আজ অনেক দিন পর ছোট ভাইয়ের সাথে বসে কার্টুন দেখছিলাম। “গোপাল ভার” এর। সেখানে “পরশপাথর” নামের এক পর্ব দেখায়…
একদিন রাজা স্বপ্নে দেখেন…তাঁর ভগবান তাঁর পরশপাথর এর ছোঁয়ায় তাঁর রাজ্য সোনার রাজ্যে পরিণত করেন। এ নিয়ে রাজার মহা চিন্তা। খাওয়া নেই নাওয়া নেই। শুধুই চিন্তা। হঠাৎ একদিন তিনি হিমালয়ে যান সাধনা করতে। পরশপাথর এর উদ্দেশ্যে। গোপাল ভার রাজাকে খুঁজে বের করে ইনিয়ে বিনিয়ে রাজার রাজ্যে ফিরিয়ে নিয়ে আসে। নয়তো রাজা যে নাছোড়বান্দা। গোপাল ও কম নয়। সেও তাঁকে পরশপাথর এনে দিবে প্রতিজ্ঞা করে। কিন্তু পরশপাথর কোথায় পাওয়া যায় তা জানা নেই গোপাল এর। তারপর সে বিজ্ঞানীর সাহায্য নেয়। রাজ্যে এক বিজ্ঞানী আছে। তার সাথে কথা বলে। বিজ্ঞানী বলেন “পরশপাথর” বলতে কোন কিছুই নেই। গোপাল বিজ্ঞানীর ব্যাখ্যা বুঝতে না পারায় বিজ্ঞানী গোপালকে বলেন…এই যে সোনার ছেলে, সোনার দেশ। কোন দেশ বা কোন মানুষ তো সোনার তৈরী নয়। তারপর সোনার অর্থ বুঝতে পারে গোপাল। পরদিন বিকেলে কিছু ছোট বাচ্চাদের জিজ্ঞেস করে। তারপর সে আরো ভালো করে বুঝতে পারে। সেখান থেকে একজন কে বলা হয় একটা কলম আর কাগজ আনতে। এবং সে একটা ফর্দ বানায় রাজার জন্য। রাজার কাছে যায় গোপাল। রাজা খুশি হয়ে পরশপাথর সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতেই গোপাল আরো এক মাস সময় চায়। রাজা পরশপাথর এর জন্য সব কিছু করতে প্রস্তুত। রাজ্য যে সোনার হবে! এ আশায়। বলেই গোপাল ফর্দ খানা রাজার হাতে দিয়ে যায়। আর বলে…ফর্দতে যা লিখা আছে তার প্রতিটা যেন তিনি মানেন। সে ফর্দতে রাজ্যবাসীদের জন্য অনেক সুবিধে লিখা থাকে। এবং তা প্রচার করলে রাজ্যের অধিবাসীরা খুব খুশি হয় এতে। একমাস অতিবাহিত হলে গোপাল রাজার চোখ বেঁধে তাঁর হাতে একখানা সাধারণ পাথর দিয়ে একটা মাঠে নিয়ে যায়। সেখানে ধান পেকে সোনা সোনা! কৃষকেরাও খুব খুশি ছিলো। কারণ, রাজা নিঃস্বার্থভাবে রাজ্যের অধিবাসীদের উপকার করেছেন এবং কৃষকেরাও এর প্রতিদান দেয়। সবাই একসাথে থাকে। রাজা খুব খুশি হয়। আর বলে- “আমার সোনার রাজ্য”।
গল্প থেকেও অনেক কিছু শেখার আছে। যদিও আমি পুরো গল্পের কিছু কিছু অংশ তুলে ধরেছি। তারপরো কিছু জিনিস খুবই পরিষ্কার আছে।
আমাদের দেশও কিন্তু সোনার। এখানে কিছুর কমতি নেই। সোনার মানুষ ও আছেন এখানে। খুঁজলেই পাওয়া যাবে। আবার কিছু আবর্জনাও আছে। তাদের কারণে আজ আমাদের দেশটা সোনার দেশ হওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সোনার মানুষ হওয়া খুব একটা কষ্টের নয়। ভালো হও…ভালো রও…অন্যকে ও ভালো থাকতে দাও। একজন আরেকজনের উপর আঙুল না তুলে ভুল গুলো নিজেরাই শুধরে নাও। উদার হও। তখন দেখবে মানুষের ভেতরটা। মানুষ কত সুন্দর হয়। আমাদের দেশ তো সরকারের। এখানে রাজা নেই। আমরা সবাই তো রাজা। আমরা কি পারি না আমাদের সরকার কে সাহায্য করতে??? সেখানের প্রধান মন্ত্রী যে ই হোন না কেন? তাঁরাও তো আমাদের মত মানুষ। আমরা কি পারি না?? তখন দেখুন না……দেশকে সোনার হওয়া দেখে কে আটকায়????
