শপিং মল থেকে বের হবার পথে পরিচিত হাজারো অচেনা শরীরের ভিড়ে খুব কাছের হারানো একজনের, শরীর ছুঁয়ে ভেসে বেড়ানো পরিচিত সুগন্ধি দুরের কারো কথা মনে করিয়ে দেয়। কখনো কখনো একটা পরিচিত মানুষ কিভাবে একটা পারফিউম হয়ে যায়! ভেবে বিস্মিত হবার পাশাপাশি, একটু কি ব্যথিত হয়, মন? সামনে একটু হেঁটে ডানপাশের ওয়েস্ট পেপার বিনে নিজের গোটা মনটাকে-ই ফেলে বাইরের আলোয় দৃশ্যমান শিহাবকে বড্ড নিশ্চিন্ত মনে হয়। তারপরও ঘ্রাণটুকু আরো অনেকক্ষণ সাথে জড়িয়ে থাকে। মনে?
পার্কটাকে বামে রেখে, দুই সারি শিরিষ গাছকে দুপাশে রেখে মাঝ দিয়ে পথ। ইটের সলিংযের ওপর হাল্কা পলেস্তারা পারেনি যেমন জুতোর শব্দকে আরো মোলায়েম করতে, তেমনি পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলির গোমর বন্ধ রাখতেও। আজকাল সবা-ই সব জানে। তবে কতটুকু মানে?
পাশাপাশি অনেকগুলি বেঞ্চের একটায় একজন একা। বসে আছে। দৃষ্টি সামনে.. মন.. হারিয়েছে দূরে কোথায়ও।
কোথায়?
মেয়েটি নিজেও জানে কি?
চমতকার শাড়ি। স্লিম ফিগারে। মানানসই। বেশ। কপালের লাল টিপ শেষ বিকেলের আলোকচ্ছটায় চেহারাকে উজ্জ্বল, আরশির চকচকে আভার মত রাংগিয়ে তুলেছে! সামনে দুপাশ থেকে ছেড়ে দেয়া চুল.. বাতাসে উড়ছে। খোঁপার সাদা জবা অতিরিক্ত শুভ্রতায় শিহাবকে ধাধিয়ে দেয়.
পলকের তরে। তবে দ্বিতীয় পলক পরতেই পরবর্তী প্রহর থেমে যায়। নি:সংগ মেয়ে আপন মনে হাসে। একা একা। একটু বেঁকে থাকা ঠোট অস্ফুট বেদনায় ধীরে ধীরে মেলে যায়। সারিসারি মুক্তোদানার ঝলকে আবারো প্রহর থেমে যায়। হাসছে নীরবে। অথচ ওর দুচোখে রাজ্যের বিষন্নতা দেখতে পেয়েছে, সামনে দিয়ে পাশ কাটানোর সময়। খুব পরিচিত কিন্তু ঠিক কিসের মতন ঘ্রাণ কেন জানি মনে পড়তে চায় না।
অথচ মল থেকে বের হবার সময় ও নামটা মনে ছিল.. পারফিউমটার।
আর পারফিউমটা যার শরীর ছুঁয়ে ছুঁয়ে সুগন্ধি হয়ে ভাসতো বাতাসে, সে মেয়েটার নামও.. এখন মনে আসছে না।
মনটা যে ওয়েস্ট বিনে ফেলে এসেছে, ভুলে যায় শিহাব।
১২টি মন্তব্য
মোহাম্মদ আয়নাল হক
অপূর্ব লিখনির বহির্প্রকাশ।প্রিয় দাদা।
মামুন
ধন্যবাদ প্রিয় ভাই।
ইনজা
দারুণ শব্দমালায় মুগ্ধতা।
মামুন
আপনার সুন্দর অনুভব জেনে ভাল লাগল।
ধন্যবাদ।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
অনেক সময় ব্রেন ঝট খেলে এমনি হয় নিজের নামটিও ভুলে যাই।সুন্দর লেখা শুভ কামন না মামুন ভাই -{@
মামুন
ধন্যবাদ আপনাকে।
হ্যা, কখনো কখনো এমন হয় বৈকি।
শুভেচ্ছা রইলো ভাই।
অলিভার
“তীক্ষ্ণ দৃষ্টিশক্তি”
পুরো লেখাটা জুড়েই এই একটা জিনিষ বেশ ভালো ভাবে প্রকাশ পেয়েছে। নিজের অনুভূতির সাথে আশেপাশে কি হচ্ছে, কি চলছে এই সবেরই চমৎকার প্রকাশ রয়েছে লেখাটিতে।
মামুন
আপনার সুন্দর অনুভব আমাকে প্রেরণা দিল, আরো লেখবার।
অনেক ভাল থাকুন ভাই।
মেহেরী তাজ
হৃদয় খানের গানটার একটা লাইন মনে পড়ে গেলো “মন ছাড়া কি যায়রে বাঁচা”?
ভালো লিখেছেন ভাইয়া… 🙂
মামুন
হ্যা, শুনেছি গানটি।
ধন্যবাদ আপনাকে।
নীলাঞ্জনা নীলা
খুবই ভালো লিখেছেন। এককথায় অসাধারণ। (y)
মামুন
আপনার অনুভব আনন্দ দিল।
ধন্যবাদ। অনেক ভাল থাকুন।