
আমরা অনেক সময় কিছু অদ্ভুত নিউজ পড়ে আৎকে উঠি! নিউজটা এরকম যে, ‘পরিবার থেকে প্রেমের সম্পর্কটা মেনে না নেওয়ায় প্রেমিক-প্রেমিকার আত্মহত্যা! ভাবতে পারেন কতটা বিস্ময়কর নির্মম একটা নিউজ?
আবার মাঝে মধ্যে এরকমও হয় প্রেমিকার বিয়ে হয়ে গেছে পাগল প্রেমিকের আত্মহত্যা! তার কিছুদিন পর স্বামীর বাড়িতে সেই প্রেমিকাও আত্মহত্যা করে! আমি জানিনা এই নিউজটা আপনাদের কাছে কতটা বিস্ময়কর! কিন্তুু আমি দৃঢ়শক্তিতে বলতে পারি এসব নিউজ গোটা সুশীল জাতির জন্য লজ্জাজনক।
আমরা স্বীকার করি আমরা সভ্য-সুশীল জাতি! কিন্তুু আমরা যে কতটা অসভ্য আর নির্মম জাতি তা গোটা কয়েক নিউজ দেখলেই বুঝা যায়। সাম্প্রতিক এক ধারণায় দেখা যায়, দেশের আত্মহত্যার তালিকায় প্রেমে ব্যর্থ হওয়া যুবক-যুবতী’র সংখ্যাই বেশি! এমন কেন হয়? কেন প্রতিবছর শত শত নিষ্পাপ লাশের মিছিল দেখতে হয়। হ্যাঁ, এটাও মানতে হবে যে কিছু খারাপ ধোকাবাজ ছেলে-মেয়েদের কারণে অনেক তরুণ-তরুণী আত্মহত্যা করে! কিন্তুু পরিবারের জন্য অনেক তাঁজা প্রাণের লাশ দেখতে হবে কেন?
আমরা অনেক সময় মেয়েদের বিশ্রী ভাষায় গালি দিয়ে বলি শালি বোধয় ইচ্ছে করে বিয়ে করতেছে! কিন্তুু পর্দার আড়ালের খবরটা হয়তো আজীবন অজানাই রয়ে যায়। কেউ জানতে চায় নাহ মেয়েটা কতটা কঠিন পরিস্থিতির স্বীকার। শুধু মাত্র পরিবারের সুখের জন্য সব কিছু মেয়ে নেয়। আর আপনারা পরিবারের লোকেরা একবারও জানতে চাননা মেয়েটা কী চায়? তার পছন্দটা কী?
শুধু মেয়ের কথা বলছি কেন কিছু ছেলেও আছে যাদের সেক্রিফাইস আর মানিয়ে নিতে জীবনটাই ত্যানা ত্যানা! এখন চাইলেও বুক ভরে শ্বাস নিতে পারেনা। শুধু মাত্র পরিবারের জন্য নিজের সব শখ, আহ্লাদ, ভালো লাগা, ভালোবাসাকে সেক্রিফাইস করে। আর আপনারা পরিবারের লোকেরা একবারও জানতে চান নাহ ছেলেটা কী চায়? তার পছন্দটা কী?
আমি বুঝি নাহ পরিবারের লোকেরা এত কঠিন কেন? কোনো বিষয়কে এতটা কঠিন ভাবে দেখে কেন? তারা কি বুঝতে চায় নাহ মানুষের মনের সুখটাই বড়। জোড় করে মেয়েকে বিয়ে দেন, একবারও কী ভেবেছেন মেয়েটা কোথায় সবচে বেশি ভালো থাকবে! মেয়েটার শান্তি কতটা নিশ্চিত হবে? একবারও ভাবেননি শুধু টাকা আর সম্পদের লোভে নিষ্পাপ প্রাণগুলো নষ্ট করে দিচ্ছেন।
তবে একটা কথা চিরন্তন সত্য আপনারা কোনোদিন মাপ পাবেন না! এক সন্তানের কাছে, দ্বিতীয় কাল কিয়ামতের মাঠে। লোভের ফল যে কতখানি ভয়ানক তা মরার পর বুঝবেন।
যাইহোক, আমি সুশীল, ভদ্র পরিবার -পরিজনদের উদ্দেশ্যে বলছি ছেলে মেয়েদের বিয়ের আগে তাদের পছন্দ-অপছন্দের কথা জিজ্ঞাস করুন! জিজ্ঞাস করুন তারা কি চায়। অযথা নিজের জিদ আর লালসার বশে এমন সিদ্ধান্ত নিবেন না যার ফল হয় দুটি নিষ্পাপ প্রাণের মৃত্যু!
