টানা ৯দিন পর চার দেয়ালের বাইরে সবুজ ঘাসের স্পর্শ পেলো পা’জোড়া—খালি পায়ে হাঁটতে ভালোই লাগছিলো—অদূরে এক ছাগল’ছানার প্রতি চোখ পড়লো—ছোট্ট এই ছাগল’ছানা অনেক মনোযোগ দিয়ে ঘাস খাচ্ছিল—আমিও ধীর পায়ে তার কাছাকাছি চলে গেলাম—না ছানা’বাবুর সে দিকে খবরই নেই—অনুমতি ছাড়াই তার একটা ছবি তুলে নিলাম…………
কী অদ্ভূত! একটা ছাগল’ছানা জন্ম নিয়েই নিজ পায়ে দাঁড়াতে পারে—নিজের খাবারের সন্ধান নিজেই করতে পারে-আবার তা নিজেই নিজ দায়িত্বে খেতে পারে কারো সাহায্যে ছাড়াই—কিন্তু আমরা তা পারি না—জীবনের অর্ধেকটা সময়ই আমরা অন্যের উপর র্নিভর হয়ে থাকি—অথচ নিজেদেরকে সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে দাবী করে আমাদের মাঝে সেকি অহংকার—আমরা কারো কাছ থেকে শিখতে চাই না—আমরা শিক্ষা দিতে চাই—হারাতে চাই নিজেকে উর্দ্ধ্বে রেখে অন্য সবকিছুকে……………
দেশব্যপী রাজনৈতিক অস্থিরতা—ক্ষমতার মিথ্যে গর্ব—মোড়ে মোড়ে পুলিশের নজরদারি-এ সব কিছুর মাঝে ছোট্ট এই ছানাকে দেখে আজ মনে হলো এর মতো আমরা মানুষরাও শুধুমাত্র জন্ম আর মৃত্যুতেই অসহায়—আর বাকী মাঝের সময়টা আমরা কি করি?—হিংসা-হানাহানি-ক্ষমতার দ্বন্ধ-দখল-অহংকার-মোহ-হত্যা-নির্যাতন-নিপীড়ন-ঘৃনা-অভিনয়-অপমান-অবহেলা—এ সবইতো করি-আমরা মানুষেরা—আমাদের পূর্ববর্তী প্রজন্ম যেমন জন্ম-মৃত্যুর মাঝের সময়টাতে আমাদের জন্য সুন্দর সুশৃঙ্খল সুনিশ্চিত সুনিশ্চয়তা সুনিরাপত্তা কোন কিছুই করে যেতে পারেনি—ঠিক তেমনি আমরাও পারবো না আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য সুন্দর কিছু রেখে যেতে………..
অথচ আমরা মানুষ—সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে আমাদেরই উচিত সুন্দরের জন্ম দেওয়া—নিজের বুদ্ধি বিবেককে কাজে লাগিয়ে দেশ ও দশের জন্য কিছু করা—সার্কাসের মঞ্চে অনেক পশুর দেখানো কলা-কৌশল আর ছল-চাতুরী দেখে আমরা বিস্মিত হই—কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়-আমরা একবারও ভেবে দেখি না একজন মানুষ কি করে মাথা/বুদ্ধি খাটিয়ে বাঘ-সিংহ-হায়েনা-হাতীর মতো বড়ো বড়ো হিংস্র ও ভয়ঙ্কর জানোয়ারদের কাবু করে ফেলছে…………….
অথচ ক্ষমতালোভী মানুষের হিংস্র নোংরা কর্মকান্ডকে আমরা নিয়ন্ত্রন করতে পারছি না—আমরা আমাদের মনুষ্যত্বের পরিচয় দিতে পারছি না—আমরা মানুষ হয়ে মানুষকে সম্মান দিতে পারছি না—উজাড় করে আমরা ভালবাসতে পারছি না—কারো ভালবাসাকেও আমরা সম্মান করতে পারছি না—তাহলে আমরা কিভাবে সৃষ্টির সেরা জীব হই?……………….
