আসুন আজ রাতে ঘুমানোর আগে নিজেরাই নিজেদের দোষ ও গুণের একটা হিসেব মেলাই। ভালো কাজ কি কি করলাম। মন্দ কাজই বা কি কি করলাম। মানুষের উপকারে আসলাম কতটুকু বা অপকারই করলাম কতটুকু। মানুষের সাথে ভালো না মন্দ কেমন ব্যবহার করলাম। পরকালের সামান কিছু যোগার করতে পেরেছি কিনা।সকাল গেল। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হল। আবার বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা। অবশেষে নেমে এলো রাত।

এখন করোনাভাইরাসের দুঃসহ সময় অতিবাহিত করছি আমরা সবাই। আমরা মানুষ হিসেবে কে কতটুকু মানবিক আচরণ করেছি। আমরা আমাদের ওপর ন্যস্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য সততা নিষ্ঠা ন্যায়পরায়ণতা নিয়ে পালন করেছি কিনা। আপনি যে কাজে বা পেশায় ছিলেন সেখানে সে দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেছেন কিনা। কারো সঙ্গে অসৌজন্য, অশোভনীয় বা অভদ্র আচরণ করছেন কিনা। আপনার সৃষ্টিকর্তার নিকট আপানার শারীরিক সুস্থতা, পারিবারিক নিরাপত্তা, রিজিকের শোকরিয়া আদায় করেছেন কি ?আপনার নামাজ তথা আপনার ধর্ম অনুযায়ী ইবাদত বন্দেগী প্রার্থনা করেছেন কিনা। নিজের ওপর নিজে অসন্তুষ্ট হয়েছেন কয়বার। আল্লাহ্‌ আপনাকে সুখে রাখে নি বলে অভিযোগ করেছেন কয়বার। আর আপনার রিজিকের ব্যবস্থা করে দেয়ার জন্য সৃষ্টিকর্তাকে কি একবারের জন্যেও থ্যাংক ইউ বলেছেন? সন্দেহ হয় আমরা একবারের জন্যেও আল্লাহ্‌র দরবারে থ্যাংক ইউ বলেছি কিনা। কেননা আমার বরাবরের মতোই শোকর করতে ভুলে যাই। তবে খাবার খেতে কখনো ভুলি না। এ ভুল কারোই হয়না।

আমরা রক্তে মাংশে গড়া মানুষ। আমরা কেউই ফেরেশতা নই। নই আমি তুমি সে কেউই কিন্তু ভুলত্রুটির ঊর্ধ্বে। আমরা ভুল করি। অথচ আমরা খুব একটা আত্ম-সমালোচনা করিনা। করিনা সৃষ্টিকর্তার দরবারে তওবা। তবে অন্যের সমালোচনা, পরনিন্দা, পরচর্চা আর গীবত করতে ছাড়ি না। মহান আল্লাহ্‌ রাব্বুল আলামিন কোরআন মজিদে গীবত সম্পর্কে কঠোর শব্দ উচ্চারণ করেছেন।মহান আল্লাহ্‌ ইরশাদ করেছেন—“তোমরা একে অপরের গীবত বা পরনিন্দা করো না। (কারণ একটি জঘন্য পাপ। আপন ভাইয়ের গোশত খাওয়ার মতোই জঘন্য গুনাহ।) তোমাদের কেউ কি আপন মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়া পছন্দ করে? (নিশ্চয় তা পছন্দ করেনা; বরং ভাববে এত বিকৃত কথা!) সুতরাং তোমরা গীবতকেও ঘৃণা করো”।

আসুন আজ সবকিছু বাদ দিয়ে নিজেরাই নিজেদের সমালোচক হবো। হবো আত্ম-সমালোচক। নিজেরাই নিজেদের কাজের দোষ ত্রুটির বিচার করবো। হবো বিচারক। ভালো করে ভাবুন জীবন থেকে হারিয়ে যাওয়া, মুছে যাওয়া দিনটির কার্যকলাপের কথা। ভালমন্দের কথা। ভালো করে হিসেব কষুন। এক রত্তিও ছাড় নয় কিন্তু। এবং এর থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেরা নিজেদেরকে একটু একটু করে শোধরিয়ে নেবার জন্য ব্রতী হবো। নিজেদেরকে পরকালের জবাবদিহির জন্যে তৈরি করবো। আসুন প্রতিদিন নিজেই নিজের কাছে জবাবদিহি করি। তাহলে নিজেদের মনের অতৃপ্তি, অসন্তুষ্টি, অখুশীগুল ধীরে ধীরে লুপ্ত হতে থাকবে। নিজেরাই নিজেদেরকে সংশোধন, পরিবর্তন, পরিমার্জন করে নিতে পারবো। সৃষ্টিকর্তার প্রতি কোনো অভিযোগ থাকবে না। মনে কোনো দুঃখ ক্লেশ হতাশা অশান্তি ভর করতে পারবে না। আমরা সৃষ্টিকর্তার প্রিয় বান্দা হতে পারবো। আখেরে নিজেরাও লাভবান হব ইন শা আল্লাহ্‌।

 

৫৫৯জন ৪৬১জন
0 Shares

১৯টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