২৩টি মন্তব্য
তৌহিদ
প্রথমেই সোনালায় স্বাগতম তোমাকে। আশাকরি এই প্লাটফরম ভালো লাগবে।
এমন একটি বিষয় নিয়ে লিখেছো যেটা আমাদের সমাজের উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েদের কমন সমস্যা। তারা আবেগ দ্বারা নিয়িন্ত্রিত হয়ে আত্মহত্যার মত পথ বেছে নেয় যা মোটেই উচিত নয়। জীবনে সমস্যা আসবেই, এসব মোকাবেলা করেই সামনে এগুতে হয়। প্রয়োজনে পরিবারের সাহায্য নিতে হবে। তারা যা করবেন মনে রেখো তোমার ভালোর জন্যই করবেন।
মরে গেলেতো সবই গেলো তাইনা? জীবনকে উপভোগ করতে শিখতে হবে, জানতে হবে। জীবন কোন সিনেমা নয় যে নায়ক নায়িকা সবসময় মিলিত হবে। ভেবে দেখবে কিন্তু।
আর হ্যা, ব্লগের নীতিমালা ভালো করে পড়বে। ফেসবুক আর ব্লগ এক জিনিস নয়। তাই শব্দচয়ন বুঝেশুনে করবে আর লিখবে।
লিখতে থাকো, সব ঠিক হয়ে যাবে একসময়।
শুভকামনা রইলো।
মাছুম হাবিবী
অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই। আপনার হাত ধরেই সাহিত্যচর্চায় মনোনিবেশ করতে চাই। সব সময় দোয়া করবেন যেন ভালো কিছু উপহার দিতে পারি, দেশকে এবং দেশের মানুষকে।।
জিসান শা ইকরাম
স্বাগতম আপনাকে সোনেলার উঠোনে।
গুরুত্বপূর্ণ একটি সামাজিক সমস্যা নিয়ে লিখলেন৷ আমাদের সামাজিক দৃষ্টিভংগি এর জন্য দা। আমরা কি এক কারনে এর মধ্যে আবদ্ধ হয়ে গিয়েছি। বাবা মা প্রেম করে বিয়ে করেছেন, তাদের সন্তানকেও সন্তানের পছন্দে বিয়ে দিয়ে নারাজ তারা।
ভাল লিখেছে। নিয়মিত লেখুন।
শুভ কামনা।
মাছুম হাবিবী
অনেক অনেক ধন্যবাদ দাদা। আসলে কিছু পরিবার মাঝে মধ্যে তাদের জিদ অার লালসার কারণে নিষ্পাপ ছেলে মেয়েদের জাহান্নামে দিকে ঠেলে দিতেও দ্বিধা করে না। অামি এই বিষয়টাই ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছিলাম।।
ছাইরাছ হেলাল
এই তো কদিন আগেও এক প্রতিবেশীর করুন ত্যাগ লক্ষ্য করে ব্যথিত হয়েছি।
যে চলে গেল সে তো গেল, যাদের রেখে গেল তাড়া কেমন করে টিকে থাকে সেটি কিন্তু ভাবার বিষয়।
আসলে সব কিছু সহনশীল হৃদয় দিয়ে ভেবে দেখলে অনেক অনাকাঙ্খিত ঘটনাই এড়ানো যেতে পারে।
প্রথম লিখলেন, লিখুন নিয়মিত আমাদের সাথে রেখে।
মাছুম হাবিবী
অনেক অনেক ধন্যবাদ দাদা। অাপনাদের পাশে থেকো সাহিত্যচর্চয় মনোনিবেশ করতে চাই। ভালো থাকবেন
ছাইরাছ হেলাল
আমরাও আপনাদের লেখা পড়তে চাই নিয়মিত,
এই চর্চার অংশ হিশেবে।
প্রদীপ চক্রবর্তী
যা সময়োপযোগী সামাজিক সমস্যা নিয়ে লেখা।
ভালো লাগলো।
শুভকামনা আপনার জন্য।
মাছুম হাবিবী
অনেক অনেক ধন্যবাদ দাদা ভাই। ভালো থাকবেন।
সাবিনা ইয়াসমিন
একজন আত্মহত্যাকারী কতটা কস্ট আর যাতনা ভোগের কারনে নিজেকে হত্যা করে তা ভাবনার অতীত। সব সময়ে যে পরিবারের দোষ থাকে তাও না। তবে পরিবার প্রতক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে জড়িত থাকে যা অস্বীকার করা যাবে না। যখন কেউ আত্মহত্যা করার অবস্থানে চলে যায় বা ঐ অবস্থার মধ্যে থাকে, তখন তার মাঝে কোন না কোন পরিবর্তন দেখা দেয়। পরিবারের লোকেরা যদি একটু পর্যবেক্ষণে রাখেন তাহলে তারা ঠিকই