(খেয়ালী মেয়ের যত বকবক)
২৮টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
ছাগল ছানার উদাহরন দিলেন।
জন্মের পরেই সে হাঁটতে পারে, নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে,
এমন করে ভাবিনি কোনদিন,
ধন্যবাদ এই বয়সেই আপনার মাঝে এধরনের চিন্তা আছে বলে।
পোষ্টের মুল বক্তব্যের সাথে একমত
মানুষ বলে পরিচয় দিলেও আমরা মনুষত্বের গুণগুলো বিসর্জন দিয়েছি।
ধন্যবাদ এমন পোষ্টের জন্য
খেয়ালী মেয়ে অনেক মুল্যবান চিন্তাও করে।
খেয়ালী মেয়ে
খেয়ালী মেয়ের যত বকবক 🙂
সাইদ মিলটন
ভাবনার গভীরতা ছুঁয়ে গেল, ভালো লাগা জানবেন 🙂
খেয়ালী মেয়ে
ধন্যবাদ পড়ার জন্য 🙂
হৃদয়ের স্পন্দন
আমাদের
পূর্ববর্তী প্রজন্ম যেমন জন্ম-মৃত্যুর
মাঝের সময়টাতে আমাদের জন্য সুন্দর
সুশৃঙ্খল সুনিশ্চিত
সুনিশ্চয়তা সুনিরাপত্তা কোন কিছুই
করে যেতে পারেনি—ঠিক
তেমনি আমরাও পারবো না আমাদের
পরবর্তী প্রজন্মের জন্য সুন্দর কিছু
রেখে যেতে………..
স্রষ্টার শ্রেষ্ঠ জীব আমরা দাবার করি, কিন্তু শ্রেষ্ঠ কাজ কি এমন করি? আসলেই পারবোনা.
গভীর ভাবনা আপনার 🙂
খেয়ালী মেয়ে
ঠিক তাই–দাবি অনুযায়ী কাজ করি না।
শুন্য শুন্যালয়
চমৎকার ভাবনাচিন্তা কাজ করে আপনার পরী। আমরা এমনই সৃষ্টির সেরা জীব, পশুপ্রানীদের গালি হিসাবে ব্যবহার করতে পারলেই বাঁচি। নিজেরা কি আচরণ করছি তা বোঝার ক্ষমতা পর্যন্ত হারিয়ে ফেলেছি ক্ষমতার লোভে। কারো ভালোবাসাকে সম্মান পর্যন্ত দিতে পারিনা আবার বলি আমরা সৃস্টির সেরা জীব। খুব ভালো বলেছেন।
খেয়ালী মেয়ে
অনেক ধন্যবাদ শুন্য আপু ভাবনাটুকু বুঝতে পারার জন্য:)
অরণ্য
মাঝে মাঝে মনে হয় যা করছি এগুলো আসলে কিছুই নয়। অন্য কিছু একটা করা উচিৎ।
খেয়ালী মেয়ে
ঠিক বলেছেন–অনেক কিছু করার বাকি রয়ে গেছে এখনো 🙂
শাহানা আফরিন স্বর্ণা
তবু ও আপনি মানুষ তবুও আপনাকেই চিন্তা করতে হয় এজন্যেই আপনি বলেছেন!
মানুষ ই একমাত্র জীব যে তার জীন হতে প্রকাশিত গুণ ছাড়াও অন্য গুণ বা দোষ প্রকাশ করে! কারণ মানুষ শেখে। শিখতে সময় নেয়।
আমরা শিখেছি বলেই বলতে পারছি কতটা হিংস্র আমরা নিজেরাই হয়ে পড়েছি।
আমাদেরই এ হিংস্রতাকে রুদ্ধ করতে হবে।
আপনার লেখা ভাল লেগেছে বলেই মন্তব্য করেছি (y) -{@
খেয়ালী মেয়ে
ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য 🙂
নুসরাত মৌরিন
আপু এত সুন্দর করে বলেছেন!
