
মধ্যাহ্ন সবেমাত্র গড়াতে চলছে…
বিনু ও রাঘব দুজনি বসে আছে হরিবাবুর খাসকামরায়। খাসকামরার চারপাশের পরিবেশ অত্যন্ত সুন্দর হলেও গাছে গাছে অসংখ্য বাদুড় আর পেঁচার উপদ্রব ছিলো বড্ড।
বাদুড় আর পেঁচার কিচিরমিচির শব্দ অদ্ভুত রকমের। এমন কিচিরমিচির শব্দ রাত্রিবেলা শুনলে তো উপায় থাকবে না।
কেমন করে হরিবাবু রাত্রিবেলা ঘুমান।
এসব দেখে বিনু ভাবছে ভূত মনে হয় কখনো বাদুড় কখনো বা পেঁচা হয়ে এদিক ওদিক ঘুরে বেড়ায়!
বিনুর এমন উদ্ভট ভাবনা রাঘব সবসময় উপড়িয়ে দিতো। এ নিয়ে মাঝেমধ্যে দুজনের মধ্যে তর্ক জড়িয়ে যেতো। দুজনি তর্করত্নে পারদর্শী ছিলো।
তর্কবিতর্কের মধ্যে দুজনি একে অপরের সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিতো।
এক পা দু পা করে খাসকামরায় হরিবাবুর আগমন।
বিনু হুট করে বলে উঠছে এতো বড় বাড়িতে এতসব ভূতপ্রেত। আপনি কি ভূতের সর্দার?
হরিবাবু হঠাৎ এমন কথা শুনে চমকে উঠলেন।
এ কেমন কথা বিনুর মুখে!
হরিবাবু রাগান্বিত ভাব।
মনে হচ্ছে পায়ের রক্ত মাথায় উঠে গিয়েছে।
বড্ড অশান্ত ও অস্থির দেখাচ্ছে হরিবাবুকে।
হরিবাবু ধমক দিয়ে বলছেন এই ছেলে এসব আলতু ফালতু কথা তোমায় কে বলছে?
বলো তো?
আজ্ঞে না ভূতপ্রেতের সর্দার মশাই।
আমি ভূতপ্রেত দূরে কথা আলতু ফালতু ভূতের সর্দারকেও ভয়টয় পাই না।
কিন্তু আপনার পাড়ায় অজস্র ভূতের আনাগোনা আছে ভূতের সর্দার মশাই।
বিনুর এমন হতবাক কথাবার্তা শুনে হরিবাবু অগ্নিশর্মা হয়ে আছেন মনে হচ্ছে বিনুর একটা বিহিত আজ করেই ছাড়বেন।
রাঘব বিনুকে ধমক দিয়ে বলছে এসব কী বলছিস?
জানিস উনি কে?
বিনু ছেঁচিয়ে বলে উঠছে জানি জানি।
উনি হলেন ভূতপ্রেতের সর্দার হরিবাবু।
যার বাড়িটা আমরা দুজন মিলে বাড়া নিয়েছিলাম।
প্রথম রাতটা ভালোভাবে ঘুমাতে পারি নি ভূতপ্রেতের জ্বালায়।
আর এখন খাসকামরায় এসে শান্তি পাচ্ছি না ভূতপ্রেতের অশরীর আত্মার জ্বালায়। ধরতে পারলে একেকটাকে চিবিয়ে খেতাম জেন্তো।
বিনু হরিবাবুকে বলছে আচ্ছা ভূতপ্রেতের সর্দার মশাই।
এই আনাড়ি ছেলে তুমি বারবার একি কথা আমায় বলে যাচ্ছো। জানো আমি কে তোমায় এইমহুর্তে বন্ধি করতে পারি।
আজ্ঞে না ভূতপ্রেতের সর্দার মশাই আর বলবো না এইবারের মতো ক্ষমা করে দেন আমায়।
আমি আপনাকে বলতে চেয়েছিলাম যে,বাড়িতে এতসব ভূতপ্রেত পালিয়ে রেখেছেন কতটাকা মাইনা নেন ভূতপ্রেতের কাছ হতে?