বুঝতে পারেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো পরিবার তাদের সিদ্ধান্তটা ব্যাক্তির উপর চাপিয়ে দিয়েই নিজেদের দায় সারেন। একটা সম্পর্ক বা ঘটনা থেকে বেরিয়ে এসে আরেকটা জীবন শুরু করা অনেকের ক্ষেত্রেই সহজ হয়না। তাকে মেন্টাল সাপোর্ট দিয়ে হয়, তার পাশে ছায়ার মতো লেগে থাকতে হয়, যেটা পরিবার বা আসেপাশের মানুষজন করে না। যেকোনো অকাল মৃত্যুই দুঃখজনক, তবে আত্মহত্যা সমাজের জন্য দুঃখজনক ও লজ্জাজনক। এর দায় পরিবার এবং সমাজের উপর বর্তায়।
সোনেলা উঠোনে আপনাকে সুস্বাগতম। আমাদের এই সুন্দর ব্লগ পরিবারে নিজেকেও একজন সদস্য করে নেওয়ার জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। আপনার ভালো লাগা, মন্দ লাগা যা কিছু ইচ্ছে হয় তাই নিয়ে লিখুন। আমরা পড়বো। নিয়মিত লিখুন, পাশাপাশি অন্যদের লেখাগুলো পড়ে আপনার মতামত দিন। একটি পরিবারে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও মতবিনিময় আন্তরিকতা বাড়ায়।
ভালো থাকুন, শুভ কামনা 🌹🌹
মাছুম হাবিবী
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপুমণি। অাপনিও ভালো থাকবেন।।
মোঃ মজিবর রহমান
আপনার লেখার সাথে সম্পূর্ণ সহমত কিন্তু আমাদের এই সমাজ বেশিরভাগ মানুষ তা মানবেনা। তাঁদের ইগো বা সামাজিক বা ইচ্ছার কাছে সন্তান দের ইচ্ছা গৌণ।
আপনার লেখা আরো পড়তে চাই। ভাল থাকুন।
মাছুম হাবিবী
জ্বী ভাই অামাদের ইগো আর জিদ অামাদের ধ্বংস করে দিচ্ছেন। কোনো বিষয়কে সহজ ভাবে চিন্তা না করে অামরা কঠিন করে তুলি। তাই অামাদের এই অবস্থা। অনেক ধন্যবাদ অাপনাকে ভালো থাকবেন।।
মনির হোসেন মমি
প্রথমে আপনাকে স্বাগতম জানাচ্ছি সোনেলা পরিবারে।এখানে আমরা সবাই আন্তরিক।যে কোন সমস্যায় নক করতে দ্বিধা করবেন না।নিজে লিখুন অন্যের লেখায়ও মন্তব্য সমালোচনা করুন।প্রত্যেকটি পরিবারে মা বাবারা যদি তাদের সন্তানদের মাঝে বন্ধুত্বের মনোভাব সৃষ্টি করতে পারেন তবে সেই পরিবারে এ রকম আত্মহত্যার প্রবনতা কমে যায়।সুন্দর লেখা।লিখতে থাকুন।শুভ কামনা।
মাছুম হাবিবী
অনেক অনেক ধন্যবাদ। জ্বী সব সময় চেষ্টা করবো ভালো কিছু দেয়ার, এবং ভালো কিছু লেখার। ভালো থাকবেন অাপনিও
তৌহিদ
ধন্যবাদ মাছুম, সবার মন্তব্যের উত্তর দেয়া দেখে ভালো লাগলো।
নাজমুল হুদা
খুব সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে লিখেছেন।
আমাদের হাত ধরেই হোক আগামীর সমাজ নিমার্ণ ।
শুভেচ্ছা নিবেন
মাছুম হাবিবী
জ্বী অনেক ধন্যবাদ ভাই
আরজু মুক্তা
কাউন্সিলিং আর শেয়ারিং এই দুটা এখন বড় দরকার।
ভালো লাগলো আপনার লিখা
মাছুম হাবিবী
একদম ঠিক দিদি। নিজের ভেতরের কথাগুলো শেয়ার করতে পারলে অামরা অনেক কষ্ট থেকে রেহাই পাবো। ধন্যবাদ
শাহরিন
আসলে ছেলে মেয়েরাও মাঝে মাঝে ভূল সিদ্ধান্ত নেয়, নয়তো পালিয়ে বিয়ে করার এক মাস পরে মেয়েকে রেখে ছেলে পালিয়ে যাবে কেন!!
তবে অবশ্যই বিয়ের ব্যপারে ছেলে মেয়ের মতামত জানা আবশ্যক। ভাল লেগেছে লেখাটির বিষয়বস্তু।
মাছুম হাবিবী
জ্বী অনেক ধন্যবাদ ভাই।।
শাহরিন
আমি আপু ☺