কোন দেশ কখনো পারফেক্ট হয় না, এটাকে পারফেক্ট বানাতে হয়।
আর আমরাই পারি এটা করতে। পারবো না কেন? একটা বার চেষ্টা করেই দেখুন না। দেখবেন খুব ভালো লাগছে। চারিদিকে শান্তি মনে হবে।
২৬টি মন্তব্য
ইনজা
সুন্দর অনুভব, আপনার সাথে একমত।
সায়মা নুর নাতাশা স্নিগ্ধা
ধন্যবাদ 🙂
আবু খায়ের আনিছ
সব প্রশ্নের সাথে সহমত। আমরা প্রত্যেকে মিলেই দেশটাকে একটা সোনার দেশ বানাইতে পারি।
সায়মা নুর নাতাশা স্নিগ্ধা
সবাই তো এক হয় না 🙁
আবু খায়ের আনিছ
সময়ের প্রয়োজনে এক হয়ে যাবে, সেই আশায় থাকি আমরা।
সায়মা নুর নাতাশা
জ্বি স্যার…
জিসান শা ইকরাম
খুবই ভাল লিখেছেন।
আমরা নিজেরা ভাল থাকিনা কেনো?
নিজেরা আমাদের চারপাশ টাকে ভালো এবং সুন্দর রাখলেই দেশ একদিন সোনার দেশে পরিনত হবে।
সায়মা নুর নাতাশা স্নিগ্ধা
প্রত্যেকেই নিজেরা কম বেশি ভালো আছে। কিন্তু অনেকে আছে যারা অন্যকে ভালো থাকতে দেয় না তাদের ক্ষমতার বলে। সবাই নিজেরাই বড় হয়। অন্যকে হতে দেয় না 🙁
জিসান শা ইকরাম
নিয়মিত লেখুন সোনেলায়। অন্যের লেখা পড়ুন।
সায়মা নুর নাতাশা
জ্বি…ধন্যবাদ বাবা…তোমার প্রচুর প্রেশনা পাই আমি…:)
ঘুমের ঘোরে কেটে যাওয়া অনন্ত পথ
খুব সুন্দর চিন্তাধারা
শুভকামনা
সায়মা নুর নাতাশা স্নিগ্ধা
ধন্যবাদ 🙂
মোহাম্মদ আয়নাল হক
অসাধারণ সুন্দর উপস্থাপনা।
সায়মা নুর নাতাশা স্নিগ্ধা
ধন্যবাদ 🙂
ব্লগার সজীব
আমরাই পারি দেশটিকে সোনার দেশে পরিনত করতে। গল্পের ছলে সুন্দর একটি পোষ্ট দিলেন।
সায়মা নুর নাতাশা স্নিগ্ধা
🙂 জ্বি আমরাই পারি।
কিন্তু আমাদের ছোটদের পাত্তা কে দেয়??? বড়রা ছোটদের কথা শোনে না 🙁
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
আমার সোনার বাংলা -{@
সায়মা নুর নাতাশা স্নিগ্ধা
আমার সোনার বাংলা 🙂
অপার্থিব
// কোন দেশ কখনো পারফেক্ট হয় না, এটাকে পারফেক্ট বানাতে হয়।//
রং দে বাসন্তী সিনেমার এই সংলাপটা আমারও খুব প্রিয়। লেখাটা আরো একটু বিস্তারিত ও গোছালো ভাবে লিখলে হয়তো আরো ভাল হত।
সায়মা নুর নাতাশা স্নিগ্ধা
জ্বি। আমারো অনেক বেশি প্রিয়। তাই এই পোস্টে এড করেছি 🙂
আমি গুছিয়ে লিখতে পারিনা 🙁
মেহেরী তাজ
সুন্দর লিখেছেনে।
দেশকে সোনার বানাতে হলে নিজেকে উদার,সৎ ও পরিশ্রমী হতে হবে….
খুব ভালো…
সায়মা নুর নাতাশা স্নিগ্ধা
জ্বি 🙂 ধন্যবাদ
নীলাঞ্জনা নীলা
“কোন দেশ কখনো পারফেক্ট হয় না, এটাকে পারফেক্ট বানাতে হয়”—-এই লাইনটি পড়েছি কোনো এক বইয়ে। আমি কোট করে রেখেওছিলাম। খুব মনে ধরেছিলো কথাটা তাই।
কিন্তু পারফেক্ট কারা বানাবে? যে যায় লঙ্কায়, সে-ই যে হয় রাবণ। আর জনগণের কথা কি বলবো? যারা সৎ, তারাই মরে।
খুব সত্যি একটা কথা সোনার বাংলাকে ব্রোঞ্জের বাংলা হিসেবেও বলতে পারিনা। যদিও খুব কষ্ট হয়। একান্ত আপন যে আমার দেশ।
সায়মা নুর নাতাশা স্নিগ্ধা
এটা আমি “RANG DE BASANTI” নামের একটা সিনেমায় দেখি। সেখান থেকেও আমি মনে রাখি লাইন টা 🙂 আমারো খুব মনে ধরেছিলো 🙂
🙁 জ্বি। কারা করবে! এত মানুষ থেকেও যেন অভাব। আর যায় তো ভালোরায়। খারাপদদের ও উন্নতি হয় না 🙁
নীলাঞ্জনা নীলা
ঠিক তাই? রঙ দে বাসন্তী সিনেমার ডায়ালগ এটি।
ইস এতো ভুলো মন আমার। 🙁
সায়মা নুর নাতাশা
মনে করিয়ে দিলাম তো … 😀