আসলেই তো মানুষ হয়ে আমরাই সবচেয়ে বেশি অমানুষের মত কাজ করে যাচ্ছি!আমাদের বোধ,বিবেক সব শিকেয় উঠেছে! 🙁
খেয়ালী মেয়ে
আমরাই করছি হিংস্র যত কাজ, অথচ এটা আমাদের বৈশিষ্ট্য না 🙁
বনলতা সেন
আপনি ভালবাসতে পারেন না—— এই কথা বলছেন!ড্যামিসের অনুমতি নিয়েছেন?
নয় দিন কোথায় আটকে ছিলেন? নিজে আটকে থেকে এত ভাবনা ভাবতে পারলে আপনাকে আরও
আটকে রাখতে হবে দেখছি।
খেয়ালী মেয়ে
কি জানি ভালবাসতে পারি কিনা?–তবে মনে হয় আমি কিছুই পারি না–আর সেজন্যই হয়তো ড্যামিশের কোন উত্তর পাচ্ছি না 🙁
চারপাশে যে পরিস্থিতি, যে অরাজকতা চলছে, তাতেও আমি কিছু করতে পারছি না–বড্ড অকেজো মনে হয় নিজেকে 🙁
এই লেখাটা লেখার আগে পড়ে গিয়ে ডান পা ভেঙে ফেলেছিলাম, তাই ততদিন বিছানায় ছিলো সঙ্গী 🙂
মিথুন
ভালো-মন্দ, সুন্দর-অসুন্দর এই নিয়েই তো পৃথিবী। এ হানাহানি বন্ধ হবার নয়, হবেওনা কোনদিন। খেয়ালী মেয়ের খেয়ালী ভাবনা, ভালো লাগলো———-
খেয়ালী মেয়ে
ধন্যবাদ 🙂
ব্লগার সজীব
আপনার এত গভীর চিন্তার লেখা দিয়ে আপনি বুঝিয়ে দিলেন যে,খেয়ালী মেয়ে শুধু চিঠিই লেখেন না,তার চিন্তা ভাবনা অনেক গভীর এবং ভিন্ন। খুব ভালো লেগেছে আপু।তবে ভালো মানুষেরা বড় অসহায় দানব রুপি মানুষদের সামনে।এমন লেখা আরো লিখুন। -{@
খেয়ালী মেয়ে
সত্যিই খুব অসহায়বোধ করছি দেশের এমন পরিস্থিতিতে 🙁
ছাইরাছ হেলাল
আপনি দেখছি শুধুই পত্র লেখিকা নন। খোলা চোখে অনেক কিছু দেখে গুছিয়ে
লিখতেও পারে।সোনেলা মনে হয় আপনাদের ই খুঁজছে।
সুন্দর হয়েছে।
কার গোয়াল কে দেয় ধোয়া, সবাই ব্যস্ত আখের গোছাতে।
খেয়ালী মেয়ে
আমার বকবক ভালভাবে নিয়েছেন দেখে আনন্দ লাগছে \|/
কার গোয়াল কে দেয় ধোয়া, সবাই ব্যস্ত আখের গোছাতে, ঠিক বলেছেন–
লীলাবতী
পরী আপু,আপনার চিন্তার গভীরতা দেখে মুগ্ধ হলাম।শ্রদ্ধা আপনাকে আপু।
খেয়ালী মেয়ে
লীলাবতী আপু অনেক মুগ্ধতা আপনেকে ঘিরেও আছে আমার 🙂
নীলাঞ্জনা নীলা
খেয়ালী মেয়ের বকবকানী ভালো লেগেছে খুব।লেখায় গভীরতা অনেক।
খেয়ালী মেয়ে
ধন্যবাদ \|/
ছারপোকা
পরবর্তী প্রজন্মের জন্য ভাল কোন সাফল্য রেখে যেতে পারছি না সত্যিই ভাবার বিষয় ।
আসলে আমার ডাউট হয় আমরা সেরা জীব কিভাবে হলাম ।আমাদের আচরন যেভাবে এখন বাঘ আর হায়নার মত হয়ে যাচ্ছে ।
আপনার বক বক গুলা বেশ ভাবিয়েছে ।
খেয়ালী মেয়ে
এই বিষয়গুলো আমাকে খুব ভাবায়, শুধু পারিনা সব বকবককে শব্দজটে বাঁধতে 🙁