চিনি দিয়া খেলে বেশ সুস্বাদু হয়…….শুভেচ্ছা থাকলো ভাইজান।
ছাইরাছ হেলাল
আপনি তো মনে হচ্ছে আমাদের মিষ্টি কুমড়ো কে বাঙ্গি বলে চালিয়ে দিচ্ছেন!
আমরা এমুন বাঙ্গি দেখিনি। আমাদের গুলো লম্বাটে ভারী শসার মত।
খেতে কেমন তা তো বলেন না! খাওয়া চালিয়ে যাচ্ছেন।
কামাল উদ্দিন
একমাত্র আপনিই বিষয়টা ধরতে পেরেছেন, অন্যেরা তো বাঙ্গি ভেবেই যারপর নাই খুশি 😀
লম্বাটে শশার মতোটাকে আমরা বলি চিনাল/বাঙ্গি।
তৌহিদ
অনেকগুলো হা হা হা দিয়ে গেলাম 😃😃
ইসিয়াক
এতো বড় বড় বাঙ্গি আমি আগে দেখিনি। আপনার সাথে সাথে বেশ ভ্রমন হয়ে গেলো। পোষ্টে ভালো লাগা কামাল ভাই।
#বাঙ্গি তো একা একাই খেলেন। মনে থাকবে হুহ।
কামাল উদ্দিন
একা কিন্তু খাইনি ভাই, আমরা দুজন ছিলাম 😀
হালিম নজরুল
ছোটবেলা গিয়েছি মাঠে। কিন্তু নতুন প্রজাতির বাঙ্গিক্ষেতে যাওয়া হয়নি।
কামাল উদ্দিন
বড় বেলায় এমন বড় বাঙ্গি দেখে আসুন একদিন
প্রদীপ চক্রবর্তী
ঐ অঞ্চলে বাঙ্গি ভালো উৎপাদন হয় মনে হচ্ছে।
বাঙ্গি দেখেছি তবে খাইনি।
স্বাদটা কেমন দাদা জানাবেন?
ভালো লাগলো ছবিব্লগ পড়ে।
কামাল উদ্দিন
বেলে বাঙ্গিগুলো বেশ স্বাদ, একটু চিনি সহকারে খেতে হয়। মুখে দিলেই মিশে যায়, চমৎকার অনুভুতি দাদা।
সুপায়ন বড়ুয়া
বাঙ্গি দেখার ছলে লাল মরিচ দেখে
মনটাই আনন্দে ভরে গেল।
শুভ কামনা।
কামাল উদ্দিন
লাল মরিচ বুঝি আপনার খুবই পছন্দের দাদা?
আরজু মুক্তা
বাঙ্গি সম্পর্কে অনেক জানলাম।
কিন্তু খেতে পারিনা।
কামাল উদ্দিন
বাঙ্গি তো দেখছি কেউই খেতে পারেনা, খালি আমি একলাই খাইলাম
জিসান শা ইকরাম
বাঙ্গী নিয়েও এত চমৎকার ছবি ব্লগ দেয়া যায়, ধারনাই ছিলো না।
পোষ্ট খুবই ভালো হয়েছে ভাই।
শুভ কামনা।
কামাল উদ্দিন
ধন্যবাদ বড় ভাই, কোন কিছু একটা নিয়ে মেতে থাকার চেষ্টা করি, অন্য কিছু নয়।
জাহাঙ্গীর আলম
কামাল ভাই এর সফর সঙ্গী হয়ে বাংলাদেশের বেশ কিছু জায়গা ঘুরার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। তার মধ্য রায়পুরা উপজেলার চর এলাকার মধ্য নগর এলাকাটি দেখতে যেয়ে অন্যরকম একটি অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। দিগন্ত জুরে সবুজ ফসলের মাঠ, মাঠে পড়ে আছে বিশাল বিশাল বাঙ্গী। কৃষকের প্রাণজুরানো হাসি সাথে বাঙ্গী আপ্পায়ন, গাম জড়ানো কৃষকের হার নামানা পরিশ্রম, আরো কত কি। শুভকামনা কামাল ভাই এর জন্য, “একজন ভ্রশন পিপাশু মানুষ” ।