এই হতচ্ছাড়া হারামজাদা এটা হলো জমিদার বাড়ি এটা ভূতপ্রেতের বাড়ি নয়।
তোমার মতো একটা জেন্তো মানুষরূপী ভূত আজও পর্যন্ত দুচোখ ভরে দেখি নাই।
আজ্ঞে না, কর্তা মশাই রাগ করবেন না ঐ বলছিলাম আরকি। যদি ভূতপ্রেতের কাছ হতে মাইনা পেয়ে থাকেন তা তো বলা যায়না।
এ ছেলে শুনো,
আমি কোন ভূতপ্রেতকে বাড়ি ভাড়া দেইনা।
বুঝলাম সর্দার মশাই।
বুঝলাম আপনার কপালে ভূতের বাসা।
তবে আপনার বাগানবাড়িতে একটা রাত্রিও ভালোভাবে ঘুমাতে পারিনি। এরজন্য আপনি পুরো মাইনা পাবেন না।
বিনুর এমন কথাবার্তা শুনে হরিবাবু বলছেন এই ছেলে শুনো তোমার ভালো না লাগলে আমার বাগান বাড়ি থেকে চলে যাও।
আজ্ঞে, কর্তা মশাই এ কী বলছেন?
আপনি জানেন অতিথি অসন্তুষ্ট হলে কী হয়।
এই ছেলে অযথা বকবক করো না।
আমার যা হওয়ার হবে তোমাকে নিয়ে এতো ভাবতে হবে না।
এদিকে রাঘব চুপ করে বসে আছে।
আর মনে মনে ভাবছে হয়তো আজ আর হরিবাবুর বাগানবাড়িতে থাকতে পারবে না।
বিনুর এমন কথাবার্তা শুনে প্রথম থেকেই অগ্নিশর্মা হয়ে আছেন হরিবাবু।
রাঘব হরিবাবুকে বলছে আজ্ঞে কর্তামশাই বিনু না বুঝে না শুনে আপনাকে অনেক কথা বলে ফেলছে।
আমার মুখের দিকে চেয়ে ওকে ক্ষমা করে দেন।
ঠিক আছে রাঘব তোমার মুখের দিকে চেয়ে বিনুকে এবারের মতো ক্ষমা করে দিলুম।
১৪টি মন্তব্য
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ভূত প্রেতের সর্দার মশাই 🤣🤣🤣🤣 । বিনুরতো ভালোই সাহস! ধন্যবাদ দাদা। আগামী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম
প্রদীপ চক্রবর্তী
সাধুবাদ দিদি।
ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
সঞ্জয় মালাকার
পড়ে বেশভালো লাগলো দাদা, পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
ভালো থাকবেন সবসময় শুভ কামনা রই।
প্রদীপ চক্রবর্তী
সাধুবাদ দাদা।
ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
সুপায়ন বড়ুয়া
ভুতের গল্প শুনতে মজা
ছোট্ট যখন ছিলাম
তখন বড় ইচ্ছে ছিল
ভুতকে যদি পেতাম।
ভাল লাগলো। শুভ কামনা।
প্রদীপ চক্রবর্তী
বাহ্!
সাধুবাদ দাদা।
ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
তৌহিদ
বিনুর সাথে হরিবাবুর ভালোই চোটপাট হচ্ছে দেখছি। হবিবাবুকে রাগাতেই সে এমন নাম দিয়েছে ভূতের সর্দার!!
ভালো লাগছে পড়তে।
প্রদীপ চক্রবর্তী
একদম,
সাধুবাদ দাদা।
ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
সুরাইয়া পারভীন
হা হা হা হা হা
বিনু হরিবাবুকে ভূতের সর্দার বানিয়ে ছাড়লো
ওদের কথোপকথন দারুণ লেগেছে।
পরের পর্বের জন্য শুভকামনা রইলো দাদা
ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সাবধানে থাকুন
প্রদীপ চক্রবর্তী
সাধুবাদ দিদি।
আপনিও ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
হালিম নজরুল
বিনুর তো বেশ সাহস!
প্রদীপ চক্রবর্তী
একদম,
সাধুবাদ দাদা।
জিসান শা ইকরাম
ভুতের সর্দার! ভালো লাগলো সম্মোধনটি 🙂
মজা পাচ্ছি পড়ে।
শুভ কামনা।
প্রদীপ চক্রবর্তী
প্রাপ্তি।
সাধুবাদ দাদা।
ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।