শুভ্র পরী ( ০২ )
নাবিলার সাথে আমার শেষ দেখা হয়েছিল বুধবারে । এরপর থেকে তার আর কোন খোজ পাত্তা পাই নাই । ভেবেছিলাম পাগলামির ভূত ছেড়েছে । কিছুদিন চলে গেল । ওর কথা প্রায় ভুলেই গিয়েছিলাম । এক সকালে হঠাৎ পাশের ঘরে বিড়ালের ডাক শুনতে পেলাম । হার্টটা ধ্বক করে উঠল । এই প্রথম নাবিলার উপর অভিমান হল । অভিমানের কারণটাও ছিল অদ্ভুত । কেন জানি ওই বিড়ালের ডাকটা আমি আমার বিছানায় আশা করেছিলাম । হঠাৎ সংবিৎ ফিরে পেলাম । আনমনেই হাসি পেয়েছিল এইভেবে , আমি এই সব কি ভাবছি । জানি না নাবিলাকে দেখার আশায় কিনা আমি পাশের রুমে চলে গেলাম । যা দেখলাম তাতে আর একবার মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল । নাবিলা নেই । তার বিড়ালটাও নেই । অন্য একটি বিড়াল জানালার সানসাইডে বসেছিল ।
৭ অক্টোবর । রাত ১২ টা পাড় হয়ে গিয়েছিল । আমার ফোনে একটা কল আসল । রিছিভ করতেই ওইপাশ থেকে কেউ মিষ্টি গলায় বলে উঠল ..……
– ছিঃ ভাইয়া আপনার কাছে এইটা আশা করি নাই ! 🙁
– এক্সকিউজ মি । কে বলছেন ? ;? ;?
– নাবিলা বলছি ।
– ও আচ্ছা ভূতনী । :D)
– কিহ ! আমি ভূতনী ! ^:^
– হ্যাঁ , পরী আর ভূতনী , ওই একই হল ।
– কখনই না ! আপনি সবসময় আমার সাথে ঝগড়া করার তালে থাকেন ।
– এনিওয়ে , কি যেন বলছিলে ?
– ও তাই তো ! দেখেছেন , আপনার সাথে ঝগড়া করতে গিয়ে আমি আসল কথাটাই ভুলে গেছি ।
– না দেখিনাই । শুনলাম ।
– আজ আমার জন্মদিন ।
– ও , হ্যাপি বার্থডে । 🙂
– শুধু এটুকুই ?
– আরো কি চাও ?
– কাল আমাকে ফুচকা খাওয়াতে হবে ।
– আমার সময় নাই ।
– প্লিজ ভাইয়া । জাস্ট একঘন্টা সময় দিবেন ।
– হুম , দেখি ।
এরপর নাবিলার সাথে অনেক কথা বলেছিলাম । আমি বুঝতে পারছিলাম না আমি ভুল করছি না ঠিক করছি । কথা বলার মাঝকানে নাবিলার একটা কথা শুনে আমি আকাশ থেকে পড়লাম ।
– ভাইয়া গিফট দেন ।
– কিসের গিফট ?
– ভুলে গেলেন ? আমার জন্মদিনের ।
– এত্ত রাতে কই পাব ?
– জানি না । দিতে বলছি দিবেন । না হইলে কিন্তু..…… হুম !
– গিফট কই পাব এত্ত রাতে ?
– ছাদে চলে আসেন । এটাই আমার বার্থডে গিফট ।
– হায় হায় ! ছাদে কি হবে এত্তরাতে ! ^:^
– চাঁদ দেখব ।
– জানালা দিয়ে দেখ । ছাদে যেতে হবে না । ;?
– আপনি আসবেন কিনা তাই বলেন ।
– আচ্ছা , ঠিক আছে আসছি । -:-
জানিনা , কি এক অমোঘ টানে আমি ছাদে চলে গেলাম । গিয়ে দেখি ছাদের রেলিং এ হেলান দিয়ে আমার দিকে মুখ করে দাড়িয়ে আছে নাবিলা । পড়নে ধবধবে সাদা একটা স্কার্ট । বাসাতে চুলগুলো উড়ছে । ওকে দেখে সত্যি শুভ্র পরীর মতই লাগছিল । আমি গিয়ে ওর পাশে দাড়ালাম । চাঁদের রুপালী আলোয় অদ্ভুত সুন্দর দেখাচ্ছিল ওকে । কিছুক্ষণ কথা বলার পর নাবিলাকে সত্যি ভালবেসে ফেলেছিলাম । ওকে বলেছিলাম
– তোমার হাতটা একটু ধরব ?
– না ।
– কেন ?
– আগে সরি বলেন ।
– কি আবার করলাম ?
– আমার সাথে খারাপ ব্যাবহার করেছিলেন সেই জন্য ।
– ও । আচ্ছা সরি ।
– এইটা কোন ধরনের সরি বলা ? একটু ভালভাবে বলেন ।
– সরি শুভ্র পরী ।
– হি হি হি । হুম , পারমিশন গ্রান্টেড । এইবার ধরতে পারেন । (3
আমার শুভ্র পরীর শুভ্র হাতটা ধরার সাথে সাথে আমার হৃদয়ে ভালবাসার হাওয়া বইতে লাগল ।ভালবাসার বাতাসে যেন আমার মন ভেসে যাচ্ছিল । কিন্তু ভাবতে পারি নাই , এই ভালবাসার হাওয়াই আমার জীবনে ঝড় হয়ে ফিরে আসবে । সেই ঝড়ে উড়ে যাবে আমার অতীত , বর্তমান আর ভবিষ্যৎ । উড়ে যাবে আমার দুইকাল । 🙁
১৪টি মন্তব্য
তামান্না রুবাইয়াত
ভালোই। :c
তার ছেঁড়া
ভাল না হইয়া যায় কই !
নীলকন্ঠ জয়
ফিনিশিং লাইনে কষ্ট পেলাম।। 🙁
তার ছেঁড়া
কষ্ট জমা কইরা রাখেন ভাই ! পরে আরো আছে !
শুন্য শুন্যালয়
অনেক দারুণ লেখেন আপনি ..আরও পর্ব চাই..
এতো ভালো লেখকের নাম তার ছেরাঁ ;?
তার ছেঁড়া
আফা কি আর করা ! পাম্প দিয়েন না পিলিজ , আমি লেখার ‘ ল ‘ ও পাই না !
জিসান শা ইকরাম
দারুন 🙂
চমৎকার কথোপকথন (y)
তার ছেঁড়া
ভাই , রিয়েল লাইফ থেকে এক্সপেরিয়েন্স নিছি ।
খসড়া
চমৎকার।
তার ছেঁড়া
ধইন্যবাদ !
হতভাগ্য কবি
নাম মিলে গেলো, মন খারাপ হয়ে গেলো
তার ছেঁড়া
আমারো খারাপ লাগল ।
রাতুল
এইটা ভাল্লাগসে!!
তার ছেঁড়া
তাহলে কি আগের পর্বটা ভালো লাগে নাই রাতুল??