সুন্দরবনের আশেপাশেই ১৯০টি শিল্প প্রতিষ্টান

বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের ১০ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে ১৯০টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান রয়েছে, যার মধ্যে ২৪টি লাল শ্রেণির অর্থাৎ মারাত্মক দূষণকারী। মাঝারি মাত্রায় দূষণকারী (কমলা-খ শ্রেণিভুক্ত) ১০৩টি ও স্বল্প দূষণকারী (কমলা-ক শ্রেণিভুক্ত) ৬৩টি শিল্প রয়েছে।

পরিবেশসচিব ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের পক্ষ থেকে দেওয়া এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে গতকাল বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপক্ষ ওই প্রতিবেদন দাখিল করে। আদালত আগামী ৯ মে শুনানির জন্য দিন রেখেছেন।

হাইকোর্টের নির্দেশ অনুসারে সুন্দরবনসংলগ্ন প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকায় (ইসিএ) বিদ্যমান শিল্পপ্রতিষ্ঠানসমূহের তালিকাসহ পূর্ণাঙ্গ তথ্যাদির বিবরণসংক্রান্ত ওই প্রতিবেদনের ভাষ্য, দাপ্তরিক নথি পর্যালোচনা ও সরেজমিনে পরিদর্শনকালে দেখা যায়, খুলনা বিভাগের খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলায় সুন্দরবনসংলগ্ন ইসিএ এলাকায় সর্বমোট ১৯০টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান আছে। বাগেরহাট জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে ৭৮টি, খুলনা জেলায় ৯২টি ও সাতক্ষীরা জেলায় ২০টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান/কলকারখানা/প্রকল্প আছে। এর মধ্যে ৩৬টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান বর্তমানে বন্ধ এবং ১৫৪টি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চালু আছে।

সেভ দ্য সুন্দরবনের সভাপতি শেখ ফরিদুল ইসলামের করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ২৪ আগস্ট হাইকোর্ট রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেন। সুন্দরবনের আশপাশের ১০ কিলোমিটার এলাকায় নতুন শিল্পকারখানা স্থাপনের অনুমোদনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আদালত ওখানকার ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে কতগুলো শিল্পকারখানা রয়েছে, তার তালিকা দাখিল করতে নির্দেশ দেন। এই নির্দেশ অনুসারে ওই তালিকা দাখিল করা হয়।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শেখ মোহাম্মদ জাকির হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন। পরে মোতাহার হোসেন বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অনুসারে পরিবেশসচিব ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের পক্ষে সুন্দরবনের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে কতগুলো শিল্পকারখানা রয়েছে, তার তালিকা গতকাল দাখিল করা হয়েছে।

আইনজীবী শেখ মোহাম্মদ জাকির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তালিকা অনুসারে ১৯০টি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাটি, পানি ও বায়ুদূষণকারী লাল শ্রেণির শিল্পপ্রতিষ্ঠান ২৪টি। এই ২৪টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান কোনোভাবে সুন্দরবনের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে থাকতে পারে না। কারণ, পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা অর্ডিন্যান্স ১৯৯৯ অনুযায়ী এ ধরনের শিল্পপ্রতিষ্ঠান ওই এলাকায় থাকার সুযোগ নেই। এসব শিল্পপ্রতিষ্ঠান সরিয়ে ফেলার বিষয়ে এবং রুলের ওপর ৯ মে পরবর্তী শুনানি হবে।

গত জুলাই মাসে পোল্যান্ডের ক্র্যাকাও শহরে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের শিল্প, বিজ্ঞান ও ঐতিহ্য-বিষয়ক সংস্থা ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির ৪১ তম অধিবেশনে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের অবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ সুন্দরবনের চারপাশের শিল্পকারখানা নিয়ে আপত্তি তোলা হয়। কমিটি সুন্দরবনসহ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ওপর একটি কৌশলগত পরিবেশগত সমীক্ষা প্রতিবেদনের সুপারিশ করে। তার আগে রামপাল প্রকল্পসহ সুন্দরবন ঘিরে গড়ে ওঠা শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে অনুমোদন না দেওয়ার জন্য বলে বিশ্ব ঐতিহ্য ঘোষণা ও তদারককারী ওই কমিটি।

সংগ্রহীতঃ দৈনিক প্রথম আলো।
ছবিঃ প্রথম আলো।

আমার কথাঃ বর্তমান সরকার বিবিধ উন্নয়ন কর্মকান্ড করে যাচ্ছেন শুরু থেকেই যা গত ৪৭ বছরে হয়নি, যার জন্য বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার প্রথম ধাপ উত্তরণ করেছে, এর পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামীলীগ সরকার এবং সরকার প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহোদয়কে অবশ্যই সাধুবাদ জানাই কিন্তু সাথে সাথে উন্নয়নের গ্যাঁড়াকলে পড়ে আমাদের জীব বৈচিত্র যেন ধ্বংস হয়ে না যায় তারও খেয়াল রাখা উচিত সরকারের।
আমাদের উচিত এমন ভাবে কর্ম পরিকল্পনা করা যাতে আমাদের ভবিষ্যৎ বংশধররা এর ফল ভোগ করতে পারে, সাথে সাথে সুন্দরবন সহ বাংলাদেশের যত বন আছে, গাছগাছালি, জীব বৈচিত্র যেন ঠিক থাকে তা খেয়াল রাখতে হবে, না হলে এ দেশ তো উন্নয়ন হবে কিন্তু সাথে সাথে দেশ মরুভূমিও হয়ে যাবে, সুতরাং সাধু সাবধান।

১জন ১জন
0 Shares

৮টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

মাসের সেরা ব্লগার

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